somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

বড় গল্পঃফিল্ডে গিয়ে প্রেমে পরার গল্প পর্ব ৪(শেষ পর্ব)

১৮ ই মার্চ, ২০১৬ রাত ১২:৫৬
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
পর্ব ১
পর্ব ২
পর্ব ৩


কাল সারারাত ইরাকে নিয়ে ভেবেছি।নিজের কাছেই অদ্ভত লাগছে ব্যাপারটা।যে মেয়েটাকে আমার ফিল্ডে আসার আগেও পছন্দ হত না, সারারাত আমি তার কথা ভাবছি; তার মুখটা বার বার ভেসে উঠছে চোখের সামনে।কি হচ্ছে এসব?দেখতে দেখতে ভোর হয়ে গেলো,রাতটা কিভাবে কেটে গেলো বুঝতে এ পারলাম না।আচ্ছা যদি আমি ইরাকে বলি কথা গুলো তাহলে ও কি করবে?রাগ করবে কি?কে জানে!না থাক বলার দরকার নেই ওকে,তাহলেও তো বন্ধু হয়ে সাথে থাকতে পারবো।


"শালা তুই ঘুমাসনি?"- মানবের কথায় সম্বিৎ ফিরল আমার।

---"এই একটু আগে ঘুমটা ভেঙ্গে গেছে রে তাই একটু ব্যালকনিতে দাড়িয়ে ছিলাম রে।"

"আমাকে মিথ্যা বলিস না অর্কীশ।তোর চোখ মুখ দেখে বোঝা যাচ্ছে যে ঘুমাসনি। কি হয়েছে ভাই?"

---"তেমন কিছু না।ছার।"

"তুই ঘুমা।এখন ৬ টা বাজে আমি তোকে সাড়ে ৯টায় ডেকে দেব।"

আমি শুয়ে পরলাম।মানব সাড়ে ৯ টায় ডেকে দিল।ওর স্নান হয়ে গেছে,ও খেতে চলে গেলো হল এ।আমিও স্নান করে খেতে গেলাম।দেখলাম ইরার খওয়া হয়ে গেছে।ও টেবিল থেকে উঠছে।আমাকে দেখে বলল-

"আয় তাড়াতাড়ি,আজকেও আবার ড্যামে যাব।কিছু জিনিস বুঝিনি ঠিক কালকে।"

---"হুম।আসছি খেয়ে।"

ড্যামে সারাদিন কাজ করে এই ৫ টা নাগাদ রিসর্টে ফিরলাম আমরা।ফ্রেশ হয়ে এসে রেজুমি লিখতে গেলাম লনে।ইরা আগেই ছিল সেখানে।রেজুমি লেখার ফাঁকে ইরা হঠাৎ বলল

"এত ক্লান্ত দেখাচ্ছে কেন তোকে?আজকে ড্যামের ওখানে কাজ করার সময়ও লক্ষ্য করলাম।কি হয়েছে তোর?ঘুমাসনি কাল রাতে?"

---"তেমন কিছু না। শরীরটা একটু ম্যাজ ম্যাজ করছে এই যা।"

রেসুমি লেখা শেষ করে আমরা হল এ গেলাম ক্লাস করতে। এদিকে ম্যাডাম আবার আমার পাশে বসেছেন আজকে।
ক্লাসের পর ডিনার করে রুমে চলে আসলাম।

দেখতে দেখতে ফিল্ড শেষ হয়ে এল।গত ১২ দিনে ইরাকে নিয়ে আর আমার কোন কনফিউশন নেই।এখন আমি জানি আমি এই পাগলীটাকে অনেক ভালোবাসি।মানবকে একটু আগে সব খুলে বলেছি।প্রথমে একটু ফান করল মানব।তারপর বলল

"দোস্ত তোর হাতে আর ১ দিন সময় আছে।কাল ফিল্ডের শেষ দিন।প্রপোজ করবি কাল।কাম্পাসে এরকম সুযোগ পাবি না।একা থাকবি ওর সাথে।চাপ নিস না।শুধু একটু রোম্যানটিক ভাবে প্রপোজ করবি।"

---"ঠিকই বলেছিস।"

মানব ঘুমিয়ে পরেছে। আমি ব্যালকনিতে বসে আমার পাগলীটার কথা ভাবছি।তবে খুব চাপে নেই।কারন আমি এই কদিনে
বুঝেছি পাগলীটাও আমাকে অনেক ভালোবাসে।এই যে ৪ দিন আগে যখন আমার পায়ের পাতায় একটু কেটে গেলো পাহাড়ে উঠতে গিয়ে,পাগলীটা কি না করল তখন।না ইরা ও ভালোবাসে আমাকে।আমি ফিল করতে পারছি।
আমার পাগলীটা এখন ঘুমিয়ে কি আমায় দেখছে স্বপ্নে?এমএলটিআর এর 'টেক মি টু ইয়োর হার্ট' গানটা শুনছি আমি বার বার করে আর গুন গুন করছি

---"টেক মি টু ইয়োর হার্ট/টেক মি টু ইয়োর সোল/গিভ মি ইয়োর হ্যান্ড বিফোর আই অ্যাম ওল্ড/সো মি হোয়াট লাভ ইস/হ্যাভেন্ট গট এ ক্লু/সো মি দ্যাট ওয়ান্ডার্স ক্যান বি ট্রু।"

কখন ঘুমিয়ে পরেছিলাম মনে নেই।১০ টার সময় ঘুম ভাঙল।ইরাকে কল দিলাম

---"তুই খেতে চলে গেছিস?"

"হুম।তুই তাড়াতাড়ি আয়।"

---"আসছি।"

খাওয়া হয়ে গেছে।আমি আর ইরা রাস্তায় নামলাম রিসর্ট থেকে।গন্তব্য ভান্ডের পাহাড়। আমি ইরাকে বললাম

---"আজকে ছার তো। সব কাজই তো শেষ আমাদের।আজকে আর ভান্ডের পাহাড়ে যাব না।চল ড্যামের একটু আগে একটা লেকে আছে,ওখানে যাব।বোটিং করবো। "

"ঠিক আছে"-বলে ইরা আমার চোখের দিকে তাকিয়ে একটু হাসে।সেই মায়াবী হাসি।

মেয়ে তোমার ওই হাসি আমাকে পাগল করে দেয়।মেয়ে তোমাকে যে আমি চোখে হারাতে শুরু করেছি।

এই এসে পৌঁছালাম লেকে।একটা বোট নিতে হবে।লাইনে দাঁড়ালাম আমি,টিকিট কাটতে হবে।ইরা ফটো তুলছে ওর ক্যামেরাই।

---"মামা ৪ টে টিকিট দিন?" বলে আমি টাকা দিলাম।টিকিট নিয়ে ইরার কাছে গেলাম।

---"চলুন ম্যাডম।"

"হুম চলো"

আমরা বোটে উঠার পর যখন ও দেখল আর কেউ উঠছে না বোটটায় আর আমি প্যাডেলিং করা শুরু করেছি তখন ও বেশ অবাক হয়ে বলল-

"কি হল ব্যাপারটা?"

"কিছু না।"---বলে আমি একটু হাসলাম ওর দিকে তাকিয়ে।পাগলীটাও হেসে দিল।মনে হয় বুঝে গেছে ও!

লেকের একটা নিরিবিলি শান্ত জায়গা দেখে বোট থামালাম।তারপর হাঁটু গেঁড়ে বসে পরলাম আমি;বললাম

---" 'টেক মি টু ইয়োর হার্ট/
টেক মি টু ইয়োর সোল/
গিভ মি ইয়োর হ্যান্ড বিফোর আই অ্যাম ওল্ড/
সো মি হোয়াট লাভ ইস/
হ্যাভেন্ট গট এ ক্লু/
সো মি দ্যাট ওয়ান্ডার্স ক্যান বি ট্রু।'

আমি তোমাকে সারাজীবন পাশে চাই।থাকবে?"

ইরা ব্লাস করছে।ও বলল-

"হ্যাঁ থাকব।"

দুজনেরই হার্ট-বিট বেরে গেছেছিল।
এখন অনেক শান্তি লাগছে।ইরা আমার কাধে মাথা রেখে বসে আছে।


# দি এন্ড #

পুনশ্চঃ ফিল্ডটা ভালোই কাটল আমার!! :P
সর্বশেষ এডিট : ১৮ ই মার্চ, ২০১৬ সন্ধ্যা ৭:৪৭
২টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

পার্বত্য চট্টগ্রাম- মিয়ানমার-মিজোরাম ও মনিপুর রাজ্য মিলে খ্রিস্টান রাষ্ট্র গঠনের চক্রান্ত চলছে?

লিখেছেন সৈয়দ কুতুব, ০৫ ই নভেম্বর, ২০২৪ সকাল ৯:০১


মিজোরামের মুখ্যমন্ত্রী লালদুহোমা সেপ্টেম্বর মাসে আমেরিকা ভ্রমণ করেছেন । সেখানে তিনি ইন্ডিয়ানা তে বক্তব্য প্রদান কালে ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠী chin-kuki-zo দের জন্য আলাদা রাষ্ট্র গঠনে আমেরিকার সাহায্য চেয়েছেন।... ...বাকিটুকু পড়ুন

হাসান মাহমুদ গর্ত থেকে বের হয়েছে

লিখেছেন শিশির খান ১৪, ০৫ ই নভেম্বর, ২০২৪ সকাল ১১:১২


যুক্তরাষ্ট্রের একটি বাংলা টেলিভিশন চ্যানেল হাসান মাহমুদের সাক্ষাৎকার প্রচার করেছে। আমি ভাবতেও পারি নাই উনি এতো তারাতারি গর্ত থেকে বের হয়ে আসবে। এই লোকের কথা শুনলে আমার গায়ের লোম... ...বাকিটুকু পড়ুন

দারিদ্রতা দূরীকরণে যাকাতের তাৎপর্য কতটুকু?

লিখেছেন রাজীব নুর, ০৫ ই নভেম্বর, ২০২৪ সকাল ১১:১৮



দরিদ্র দূরীকরণে যাকাতের কোনো ভূমিকা নেই।
যাকাত দিয়ে দারিদ্রতা দূর করা যায় না। যাকাত বহু বছর আগের সিস্টেম। এই সিস্টেম আজকের আধুনিক যুগে কাজ করবে না। বিশ্ব অনেক... ...বাকিটুকু পড়ুন

শেখস্তান.....

লিখেছেন জুল ভার্ন, ০৫ ই নভেম্বর, ২০২৪ দুপুর ১২:১৫

শেখস্তান.....

বহু বছর পর সম্প্রতি ঢাকা-পিরোজপু সড়ক পথে যাতায়াত করেছিলাম। গোপালগঞ্জ- টুংগীপাড়া এবং সংলগ্ন উপজেলা/ থানা- কোটালিপাড়া, কাশিয়ানী, মকসুদপুর অতিক্রম করার সময় সড়কের দুইপাশে শুধু শেখ পরিবারের নামে বিভিন্ন স্থাপনা দেখে... ...বাকিটুকু পড়ুন

সেকালের বিয়ের খাওয়া

লিখেছেন প্রামানিক, ০৫ ই নভেম্বর, ২০২৪ দুপুর ২:৪৮


শহীদুল ইসলাম প্রামানিক

১৯৬৮ সালের ঘটনা। বর আমার দূর সম্পর্কের ফুফাতো ভাই। নাম মোঃ মোফাত আলী। তার বিয়েটা শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত দেখার সৌভাগ্য হয়েছিল। বাবা ছিলেন সেই বিয়ের মাতব্বর।... ...বাকিটুকু পড়ুন

×