১। চিন্তা বা অভিপ্রায়ের প্রতিফলন ঘটে স্বভাব বা প্রকৃতিতে। যদি কেউ মন্দ অভিপ্রায় নিয়ে কথা বলে বা কাজ করে দুঃখ তাকে অনুগমন করে। আর কেউ যদি সুচিন্তা নিয়ে কথা বলে বা কাজ করে সুখ তাকে ছায়ার মতো অনুসরণ করে।
(যমকবগ্গোঃ ১-২)
২। আমাকে বকেছে, আমাকে মেরেছে, আমার জিনিস কেড়ে নিয়েছে-এমন চিন্তা বা অভিযোগ যারা করে, ঘৃণা ও শত্রুতা তাদের চিরসঙ্গী হয়।আর যারা এরূপ চিন্তা করে না তাদের ঘৃণা ও শত্রুতা দ্রুত উপশম হয়।
(যমকবগ্গোঃ ৩-৪)
৩। হিংসুক বা শত্রুর চেয়েও বিপথগামী চিত্ত মানুষের বেশি ক্ষতি করে।
(চিত্তবগ্গোঃ ৪২)
৪। যার চিত্তে পাপ নেই, বাইরের পাপ তাকে স্পর্শ করতে পারে না।
(পাপবগ্গোঃ ১২৪)
৫। সকল মলের নিকৃষ্ট মল অবিদ্যা। হে ধ্যানী! এই মল বর্জন করে নির্মল হও।
(মলবগ্গোঃ ২৪৩)
৬। অবিদ্যার কারণে যারা অসারকে সার আর সারকে অসার মনে করে তারা কখনো সত্যের সন্ধান পায় না।
(যমকবগ্গোঃ ১১)
৭। সত্যসচেতনতা অমৃতের পথ আর মূর্খতা মৃতপুরীর পথ। সত্যসচেতন ব্যক্তিরা অমর হন আর আর মূর্খরাতো মৃত সদৃশ।
(আপপমাদবগ্গোঃ ২১)
৮। ভালো কাজ সবসময় কর। বারবার কর। মনকে সবসময় ভালো কাজে নিমগ্ন রাখো। সদাচরণই স্বর্গসুখের পথ।
(পাপবগ্গোঃ ১১৮)
৯। মিথ্যাবাদী, ধর্মলঙ্ঘনকারী ও পরলোকে অবিশ্বাসী ব্যক্তি যে কোন পাপ কাজ করতে পারে।
(লোকবগ্গোঃ ১৭৬)
১০। সৎকর্মে সদা তৎপর থাকো। পাপ থেকে মনকে নিবৃত্ত কর। ভালো কাজে দীর্ঘসূত্রিতা বা আলস্যের প্রশয় দিলে মন পাপে লিপ্ত হবে।
(পাপবগ্গোঃ ১১৬)
১২। আলস্যকে প্রশ্রয় দিও না। ধর্মকে অনুসরণ কর। ইহলোক ও পরলোক-দুই লোকেই সুখে থাকবে।
(লোকবগ্গোঃ ১৬৮)
১৩। আলস্য ও অতি ভোজনের দরুন স্থুলকায় নিদ্রালু হয়ে বিছানায় গড়াগড়া দেয়া স্বভাবে পরিণত হলে সেই মুর্খের জীবনে দুঃখের পুনঃ পুনরাবৃত্তি ঘটবে।
(নাগবগ্গোঃ ৩২৫)
১৪। মূর্খরা আলস্যে নিপতিত হয়। আর প্রাজ্ঞরা সচেতন প্রয়াসে সৎকর্মে সদা তৎপর থাকেন।
(অপ্পমাদবগ্গোঃ ২৬)
১৬। গন্ধহীন পুস্পের ন্যায় কর্মবর্জিত সুন্দর বাক্যমালাও নিস্ফল।
(পুপ্কবগ্গোঃ ১-২)
ধম্মপদঃঅনন্ত প্রশান্তির পথ
বুদ্ধং সরণং গচ্ছামি
ধম্মং সরণং গচ্ছামি
সংঘং সরণং গচ্ছামি
বাংলার ঘরে ঘরে একদা উচ্চারিত হতো এই বুদ্ধবাণী। মহামতি বুদ্ধ জীবনের সত্যকে খুব সহজভাবে বর্ণনা করেছেন। জীবনে দুঃখ আছে। দুঃখের কারণ আছে। দুঃখের কারণ আসক্তি। আসক্তির কারণ অবিদ্যা। অবিদ্যা দূর হবে শীল অর্থাৎ সদাচরণ ও প্রজ্ঞা দ্বারা। সৎমন প্রস্ফুটিত হবে সৎকর্মে। তখনই আসক্তির বৃত্ত ভেঙ্গে যাবে। দুঃখের বিনাশ ঘটবে। তৃপ্ত জীবন লীন হবে অনন্ত প্রশান্তিলোকে।
[অনন্ত প্রশান্তিলোকে পৌঁছার পথ ত্রিপিটকের ধম্মপদ। প্রখ্যাত দার্শনিক এস রাধাকৃষ্ণণ-এর ইংরেজি অনুবাদ The Dhammapada থেকে কিছু গাথার সরল বাংলা মর্মার্থ হচ্ছে ধম্মপদ কণিকা।]
সর্বশেষ এডিট : ০২ রা মার্চ, ২০০৮ রাত ৯:৫২