কাজী নজরুল ইসলাম সম্পর্কে বাংলা ভাষা ও সাহিত্য গবেষক ডঃ গোলাম মুরশিদের আপত্তিকর মন্তব্যের প্রতিবাদ জানিয়েছে তাঁর পরিবার; কবি নাতনী খিল খিল। প্রতিবাদ জুড়ে শুধু --> " কুরুচিপূর্ণ মন্তব্য, হীন প্রচেষ্টা, অপমান করা হয়েছে, মান মর্যাদা ক্ষুণ্ণ হয়েছে, অবমাননা করা হয়েছে, তাঁকে ব্ল্যাক লিস্টেট করা হোক, তারপর প্রয়োজনে আইনি ব্যবস্থা নেব।"
কিন্তু যা গোলাম মুরশিদ বলেছেন তা সত্য না মিথ্যে তা জানলাম
না; তিনিও (খিল খিল) বললেন না! একবারের জন্যেও বললেন না উনি (ডঃ গোলাম মুরশিদ) মিথ্যে বলেছেন। একবার উল্লেখ করেছেন বটে যে, ডঃ গোলাম মুরশিদ গবেষণার নামে সত্য'কে মিথ্যে, মিথ্যে কে সত্য বানাচ্ছেন। আবদুল গাফফার চৌধুরী ও রেজাউল করিম তালুকদাররাও আছেন ওনার দলে। (বড়ই মোহজনক মন্তব্য)
যাহোক, অনেক চেষ্টা করে সমালোচনার ঝড়ের ফাকে ফাকে উদ্ধার করার চেষ্টা করলাম আসলে উনি (ডঃ গোলাম মুরশিদ) কি বলেছেন। যা বুঝলাম তা হল, ডঃ গোলাম মুরশিদ মনে করেন কাজী নজরুলের ইসলামের জীবনী অসম্পূর্ণ। একটি আদর্শ জীবনী হতে হলে যে সব দিকের বিচ্ছুরণ থাকা জরুরী তা নিয়ে তিনি দীর্ঘ আলোচনা করেন বাংলা একাডেমীর সেই সভায়। এক পর্যায়ে তিনি মন্তব্য করেন, কাজী নজরুল মুসলমান কবি থেকে মানুষের কবি হয়ে উঠেছিলেন। ***নজরুল যেমন ইসলাম ধর্মের চেতনায় লিখেছেন তেমনি তিনি শ্যামা সঙ্গীত, কীর্তনও লিখেছেন। এইচএমভির দুর্লভ রেকর্ডে ৫৭টি শ্যামা সঙ্গীতের মধ্যে নজরুলেরই ছিল ১৩টি।*** ডঃ গোলাম মুরশিদের সবচেয়ে আপত্তিকর মন্তব্যটি ছিল নজরুলের দ্বিতীয় স্ত্রী প্রমীলা দেবীকে নিয়ে। তিনি বলেন, যখন প্রমীলার দেবীর সাথে কাজী নজরুলের বিয়ে হয় তখন প্রমীলা ছিলেন ৫ মাসের অন্তঃসত্ত্বা। এর কারণ বিয়ের ৪ মাসের মাথায় প্রমীলা দেবী মা হন।
কোন কোন সংবাদপত্র শেষ অংশটি সম্পূর্ণ এড়িয়ে গেছেন, এবং একেই হয়ত কু-রুচিশীল মন্তব্য আখ্যায়িত করে গালাগাল ও গোলাম মুরশিদ সাহেবের মুন্ডুপাত করেছেন। কিন্তু মনে সরল প্রশ্ন খেলেঃ একী মিথ্যে? গোলাম মুরশিদ উল্লেখ করেননি কিন্তু এও কি সত্য নয় যে প্রমীলা দেবী কে বিয়ে করার আগে কাজী নজরুল নার্গিস’কে বিয়ে করে বাসর রাতেই তাঁর স্ত্রীকে ফেলে পালিয়ে গিয়েছিলেন? (উইকি'তে খুব মজা করে লিখেছেঃ ///বাসর সম্পন্ন হবার আগেই নার্গিসকে রেখে কুমিল্লা শহরে বিরজাসুন্দরী দেবীর বাড়িতে চলে যান। তখন নজরুল খুব অসুস্থ ছিলেন এবং প্রমিলা দেবী নজরুলের পরিচর্যা করেন। এক পর্যায়ে তারা বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হন।/// কি মজার! )
এসব কবির ব্যক্তিগত ও বায়বীয় জীবনের কাব্যিক ঘটনা।একজন কবির শৃঙ্খল-বিহীন জীবনে এ রকম এলোমেলো ঘটনা বিস্ময়ের নয়। আবার জাতীয় কবির চরিত্র গবেষণা করে তার অস্বস্তিকর উপস্থাপন না করলেই বোধহয় ভাল করতেন গবেষক; অন্তত বক্তব্য দিতে গিয়ে এড়িয়ে যেতে পারতেন। বই লিখতেসেন লেখেন। বই’তো আর গরু ছাগলেরা পড়ে না। বক্তব্য দিয়ে শুধু শুধু আলোচনায় এসে কালো তালিকাভুক্ত হওয়ার কি দরকার? তাঁর লেখা বই হাজার বছরের বাঙালির ইতিহাসেও'ত তিনি লিখেছেন কাফের নজরুল ইসলামকে মুসলমান বানানো হয়েছে। কই এ নিয়ে'ত কিছু শুনি নাই। সেই কবে ২০০৫ সালের দিকে বইটি বেড়িয়েছে। যাহোক সত্য’তো সত্যই তা যতই অস্বস্তিকর হোক। সত্য কী মিথ্যে তা যাচাই করে যদি তা অপ্রীতিকর ঠেকে তাইলে.........কি করা যায়.........? নজরুল ইসলাম গেলে আর থাকে কে!!!! ()
সত্য বলে স্বস্তি পেয়ে ভদ্রলোক অস্বস্তির জন্ম দিয়েছেন বিধায় ব্ল্যাক লিস্টেট হয়েছেন! এবার বুঝেন মজা। আর করবেন? আর কথা বলবেন? গবেষণা করবেন আর? দেখি হাত পাতেন।