মানব শরীরের রোগ প্রতিরোধের নিজস্ব যে চমৎকার ব্যবস্থা রয়েছে, তা নিম্নে আলোচনা করা হলোঃ
১। ত্বক
ত্বক হলো আমাদের দেঞের জীবাণু সংক্রমণ প্রতিরোধে প্রথম ঢাল স্বরূপ। ত্বক দেহের অভ্যন্তরে রোগ জীবাণু ঢুকতে বাধা দেয়। ত্বক গ্রন্থি ও ঘর্ম গ্রন্থ থেকে নিঃসরিত ফ্যাটি এসিড, ল্যাকটিক এসিড, এসিড পি-এইচ এসব বিভিন্ন রোগ জীবাণুকে মেরে ফেলে। ত্বকের ঘর্ম গ্রন্থি থেকে নিঃসরিত ঘাম এসব মৃত রোগ জীবাণুকে ধুয়ে নিয়ে যায়।
মিউকাস মেমব্রেন বা শৈষ্মিক ঝিল্লী-
মিউকাস মেমব্রেন থেকে নিঃসরিত হয় মিউকাস বা পিচ্ছিল শ্লেষ্মা। এর থাকে দেহের বহিঃত্বক কোষ বা এপিসেলিয়াল সেলের ভেতর। বহিরাগত রোগ-জীবাণুগুলো মিউকাসের পিচ্ছিল রসে আটকে যায়। পরবর্তীতে এদের বিশেষ পদ্ধতিতে বের করে দেয়া হয়।
২। শ্বাসতন্ত্র
ক। নাক
আমরা নাক দিয়ে শ্বাস-প্রশ্বাস নিই বা ছাড়ি। এই নিঃশ্বাসের মাধ্যমেই বাইরের পরিবেশ থেকে অগণিত রোগ জীবাণু নাকে ঢোকে। নাকের ভতরে অনেক ছোট ছোট লোম থাকে। যাদের বলা হয় সিলিয়া। এরা এ সব রোগ জীবাণুকে ধরে ঝেঁটিয়ে বিদায় করেদেয়। আমরা যে মাঝে মাঝে হাঁচি দিই এটা কিন্তু শরীরের নিজস্ব রোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থারই একটা অংশ। হাঁচির মাধ্যমে অসংখ্য রোগ-জীবাণু নাক দিয়ে বেরিয়ে যায়। শুধু তাই নয়, নাক দিয়ে যে পানি বেরোয় সেটাও রোগ প্রতিরোধক, কারণ এতে থাকে লাইমোজাইম নামে বিশেষ এক ধরনের এনজাইম যা অনেক ব্যাকটেরিয়া মেরে ফেলে।
খ। ট্রাকিয়া বা শ্বাসনালী
নাকের মত শ্বাসনালীতে অনেক সিলিয়া থাকে যারা বাইরের রোগ জীবাণুকে নীচের দিকে নামতে না দিয়ে উপরের দিকে ঠেলে দেয়। ট্রাকিয়ার মধ্যেও রয়েছে পিচ্ছিল শ্লেষ্মা বা মিউকাস। এরা রোগ-জীবাণুকে আটকে ফেলে। আমরা যে কাশি দেই সেই কাশির মাধ্যমে এসব রোগ জীবাণু বেরিয়ে যায়। সুতরাং বুঝতেই পারছেন, কাশিও রোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থার একটি অংশ।
(আগামী খন্ডে সমাপ্য)
তথ্যসুত্রঃ রহস্য পত্রিকা, এপ্রিল ২০০৮
সর্বশেষ এডিট : ০২ রা এপ্রিল, ২০০৮ রাত ১১:৫৯