রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন চতুর্থ বারের মতো শপথ নিয়েছেন ২০১৮ সালে। তাঁর বয়স এখন ৬৬ বছর। তিনি যে রাশিয়াকে আবার পরাশক্তি হিসেবে গড়ে তুলতে চান, সে বিষয়ে এখন আর কোন রাখঢাক নেই। মি: পুতিনের শৈশব কেটেছে এক কঠিন পরিবেশে। বর্তমানে সেন্ট পিটসবার্গ, যেটি এক সময় লেলিনগ্রাদ নামে পরিচিত ছিল, সেখানেই বেড়ে উঠেন মি: পুতিন। মি: পুতিনের বাবা একটি কারখানায় কাজ করতেন এবং তাঁর দাদা ছিলেন একজন বাবুর্চি। তিনি যেখানে বেড়ে উঠেছেন, সেখানে ছোট বয়সে তাঁর সাথে স্থানীয় ছেলেদের সংঘাত শুরু হয়ে যায়। সেজন্য পুতিন জুডো খেলা রপ্ত করেন।
স্কুলের পড়াশুনা শেষ করার আগেই মি: পুতিনের স্বপ্ন ছিল তৎকালীন সোভিয়েত ইউনিয়নের গোয়েন্দা সংস্থা কেজিবিতে কাজ করার।
তাঁর লড়াকু মনোভাব বিভিন্ন সময় নিজের কথাবার্তায় ফুটে উঠেছে। ২০১৫ সালে মি: পুতিন বলেছিলেন , "কোন লড়াই যদি অবশ্যম্ভাবী হয়, তাহলে প্রথম আঘাতটা আপনাকেই করতে হবে।" পঞ্চাশ বছর আগে লেলিনগ্রাদের রাস্তা থেকে তিনি এমন শিক্ষা পেয়েছেন বলে উল্লেখ করেন।
১৯৫২ সালের ৭ই অক্টোবর মি: পুতিনের জন্ম। আইন শাস্ত্র পড়াশুনা করা মি: পুতিন বিশ্ববিদ্যালয় জীবন শেষ করেই তৎকালীন সোভিয়েত ইউনিয়নের গোয়েন্দা সংস্থা কেজিবিতে যোগ দেন। স্নায়ু যুদ্ধের সময় তিনি তৎকালীন পূর্ব জার্মানিতে কেজিবির গোয়েন্দা হিসেবে কাজ করেন। পরবর্তীতে তাঁর শাসনকালে সাবেক কেজিবির ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উচ্চ পদে আসীন হয়েছেন।
১৯৯৭ সালে বরিস ইয়েলেৎসিন যখন রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট তখন ভ্লাদিমির পুতিন ক্রেমলিনে আসেন এবং তাঁকে কেন্দ্রীয় নিরাপত্তা সার্ভিসের প্রধান হিসেবে নিয়োগ করা করা হয়। কেজিবির পরবর্তী সময়ে এ সংস্থাটি গঠন করা হয়েছিল। ১৯৯৯ সালে নতুন বছরের প্রাক্কালে মি: ইয়েলেৎসিন প্রেসিডেন্টের পদ থেকে পদত্যাগ করেন এবং ভ্লাদিমির পুতিনকে ভারপ্রাপ্ত প্রেসিডেন্ট হিসেবে ঘোষণা করেন।
২০০০ সালের মার্চ মাসের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে মি: পুতিন অনায়াসে জয়লাভ করেন। ২০০৪ সালে তিনি দ্বিতীয়বারের মতো প্রেসিডেন্ট হিসেবে জয়লাভ করেন।
কিন্তু রাশিয়ার সংবিধান অনুযায়ী কোন ব্যক্তি পরপর তৃতীয়বার প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে অংশগ্রহণের উপর নিষেধাজ্ঞা ছিল। তখন মি: পুতিন প্রেসিডেন্ট পদে অংশগ্রহণ না করে প্রধানমন্ত্রী পদে নির্বাচন করেন। ২০১২ সালে তিনি তৃতীয়বারের মতো প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে জয়লাভ করেন। ২০১৩ সালে মি: পুতিনের সাথে তাঁর স্ত্রীর বিবাহ বিচ্ছেদ হয়। তাঁদের ৩০ বছরের দাম্পত্য জীবন ছিল। তাঁর স্ত্রীর অভিযোগ ছিল, মি: পুতিন শুধুই কাজের মধ্যে ডুবে থাকতেন। কাজই ছিল তাঁর নেশা। তাঁর ছোট মেয়ে মস্কো স্টেট ইউনিভার্সিটির প্রশাসনে উচ্চপদে চাকরী করেন। অন্যদিকে বড় মেয়ে একজন শিক্ষাবিদ।
সর্বশেষ এডিট : ১৫ ই ডিসেম্বর, ২০১৯ রাত ১১:৩১