somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

একটি বোতলের আত্ম-কাহিনী (১ ও ২ একসাথে)

১৫ ই অক্টোবর, ২০১২ রাত ১:০৪
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

একটি বোতলের আত্ম-কাহিনী
ওমা......এ কোথায় আসলাম আবার আবার সেই দানব গুলোর চেহারা দেখতে হবে সেটা কল্পনাও করিনি। কি শব্দ? কি ঝাঁঝ আমার তো দম বন্ধ হয়ে আসছে......কাশতে কাশতে বলতে লাগলো একটা পুরোন পানির বোতল............
হঠাৎ পাশ থেকে কান্নার আওয়াজ...শুনে ঘুরে তাকিয়ে দেখে নতুন বোতলের ভিড়...সে মনে মনে চিন্তা করে এদের সাথেও কি এমনটা হবে আমার সাথে যা হয়েছিল??? তখন সে বলে উঠল তোমরা কাঁদছ কেন? কি হয়েছে? একটা বাচ্চা বোতল বলল আমদের মা বাবা কোথায়? ও তোমাদের মা বাবা...ওরা তো অই দানব গুলো।
বাচ্চা বোতলঃ মানে কি? আমাদের বাবা মা কে আপনি দানব বলছেন কেন?
পুরোন পানির বোতলঃ আরে অই যে মেশিন গুলই তমাদের মা আর বাবা হচ্ছে বিদ্যুৎ যা মাঝে মাঝে আসে এসে আবার চলে যায়। তোমরা তাকে কখনো দেখবেনা।

পুরোন পানির বোতলঃ আমি তোমাদের ভবিষ্যত।তোমরা তো আজ ই পৃথিবীতে এলে। এইরকম আমিও কয়েক মাস আগে এসেছিলাম। এসে আমিও তোমাদের মতই কেদেছিলাম কিন্তু তখন আমি কাউকেই পাইনি..কেউ এমন সান্ত্বনাও দেয়নি।
বাচ্চা বোতলঃ ও ও ও তাহলে আপনার এমন অবস্থা হল কি ভাবে? এমন কাটা ছেঁড়া চেহারা...থেতলানো মুখ। বিচ্ছিরি গন্ধ। কে করলো আপনার এই অবস্থা... ??
পুরোন পানির বোতলঃ সে অনেক কথা। আমি জন্মাবার পর আমিও তোমাদের মত এমন সুন্দর ছিলাম। কিন্তু কিছুদিন পর আমাকে নিয়ে গেল এক কারখানায়,অনেকদিন এক বস্তার ভিতর বন্দি ছিলাম আমার ভাই বোনদের সাথে...একদিন এক লোক এসে আমাদের নিয়ে গেল এক মেশিনের কাছে সেখানে আমাদের গোসল না করিয়েই কিছু রং মিশ্রিত পানি আমার ভিতর ঢুকিয়ে দিলো। তা দেখে আমি তো মহা খুশী.....আমাকে দেখতে আরো সুন্দর লাগছে। আমাকে তারা খুব ভালো করে সাজিয়ে দিলো। কিছু রঙ বেরং এর ছবি লাগিয়ে দিলো। তারপর আরেকটা বাক্সে পুরে ট্রাকে করে নিয়ে গেলো একটা নির্জন যায়গায়.......ঘুটঘুটে অন্ধকার একটা ঘরে।

একটি বোতলের আত্ম-কাহিনী ২

অনেক দিন ধরে এই অন্ধকার ঘরে বন্দী থাকতে থাকতে শরীরে মরিচা ধরে গিয়েছিল আর মনে হত আস্তে আস্তে শরীরের ভিতরের তরল পদার্থ টা যেন আমায় চিড়ে খাচ্ছে। এই সব জিনিস মানুষ খায় কি করে??? রঙ্গে ভরা, সুগার দেওয়া রসায়নিক পদার্থের মিশ্রন। আমার শরীর প্লাস্টিকের হওয়াতে হয়ত আমি বেঁচে গেছি।
শেষ মেষ এই বন্দি জীবনের অবসান ঘটিয়ে নিজেকে এক ভরে আবিস্কার করলাম এক ফ্রিজের ভিতরে।খুব আরামে দিন কাটছিলো আসে পাশে কত সুন্দর সুন্দর মেয়ে বোতল এক এক জনের গায়ের রঙ একেক রকম গায়ের গন্ধ উফফফ,......... পেপসির বোতল দেখে মনে হল যে সবাই ঠিক ই বলত একদিকে পেপসির bulky woman আর অন্য দিকে কোক এর young lady এই জন্যই পেপসি এখন কোকের সাথে পেরে উঠেনি
হঠাৎ একদিন এক সুন্দরি মহিলা বাসায় নিএ গেল ৫০ টাকার বদলে। মনে মনে চিন্তা করলাম একে তো পঁচা পানি তাও ৫০ টাকা!!!!! মানুষ জেনে শুনে এই বিষ কিভাবে খাচ্ছে??? ওরা না সৃষ্টির সেরা জীব!!!!!! আমি প্লাস্টিকের না হয়ে যদি হাড়ের তৈরি হতাম তাহলে হয়ত এত দিনে মারাই যেতাম। মনে মনে খুশিই ছিলাম আজ আমার মুক্তি হবে পঁচা পানি গুলো খেয়ে তো আমকে ফেলেই দিবে। কিন্তু ওমা আমকে ঘরের এক কনে রেখে দিল। প্রতিদিন খাওয়ার টেবিলে রেখে দিত। এ যেন বাঙ্গালীর ধর্ম সবাই কে খুব সহজে আপন করে নিতে পারে। কিছু দিন পর যখন নতুন বোতল এল তখন আমকে ডাস্টবিনে ফেলা দেওয়াতে আমি ত মহা খুশি এবার আমি চলে যাব সমুদ্রে, খাল বিল নদী নালা হয়ে। ওই খানে শুনেছি আমার মত কোটি কোটি বোতল সমুদ্রের নিচে রাজত্ব করছে। কয়দিন পরে সমুদ্রে পানি থাকবেনা আমরাই রাজত্ব করব। মানুষ বোতলে সাঁতার কাটবে।
অনেক দিন পর আমাকে নিয়ে ফেলল এমন এক জায়গায় যেখানে শুধু ময়লা আর ময়লা আমার সৌন্দর্য ধুয়ে মুছে ছাই হয়ে গেছে । কয়েক দিন পর এক জীর্ন শীর্ন দেহের একটা ছোট ছেলে গিয়ে আমকে তুলে নিয়ে গেলো এক ভাঙ্গা দোকানে সেখানে সে আমাকে দিয়ে একটা পলিথিনে করে কি যেন নিয়ে গেলো আর মুখাটাকে তার ভেতর ধুকিয়ে বার বার শুধু ফোলাতে থাকলো ...... একি আজব দুনিয়া।এবার এই দোকানের মালিক আমাকে বস্তা বন্দি করে বেচে দিলো আরেক জনের কাছে সে এনে দিয়ে গেলো এখানে। এখন আমাকে মনে হয় গলানো হবে তৈরী করা হবে নতুন কোন বোতল। হয়ত আমার ইচ্ছে টা পুরন হলনা কিন্তু মানুষের কল্যানে জীবন টা দিয়ে যেতে পারলাম.....................



সবার কাছে ক্ষমা চেয়ে নিচ্ছি। প্রথম দিন পুরোটা ন দেওয়ার জন্যে। আজ সম্পূর্ন করে দিয়ে দিলাম। ভালো থাকবেন আর বেশি বেশি কমেন্ট করবেন কারন এটাই আমার অনুপ্রেরনে.।।
৮টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

স্বৈরাচারী আওয়ামীলীগ হঠাৎ মেহজাবীনের পিছে লাগছে কেন ?

লিখেছেন শিশির খান ১৪, ০৪ ঠা নভেম্বর, ২০২৪ সকাল ৭:৪১


স্বৈরচারী আওয়ামীলীগ এইবার অভিনেত্রী মেহজাবীনের পিছনে লাগছে। ৫ ই আগস্ট মেহজাবীন তার ফেসবুক স্ট্যাটাসে লিখেছিলেন ‘স্বাধীন’। সেই স্ট্যাটাসের স্ক্রিনশট যুক্ত করে অভিনেত্রীকে উদ্দেশ্য করে আওয়ামী লীগ তার অফিসিয়াল ফেইসবুকে... ...বাকিটুকু পড়ুন

বিড়াল নিয়ে হাদিস কি বলে?

লিখেছেন রাজীব নুর, ০৪ ঠা নভেম্বর, ২০২৪ সকাল ৯:২৪



সব কিছু নিয়ে হাদিস আছে।
অবশ্যই হাদিস গুলো বানোয়াট। হ্যা বানোয়াট। এক মুখ থেকে আরেক মুখে কথা গেলেই কিছুটা বদলে যায়। নবীজি মৃত্যুর ২/৩ শ বছর পর হাদিস লিখা শুরু... ...বাকিটুকু পড়ুন

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। বকেয়া না মেটালে ৭ নভেম্বরের পর বাংলাদেশকে আর বিদ্যুৎ দেবে না আদানি গোষ্ঠী

লিখেছেন শাহ আজিজ, ০৪ ঠা নভেম্বর, ২০২৪ সকাল ৯:৪১





বকেয়া বৃদ্ধি পেয়ে হয়েছে কোটি কোটি টাকা। ৭ নভেম্বরের মধ্যে তা না মেটালে বাংলাদেশকে আর বিদ্যুৎ দেবে না গৌতম আদানির গোষ্ঠী। ‘দ্য টাইম্স অফ ইন্ডিয়া’-র একটি প্রতিবেদনে এমনটাই... ...বাকিটুকু পড়ুন

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। ভারত থেকে শেখ হাসিনার প্রথম বিবৃতি, যা বললেন

লিখেছেন শাহ আজিজ, ০৪ ঠা নভেম্বর, ২০২৪ দুপুর ১২:৩২



জেলহত্যা দিবস উপলক্ষে বিবৃতি দিয়েছেন আওয়ামী লীগ সভাপতি ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। শনিবার (২ নভেম্বর) বিকালে দলটির ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে এটি পোস্ট করা হয়। গত ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার... ...বাকিটুকু পড়ুন

=বেলা যে যায় চলে=

লিখেছেন কাজী ফাতেমা ছবি, ০৪ ঠা নভেম্বর, ২০২৪ বিকাল ৪:৪৯



রেকর্ডহীন জীবন, হতে পারলো না ক্যাসেট বক্স
কত গান কত গল্প অবহেলায় গেলো ক্ষয়ে,
বন্ধ করলেই চোখ, দেখতে পাই কত সহস্র সুখ নক্ষত্র
কত মোহ নিহারীকা ঘুরে বেড়ায় চোখের পাতায়।

সব কী... ...বাকিটুকু পড়ুন

×