সাথে শীতের আর ঈদের ছুটি।
আমাদের তখন সবার মনেই অনেক আনন্দ কারন শীত আসতেছে সবাই নানু বাসায় যাবে কেউ দাদু বাসায় যাবে।সবার অনেক পরিকল্পনা।
ফূর্তি যেন আর মনে ধরে না এমন অবস্থা।এর মধ্যে আমার খালামুনি তার ছেলে মেয়েদের নিয়ে বাংলাদেশে আসছে।ওদেরও বড়সড় ছুটি পরছে।
আমার মন আরো ফুর ফুরা হয়ে গেল।জটিল ঈদ হবে।আর তখন শীতে ছিল বাণিজ্য মেলা।
উফ! কি যে আনন্দ কি যে ফূর্তি
খুব মজার সময় ছিল তখন।যাই হোক আমাদের বান্দরামী চালু ছিল বাসায় কারন পরীক্ষা শেষ সবাই বাইরে যাইতে পারতাম না।তাই বাসায়ই .......
তো এর মাধ্যে একদিন সকালে ঘুম থেকে উঠেই শুনি যে বাবা আমার খালুকে বলতেছে যে আমরা আর এখানে থাকবো না।খালুদের সাথে সৌদি চলে যবে।তো আমার তো আরো মজা লাগল যে আমরা সৌদি চলে যাব।নতুন জায়গা নতুন বন্ধু আর আমার ভাই বোনরা তো আছেই।জটিল মজা।
কিন্তু পরক্ষণেই শুনি বাবা ঘুড়তে যাবে আমরা কেউ যাবো না।মনটা খারাপ হয়ে গেল।
তখনই আমার মাথায় ১ বুদ্ধি খেলল।আমি সকাল ১০টায় স্কুল গেলাম সাথে আমার বোনও গেল।
সবার সাথে পরিচয় করায় দেবার পর আমার মন যতটা পারি খারাপ করলাম।সবাইতো খুব মজা করছে কিন্তু অবাক হচ্ছে আমাকে চুপচাপ দেখে।
তো সবাই জিজ্ঞেস করল'কিরে তোর কি হয়েছে?'
যে আমি সবার চেয়ে বেশি চিল্লচিল্লি করি।আমার জ্বালায় কেউ শান্তিতে চিল্লাফাল্লা করতে পারে না সে এত চুপচাপ ব্যাপারটা সবার কাছে সন্দেহজনক মনে হল।
আমি বললাম'আমার মন খুবই খারাপ কারন আমাদের বাংলাদেশ ছেড়ে চলে যেতে হবে।'
এ কথা শুনে সবাই চুপ।আমিও থ কারন এ কথা শুনে সবার মধ্যে কান্নাকাটির রোল পরে গেল।
যে মেয়ে আমাকে সহ্য করত না সেও কাদতেছে।
আমি তো মনে মনে অস্থির কারন যেকোনো মূহূর্তে ঘন্টা পড়বে আর মেম আসবে খাতা দেখাতে।সে যদি জানে যে এটা চাপা ছাড়া কিছু না তাইলে আমার কান তার হাত হতে কেউ ছাড়তে পারবে না।
তো যথাসময়ে ঘন্টা পরে গেল মেম চলে এল।কিন্তু অনেকের মধ্যে কান্নার রেশ রয়ে গেল।মেম যখন খাতা দিচ্ছেন তখন দেখেন কিছু মেয়ে কাদছে।মেম মনে করছে হয়ত রেজাল্ট খারাপ করছে তার জন্য কাদতেছে।কিন্তু ওদের মার্ক তেমন খারাপ না তাইলে কি হল?
মেম আর ধৈর্য রাখতে না পেরে জিজ্ঞেস করল'কি হয়েছে?'
১জন আমাকে দেখিয়ে বলল'মেম ও চলে যাবে।'আমি মনে করেছিলাম মেম মনে হয় আমার কান এখনই ধরবে আজ আমাকে খোদা ছাড়া আর কেউ বাচাতে পারবে না।আমার কান আজ শেষ।
কিন্তু অবাক হলাম মেম বলতেছে'তোমাদের ফ্লাইট কবে?'
আমি তো যতটা পারি মন খারাপ করে বলতেছি'মেম আমি জানি না তবে রেজাল্ট দেয়ার পর বোধহয় সবকিছু গুছানো শুরু হবে।'
তার পরদিন ছিল আমাদের শেষ ক্লাশ তাই মেম সবাইকে বলল আমাকে ফেয়ারওয়েল দেয়ার জন্য।
আমিতো অবাক একি আমার চাপাতো পুরা হিট সাথে আমিও।
তার পরদিন আমি স্কুলে গিয়ে অবাক আমার জন্য ক্লাশ সুন্দর করে সাজানো হয়েছে।অনেকে আমার জন্য চিঠি লিখে এনেছে।অনেকে চকলেট,কেউতো আমার প্রিয় খেলোওয়ারের ছবি সংগ্রহ করে এনেছে কেউ লিখেছে কবিতা।আমার চোখে পানি এসে গেছে..............
সর্বশেষ এডিট : ১০ ই ডিসেম্বর, ২০১০ সন্ধ্যা ৭:০২