ক্রিকেট দেখা হয় না একদম। কোন খবরই রাখি না ক্রিকেটের। কারণটা হতে পারে, একা একা খেলা দেখায় আরাম নাই। ক্লাস সেভেনে, যেবার পাকিস্তানের সাথে বাংলাদেশ জিতে গেল, সেবারের কথা মনে আছে। বাসার সবাই মিলে খেলা দেখছিলাম। এশার নামায পড়ে রীতিমত হাত তুলে দোআ, আল্লাহ বাংলাদেশকে জিতায় দাও! উত্তেজনা, টীম স্পিরিট আমাকে খুব স্পর্শ করে। ওই দিনটার কথা ভাবলে এখনও মনে হয় হার্ট পজিশন বদলে কয়েকটা ডিগবাজী দিয়ে ফেলে। পরের দিন ক্লাসে গিয়ে মুখ ছুটিয়ে ক্রিকেটালোচনা, কিচ্ছু পড়াশোনা হল না। মাঝখান দিয়ে টিফিন টাইমে বাংলাদেশের পতাকা নিয়ে মাঠে বের হয়ে গেলাম আমরা, আনন্দ মিছিলে। রং ছিটাতে পারি নাই, নিষেধ ছিল স্কুলে, কিন্তু পানি ঢালাঢালি করলাম তীব্র আনন্দে। কি দিন!
ক্রিকেটারদের নাম সহ পুরা প্রোফাইল ঠোঁটস্থ ছিল তখন। এখানে আসার পরে ক্রিকেটের আনন্দ, দু:খ ভাগা ভাগি করার মত কেউ নেই বলেই উৎসাহ মরে গেল। এখানে সেখানে বাংলাদেশের বিজয়ের খবর ঠিকই চলে আসে মুখে মুখে, তখন উল্লসিত হই। গর্ব হয়। নস্টালজিয়া হয়। এই তো।
কালকের খেলা দেখি নি। কিন্তু রাত থেকে খেলার খবর ফলো করছিলাম। ব্লগে সবার চাপা উত্তেজনা আমাকে অনেক দিন আগের ওই সময়টায় নিয়ে গেল, পাকিস্তানের সাথে খেলার সেই তীব্র উত্তেজনামূলক সময়ে। এই অনুভূতিটা কি যে চমৎকার একটা অনুভূতি, কায়োমনো বাক্যের একান্ত প্রার্থনা, রক্তে রগবগে উত্তেজনা। বাংলাদেশের বিজয়ের পরে নিজেকে বড় বিচ্ছিন্ন দ্্বীপের মত মনে হল। কোথায় গেল সেই রক্তে ক্রিকেট ধারণ করার দিনগুলো? হৃদযন্ত্র ঠিকই জায়গা বদল করছে, বড্ড বেয়ারা হয়ে লাফালাফি করছে। বাংলাদেশ টীম জিতে নি তো রে, আমি জিতেছি, আমি! নইলে এত আনন্দ হবে কেন?
আমার বাংলা মায়ের মুখের হাসিটা এত সুন্দর কেন?
সর্বশেষ এডিট : ১৮ ই মার্চ, ২০০৭ সকাল ৭:৫৬