৯ই অক্টোবর কিংবা ১৪ই নভেম্বর, স্মরনীয় হয়ে থাকবে কি?
খুব কাছের, খুব বেশি আপন কোন মানুষকে বহুদিন পর দেখতে পেলে, কেমন জানো অচেনা লাগে। "বহুদিন পর" - শব্দ দুটোর দিকে চোখ পরতেই হাসি পেল আনন্দর। এই বহুদিন খুব বেশিদিন কি? মাত্র ৫৩দিন। তাতেই যেন অনন্তকাল বলে মনে হচ্ছে আনন্দের।
এই যোগাযোগের দুনিয়ায় প্রায় দুমাস এ্যলেনকে না দেখে থাকাটা কেমন যেন অন্য রকম এক অনুভূতির তৈরী করেছে আনন্দের ভেতর। বিশেষ করে স্কাইপ, ওভিও, ফেইসবুকের যখন মানুষ দুটোর হাতের নাগালে, সেসময়ে একজন নিকট মানুষের একটা ছবি না দেখা, কিংবা ৩৫দিন কন্ঠস্বর না শুনতে পাওয়া বুঝি কেমন অস্বাভাবিক মনে হয় আনন্দের।
তবে হাপিয়ে উঠেছিল কি, আনন্দ ? নাহ্। না দেখবার, না কথা বলবার মাঝে হাহাকার ছিল, শুন্যতা ছিল। ছিল সব পাওয়ার মাঝে, কিছু একটা না পাওয়া। আবার অনেক না পাওয়ার মাঝে ঘিরে ছিল, চেনা সেই মুগ্ধতা। না দেখার মাঝেও যেন, চোখ বন্ধ করলেই সেই অতিসাধারন মুখোবয়ব, কিংবা না শুনতে পাওয়া কন্ঠস্বর যেন কানের কাছে বলে যায় শেষ সন্ধ্যার সেই আর্তনাদ করে কেঁদে ওঠা এ্যলেনের ভালোবাসবার স্বীকারোক্তি।
আনন্দ আজ সেই "বহুদিন" পর এ্যলেনের খুব সম্প্রতি তোলা কোন ছবি দেখলো, এ্যলেনেরই একটা ওয়েবসাইটে। আশ্চর্য হলেও সত্য, ছবিটা দেখবার পর পরই যে কথাটা আনন্দকে আশ্চর্য করেছে তা হচ্ছে- "ও, এ্যলেনের রুম এটা"। যেন
যেন আনন্দ, এ্যলেনকে দেখবার চাইতেও ওর পারিপার্শ্বিক
অবস্থা দেখবার প্রতি বেশি আগ্রহী। এই হলো মানব চরিত্র। মানুষ যেন অতিকাছের মানুষগুলোকে এতো বেশিই কাছে- একান্ত নিজের করে ফেলে যেন সেই আপন মানুষটারই কোন অস্বস্তিত বলে কিছু থাকেনা, তার পারিপার্শ্বিকতা, তাকে ঘিরে থাকা অন্যসব কিছু হয়ে যায় মূখ্য। এ্যলেনের পেছনে থাকা বিছানাটা, আধ খোলা কোন দরজা, কিংবা হেঙ্গারে ঝুলানো কালো জ্যাকেটটা সব কিছুই যেন নিখুতভাবে দেখলো আনন্দ। কিন্তু এ্যলেনকেই যেন দেখলোনা ঠিক করে। আনন্দ কি এ্যলেনের ঐ স্থির ছবিটার চোখের দিকে তাকাতেও ভয় পায়?
হয়তো তাই। আর সেজন্যই তো, কোন আগ্রহ নেই যোগাযোগ করবার। দেখবার, কিংবা ভালোমন্দ জানবার। এখন কেবল দুরত্ব বাড়াবার সময়। না দেখে, না কথা বলে বাঁচবার জন্য অভ্যস্থ হবার সময়। সেকারনেই এতোটা সময় পার হয়ে গেলেও হাপিয়ে ওঠেনি আনন্দ, আছে বেঁচে নির্জীবের মতো।
**************************************************
খুব অদ্ভুদ মানুষ বললেই হয়, আনন্দকে। একটা সময় ছিল যখন পচ্ছন্দ না করলেও মোবাইল ফোনটা ব্যবহার করতো, পরিবার থেকে দুরে থাকতো বলে। এখন আর সেসব ঝামেলাও নেই। অফিস আর বাসায় আছে ল্যন্ডফোন। আর আছে সার্বক্ষনিক ইন্টারনেট লাইন। তাই মোবাইল নামক যন্ত্রনাটাকে বিদায় জানাতে পেরে মহাখুশি আনন্দ।
যদিওবা এই আচরন বন্ধু মহল কিংবা আত্বীয় পরিজন কেউই সানন্দে গ্রহন করেনি, বরং ইংগিতে ভালোভাবে মানষিক সমস্যার আভাস দিয়ে সচেতন নাগরিক হবার দায়িত্ব পালন থেকে মোটেও বিরত থাকেনি, তবু আনন্দের কোন ভাবাবেক হয়েছে বলে মনে হয়নি। শুধু সমস্যা হয়েছে, দেশের বাহিরে চাকুরীর আবেদন করবার সময়। স্থান-সময় বিবেচনা না করে যৌথ পরিবারের ল্যন্ডফোনে আনন্দের খোজ করার কারনে বিরক্তি সৃস্টি করলেও তাতে কারোর কোন অসুবিধা হচ্ছে বলে মনে হয়নি।
আর স্কাইপ? আনইন্সটল করে, বেচারী আনন্দ চেয়েছে নিজের পৃথিবী থেকে দুরে সরে আসতে। হ্যা, আনন্দ কোনদিনই তার একান্ত পৃথিবীটাতে বেশি মানুষের সমাগম রাখতে পচ্ছন্দ করতোনা। তাই স্কাইপ, গুগোল কিংবা যেকোন যোগাযোগ মাধ্যমে আনন্দ থাকে খুব অল্প কিছু মানুষ নিয়ে। আর ফেইসবুক, তার লেটা চুকেছে বহু বছর আগে। একটা সময়ছিল, পরিবার পরিজনদের ছবি দেখবার আগ্রহ থেকে একটা একাউন্ট রেখেছিল, একটা সময় মনে হলো - ঝামেলা। তাই তাও আর রাখলোনা গোনার মাঝে। তাই বলে আনন্দ অসামাজিক কিংবা ঘরকুনো নয় মোটেও।
ভালো ভাবে মেলামেশা, সামাজিকতা প্রয়োজন মতো করে, তবে সবাইকে সব জায়গায় প্রবেশাধিকার দেবার মাঝে আনন্দের ঘোর আপত্তি। সেকারনে আনন্দকে অনেককেই ঠিক বুঝে উঠতে পারেনা। খুব সাধারন উদাহারন, স্কাইপ একাউন্টে কারোর বন্ধু হবার অনুরোধ আনন্দ বিবেচনায় আনে না। আনন্দের একান্ত কিছু মানুষ, যারা ভালোবাসা কিংবা বন্ধুত্বের বাহিরে অবস্থান করে, আনন্দ কেবল তাদের নিয়েই যেন বাচতে চায়, তার এই স্বল্প সময়ের দুনিয়াতে। আর বিশ্বাস করে, এদের মাঝে থাকবেনা কোন দেয়াল, কোন ভন্ডামী। কিন্তু এই প্রত্যাশা বেশি মানুষের কাছ থেকে করা যায়না বলেই "আনন্দের পৃথিবীটা" খুব সীমিত।
কিন্তু সমস্যা হলো, সাধারন মানুষ এই অতি সাধারন বিষয়টাকে এড়িয়ে যেতে পারেনা। তারা বোঝেনা, "আনন্দ ইচ্ছার বাহিরে একটা মুর্হুতও ব্যয় করতে চায়না" - এই কথাটার চাইতেও, একজনকে আপন করে নেবার পর দুরে ঠেলে দেয়া আনন্দের অপচ্ছন্দ কিংবা, আনন্দ নিজের মাঝেও যেন একটা অদৃশ্য দেয়ালে ঘেরা পৃথিবীতে থাকতে বেশি ভালোবাসে। সামাজিক জীব চারপাশের এই মানুষেরা, কেবলই নিজের মতো করে সবাইকে বাঁচাতে চায়, বিবেচনায় আনতে চায়না ভিন্ন মত, ভিন্ন ধারা ।
আলোচিত ব্লগ
স্বাধীনতাকামীদের বাচ্চারা মাদ্রাসায় গিয়ে কিসে পরিণত হয়?
স্বাধীনতাকামীদের বাচ্চারা মাদ্রাসায় গিয়ে শিবির কিংবা হেফাজতে পরিণত হয়, যারা ১৯৭১ সালের স্বাধীনতায় বিশ্বাস করে না।
মুসলিম বিশ্বে, গরীবদের ছেলেমেয়েরা মাদ্রাসায় গিয়ে, আধুনিক জীবনভাবনা থেকে বিদায় নেয়,... ...বাকিটুকু পড়ুন
সামু ব্লগ কি আবারও ধর্মবিদ্বেষ ছড়ানোর হাতিয়ারে পরিণত হইতেছে!
সামু ব্লগ কি আবারও ধর্মবিদ্বেষ ছড়ানোর হাতিয়ারে পরিণত হইতেছে!
ইহা, উহা, ইহার, উহার, ইহাকে, উহাকে - ইত্যাকার সাধু ভাষার শ্রুতিমধুর কিছু শব্দসম্ভারের প্রয়োগ কদাচিত আমাদের প্রিয়... ...বাকিটুকু পড়ুন
হাফ-লেডিস বলছি.......
(ছবি নেট হতে)
আজ ব্লগ না থাকলে কবেই আত্মহত্যা করতে হতো। জ্বী আমার কথাই বলছি। আমার মতো উপযোগহীণ গর্দভ টক্সিক ব্যক্তি বেঁচে আছি শুধু ব্লগের জন্যে। কিভাবে? তবে বলছি শুনুন।
ছোটবেলা হতেই... ...বাকিটুকু পড়ুন
=ভুলে যাচ্ছি কত কিছু=
ভুলে যাচ্ছি মমতার ঋণ, বাবার আদর
ক্রন্দনরত দিন, বৃষ্টির ঝুম আওয়াজ
ভুলে যাচ্ছি কত কিছু দিন দিন
বিছানো ছিল কোথায় যেন স্নেহের চাদর।
ভুলে যাচ্ছি দেহের শক্তি, সরল মন
কঠিনের মাঝে ডুবে ধীরে
ভুলে... ...বাকিটুকু পড়ুন
রেমিট্যান্স যোদ্ধা!
সদ্যই আমেরিকার নতুন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প সপরিবারে হোয়াইট হাউসে উঠেছেন। নির্বাচনে যারা অক্লান্ত পরিশ্রম করেছেন তাদেরসহ অন্যান্য সবাইকে এক প্রীতিভোজের আমন্ত্রণ জানিয়েছেন। নিরাপত্তা রক্ষীরা যাচাই-বাছাই করে সেসব অতিথিদের ভেতরে ঢুকতে... ...বাকিটুকু পড়ুন