গ। ফুসফুস বা লাঙসঃ
এখানে গালমোলারী ম্যাক্রোফেজ নামে বিশেষ এক ধরনের কোষ থাকে যারা রোগ-জীবাণুকে ধরে খেয়ে ফেলে।
৩। পরিপাক তন্ত্র
ক। মুখ গহব্বরঃ
মুখের লালা রোগ জীবাণুকে ধুয়ে নিয়ে যায়। শুধু তাই নয়, এই লালাতেও আছে সেই লাইমোজাইম নামের বিশেষ এক ধরনের এনজাইম যা কিনা বহু ব্যাকটেরিয়া মেরে ফেলে।
খ। পাকস্থলীঃ
পাকস্থলী থেকে নিঃসৃত হয় তীব্র হাইড্রোক্লোরিক এসিড যা অনেক ক্ষতিকর জীবাণুকে মেরে ফেলে।
গ। ক্ষুদ্রান্তঃ
এখানে রয়েছে প্রোটিন ও লাইটিক এনজাইম নামে আমিষ বিশ্লেষক বিশেষ এক ধরনের এনজাইম এবং ম্যাক্রোফেজ নামের বিশেষ খাদক কোষ যারা রোগ-জীবাণু ধ্বংস করতে বিশেষ ভূমিকা পালন করে। এছাড়াও পিত্তথলিতে পিত্ত রসের মধ্যে থাকে পিত্ত লবন বা বাই সল্ট যা কিনা গ্রাম পজিটিভ ব্যাকটেরিয়ার বৃদ্ধি প্রতিরোধ করে। শুধু তাই নয়, ক্ষুদ্রান্তে রয়েছে বেশ কিছু ব্যাকটেরিয়া গুচ্ছ বা ব্যাকটেরিয়াল ফ্লোরা, যারা বহিরাগত ক্ষতিকর ব্যাকটেরিয়ার বিস্তার থেকে দেহকে রক্ষা করে।
ঘ। বৃহদন্ত্রঃ
বৃহদন্ত্রের মিউকাস জীবাণুসমূহের বিস্তার রোধ করে।
৪। চোখ
চোখের পানি রোগ জীবাণু, ধুলো ময়লা সব ধুয়ে চোখকে পরিষ্কার ও জীবাণু মুক্ত রাখতে সাহায্য করে। চোখের পানিতেও লাইমোজাইম রয়েছে।
দেহকোষের অভ্যন্তরীণ প্রতিরোধ ব্যবস্থা
দেহের প্রতিটি কোষের ভেতরে থাকে ফ্যাগোসাইট বা খাদক কোষ, রক্ত কোষের শ্বেত কণিকা, প্রোটিন, সাইটোকাইন ইত্যাদি দেহের বহিরাগত রোগ জীবাণুর বিস্তারকে বাধা দেয়। শুধু তাই নয়, কিছু কিছু বিশেষ ধরনের কোষ আছে যারা নিজেরাই ভাইরাস, ক্ষতিকর ক্যান্সার কোষকে ধ্বংস করে। এদের বলে নেচারাল কিলার সেল বা এন কে সেল।
রোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থার অন্যান্য নিয়ামক
ক) বয়স
তিন বছরের কম এবং পচাত্তর বয়সের বেশি বয়স্ক মানুষের দেহে রোগ বেশি ছড়ায়।
খ) জ্বর
জ্বর মোটেও কোন রোগ নয়। এটা কেবলই একটি উপসর্গ মাত্র। ইনফেকশন প্রতিরোধে জ্বরেরও কিছু ভুমিকা রয়েছে।
হরমোন
দেহে কর্টিকো স্টেরয়ড হরমোনের মাত্রা বেড়ে গেলে দেহ ইনফেকশন বা সংক্রামক রোগে দুর্বল হয়ে পড়ে।
খাদ্য ও পুষ্টি
অপর্যাপ্ত পুষ্টি বা ম্যালনিউট্রিশন দেহে রোগ সংক্রমণের ঝুঁকি বাড়ায় ।
বিশেষ গোত্র ও প্রজাতি
যক্ষা বা টিউবারকুলোসিস হবার ঝুঁকি ইউরোপিয়ানদের চেয়ে আফ্রিকানদের বেশি। ত্বকের ক্যান্সার হবার ঝুঁকি কালো চামড়াওয়ালাদের চাইতে সাদা চামড়াওয়ালাদের বেশি ইত্যাদি। যদিও বর্ণ-গোত্র বিশেষে বিভিন্ন রোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থার তারতম্য নিয়ে কিছুটা বিতর্কও আছে। তারপরও ইমিউনোলজিস্টরা এ বিষয়টিকেও গুরুত্বের সাথে নিয়েছেন।
গ্রন্থপঞ্জিঃ
১. Lange Medical Microbiology & Immeunology-6th Edition
২. Practical Pathology & Microbiology-Prof. K. A. Khaleque & Dr. K. Z. Mamun
তথ্যসুত্রঃ রহস্য পত্রিকা, এপ্রিল ২০০৮
সর্বশেষ এডিট : ২২ শে এপ্রিল, ২০০৮ রাত ১২:০০