একটা সদ্য স্বাধীনতাপ্রাপ্ত দেশে যেমন বিভিন্ন ধরনের বিশৃংখলা দেখা দেয় এবং কোন কোন ক্ষেত্রে সহ্যের সীমা অতিক্রম করে, তেমনিভাবে আমাদের এই সদ্য মুক্তিপ্রাপ্ত ব্লগেও কিছু বিশৃংখলা দেখা দিচ্ছে; আর আমি আশাবাদী, অদুর ভবিষ্যতে আরো দেখা দিবে! প্রশাসনের দায়িত্ব হলো শক্তহাতে এসব বিশৃংখলা দমন করা এবং ক্ষেত্রবিশেষে বিশৃংখলাকারীদের শাস্তির ব্যবস্থা করা, যাতে করে পটেনশিয়াল বিশৃংখলাকারীরা সাবধান হয়ে যায়।
তেমনি কিছু বিষয় তুলে ধরছি, যেগুলোর ভুক্তভোগী আমরা, সাধারন ব্লগারেরা। দুখের বিষয় হলো, সাধারন ব্লগারেরা বড়জোর প্রতিবাদ করতে পারে, কানে তোলা না তোলা বিশৃংখলাকারীদের ব্যাপার। সুতরাং কর্তৃপক্ষের কঠোর হওয়ার কোন বিকল্প আমি দেখছি না। ব্লগের শৃংখলা বজায় রাখা, মান নিয়ন্ত্রণ করা আর অতিথিদের কাছে ব্লগের গ্রহনযোগ্যতা বাড়ানোর জন্য এই বিষয়গুলোর দিকে নজর দেয়া খুবই গুরুত্বপূর্ণ। তাই মাননীয় মডারেটর এবং সন্মানীত ব্লগারবৃন্দের কাছে আবেদন করছি, দয়া করে বিষয়গুলোর দিকে একটু সহৃদয় দৃষ্টি দিবেন।
১। প্রথম পাতায় একাধিক পোষ্ট: আমি মানছি, সদ্য মুক্তির আনন্দে কতিপয় ব্লগার পর পর একাধিক পোষ্ট প্রসব করছেন। গত কয়েকদিনে একই ব্লগারের ২টি, ৩টি এমনকি ৫টি পোষ্টও দেখেছি প্রথম পাতায়। ওনাদের অনুভূতির প্রতি সন্মান রেখেই বলছি, এটা ব্লগীয় ম্যানারের গুরুতর লঙ্ঘন। আপনাদের এই অতি উৎসাহের কারনে অন্যদের পোষ্ট দ্রুত প্রথম পাতা থেকে অপসারিত হচ্ছে। এতো তাড়াহুড়ার কি আছে? একদিনেই মনের সব কথা বলে ফেলতে হবে কেন! একটু রয়ে সয়ে বললে কি হয়? আপনাদের করা পোষ্ট যেমন আপনাদের কাছে গুরুত্বপূর্ণ, তেমনটা বাকীদের ক্ষেত্রেও প্রযোজ্য। দয়া করে উত্তেজনাকে দমন করুন, অন্যদেরকেও সুযোগ দিন।
২। ফেসবুকিয় পোষ্ট: ফেসবুক আর ব্লগের মধ্যে পার্থক্য আছে। কয়েক লাইনের স্ট্যাটাস মার্কা পোষ্ট, কিংবা শুধুমাত্র দু‘একটা ছবি দিয়ে দয়া করে পোষ্ট করবেন না। ভালো মন্দ কিছু লিখুন। এ‘ধরনের কিছু যদি করতেই হয়, ফেসবুকে গমন করুন। এটার কারনেও একটা ভালো লেখা প্রথম পাতা থেকে সরে যায়। শুধু শুধু অন্য ব্লগার এবং অতিথি পাঠকদেরকে কেন বন্চিত করেন?
৩। অটো রিফ্রেশ: এটা এখনও দেখি নাই, তবে অচিরেই দেখা যাবে। অত্যন্ত বিরক্তিকর একটা ব্যাপার। একটা আজাইরা পোষ্ট হাজার হাজার বার পঠিত হয়ে আলোচিত পাতায় চলে আসে। অনেক সময় বুঝলেও কিছু বলা যায় না, কিংবা বললেও লাভ হয় না। কারন, ওই যে বললাম…...আমাদের, সাধারন ব্লগারদের কথার গুরুত্ব কতটুকুইবা আছে!
৪। মন্তব্যে পর্ণো কিংবা বাজে ছবি আপলোড: এটাও এখনও শুরু হয়নি, তবে আমি নিশ্চিত…..হবে। এটা বন্ধ করার একটাই উপায় আছে। সেটা হলো, ব্লগে রেজিষ্ট্রেশানের সাথে সাথেই কাউকে মন্তব্যে ছবি আপলোড করার অনুমতি না দেয়া। কিছুদিন পর্যবেক্ষণে রাখা উচিত নতুনদেরকে। আর অনুমতি দেয়ার আগে তাদের ব্লগীয় মিথস্ক্রিয়া ভালোভাবে বিশ্লেষণ করে দেখা উচিত। আমি নিশ্চিত করে বলছি, কেউ নিজের ভুল বুঝতে পেরে অনুতপ্ত হয়ে ব্লগকে মুক্ত করে দেয় নাই। বিস্তারিততে যাচ্ছি না, তবে জেনে রাখুন, ব্লগীয় কার্যকলাপে কঠোর নজরদারী করা হবে। সুতরাং খেয়াল রাখা জরুরী, আমরা যেন কারো জন্য কোন সুযোগ তৈরী না করি। এ‘ধরনের ঘটনা আত্মঘাতী হয়ে উঠতে পারে।
প্রথম তিনটা পয়েন্টের ক্ষেত্রে কতৃপক্ষ সংশ্লিষ্ট ব্লগারকে সাবধান করতে পারেন এবং ঘটনার পুনরাবৃত্তি ঘটলে প্রথম পাতার এক্সেস কিছুদিনের জন্য বন্ধ রাখতে পারেন। নতুন ব্লগারগণ না জানার ফলে অনেককিছু করে ফেলেন, তাই উনাদেরকে ব্যাপারটা বুঝিয়ে বলা যায়, কিন্তু দুঃখ হয়, যখন দেখি পুরাতন ব্লগারদেরকেও এইসব কাজ করতে।
আমার এই পোষ্টের উদ্দেশ্য কাউকে আঘাত করা নয়। কারো সেরকম মনে হলে আমি আন্তরিকভাবে দুঃখিত। এটা আমাদেরই একটা প্ল্যাটফর্ম। কাজেই এটার দেখাশোনা করা আমাদেরই দায়িত্ব। এখানে শুধু আমরা আমরাই না, প্রচুর অতিথি পাঠকও আসেন। উনাদের কাছেও আমাদের একটা ভালো ইমেজ তুলে ধরতে হবে। একটা লেখা তৈরী করতে কিংবা মৌলিক লেখা লিখতে অনেক কাঠ-খড় পোড়াতে হয়। কেউই পছন্দ করবে না, কিছু ব্লগারের কান্ডজ্ঞানহীন কার্যকলাপের কারনে সেই লেখা প্রথম পাতা থেকে দ্রুত সরে যাক।
অনেক ত্যাগ-তিতিক্ষার পরে আমরা আমাদের ব্লগকে আবার ফিরে পেয়েছি। আসুন, একে সবাই মিলে যথাযথভাবে পরিচর্যা করি। ব্লগারগন সবাই অত্যন্ত জ্ঞানী, সচেতন। কাজেই এর চেয়ে বেশী কিছু বলার প্রয়োজন মনে হয় নাই।
সামহোয়্যার ইন ব্লগের খ্যাতি ছড়িয়ে পড়ুক বিশ্বের প্রতিটা বাংলা ভাষাভাষীর হৃদয়ে; দিন শেষে এটাই তো আমাদের সবার কামনা, নাকি ভুল কিছু বললাম!!

ছবি: গুগলের সৌজন্যে।
সর্বশেষ এডিট : ২৭ শে অক্টোবর, ২০১৯ দুপুর ১:৩৪