somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

।। অতঃপর ....... একটি চিঠি ।।

০৮ ই জুন, ২০১২ রাত ১২:০৫
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

প্রিতাশা ,
কেমন আছো ? আশা করি ভালো । পড়াশুনা কেমন চলছে ? ওষুধ খাও তো ?
অপস , কি লিখছি আমি । এসব লেখার অধিকার তো আমার নেই । তোমাকে প্রিতাশা ডাকার অধিকার ও নেই । সেই অধিকার টা তুমি কেড়ে নিয়েছ ।

কিন্তু এক সময় তো সারাক্ষণ প্রিতাশা প্রিতাশা প্রিতাশা বলে ডাকতাম । আমার মুখে ডাক না শুনে তুমি থাকতেই পারতে না । খালি বলতে সারাক্ষণ প্রিতাশা প্রিতাশা ডাকবা , তোমার মুখে শুধু আমার নাম ই থাকবে । আর কারো না ।

কতো আগের ঘটনা এটা ?
বছর দুই ? নাকি আরও বেশি ?

এখন কেন শুনতে চাও না আমার মুখে তোমার নামটা ?



ওই , চিঠির ব্যাপার গুলো মনে আছে ? উফ , পাগলী একটা মেয়ে তুমি । আসলেই । একদিন চিঠি না দিলে সে কি রাগ ! আর চিঠি ও যেনতেন হলে চলবে না , বিশাআআল হতে হবে । আরে মা আমার , প্রতিদিন এতো বিশাল চিঠি লেখা কি সম্ভব ? না , তুমি তো বোঝো না , তুমি নিজে দাও ছোট ছোট চার পাতার চিঠি আর আমাকে দিয়ে লেখাও উপন্যাস ।হুহ।

কতো আগের ঘটনা এটা ?
বছর দুই ? নাকি আরও বেশি ?

এখন কি চিঠি পড়তে ইচ্ছে হয় না ?



রাত ১১টা বাজার সাথে সাথে ম্যাডামের ফোন । এখন কথা বলতেই হবে । আরে কতো বুঝলাম , এই টাইমে একটু কাজ থাকে । ১২টার পর কথা বলি , কিন্তু না , উনি ১১টা বাজেই কথা বলবেন । না বললে আড়ি । আচ্ছা ম্যাডাম কথা বলবো , আড়ি দিতে হবে না ।

কতো আগের ঘটনা এটা ?
বছর দুই ? নাকি আরও বেশি ?

এখন কি ১১টায় কথা বলতে ইচ্ছে করে না ?



প্রতিদিন সকাল সাতটায় রাস্তার ধারে আমি দাঁড়িয়ে থাকতাম । তোমার অপেক্ষা করতাম । তুমি আসতে লেট করে । আমি দূর থেকে রাস্তার মোড়ের দিকে তাকিয়ে থাকতাম । মোড়ের কাছে এসেই দাঁত দিয়ে জিহবায় একটা কামড় দিতে । তারপর হেঁটে এসে আমার খুব কাছে এসে ঘাড় টা কাত করে ফিসফিস করে বলতে ‘’সরি’’ । এরপর ফিক করে একটা হাসি । তোমার এই হাসিটা দেখে ভুলে যেতাম সব । তারপর সেই ঘণ্টার পর ঘণ্টা দুই জন রাস্তার দুই প্রান্তে দাঁড়িয়ে থেকে আড্ডা দিতাম । যাওয়ার সময় আলতো করে তোমার হাত টা ছুঁয়ে দিতাম । হাতে গছিয়ে দিতাম একটা চিঠি ।



কতো আগের ঘটনা এটা ?
বছর দুই ? নাকি আরও বেশি ?

এখন কি আর রাস্তায় দাঁড়িয়ে আড্ডা দিতে ইচ্ছে হয় না ?





আগে ক্লাসে খুব মজা করতাম , তাই না ? চোখে চোখে প্রেম , হা হা হা । সারাক্ষণ ক্লাসে বসে একে অন্যের দিকে তাকিয়ে থাকতাম । চোখের ইশারায় কথা বলতাম । তুমি গালতে হাত রেখে আমার দিকে তাকিয়ে থাকতে , আর আমি দেয়ালে ঠেস দিয়ে । মজা হতো যখন স্যার ক্লাসে থাকতো । মাথা নিচু করে ,চোখ বাঁকা করে , তাকাতেই হবে একজন অন্যজনের দিকে । মাঝে মাঝে আমি চোখ টিপ মারতাম , তুমি অন্য দিকে তাকিয়ে হাসতে । আচ্ছা , হাসি টা আমার দিকে তাকিয়ে দিলে কি এমন হতো শুনি ?

কতো আগের ঘটনা এটা ?
বছর দুই ? নাকি আরও বেশি ?

এখন কি আর চোখের ইশারায় কথা বলতে ইচ্ছে হয় না ?



ফাজিল , বেয়াদপ । আহ , কি বকার ছিড়ি উনার । কিছু হলেও আমাকে বকতে হবে । মাইরা পিট্টা ভর্তা বানাইয়া ফ্রিজে রাইখা দিমু , এরপর ফ্রিজ থেকে বের করে চুলায় রাখুম ।
আরে আবার এতো কঠিন হওয়ার মতো আমি কি করতাম শুনি ? ধেৎ । আমাকে তোমার ঝাড়ি দিতেই হবে প্রতিদিন , নইলে শান্তি নাই । আরে বাবা আমি তো ঠিক মতোই থাকতাম । তাও ক্যান দিতা । অবশ্য আমি তোমার ঝাড়ি শোনার জন্য উন্মুখ থাকতাম । তাই বেশি বেশি করে ..............


কতো আগের ঘটনা এটা ?
বছর দুই ? নাকি আরও বেশি ?

এখন কি আর আমাকে ঝাড়ি দিতে ইচ্ছে হয় না ?





লেইস চিপস আর কিটক্যাট । উফফ তুমি যে কি ছিলা । এসবের পাগল আমি এই প্রথম দেখেছিলাম । তুমি তো তোমার বাবাকে পাগল করে দিতা এসব কিনে দিতে । কিন্তু আমি দিতে চাইলে নিতা না । আরে মা আমার কেনা চিপস চকলেট নিতে কি সমস্যা ছিল তোমার ? প্রতিদিন এসব কিনে দেওয়ার সামর্থ্য তো আমার ছিল । কিন্ত না , তুমি নিবা না মানে নিবা ই না । বাপ রে । কি একগুঁয়ে মেয়ে তুমি ।


কতো আগের ব্যাপার এটা ?
বছর দুই ? নাকি আরও বেশি ?

এখনও কি লেইস আর কিটক্যাট এর পাগল রয়ে গেছ ?





ওই , জানো আমি কিন্তু মেরুন রঙের পাঞ্জাবী কিনেছিলাম । তোমার কথা মতোই । ঈদের সময় পড়েও ছিলাম , কিন্তু তোমাকে তো দেখাতে পারলাম না । মেরুন পাঞ্জাবী কিনতে কি যে ধকল গিয়েছিল । সাইজ আসে তো কালার ভালো না , সাইজ , কালার ঠিক তো কাপড় টা ভালো না । ধেৎ । তাও অনেক কষ্ট করে একটা কিনেছিলাম মেরুন পাঞ্জাবী । ফোনে তোমাকে বলার পর তুমি কি যে খুশী হয়েছিলে , বাপ রে বাপ । তুমিও কিন্তু তোমার সেই কালো জামা পড়ে আমাকে দ্যাখাও নি । ইশ ! একটা অতৃপ্তি রয়ে গেলো । তবে আমি কিন্তু তোমাকে সব সময় ই কালো জামায় কল্পনা করি । উফ , যা দেখতে লাগে না তোমাকে !




কতো আগের ঘটনা এটা ?
বছর দুই ? নাকি আরও আগের ?

আমাকে কি মেরুন পাঞ্জাবী পড়া অবস্থায় দেখতে আর ইচ্ছে করে না ?



তুমি কি এখনো সেই বাদামী হিজাব টা পড়ো নাকি পালটে নতুন নিয়েছ ? জানো , তোমাকে কিন্তু ওই হিজাবে অনেক মানাত । হিজাব পড়লেও যে মেয়েদের এতো টা সুন্দর লাগে আমার জানা ছিল না । এই বাদামী হিজাব টা তোমার ট্রেড মার্ক হয়ে গিয়েছিল , হা হা হা । দূর থেকে এই রঙ টা দেখলেই বুঝতাম । আসছে , আমার কলিজা টা আসছে । কাছে এসে বারবার হিজাবের স্কার্ফ ধরে টানতা । চেহারা ঢাকতা । আস্তিন ঠিক করতা । ধেৎ । তোমার চেহারা বাদে আমি কোন দিন কিছুই দেখতে পাই নি । একটা চুল ও না । আমাকেও কি এতো লজ্জা পেতে হয় ? লজ্জাবতী !



কতো আগের ঘটনা এটা ?
বছর দুই ? নাকি আরও বেশি ?

এখনো কি সেই লজ্জাবতীই রয়ে গেছ ?



আচ্ছা , অনেক লিখেছি । আর ভালো লাগছে না । উপন্যাস টাইপ লিখি নি , হা হা হা , কিন্তু তাও , অনেক লিখেছি । কিন্তু কার জন্য লিখলাম ? তুমি তো আর পড়বে না !



ভালো থেকো প্রিতাশা । নিজের খেয়াল রেখো , টেনশন করো না .......................... ধেৎ, আবার সেই আগের মতো লিখা শুরু করেছি । আমার বিদায় লাইন ও ২০ লাইনে গিয়ে ঠেকত । হা হা হা ।



ভালো থেকো মেয়ে । খুব ভালো ।



তোমার ছন্নছাড়া
এক সময়ের সব কিছু

প্রথম প্রকাশ জুন ৭ , ২০১২ , রাত ১১ টা ৪৫ মিনিটে আমার ফেসবুক নোট
১৪টি মন্তব্য ১২টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

টরন্টোর চিঠি - "অতএব জাগ, জাগ গো ভগিনী!"

লিখেছেন শ্রাবণধারা, ১৭ ই মে, ২০২৫ ভোর ৬:৩৭


গত বছর গ্রীষ্মের শুরুতে টরন্টোয় বসবাসরত আমার জন্মস্থান জেলা-শহর থেকে আগত অভিবাসীদের একটি পিকনিকে গিয়েছিলাম। ৫০–৬০ জন নারী-পুরুষ ও শিশু-কিশোরের অংশগ্রহণে আয়োজিত সেই অনুষ্ঠানের আয়োজকদের সকলে ছিলেন নারী। তাদের... ...বাকিটুকু পড়ুন

স্টারের কাচ্চি বিরিয়ানী

লিখেছেন অপু তানভীর, ১৭ ই মে, ২০২৫ সকাল ১১:৩১



শেষ কবে স্টারের কাচ্চি খেয়েছিলাম আমার মনে নেই। আগে একটা সময় ছিল যখন কাচ্চির নাম নিলে যে নামগুলো সবার প্রথমে সামনে আসতো তার ভেতরে এই স্টারের নাম থাকতো। এখনকার... ...বাকিটুকু পড়ুন

পিনিক চা

লিখেছেন রাজীব নুর, ১৭ ই মে, ২০২৫ দুপুর ২:২৯



একটা গান আছে- পিনিক পিনিক লাগে।
ফালতু গান। পচা গান। পিনিক নামে একটা বাংলা সিনেমাও হয়েছে। আসলে 'পিনিক' শব্দটির আভিধানিক কোনো অর্থ নেই। সাধারণত নেশাদ্রব্য সেবন করার ফলে... ...বাকিটুকু পড়ুন

নটীদের আড্ডাখানা ছিল সংসদ!

লিখেছেন সৈয়দ মশিউর রহমান, ১৭ ই মে, ২০২৫ বিকাল ৩:৫৪


বাজারে যত নটী আছে হাসিনা সবগুলোকে একছাদের নিচে দক্ষতার সংগে জমায়েত করতে পেরেছিল। সেই নটীদের ছিলনা কোন যোগ্যতা কিংবা না ছিল কোন রাজনৈতিক ব্যকগ্রাউন্ড; তারপরও নটীরা সংসদে যেতে পেরেছিল।... ...বাকিটুকু পড়ুন

ছবি ব্লগঃ প্রকৃতি

লিখেছেন সামিয়া, ১৭ ই মে, ২০২৫ বিকাল ৪:৫১



কিছুক্ষণ আগে পাতায় পাতায় গড়িয়ে পড়েছে বৃষ্টির ধারা; তার চিহ্ন রয়েছে জমে থাকা পাতার ফোঁটাগুলায়, মাঝে মাঝে নিচে পড়ে গিয়ে ছোট্ট শব্দ তুলছে, বাতাসে ভেজা মাটির গন্ধ, আর দূর... ...বাকিটুকু পড়ুন

×