টানা তৃতীয় বারের মতো ঢাকা বোর্ডে সেরা বিশের তালিকায় এবং সারা দেশে দ্বিতীয় স্থানে থাকা নরসিংদীর আবদুল কাদির মোল্লা সিটি কলেজের শিক্ষার্থীদের অন্য রকম উচ্ছ্বাস। ছবি: মনিরুজ্জামান, নরসিংদীটানা তৃতীয় বারের মতো ঢাকা বোর্ডে সেরা বিশের তালিকায় এবং সারা দেশে দ্বিতীয় স্থানে থাকা নরসিংদীর আবদুল কাদির মোল্লা সিটি কলেজের শিক্ষার্থীদের অন্য রকম উচ্ছ্বাস। ছবি: মনিরুজ্জামান, নরসিংদী
টানা তৃতীয়বারের মতো ঢাকা শিক্ষা বোর্ডে সেরা বিশের মেধা তালিকায় দ্বিতীয় স্থান অর্জন করেছে নরসিংদীর আবদুল কাদির মোল্লা সিটি কলেজ। আজ বুধবার প্রকাশিত উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষার ফলাফলে এ তথ্য উঠে এসেছে।
এ বছর এই কলেজ থেকে ৩৮৮ জন পরীক্ষার্থী এইচএসসি পরীক্ষায় অংশ নেন। সবাই পাস করেছেন। আর জিপিএ-৫ পেয়েছেন ৩৭৮ জন শিক্ষার্থী।
কলেজের প্রশাসনিক বিভাগ সূত্রে জানা যায়, কলেজটি তৃতীয়বারের মতো ধারাবাহিক সাফল্য ধরে রেখে ঢাকা বোর্ডে দ্বিতীয় স্থান অর্জন করেছে। এ খবর আজ দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে ছড়িয়ে পড়ে। খবর শুনে শিক্ষার্থী ও অভিভাবকেরা কলেজ প্রাঙ্গণে ছুটে আসেন। মুষলধারে বৃষ্টির মধ্যেই কলেজের শিক্ষক-শিক্ষার্থী ও অভিভাবকেরা নাচ-গান-হাসি-আনন্দ-উল্লাসে মেতে ওঠেন।
মানবিক বিভাগ থেকে জিপিএ-৫ পাওয়া শিক্ষার্থী দোলন চাঁপা বলেন, ‘আমি এসএসসিতে জিপিএ-৪.৩৮ নিয়ে এখানে ভর্তি হয়েছিলাম। আজ আমি জিপিএ-৫ পেয়েছি।’ সাফল্যের কারণ হিসেবে শিক্ষকদের সঠিক দিকনির্দেশনা, নিয়মিত ক্লাস, বিশেষ ক্লাস, হোম ভিজিট, টিউটোরিয়াল ও মাসিক পরীক্ষার গ্রহণকে অভিহিত করেন।
ব্যবসায় শাখা থেকে জিপিএ-৫ পাওয়া শিক্ষার্থী আনিকুল ইসলাম বলেন, ‘আমরা হোস্টেলে থাকি নাই। কলেজের শিক্ষকেরা নিয়মিত আমাদের বাসায় এসে খোঁজখবর নিতেন। এ কারণে আমাদের প্রতিনিয়ত লেখাপড়ায় ব্যস্ত থাকতে হচ্ছে, যার কারণে আজ আমাদের এ সাফল্য।’
কলেজের প্রতিষ্ঠাতা ও পরিচালনা কমিটির সভাপতি আবদুল কাদির মোল্লা বলেন, ‘মফস্বল শহরে মানসম্মত শিক্ষা প্রদানের অঙ্গীকার নিয়ে নরসিংদীতে এই কলেজ প্রতিষ্ঠা করেছিলাম। আমার জীবনের মতোই আজকে আমি সফল। টানা তৃতীয়বার ঢাকা বোর্ডসহ সারা দেশে দ্বিতীয় হওয়ার স্বপ্ন পূরণে আমার জীবনের আরেকটি মাইলফলক উন্মোচিত হয়েছে। সার্থক হয়েছে আমার জীবন। আমরা আবারও প্রমাণ করতে সক্ষম হয়েছি, মফস্বলের খেটে খাওয়া মানুষের সন্তানেরা অনেক সুযোগ-সুবিধা থেকে বঞ্চিত থেকেও ভালো ফলাফল করতে পারে।’
অধ্যক্ষ মশিউর রহমান মৃধা বলেন, ‘কলেজের এ সাফল্য শিক্ষকদের মেধা ও শিক্ষার্থীদের মেধার সেতুবন্ধনের ফসল। আমিসহ আমার কলেজের সব শিক্ষকের ধ্যান-ধারণা-পরিবার সবকিছুই এই কলেজ আর এই কলেজের প্রাণ শিক্ষার্থীরা। শিক্ষকেরা সকাল থেকে মধ্যরাত পর্যন্ত শিক্ষার্থীদের শুধু লেখাপড়া নয়, তাদের খেলাধুলা, স্বাস্থ্য, বিনোদন থেকে শুরু করে সব বিষয়ে শ্রম দিয়ে আসছে। আর শিক্ষকতাকে পেশা হিসেবে না নিয়ে সেবা হিসেবে নিলেই যে ভালো কিছু করা সম্ভব, তা আমাদের শিক্ষকেরা তৃতীয়বারের মতো দেখিয়ে দিতে সক্ষম হয়েছে।’