আজকের সকালটা আমার জন্য এক অন্যরকম সকাল। সম্পূর্ন আলাদা।।
সদরঘাট গিয়েছিলাম লঞ্চে কেবিন বুকিং দেয়ার জন্য। বাসে করে ক্যাম্পাসে ফিরতে শাহবাগ মোড় আসতেই ঝুম বৃস্টি। দৌড়ে গিয়ে এক ফুলের দোকানে দাড়াতেই দোকানি জিজ্ঞেস করলেন,
# মামা কি লাগবে?? বেলী ফুলের মালা নিবেন?--
# বললাম , না মামা, আপাতত মালা দেওয়ার মত কেউ নেই। তবে একটা পলি প্যাক দ্যান বৃস্টিতে ভিজব, মোবাইল ফোন আর মানি ব্যাগটা রাখার জন্য।।
পলি প্যাক নিয়ে রাস্তায় হাটতে লাগলাম, বৃস্টি আমাকে আস্তে আস্তে ভিজিয়ে দিচ্ছে। প্রথমেই রাজুর সাথে দেখা, হলের ছোট ভাই, রিক্সা করে যাচ্ছে, দেখেই ডাক দিল- "বাপ্পি ভাই ভিজেন ক্যান??"
-- "ইচ্ছে করেই ভিজতেছি।"
লাইব্রেরীর সামনে দিয়ে কলাভবনকে পাশে ফেলে আমি গিয়ে হাজির মল চত্বরে।লাইব্রেরীর বারান্দায় আটকে পড়া কিছু মানুষ নির্বাক তাকিয়ে আছে। তখনো তুমুল বৃস্টি। ভাবলাম আরো একটু হাটি। ভিসির বাংলোর সামনের চত্বরের দিকে যাই। রিক্সা ওয়ালারা আজকাল সহজ়ে কোথাও যেতে চায় না। কিন্তু আজ বৃস্টির মধ্যে ২ জন রিক্সাওয়ালা এসে জিজ্ঞেস করলেন ," মামা কোথায় যাবেন?" আমি ভিজে যাচ্ছি তাই হয়ত তাদের মধ্যে একটু বাড়তি সহানুভূতি কাজ করছে।
ভিসি চত্বর চত্বরে গিয়ে একটু বসলাম-
আর একজন রিক্সাওয়ালা যাচ্ছিল পাশ থেকে, একা বসে আছি দেখে শুনতে চাইল- "মামা কি রাগ করে ভিজতেছেন"??- "না মামা, ভাল লাগছে তাই ভিজতেছি"। আজকাল প্রেমিক প্রেমিকারা রাগ করেলে বৃস্টিতে ভিজে।। রাগ কমে যায়।
কিছু রিক্সার যাত্রীরা দেখলাম আমি বসে আছি দেখে উকি মেরে তাকাচ্ছে, মেয়ে যাত্রীরা একটু কেমন অবাক হচ্ছে, একটা মেয়ে আবার দেখলাম একটু মুচকি হাসলও।।
কিছুক্ষন পর বৃস্টি থামল, আমি হলে ফিরে আসলাম- অদ্ভুত এক অভিজ্ঞতা, বৃস্টির কারনে মানুষের মধ্যে এক অন্যরকম যোগাযোগের সূত্র তৈরী হয়।। প্রকৃতির প্রভাবে মানুষ গতানুগতিক আচরন থেকে বেরিয়ে আসে। আসলেই অদ্ভুত এই পৃথিবী।