মানব চরিত্রের একটি বিশেষ বৈশিষ্ট্য হলো এই যে সে সবসময় নিজের কাছে গ্লানিমুক্ত থাকতে চায়।তাই যে আদর্শ সে ধারন করে তাকে সবধরনের কলুষতা থেকে মুক্ত রাখতে সে সদা সচেষ্ট থাকে।অনেকগুলো মানব প্রকৃতির সমম্বয়েই একটি গোষ্ঠী বা সম্প্রদায়ের জন্ম হয়।তাই একই বৈশিষ্ট্য যেকোনো গোষ্ঠী বা সম্প্রদায়ের মাঝে লক্ষনীয় হবে তা খুব স্বাভাবিক ব্যাপার।
.
ব্যাক্তিগত দৃষ্টিকোন থেকে যা বুঝি গোষ্ঠী তার আদর্শকে পবিত্র রাখার জন্যে দুইভাবে পদক্ষেপ নিতে পারে।
প্রথম পদ্ধতি:- অনুসরনীয় আদর্শের সকল নিয়মনীতি সঠিকভাবে মেনে চলা এবং যারা আদর্শকে ভুলভাবে ব্যাখ্যা করবে তাদের শাস্তির ব্যবস্থা করা।যারা ভুল ব্যাখ্যার স্বীকার হচ্ছে তাদের সামনে প্রকৃত আদর্শটি তুলে ধরে অপব্যাখ্যাটিকে ঠান্ডা মাথায় হত্যা করা।এই নিয়ম মেনে চললে একটি গোষ্ঠী বা সম্প্রদায় সুখী সমৃদ্ধ ভাবে জীবনযাপন করতে পারে এবং আদর্শের স্থায়ীত্বও হয় মজবুত।
দ্বিতীয় পদ্ধতি:-এটি অনেকটা গা বাচানো ধরনের।এক্ষেত্রে আদর্শের অপব্যাখ্যাকারী ও অপব্যাখ্যার স্বীকার সকলকেই সম্প্রদায়ের অন্তর্ভুক্ত বলে অস্বীকার করা হয়।এটি আত্নঘাতী এবং গোষ্ঠী বা সম্প্রদায়কে ধ্বংসের দিকে নিয়ে যায়।
.
যাই হোক এবার আসল কথায় যাওয়া যাক।গুলশান ট্রাজেডির পর অনেকগুলো দিন কেটে গেছে।ঘটেছে আরও নানা ঘটনা।সেই ভয়াল হত্যার বিভীষিকা এখনও তাজা।চোখ বন্ধ করলেই ভেসে ওঠে সেই বিশটি মানুষের ধারালো অস্ত্রেয সামনে দাড়িয়ে মৃত্যুর আগের প্রবল আকুতি,মর্মচিৎকার।বাতাসে এখনও তাজা শোক।
কিন্তু খুব দুঃখের বিষয় এতকিছুর পরও আমরা নিজেদের যাস্টিফাই করার চেষ্টা করছি।“যারা হত্যা কান্ডটি ঘটিয়েছে তারা প্রকৃত মুসলমান নয়,সুতরাং আমরা এর দায় নিতে পারিনা”।ছোট্ট এই কথাটির দ্বারা আমরা নিজেদের সর্বনাশ ডেকে আনছি।
.
সন্ত্রাসীগুলো আমাদের মাঝেই বড় হয়েছে,তারা নিজেদের ধার্মিকই ভাবে সে আমরা যতই অস্বীকার করিনা কেনো।তারা যে আমাদের মাঝে থেকেও একটি ভুল আদর্শ নিয়ে বেড়ে উঠেছে ইচ্ছে হলেই তার দায় আমরা এড়াতে পারিনা।কোন আন্তর্জাতিক জঙ্গী সংগঠন,সন্ত্রাসী সংগঠন কিভাবে তৈরী হচ্ছে কারা তাদের লিড দিচ্ছে এসব প্রশ্নের উত্তর খোজা থেকেও বেশী জরুরী কিভাবে তারা আমাদের গোষ্ঠীর একটি অংশকে ব্যবহার করছে তার উত্তর খোঁজা।নিশ্চয় আমরা নিজেদের মধ্যে আদর্শের পকৃত শিক্ষাটা দিতে পারছিনা।তাই তারা বিপথগামী হচ্ছে ভুল শিক্ষার কবলে পড়ে।
নিজেদের ভুলটা এড়িয়ে গেলে চলবেনা।এভাবেই সব ধ্বংস হয়।
.
একটি ভুল আদর্শের অনুসারীদের ধ্বংস করাই যায়।কিন্তু তাতে নোংরা আদর্শটি মরে না।বেচে থেকে তা ভাইরাসের মত সর্বগ্রাসী হয়ে ওঠে।তাই সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ন হচ্ছে অনাদর্শটিকে খুন করা।নৈরাজ্য এমনিতেই থেমে যাবে।
.
ধর্মকে আশ্রয় করে যে সন্ত্রাস গড়ে ওঠে,তার অনুসারীদের ধরার পর অত্যাচার করে খুব বেশী তথ্য জোগাড় করা যায় না।আপনাকে যতই অত্যাচার করা হোক,আপনার পালিয়ে থাকা পিতার হদিশ কেউ আপনার থেকে বের করতে পারবেনা।কিন্তু কোনোভাবে যদি প্রমান করা যায় লোকটি আপনার পিতা তো নয়ই বরং আসল পিতার হত্যকারী,তবে কিন্তু আপনি গড়গড় করে তার হদিশ বলে দেবেন।
এই কাজটিই আমাদের করতে হবে সুকৌশলে।ব্রেনওয়াশ যেমন করা যায়,এন্টি ওয়াশও সম্ভব।যা কিছুর আংশিক ব্যাখ্যা তাদের দেয়া হয় পূর্নাঙ্গভাবে তাদের সেসকল বিষয় বুঝাতেহবে।যতই সময় লাগুক।
.
এই ছাপ্পান্ন হাজার বর্গমাইল আমাদর।একে পবিত্রও রাখবো আমরা।ধর্মীয় উগ্রবাদ যাতে এই পবিত্র ভূমিকে স্পর্শ করতে না পারে।কাওকে যেনো লাশ হয়ে পড়ে থাকতে না হয়।
জয় হোক মানবতার।
সর্বশেষ এডিট : ০৯ ই জুলাই, ২০১৬ দুপুর ১:৪৩