জাভেদের সাথে পরবর্তী কথোপকথন:
রোজা রাখছিলা?
জ্বী!
ইফতার করলা কি ঝালমুড়ি দিয়া?
হু!
কোন ক্লাসে পড়?
পড়িনা!
এই দোকান কার?
মালিকের!
তুমি কতক্ষণ এইখানে কাজ কর?
সকাল দশটা থেইকা রাইত দশটা!
কত টাকা পাও মাসে?
দুই হাজার!
বাবা-মা কি করে?
নাই!
ও আচ্ছা..
তুমি টাকা গুনতে পার?
জ্বী!
ক্যামনে শিখছ?
ভাই শিখাইছে!
আমার ফোন বেজে উঠল। শিমুল জানতে চাইল আমি কোথায়; সে আমার জন্যে বিএফসি তে অপেক্ষা করছে। বিএফসি টা জাভেদ এর খোলা দোকানটার ঠিক সামনেই, দোতলায়। জাভেদকে বিদায় জানিয়ে বিএফসি তে গেলাম! শিমুল ঈদে তার একটা পরিকল্পনার কথা বলছিল; অনেকক্ষণ সময় পেরিয়ে গেলেও মাথার ভেতর ঘুরছে জাভেদ ছেলেটা! বিএফসি থেকে বেরোনর সময় কি মনে করে একটা ফ্রাইড চিকেন পার্সেল দিতে বললাম! শিমুল বলল আরো খাবি! বললাম ‘না! শিমুল কাউন্টারে গলা উঁচিয়ে বলল ‘লেগপিস’! কিছুক্ষনের মধ্যেই একটা ধোঁয়া ওঠা হৃষ্ঠপুষ্ট ‘লেগপিস’ চলে আসল! আমরা ‘লেগপিস’ হাতে ঝুলিয়ে বিএফসি থেকে পথে নেমে এলাম। নেমেই সোজা জাভেদের দোকানে। বিএফসি’র লাল প্যাকেটটা ওর দিকে বাড়িয়ে ধরলে সে কি বুঝল কে জানে, উল্টো আমার দিকে একটা বেনসনের প্যাকেট বাড়িয়ে ধরল। আমি মাথা নেড়ে আবার বিএফসি’র প্যাকেটটা ওর দিকে বাড়িয়ে ধরলাম। এবার সে হেসে বলল, ও আইচ্ছা গোললিফ! আমিও হেসে বললাম, না এইটা তোমার জন্যে আনছি! সে একটু ভ্যাবাচ্যাকা খেয়ে গেলেও সামলে নিল! প্যাকেটটা ধীরে সুস্থে হাতে নিয়েই দ্রুত হাতে খুলে ফেলল! এরপর প্যাকেট থেকে যা বেরোল সেটা দেখে সে খুবই বিভ্রান্ত! ওর অবস্থা দেখে আমিও একটু কিংকর্তব্যবিমুঢ় অবস্থায়! শিমুল তখন এগিয়ে এসে বলল, এইটারে এক হাত দিয়া ধইরা কামড় দিয়া দিয়া খাইতে হয়!’ জাভেদ খুব আগ্রহ নিয়ে খেতে গিয়ে মুখ পুড়িয়ে ফেলল! ওপরের প্রলেপটা সরে যেতেই জাভেদের বিস্মিত কন্ঠ, ‘আরে এইটাতো একটা মুরগী’র ঠ্যাং!’
শিমুল ফুলের গল্পটা ‘হ্যাপিনেস ফর অল!’ শিরোনামের পরের লেখাটায় থাকছে....।
আরিফুর রহমান
১৪.০৮.২০১২
কাঁঠালবাগান