ভাইরাস
___________________________________________________________
যখন থেকে পৃথিবীতে মানুষের পদচারণা তখন থেকেই ভাইরাসের সাথে মানুষের যুদ্ধ। কিন্তু অনেক কাল পেরিয়ে গিয়েছে,সে নিজেকে থামাতে পারার মরনাস্ত্র বানাতে পারলেও ভাইরাসকে থামিয়ে দেওয়ার কার্যকরী প্রতিষেধক এখনো সে তৈরি করতে পারে নাই। যখন মানুষ প্রযুক্তির মাধ্যমে সবকিছু নিয়ন্ত্রণ করতে লাগলো তখনও ভাইরাস তার কাজ চালিয়ে যেতে লাগলো। তবে এক্ষেত্রে এই ভাইরাস তাদের নিজেরই তৈরি। আর তা হল প্রযুক্তির ভাইরাস।
কম্পিউটার ভাইরাস এমন একটি সফটওয়্যার যা নিজে নিজে স্বয়ংক্রিয়ভাবে চালু হতে পারে, স্থানান্তরিত হতে পারে, সংক্রমণ করতে পারে, নিজস্ব সংখ্যাবৃদ্ধি করতে পারে। ঠিক ফ্রাঙ্কেন্সটাইন এর মত, আত্মা ছাড়া প্রাণী।
ভাইরাস শব্দের (virus) এর পূর্ণ রূপ হচ্ছে ভাইটাল ইনফরমেশন রিসোর্সেস আন্ডার সিজ (Vital Information Resources Under Seize)। অর্থাৎ গুরুত্বপূর্ণ উৎসগুলো বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে।
প্রথম কম্পিউটার ভাইরাসের নাম ছিল ক্রিপার ভাইরাস(Creeper virus)। বব থমাস BBN Technologies এ কর্মরত থাকার সময় ১৯৭১ সালে নিজে নিজে প্রতিরূপ সৃষ্টিকারী এই ভাইরাসটি তৈরি করেছিলেন। এটি আক্রান্ত সিস্টেমগুলোতে “I’m the creeper, catch me if you can!” মেসেজটি প্রদর্শন করত। অবশ্য ক্রিপারকে মুছে দেবার জন্য তিনি পরে আরেকটি প্রোগ্রাম লিখছিলেন।
তবে ১৯৮২ সালে রিক স্ক্রেন্টা নামের হাইস্কুলের ছাত্র মাত্র ১৫ বছর বয়সে প্রথম পারসোনাল কম্পিউটার ভাইরাস তৈরি করেছিল।এটি অ্যাপল-২ কম্পিউটারে ফ্লপি ডিস্কের মাধ্যমে সেটা ছড়িয়ে পড়তো। প্রতি ৫০ বার কম্পিউটার চালুর সময় এটা কবিতা প্রদর্শন করতো...
It will get on all your disks
It will infiltrate your chips
Yes, it's Cloner!
It will stick to you like glue
It will modify RAM too
Send in the Cloner!
তারপর কেটে গিয়েছে বহু সময়। সেই ভাইরাস ক্ষতি না করলেও পরবর্তীতে যে ভাইরাসই তৈরি হয়েছে তার সবকিছুর পিছনের উদ্দেশ্যটা থাকে ক্ষতি করা। ভাইরাস শব্দটা জীববিজ্ঞান থেকে ফ্রেড কোহেন(Fred Cohen) ধার করেছিলেন ১৯৮৪ সালে। জীববিজ্ঞানে ভাইরাস মানুষের ক্ষতি করে, কম্পিউটারবিজ্ঞানে কম্পিউটারের ক্ষতি করে। এক লাখ ৪০ হাজারের চেয়েও বেশি ভাইরাস রয়েছে যার ৯৯ ভাগ উইন্ডোজ অপারেটিং সিস্টেমকে আক্রান্ত করে আর এইসব ভাইরাস ছড়িয়ে দেওয়ার জন্য ৯৮ ভাগ দায় ব্যবহারকারীরই!
ঘটনা শুরু
___________________________________________________________
-কিভাবে করলে? এটা তো অসম্ভব।
কাঁচে ঘেরা বিশাল রুমে ওক কাঠের বিশাল টেবিলের এপ্রান্তে রোলিং চেয়ারে হেলান দিয়ে বিশাল বপুর কোম্পানির পরিচালক বিস্ময়ের সাথে বললেন ওপ্রান্তের সব বিশালের মাঝে হালকা পাতলা রোগা শরীরের অরুপকে। রুপ থাকলেও তার নাম অরুপ! শখের প্রোগ্রামার। এসেছিল প্রতিযোগিতায় অংশ নিতে। ১৫ স্তরের নিরাপত্তা ভাংতে হবে,সময় ১০ দিন,পুরস্কার ২ মিলিয়ন । আক্ষরিক অর্থে এমন ব্যুহ ভেদ করা একেবারেই অসম্ভব। কিন্তু পুরুস্কারের পরিমাণ দেখে পাণিপ্রার্থী নেহায়েত কম নয়। আসলে প্রতিযোগিতার আদলে এটা কোম্পানিটার একটা প্রচার অভিযান। তবে কথা হচ্ছে অরুপ প্রথম দিনেই ৪ ঘণ্টায় নিরাপত্তা ভেঙ্গে ফেলেছে।
অরুপের পক্ষ থেকে কোন উত্তর না পেয়ে নিজে থেকে পরিচালক আবার বলা শুরু করলেন, তোমার সমাধান মোডারেটরকে জানাতেই তারা প্রথমে প্রোগ্রামার টিমকে জানায়,তাদের যাচাইয়ের পর কমিটি মিটিং করে,তারপর আমাকে জানানো হয়। আমার এখনো বিশ্বাস হচ্ছে না। আমরা ধরে নিয়েছি এটা ভাঙ্গা অসম্ভব। দশদিনে তো নয়ই। আমরা আরও ৫ দিন দেব বলে ঠিক করে রেখেছি। তুমি কিভাবে পারলে? সাধারণ প্রোগ্রামার তো আছেই, সেই সাথে হোয়াইট হ্যাট, গ্রে হ্যাট এমনকি ব্ল্যাক হ্যাট হ্যাকারও রয়েছে। তুমি এখন শখের প্রোগ্রামার! তুমি কিভাবে পারলে?
অরুপ বুঝতে পারছে না কিভাবে শুরু করবে। সে একেবারেই থতমত খেয়ে গিয়েছে। ৪১ বছরের জীবনে এমন পরিস্থিতে সে পড়ে নাই। কিভাবে সে শুরু করবে?
>>> দ্বিতীয় পর্ব
কোয়ান্টাম মেকানিক্সের উপর আমার একটি লেখা ম্যাও-একটা কাল্পনিক বিলাইয়ের অবাস্তব কাহিনীর বাস্তব সমাধান আশা রাখি বিজ্ঞানপ্রেমীদের ভালো লাগবে।
সর্বশেষ এডিট : ০২ রা জুন, ২০১৪ বিকাল ৪:৫৪