somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

পরনিন্দা নাকি আত্ম-সমালোচনা ?? পর্ব - ১ (এক)

০২ রা ফেব্রুয়ারি, ২০১১ সকাল ৯:৪১
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :


মানুষের স্বভাবগত সংষ্কার পরিবর্তন করা খুবই কঠিন এবং এক ধরনের উন্নয়নের প্রতিবন্ধকতা; যার পরিপ্রেক্ষিতে জীবনে অনেক জাগতিক বাস্তবতাকে উপলব্ধি করা স্বত্ত্বে ও চেনা হয়ে উঠে না । অচেনা বাস্তবতাগুলো বারবার আঘাত দিয়ে ক্ষত-বিক্ষত করে দেয়া স্বত্ত্বে ও আমাদের খুব কম জনেরই বাস্তব চেতনার উদ্ভব ঘটে; তাই হিংসা-বিদ্বেষগুলো প্রকর থেকে প্রবলতর হয়ে বেড়ে উঠে । হারানো ব্যথা-বেদনায় যখন স্পর্শকাতরে পরিপূর্ণ হৃদয় ছিন্ন-ভিন্ন হয়ে যায়, পরাজয়ের হতাশা যখন গ্রাস করে রাহুরুপী ধারণ করে তখনিই শুরু হয় তীব্র হা-হুতাশ । বাকী থাকে শুধু আক্ষেপ এবং সমবেদনা; নির্দয়ের সর্বশেষ স্তর ।


সবকিছুর সাথে আমরা অচেনা এবং অজানা হয়ে বসবাস করতে চাই - একসাথে বসবাস করেছি বহু বছর যাবৎ তবু ও চিনতে পারিনি "হতাশা" /:) কি ? একসময় হতাশাই ছিল আমার একমাত্র বন্ধু, নিদ্রার পরম শত্রু, ক্ষুদার্ত পাকষ্থলির জ্বালানিবারক কিংবা পিপাসু শরীরের দূর্বলতা । তবু ও ভুলে গিয়েছিলাম পিছনে ফেলে আসা সেই বন্ধুসুলভ 'হতাশা'র কথা - কিন্তু সে যে কখনো আমাকে ভুলে থাকার নই -সুযোগ ফেলেই ঝাঁপড়ে ধরবে; খেয়ে ফেলবে জটিল শরীরটাকে - বাকি রাখবেটা কি বলা কঠিন । কিন্তু এটো বছর যার সাথে কাটিয়েছিলাম সেই 'হতাশা'কে আমার কি একবার ও চেনার দরকার ছিল না (?) যে আমাকে ভুগিয়েছে -আমাকে মরণের পথে ধাবিত করেছে -সবকিছু লুটে নিতে চেয়েছিল সেই হতাশাকে আমি এতো সহজে কেনো ভুলতে বসলাম (?) আমাকে একজনই ব্যর্থ করতে চেয়েছিল -জীবনকে ধ্বংস করে দিতে চেয়েছিল - চোষকের ন্যায় আমার শরীরে যা রক্ত ছিল সব চুষে নিতে চেয়েছিল -কাঁদিয়েছিল - আঘাতে জর্জরিত করে শরীরের ক্ষুদ্রানু কোষগুলোকে দূর্বল করে রেখে দিয়েছিল দু-দুটো বছর -সেই "হতাশা"কে আমি ভুলতে বসেছিলাম । আমি স্বার্থপরের ন্যায় আচরণ করতে চেয়েছিলাম - পারিবারিক দ্বায়িত্ববোধকে বিসর্জন দিয়েছিলাম - কেননা সাংসারিক বন্ধন ছিন্ন করে আমি শুধু এক সত্যিকার মানুষ হতে চেয়েছিলাম । আমি হতাশা'কে আর উপলব্ধি করতে চাই না -বরং আমি এখন চিনতে চাই -বুঝতে চাই । এই হতাশাকে আমি যা খুশি তা বলতে পারি, গালমন্দ করতে পারি; কারণ সে ছিল আমার - ভবিষ্যতে থাকবে আমারই । ইহা পরনিন্দা নই বরং আত্ম-সমালোচনা । আমরা ভুল করে পরনিন্দা এবং আত্ম-সমালোচনাকে এক করে গেঁথে ফেলি -যার চুড়ান্ত পরিণতি জটিলতা - এবং মনুষ্যত্বজ্ঞানহীনতা ।


যৌক্তিক সমালোচনা কখনো পরনিন্দা নয়
; যৌক্তিক সমালোচনাগুলো সবসময় ভবিষ্যৎ উন্নয়নের অনুকুলে হয়ে কাজ করে; আর অন্যদিকে পরনিন্দা এক মানুষকে ব্যর্থতার সম্মুখে ধাবিত করে । পরনিন্দার কোন যৌক্তিকবোধ থাকে না -যা তাকে হচ্ছে হীন মনমানসিকতার জঞ্জাল -হিংসা-দ্বেষ-বিদ্বেষে পরিপূর্ণ । সেজন্য পরনিন্দুকরা কখনো যৌক্তিক সমালোচনা করতে জানে না; কিন্তু খারাপ উদ্দেশ্যমূলক চক্রান্তে তাদের স্থান সুউচ্চে । আমাকে সমালোচনা করা হয় কারণ আমার রস-কসের উপলব্ধিতা ভিন্ন ধরনের; কারণ আমি কখনো টাকাকে মুখ্য মনে করিনি । আমাকে ও পরনিন্দার কবলে বহুবার পড়তে হয়েছিল, অনেক সময় আঘাত ও পেয়েছিলাম মানুষদের মনমানসিকতাগুলো সেরকম হীন দেখে । তবে এর সমালোচনা আমি প্রকাশ্য করেছিলাম এটে লুকিয়ে রাখার ছিল না ।


আমাদের বাংলাদেশে একটা জিনিস খুব প্রবলভাবে চর্চা হয় সেটি হচ্ছে "পরনিন্দা" - অনেকক্ষেত্রে আড্ডাকে হাসিমুখর এবং প্রাণোজ্জ্বল করে তোলার জন্য ও পরনিন্দাকে আলোচনার কেন্দ্রবিন্দু হিসেবে ধরা হয়ে থাকে । দুই-তিনজনের মহিলা মিললে হয়ে যায় ভালো এক আড্ডা -আর চলে রীতিমতো পরনিন্দা চর্চা । আজকাল পুরুষরা ও পিছিয়ে নেই । আর এক্ষেত্রে বাংলাদেশের বেশিরভাগ রাজনীতিবিদরা এগিয়ে । এরা আত্ম-সমালোচনাতো দূরের কথা যৌক্তিক সমালোচনা পর্যন্ত কিভাবে করতে হয় ভুলে গেছে -বরং চলছে সমালোচনার নামে "পরনিন্দা" । এভাবে দেশের কথাতো বাদই দিতে হয় -এক ক্ষুদ্র গ্রামকে ও উন্নয়ন করা সম্ভব কিনা সন্দেহ । যেদিকে রাত কাটিয়েছি শুনেছি একে অন্যকে যা খুশি মাটির ভরাট দিচ্ছে -অনেক সমস্যা আর রীতিমতো ঢাল ছুঁড়াছুড়ি । আমাদের বাংলাদেশের মানুষের অবনতির অন্যদের মধ্যে অন্যতম একটি সমস্যা হচ্ছে এটি । আমরা দিনদিন উগ্র হয়ে উঠছি; কারণ বেড়ে উঠার পরিবেশ আমাদেরকে তা হতে বাধ্য করছে । প্রতিবাদ করা খারাপের কিছু না কিন্তু আমরা প্রতিবাদ করছি যেখানে সেখানে -লাগামহীন এবং যুক্তিবিহীনভাবে । কারণ ছাড়া একে অন্যর উপর ঝাঁপিয়ে পড়ছি আর ছোটদের সাথে কিভাবে ব্যবহার করতে হয় তা ও ভুলে গিয়েছি -এর প্রতিফল হিসেবে আমাদের ও ছোটদের কর্তৃক লাঞ্জনার স্বীকার হতে হচ্ছে । আমরা ভুল করার পর ও ভুলকে মানতে নারাজ -চিনতে চেষ্টা করি না এক-দুবার করার পর কিছু একটা যেখানে শিখবো কিন্তু অভ্যসগতভাবে শিখে ফেলি ভুল কিভাবে বারবার করা যায়


আমাদের অভ্যসটা হচ্ছে নিজের ভাত খেয়ে পরের হয়ে বাঁচা যা পরিবর্তন করা অতীব জরুরী ।



অবশেষে - পরনিন্দা করলাম নাকি আত্ম-সমালোচনা ? ( চলবে )
সর্বশেষ এডিট : ০২ রা ফেব্রুয়ারি, ২০১১ সকাল ৯:৫১
০টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

আরো একটি সফলতা যুক্ত হোলো আধা নোবেল জয়ীর একাউন্টে‼️

লিখেছেন ক্লোন রাফা, ২০ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ৮:৪০



সেদিন প্রথম আলো-র সম্পাদক বলেছিলেন—
“আজ শেখ হাসিনা পালিয়েছে, প্রথম আলো এখনো আছে।”

একজন সাধারণ নাগরিক হিসেবে আজ আমি পাল্টা প্রশ্ন রাখতে চাই—
প্রথম আলোর সম্পাদক সাহেব, আপনারা কি সত্যিই আছেন?

যেদিন... ...বাকিটুকু পড়ুন

হামলা ভাংচুর অগ্নিসংযোগ নয়, আমরা শান্তি চাই

লিখেছেন নতুন নকিব, ২০ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ১০:১১

হামলা ভাংচুর অগ্নিসংযোগ নয়, আমরা শান্তি চাই

ছবি এআই জেনারেটেড

হামলা ভাংচুর অগ্নিসংযোগ প্রতিবাদের ভাষা নয় কখনোই
আমরা এসব আর দেখতে চাই না কোনভাবেই

আততায়ীর বুলেট কেড়ে নিয়েছে আমাদের হাদিকে
হাদিকে ফিরে পাব না... ...বাকিটুকু পড়ুন

তৌহিদি জনতার নামে মব সন্ত্রাস

লিখেছেন কিরকুট, ২০ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ১১:৫৪




ছবিঃ অনলাইন থেকে সংগৃহীত।


দেশের বিভিন্ন স্থানে সাম্প্রতিক সময়ে ধর্মের নাম ব্যবহার করে সংঘটিত দলবদ্ধ সহিংসতার ঘটনা নতুন করে উদ্বেগ সৃষ্টি করেছে। বিশেষ করে তৌহিদি জনতা পরিচয়ে সংঘবদ্ধ হয়ে... ...বাকিটুকু পড়ুন

মুখ গুজে রাখা সুশীল সমাজের তরে ,,,,,,,,

লিখেছেন ডঃ এম এ আলী, ২০ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ বিকাল ৪:০৫


দুর্যোগ যখন নামে আকাশে বাতাশে আগুনের ধোঁয়া জমে
রাস্তা জুড়ে কখনো নীরবতা কখনো উত্তাল প্রতিবাদের ঢেউ
এই শহরের শিক্ষিত হৃদয়গুলো কি তখনও নিশ্চুপ থাকে
নাকি জ্বলে ওঠে তাদের চোখের ভেতর নাগরিক বজ্র
কেউ কেও... ...বাকিটুকু পড়ুন

নজরুল পরিবারের প্রশ্ন: উগ্রবাদী হাদির কবর নজরুলের পাশে কেন?

লিখেছেন মাথা পাগলা, ২১ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ৩:০১



প্রায় অর্ধশতাব্দী আগে কাজী নজরুল ইসলামের দেহ সমাধিস্থ করা হয়েছিল ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় মসজিদের পাশে। শনিবার বাংলাদেশের স্থানীয় সময় বিকেল ৪টে নাগাদ সেখানেই দাফন করা হল ভারতবিদ্বেষী বলে পরিচিত ইনকিলাব মঞ্চের... ...বাকিটুকু পড়ুন

×