পরিস্থিতি এতটা ভয়াবহ হয়ে যাবে কে জানতো। মিছিল স্লোগান, দাবি দাওয়া শুনে আসতেছি জুলাই মাস জুড়ে। এরূপ ধ্বংসাত্মক দিকে মোড় নিবে আমরা বুঝতেই পারিনি। বাসা যাত্রাবাড়ীর কাছে হওয়াতে কেবল গোলাগুলির শব্দ শুনতে পাচ্ছিলাম। খুব ভয় ধরে গেছিল মনে। আমাদের দেশের একটা বদভ্যাস কিছু হলেই নেট কানেকশন নিয়ে ছিনিমিনি খেলা অথবা লুকোচুরি খেলা। এটা যেন বাচ্চাদের খেলা। এই বদভ্যাস ত্যাগ করা প্রয়োজন। নেট না থাকার কারণে বিদেশে যারা বসবাস করছেন তাদের আত্মীয় স্বজন মা বাবার সাথে যোগাযোগ করতে না পারায় তারা দুশ্চিন্তায় সময় কাটিয়েছেন। আর আমরা দেশের অবস্থাও জানতে পারিনি। কোথায় কী হচ্ছে, কে মারা গেল, কোথায় আগুন লাগলো কিছুই বুঝতে পারিনি।
নেট বন্ধের আগে ফেসবুকে দেখতে পেয়েছি একটা ছেলে আহত অবস্থায় বলতেছে, আমি কী মরে যাবো। কী ভয়ঙ্কর কথা। আরেকটা ছেলে ক্লাস নাইনে পড়ে, সে নাকি বলেছে আমি আন্দোলনকারী কেউ না। আমি আন্দোলন দেখতে এসেছি। আমাকে গুলি করবেন না। কিন্তু তার কথা কেউ শুনেনি। ছেলেটি মারা গেল, কী সুন্দর মায়াবী চেহারা তার। এসব সন্তান হারানো পরিবারে শোক সইবার ক্ষমতা যেন আল্লাহ তাআলা দেন।
এই কয়েকদিন ছুটি ছিল কিন্তু আমার দিনগুলো মোটেও সুখকর ছিল না। কর্তাবাবু অসুস্থ হয়ে গেল হঠাৎ। এত জ্বর, ঔষধ খেয়েও নামতেছিল না। কাশিতে শ্বাসকষ্ট হয়ে গেছিল। দুইদিন গেছে তার পিছনে। সে একটু সুস্থ বড় ছেলে ঘুম থেকে উঠে দেখে সে পিঠের এক সাইড ব্যথায় নড়াতে পারছে না। আমি পিছন দিয়ে বসেছি সে হেলান দিয়ে দিন কাটিয়েছে। তার মাঝে নিয়ে গেল পানি। একটু সময় পানি আসে তারপর সারাদিন পানি নাই। ভেবেছিলাম ঘর গুছাবো, পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন করবো....... কিছুই হলো না। এভাবেই বিতৃষ্ণায় কেটে গেল দিন। আজ অফিসে এসেছি। অফিস এগারোটা থেকে তিনটা পর্যন্ত। মতিঝিলে সেনাবাহিনীর টহল দেখতে পেলাম। আজ এত জ্যাম ছিল অনেকেই অফিসে এসে পৌঁছেছেন সাড়ে বারো অথবা একটা প্রায় তখন।
এই কয়দিন দিনমজুর রিক্সাওয়ালা ভিক্ষুকদের যে কী অবস্থা আল্লাহই জানেন। মানুষ কষ্টে দিনাতিপাত করেছে এই ক'দিন। বিদ্যুতের প্রি পেইড কার্ড সমস্যা, এটিএম সমস্যা......বিল সমস্যা একমাত্র নেটের কারণে। এখনো তো ভালোভাবে নেট দিচ্ছে না। কবে ঠিক হবে কে জানে। আমাদের ব্লগবাসি নিরাপদে আছেন তো সবাই। আল্লাহ সবাইকে হিফাজতে রাখুন। ফি আমানিল্লাহ।
সর্বশেষ এডিট : ২৪ শে জুলাই, ২০২৪ দুপুর ২:১৩