somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

বড় গল্পঃফিল্ডে গিয়ে প্রেমে পরার গল্প পর্ব ৩

১৭ ই মার্চ, ২০১৬ ভোর ৪:০৫
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
পর্ব ১
পর্ব ২



রিসর্টের লনে গিয়ে দেখলাম ইরা চলে এসেছে।আমকে দেখে বলল-

"চল যাওয়া যাক এবার।"

--"হুম চল।"

আমি আর ইরা রাস্তায় বেরলাম।একটু হেঁটে বড় রাস্তায় উঠলাম আমরা।ইরা বলল-

"অটো ডাক অর্কীশ।"

--"হুম ডাকছি।"

একটা অটো ডাকলাম আমি।

"মাইথন ড্যাম যাব।"

অটোয়ালা বলল-

"৫০ টাকা লাগবে,রিজার্ভে যেতে হবে।"

আমি বলতে যাচ্ছিলাম ইরাকে অটোটে উঠতে কিন্তু ইরা আমাকে অবাক করে অটোয়ালাকে বলল-

"৩ কিলোমিটার যেতে ৫০ টাকা লাগবে?ইয়ার্কি হচ্ছে?"

অটোয়ালা দমে গিয়ে বলল-

"ঠিক আছে ৩০ টাকা দিয়েন।"

ইরা আমার দিকে তাকিয়ে বলল-

"ওঠ।"

বুঝলাম মেয়ের মাথা গরম হয়ে আছে।আমি চুপ-চাপ অটোতে উঠলাম কথা না বলে।১০ মিনটের অটো রাইডের পর আমরা ড্যামে পৌঁছালাম।

আমি ইরাকে বললাম

--"চল এবার রিভার-বেডে নামতে হবে।"

"হুম।"

--"দেখে নামিস ভালো খাড়া আছে কিন্তু।"

আমি আর ইরা আসতে আসতে নীচে নেমে আসলাম, একদম বরাকরের তীরে।

ইরা বলল-

"চল এবার কাজ শুরু করি।"

"হুম।"

ভাবতেও অবাক লাগছে নিজের কাছেই,যে ইরা এত কথা বলছে!যে মেয়েটা কথাই বলে না তার মুখে খই ফুটছে আজকে।নাকি আমিই আসতে আসতে মেয়েটার দিকে আকৃষ্ট হয়ে পরছি।

"অ্যাঁই অর্কীশ!ওই!"

--"হুম।"

"কি ভাবছিস এত?"

--"তেমন কিছু না। ছার;ওই রকটা দ্যাখ,মনে হচ্ছে অ্যাম্ফিবোলাইট নিস।"

"হুম তাইতো মনে হচ্ছে।"

আমি আর ইরা রক টাইপ পর্যবেক্ষণ করতে থাকি ভালো করে।


দেখতে দেখতে সময় চলে যাচ্ছে।ঘড়ির দিকে তাকিয়ে দেখি দেড়টা বেজে গেছে।খিদে পাচ্ছে খুব এবার।আমি ইরাকে বলি

--"বেসমেন্টে গ্রানিট নিস আর অ্যাম্ফিবোলাইট নিসই আছে রে।"

"হুম।এই দিকে আয়;আমি এখানে অগেন স্টাকচার খুঁজে পেয়েছি।"

--"সাম্পেলটা নিয়ে আসছি।"

আমি গ্রানিট নিস আর অ্যাম্ফিবোলাইট নিসের স্যাম্পল নিলাম নিজের আর ইরার জন্য, কারন হাতুড়ি দিয়ে রক ভাঙা ওর কাজ না তা সে যতই জানুক ও।ইরার কাছে গেলাম।হুম অগেনই তো।আরে ওটা কি ওদিকে!ফল্ট-প্লেন মনে হচ্ছে।

--"ওই ইরা ওদিকে তাকা।ফল্ট-প্লেন দেখা যাচ্ছে একটা।আর আমি একটু আগে যেদিকে কাজ করছিলাম সেদিকে ফোল্ড আছে একটা।"

"চল দেখাবি।"

আমি হাত-ঘড়ির দিকে আর একবার তাকালাম। ২টো বেজে গেছে।আমি ইরাকে বলি

--"হুম দেখাবো।আগে চল খেয়ে আসি, ২টো বেজে গেছে।"

"চল তাহলে।"

আমি আর ইরা আসতে আসতে উপরে উঠে আসি রিভার বেড থেকে।একটা খাবর দোকান দেখা যাচ্ছে বড় রাস্তার পাশে।আমি আর ইরা সেইদিকে যেতে থাকি।

"তোর কবিতা গুলো বেশ ভালো লাগে আমার।"

বলে ইরা হেসে ওঠে হঠাৎ করে।আমি অবাক হয়ে যাই।এই মেয়ে আবার ব্লগ পড়ে নাকি?আমি বলি

--" কোথায় পড়লি আমার কবিতা?আমি তো ইউনিভার্সিটির ম্যাগাজিনে কোন দিন লেখা দিইনি।"

"আমি তোর ব্লগ পড়ি গাধা কোথাকার।"

আমাকে গাধা বলল ও।আমার রাগ হওয়ার কথা কিন্তু রাগ হচ্ছে না,আমি ইরার হাসি দেখে নিজের অজান্তেই হেসে দিই।এই মেয়ের উপর রাগ করবো কি করে অমন সুন্দর ভাবে হাসলে।আমার সম্বিৎ ফিরল ইরার কথায়-

"এই অর্কীশ দোকান চলে এসেছে।"

--"হুম।বল কি কিনবি?প্যাকড ফুড ছাড়া তো কিছু পাওয়াও যাবে না এখানে।"

"কেক নে আর বিস্কুট নে তাহলে।"

--"হুম।"

আমি দোকানদারকে বলি

--"২ প্যাকেট বিস্কুট দিন আর কেক দিন ৪ টে আর এক প্যাকেট গোল্ড-ফ্লেক।"

জিনিস কিনে আবার আমরা আবার রিভার বেডের দিকে যাওয়া শুরু করি।আমি একটা সিগারেট ধরাই।ইরা কেক খেতে খেতে হাঁটছে।৩ টে মতো বাজে যখন আমরা আবার বরাকরের তীরে নামি।কাজ শেষ করে বড় রাস্তায় আসতে আসতে ৪টে৪০ বেজে যায় আমাদের।অটো ধরি আমরা।আমি ইরাকে বলি

--"রিসর্টে গিয়ে, ফ্রেশ হয়ে লনে চলে আসিস রে।রেজুমি লিখব।"

"ঠিক আছে।"

৫ টা নাগাদ আমরা রিসর্টে পৌছাই।আমি রুমে এসে ফ্রেশ হই। ততোক্ষণে মানবও চলে এসেছে।

"ভায়া দিনটা কেমন কাটল তোর ইরার সাথে?"-বলে মানব দাঁত বের করে।

কেন জানি আমার ভালো লাগলো না ব্যাপারটা।আমি বললাম

--"ভাই আমি লনে যাচ্ছি, রেজুমি লিখব।"

আমি রুম থেকে লনে এসে দেখি ইরা হাঁটছে,ও মনে হয় আগেই চলে এসেছে।

--"এই ইরা!"

"ও চলে এসেছিস।চল কাজটা শুরু করি।"

ইরা আর আমি আজকের কাজ গুলো নিয়ে আলোচনা করি।আমি ওকে কিছু জিনিস বুঝাই যে গুলো ও ভালো করে বুঝতে পারেনি,ইরা নোট করে নেয়।
এরপর সেও একই ভাবে আমায় বঝাতে শুরু করে আমার সমস্যার জায়গা গুলো।কিন্তু আমি সেই সব কিছু শুনছি না;আমি একভাবে মেয়েটার মুখের দিকে তাকিয়ে আছি।ও খেয়াল করেনি।ও খুব মনোযোগ দিয়ে আমাকে পড়া বোঝাচ্ছিল।হঠাৎ ও ব্যাপারটা খেয়াল করে বলে-

"কি দেখছিস?"

--"অ্যাঁ!নাহ! কিছু না।"

ইরা একটু হাসে এবার।আমিও হেসে দিই। রেজুমি লিখে ৭ টার সময় হল-এ যাই ক্লাস করতে।ক্লাস শেষ হল।ডিনার করতে বসেও ওই মেয়েটার কথা ভাবতে থাকি।মানব বলে-

"কি ভাবিস এত শালা? খা তাড়াতাড়ি।"

--"হুম।"

ইরা দুটো টেবিল সামনে বসেছে।আমি ওর দিকে তাকিয়ে হাসি।ইরাও হাসে।খাওয়া শেষ করে রুমে এসে ভাবতে থাকি আমি কি প্রেমে পরে গেলাম ইরার?

পর্ব ৪(শেষ পর্ব)
সর্বশেষ এডিট : ১৮ ই মার্চ, ২০১৬ রাত ১:০৫
১টি মন্তব্য ১টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

পার্বত্য চট্টগ্রাম- মিয়ানমার-মিজোরাম ও মনিপুর রাজ্য মিলে খ্রিস্টান রাষ্ট্র গঠনের চক্রান্ত চলছে?

লিখেছেন সৈয়দ কুতুব, ০৫ ই নভেম্বর, ২০২৪ সকাল ৯:০১


মিজোরামের মুখ্যমন্ত্রী লালদুহোমা সেপ্টেম্বর মাসে আমেরিকা ভ্রমণ করেছেন । সেখানে তিনি ইন্ডিয়ানা তে বক্তব্য প্রদান কালে ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠী chin-kuki-zo দের জন্য আলাদা রাষ্ট্র গঠনে আমেরিকার সাহায্য চেয়েছেন।... ...বাকিটুকু পড়ুন

হাসান মাহমুদ গর্ত থেকে বের হয়েছে

লিখেছেন শিশির খান ১৪, ০৫ ই নভেম্বর, ২০২৪ সকাল ১১:১২


যুক্তরাষ্ট্রের একটি বাংলা টেলিভিশন চ্যানেল হাসান মাহমুদের সাক্ষাৎকার প্রচার করেছে। আমি ভাবতেও পারি নাই উনি এতো তারাতারি গর্ত থেকে বের হয়ে আসবে। এই লোকের কথা শুনলে আমার গায়ের লোম... ...বাকিটুকু পড়ুন

দারিদ্রতা দূরীকরণে যাকাতের তাৎপর্য কতটুকু?

লিখেছেন রাজীব নুর, ০৫ ই নভেম্বর, ২০২৪ সকাল ১১:১৮



দরিদ্র দূরীকরণে যাকাতের কোনো ভূমিকা নেই।
যাকাত দিয়ে দারিদ্রতা দূর করা যায় না। যাকাত বহু বছর আগের সিস্টেম। এই সিস্টেম আজকের আধুনিক যুগে কাজ করবে না। বিশ্ব অনেক... ...বাকিটুকু পড়ুন

শেখস্তান.....

লিখেছেন জুল ভার্ন, ০৫ ই নভেম্বর, ২০২৪ দুপুর ১২:১৫

শেখস্তান.....

বহু বছর পর সম্প্রতি ঢাকা-পিরোজপু সড়ক পথে যাতায়াত করেছিলাম। গোপালগঞ্জ- টুংগীপাড়া এবং সংলগ্ন উপজেলা/ থানা- কোটালিপাড়া, কাশিয়ানী, মকসুদপুর অতিক্রম করার সময় সড়কের দুইপাশে শুধু শেখ পরিবারের নামে বিভিন্ন স্থাপনা দেখে... ...বাকিটুকু পড়ুন

সেকালের বিয়ের খাওয়া

লিখেছেন প্রামানিক, ০৫ ই নভেম্বর, ২০২৪ দুপুর ২:৪৮


শহীদুল ইসলাম প্রামানিক

১৯৬৮ সালের ঘটনা। বর আমার দূর সম্পর্কের ফুফাতো ভাই। নাম মোঃ মোফাত আলী। তার বিয়েটা শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত দেখার সৌভাগ্য হয়েছিল। বাবা ছিলেন সেই বিয়ের মাতব্বর।... ...বাকিটুকু পড়ুন

×