somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

দেবযানির বস্ত্রহরণ আর আমাদের উত্তাপ

১৭ ই ডিসেম্বর, ২০১৩ রাত ৮:৩৫
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :


কেন হল সুন্দরী দেবযানির বস্ত্রহরণ? কী এমন ছিল সুন্দরী দেবযানির কাছে যে তাঁকে নগ্ন করে পরীক্ষা করতে হল? গৃহপরিচারিকাকে বেতন কম দেওয়ার কারণে যে মামলা তার বিরুদ্ধে তার চেয়ে হাস্যকর আর কী হতে পারে? সুন্দরী দেবযানি সঙ্গে করে তো কোনো পিস্তল বা অস্ত্র রাখেননি। তবে ভারত যুক্তরাষ্ট্রের সম্পর্কের যে অবনতি তা এই দেবযানি মামলাতেই পরিস্কার।
বাংলাদেশের রাজনীতির উত্তাপ যে ভারত ও যুক্তরাষ্ট্রকে তাতাচ্ছে তা আর না বললেও চলছে। আমেরিকা কর্তৃক সুন্দরী দেবযানির বস্ত্রহরণ বাংলাদেশ প্রশ্নে ভারত ও যুক্তরাষ্ট্রের সম্পর্কের এক বাস্তব রূপ।
নিউইয়র্কের ভারতীয় কনস্যুলেটর ডেপুটি কনসাল জেনারেল দেবযানির বাবা উত্তম খোবরাগাড়ে দাবি করেছেন যে তাঁর মেয়েকে কূটনৈতিক সম্পর্কের ‘বলির পাঁঠা’ বানানো হয়েছে। দেবযানিকে দেশে ফিরিয়ে আনার জন্য উত্তম খোবরাগাড়ে কংগ্রেস সভানেত্রী সোনিয়া গান্ধীর হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।উত্তম খোবরাগাড়ে বলেছেন, সরকার তাঁর মেয়েকে যুক্তরাষ্ট্রে পাঠিয়েছে। দুই দেশের মধ্যকার রাজনৈতিক পরিস্থিতির কারণে তাঁর মেয়েকে বলির পাঁঠা বানানো হয়েছে।
নিউইয়র্কে নিযুক্ত ভারতীয় কূটনীতিক দেবযানি খোবরাগাড়েকে (৩৯) গত বৃহস্পতিবার গ্রেপ্তার করা হয়। তাঁর বিরুদ্ধে অভিযোগ, তিনি একজন গৃহকর্মীকে ভারত থেকে যুক্তরাষ্ট্রে নিয়ে যাওয়ার জন্য যুক্তরাষ্ট্রকে যেসব তথ্য দিয়েছেন, তাতে মিথ্যাচার করেছেন। যুক্তরাষ্ট্রের পুলিশ জানিয়েছে, দেবযানি ওই গৃহকর্মীকে যে মজুরি দিচ্ছেন, তা যুক্তরাষ্ট্রের আইনানুযায়ী সর্বনিম্ন মজুরির চেয়ে কম। দেশটিতে সর্বনিম্ন মজুরি চার ডলার প্রতি ঘণ্টা।
যুক্তরাষ্ট্র পুলিশ দেবযানিকে কারাগারে বিবস্ত্র করে তল্লাশি করেছে, মাদকাসক্তদের সঙ্গে একই কক্ষে আটক করে রেখেছে এবং তাঁর ডিএনএ নমুনাও সংগ্রহ করেছে।
দেবযানির ঘটনায় পুরো ভারত এখন তোলপাড়। পররাষ্ট্রমন্ত্রী সালমান খুরশিদ দৌড়ে বেড়াচ্ছেন। ভারতের সরকারি-বিরোধী সবাই একজোট। যুক্তরাষ্ট্রকে উচিৎ শিক্ষা দিতে হবে। দেবযানিকে গ্রেপ্তারের প্রতিবাদে কংগ্রেসের সহসভাপতি রাহুল গান্ধী, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী সুশীলকুমার সিন্ধে ও নরেন্দ্র মোদি যুক্তরাষ্ট্রের কংগ্রেশানাল ডেলিগেশনের সঙ্গে বৈঠক বাতিল করেছেন।
প্রশ্ন উঠছে ভারত ও যুক্তরাষ্ট্রের এই সম্পর্কের অবনতি কী নিয়ে? বাংলাদেশ।
ইদানিং জাতিসংঘ, যুক্তরাজ্য, যুক্তরাষ্ট্রসহ সব মানবাধিকার কর্মীরা কাদের মোল্লার ফাঁসির রায়ে যেন কাঁদতে বসেছেন। পাকিস্তান তো পারলে বাংলাদেশ আক্রমণ করেই বসে। ফাঁসি ঠেকাতে কতো তোড়জোড় দেখলাম। কিন্তু ভারত কোনো চাপ দেয়নি বলেই কী ভারতের দেবযানিকে দিয়ে শিক্ষা দিতে চাইছে যুক্তরাষ্ট্র।
দেবযানি বলছেন অন্যকথা। মার্কিন নীতির প্রতিবাদ করায় তার এই দুর্দশা। ভারতীয় কূটনীতিক দেবযানী খোবরাগাড়ের গ্রেফতারকে কেন্দ্র করে দিল্লি-ওয়াশিংটন বিরোধ চরমে পৌঁছেছে।ভারতের প্রতিবাদ সত্ত্বেও মার্কিন স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বলছে, কূটনৈতিক সম্পর্ক নিয়ে ভিয়েনা কনভেনশনে যা বলা আছে তার আওতায় দেবযানী পড়েন না। ভিয়েনা কনভেনশনে বলা হয়েছে, কোনও বিদেশিকে আটক বা গ্রেফতার করলে একটুও দেরি না করে তা তার দূতাবাস বা কনস্যুলেটকে জানাতে হবে। আটক বা গ্রেফতার হওয়া ব্যক্তির অনুরোধ অনুযায়ী, পুলিশ ফ্যাক্সের মাধ্যমে দূতাবাসকে জানিয়ে দিতে পারে। সম্ভব হলে গ্রেফতারের কারণ, সময় উল্লেখ করতে পারে পুলিশ। ভারতের ডেপুটি কনসাল জেনারেল দেবযানী খোবরাগাড়ের গ্রেফতারের সময় আন্তর্জাতিক প্রোটোকল মানা হয়নি বলে অভিযোগ করেছে দিল্লি।
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় দাবি করেছে, আইন ভাঙার জন্যই দেবযানীকে গ্রেফতার করা হয়েছিল। এদিকে নয়াদিল্লি দাবি করছে, অপমান না করেও তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া যেত।
দেবযানির ঘটনায় সোশ্যাল মিডিয়াগুলো সোচ্চার। কেউ বলছেন-আমাদের ভাইয়ের যুদ্ধে মাথা গলাতে আসা দুই চোগলখোর মোড়লের লড়াই নেহাৎ মন্দ নয়। কেউ বলছেন ভারত এবার উচিৎ শিক্ষা দেবে। কেউ বলে ভারতের শিক্ষা হয়েছে। ভিযোগ গুলো মিথ্যা কিনা আগে সেটা ভারত প্রমাণ করুন। চোরের মার বড় গলা! ভারত সেটারই প্রমাণ দিচ্ছে।মানবাধিকার নিয়েও প্রশ্ন উঠছে। ফেলানিরা যখন কাঁটাতারে ঝোলে তখন কোথায়থাকে মানবাধিকার বোধ।নাকি শুধু দেবযানীর বস্ত্রহরণে মানবাধিকার লঙ্ঘন হয়?
তবে আর যাই হোক দেবযানির বস্ত্রহরণের ঘটনা ইঙ্গিত দিচ্ছে ভারত-যুক্তরাষ্ট্রের সম্পর্ক এতোটাই তিক্ত যে, পারলে যে কেউ যে কারও কাপড় খুলে নেবে। আর এই বিরোধটা যে বাংলাদেশের তৈরি কাপড় নিয়ে তার সম্ভাবনা কি একেবারে কম? http://goo.gl/SqQ0V0
৭টি মন্তব্য ৪টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

অবশেষে মায়ের বাড়ি ফেরা ও তুরিনের ভুয়া ডিগ্রি কাহিনী—এক আলোচিত আইনজীবীর পতনের গল্প

লিখেছেন নতুন নকিব, ০৬ ই মে, ২০২৫ সকাল ৯:৪৭

অবশেষে মায়ের বাড়ি ফেরা ও তুরিনের ভুয়া ডিগ্রি কাহিনী—এক আলোচিত আইনজীবীর পতনের গল্প

ছবি যুগান্তর অনলাইন থেকে সংগৃহিত।

আলোচিত আইনজীবী ও আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের সাবেক প্রসিকিউটর ব্যারিস্টার তুরিন আফরোজ বিতর্ক বর্তমানে... ...বাকিটুকু পড়ুন

রহস্যঃ কী হলেছিলো মেরি সেলেস্ট জাহাজটির সাথে?

লিখেছেন অপু তানভীর, ০৬ ই মে, ২০২৫ সকাল ১০:৫০



১৮৭২ সালের নভেম্বর মাসের এক শীতের সকালবেলা। সমুদ্রপথে যাত্রা পথে ব্রিটিশ ব্রিগেন্টিন জাহাজ ‘দেই গ্রাটিয়া’র নাবিকরা একটা অদ্ভুত ব্যাপার খেয়াল করল। তারা তাদের সামনে একটা জাহাজকে এলোমেলো ভাবে চলতে... ...বাকিটুকু পড়ুন

শাহ সাহেবের ডায়রি ।।খালেদা জিয়া এখন ঢাকায়

লিখেছেন শাহ আজিজ, ০৬ ই মে, ২০২৫ সকাল ১১:৪৫









দীর্ঘ চার মাস পর যুক্তরাজ্যের লন্ডন থেকে আজ মঙ্গলবার দেশে ফিরেছেন বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া। তাঁর সঙ্গে দেশে আছেন দুই পুত্রবধূ জুবাইদা রহমান ও সৈয়দা... ...বাকিটুকু পড়ুন

মানবিক করিডোর: আশীর্বাদ না অভিশাপ?

লিখেছেন নতুন নকিব, ০৬ ই মে, ২০২৫ বিকাল ৩:৪১

মানবিক করিডোর: আশীর্বাদ না অভিশাপ?

ছবি, এআই দ্বারা তৈরিকৃত।

রাখাইন রাজ্যের রোহিঙ্গা এবং অন্যান্য সংখ্যালঘুদের জন্য মিয়ানমারের অভ্যন্তরে একটি নিরাপদ ত্রাণপথ বা "মানবিক করিডোর" স্থাপন নিয়ে সাম্প্রতিক কূটনৈতিক আলোচনা নতুন মাত্রা... ...বাকিটুকু পড়ুন

গেলো বসন্ত এলো বৈশাখ এলো নতুন বাংলা বছর ১৪৩২

লিখেছেন শায়মা, ০৬ ই মে, ২০২৫ বিকাল ৪:২০


রঙে রঙে রঙিন বসন্ত ফুরোতে না ফুরোতেই চলে এলো বাঙ্গালীর প্রানের উৎসব নতুন বছরকে বরণ করে নেওয়া পহেলা বৈশাখ। সেই উৎসব ঘিরে কেটে গেলো বেশ কিছুদিন। ব্যস্ততায় কাটলো সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের... ...বাকিটুকু পড়ুন

×