somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

ফেব্রুয়ারীর পৃষ্ঠা জুড়ে অপাংক্তেয় কথকথা

২১ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৪ রাত ১০:১৬
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :



৯.
অন্তর্গত অসুখ বিলাসি স্বপ্নবোনে
নিভুচাঁদ আর মন্থর বায়ুর গ্রীবায়
ঘুমঘোর চোখে জলজ প্রতিমা
স্বপ্নালু অবয়ব মুছে যায় সত্যসভায়!

৮.
ছেঁড়া পাতায় কেবলই সন্ধ্যা, কেবলই টুপটাপ বৃষ্টি
মনের গহীনে কেবলই একটি মাত্র নাম
সূর্যগন্ধা বালুকাবেলায় কথোপকথনে বলেছিলে --
ফের কথা হবে, অলস বিকেলের বঙ্কিম আলোর সমীরণে!

৭.
তুমি ও ছদ্মবেশী

তুমি ও তোমার ছদ্মবেশী পাশাপাশি
একে অপরের দিকে তাকিয়ে
নতমুখী তোমরা দুজন, মিল রেখেছ খোঁপায়
চোখের দ্রাঘিমা ছুঁয়েছে
ধূলোর আস্তরণ, কথা কি বলছ সন্তর্পণে
কি বল নিজ মনে, আপন মনে
তোমাকে ভাঙ্গার কৌশল শিখিয়ে দাও
সন্তর্পণীকা, বিহানের মোরগ জেগে
উঠবার আগে। বলে দাও মধুরতম কথা।

তুমি ও তোমার ছদ্মবেশী পাশাপাশি
একজনের মুখে হাসির রেখা, অন্যজন
কেঁদে সামলে নিচ্ছে নিজেকে।
আমি তোমার হাসির রেখায় উদ্ভ্রান্ত
চোখসমূদ্রজলে ডুবে যাই, হারিয়ে
ফেলি আমার দিশা, কোথায় আমার ঘর
কোন ঠিকানা হতে এসেছি,
কোন অভিমানের খেয়ায় ভাসছে
তোমার চোখসমূদ্র, বলে দাও বাঁধের উপায়।

এই দেখ আমার কাঠের পা, তোমাকে ছেড়ে
যেতে চাইলে কতদূর বা যেতে পারবো।
তুমিও তোমার ছদ্মবেশী পাশাপশি
তোমরা দুজন এক হও। গোধূলি শেষে
আঁধারের কোলে যেমন চাঁদ সূর্য মিলে যায়
একই রেখায়, একই আলোর সমীকরণে।

৬.
শাদাপাতায় একএক করে দাগ কেটে যাই,
কবিতার পংক্তি আসে কিন্তু তুমি আসোনা।
তুমি কোথায় থাকো কোন গহিন বনে,
নিজস্ব ভুবনে? একবার একটি পংক্তি ভাবো,
আমার কবিতাকে ঘিরে!

৫.
ঠোঁটের উপরে তিল। ঠিক যেন তিল নয়, একটা মাছি। খাচ্ছে ঠোঁটের মধু নাক ডুবিয়ে। আমি চুম্বন বিষয়ক বই পড়ছি, চুম্বকের আবেশ খুলে অভিকর্ষজনিত বল কোথায় বেশি, সমূদ্রপৃষ্ঠ থেকে কতদূর কোন মরুরবুকে, পাখি উড়ে গ্যালে পাখনার ঝাপ্টায় ঘরকুনো মনে লাগে যদি হাওয়া বুকের পৃষ্ঠা খুলে যাবে এক এক বোতামফুল।


৪.
নিঃস্বমুখ আমাকে টানে না আর। নিঃসঙ্গতার নদীতে সাঁতার কেটে যাপিত জীবনে পরবাস্তব অস্থিরতায় পায়চারী করে করে, একবিকেলের গল্প এগোয়। তারপর পুণঃরায় মৃদু তিরষ্কারে এগোতে থাকে সূর্যের কালোর নির্মাণ। শব্দসমাজ শব্দঘোর জোছনা বুঝলেও রাত পেরুলেই দিনের দৈন্যতার কাছে বারবার হেরে যায়। নৈঃশব্দ্য আঁকিবুকি করে কর্পোরেট হাউজে।


৩.
অসুস্থ অভিজ্ঞানের প্রত্নতাত্ত্বিক চরিত্র আমি। মেলা শেষের গল্প সাজাই আরোপিত পটভূমিকায়। অবহেলিত সময় দর্পণে আমার অসাধারণ মুকাভিনয়। জলজ আয়নায় নিজের প্রতিকৃতি দেখে ঠা ঠা করে করে হাসি। হ্যাঁ, নিজের অন্তর্গত সুখবিলাস ছড়িয়ে দেই অসংখ্য দেহক্যানভাসে। বিশ্বলোকে প্রাদুর্ভাব ছড়াই প্রেমহীনতার। আমাকে বলা হয় কীট। আমি মেনে নেই। জটায়ু বটের জট বেয়ে ওঠে যাই চরকা কাটা চাঁদের বুড়ির কাছে। ছিনিয়ে নিয়ে আসি জোছনা সেমিজ। পড়িয়ে দেই রাত যখন নেমে আসে এই ধূলোমাখা বাংলার একেবেকে নদীর বুকে। সেই দুধশাদা জোছনায় তুমি যখন নাইতে নামো নাচের মূদ্রায়, আমি তখন গাইতে থাকি হেঁড়ে গলায়।

দৃশ্যত, আমার আচরণ বেমানান। কীট ও গায়ক! দুটো ভিন্ন সত্তার মহীরুহ আমার খুলির প্রকোষ্ঠে বিরাজমান আমার স্বাভাবিক আচরণেও কেউ কেউ আমাকে পাগল ঠাওর করেন। আবার আমার অস্বাভাবিক আচরণ তাঁদের কাছে কাছে স্বাভাবিকতা! না অবাক হই না মোটেও। দৃশ্যখাদকের ভূমিকায় আমার অভিনয় প্রাচীন পেশার একটি। কেবল নীল জোছনায় আমি আমার হই, কেউ কিছু বললে আমার শোনবার সময় নেই। আমি স্নান পুজা আরাধনা বলী উৎসব কোন কিছুর হেরফের হয় না এ সময়।

২.
তটসংলগ্ন যে গোধূলি, সে তুমি কবেই পাড়ি দিয়েছ। আমি অমিতব্যয়ি তাই পড়ে থাকি, জড়সড় ভাবে। কিছু অংকের হিসাব। কিছুই মিলে না। তবু বারবার করি। স্মৃতি আকড়ে থাকি। তুমি আকাশের নীলে সাঁতার কাটা রঙ্গিন মাছ। তোমার পাখনা কেটে চলে অবাক মেঘ। সারি সারি তারা, চাঁদনী অপরূপ কারুকাজে তুমি করো স্মৃতির গরাদ, আমি প্রাচীন জটাধারী। তাই তোমার স্মৃতির পাহারাদার!


১.
চুপচাপ সয়ে যাই, হৃদয়ের পোড়া দাগ পড়ে রয়, একা একা ঘুরি। এখানে সেখানে যাই। মাঝরাতে দহনের ইতিহাসে সাথী হয় নিকোটিন ছাইপাস! ভুলতে চাই, তবু মাঝরাতের সিগারেটের মত জ্বলে ওঠো তুমি; বনিকের বউ। আমার সংগোপনে লুকিয়ে রাখা উপমা!



তোমাকে ঘিরে কবিতার সকল পঙক্তি।-- হ্যাঁ তোমাকে ঘিরেই সকল পঙক্তি, তোমার জন্যই আমার কবিতায় শব্দরা এসে ধরা দ্যায়। মুখ থেকে উচ্চারিত হয় প্রিয়নামের সুমধুর সুর। বাংলা ভাষা আমার কবিতার নাম।

এই পোষ্ট দেয়ার ইচ্ছে ছিলো মাসের শেষে, কিন্তু আজকের দিনে না দিয়ে পারলাম না। আমার কবিতা সেই শহীদদের জন্য যাদের আত্নত্যাগে আজ বাংলায় বলতে এবং লিখতে পারছি।




সর্বশেষ এডিট : ২১ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৪ রাত ১০:২৪
১৮টি মন্তব্য ১৮টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

নারীনীতি ইস্যুতে তথাকথিত চুশীলদের নিয়ে কিছু কথা

লিখেছেন নতুন নকিব, ০৪ ঠা মে, ২০২৫ সকাল ৮:৫৩

নারীনীতি ইস্যুতে তথাকথিত চুশীলদের নিয়ে কিছু কথা



ইদানিং নারীনীতি নিয়ে দেশে নানা তর্ক-বিতর্ক চলছে। আলেম-ওলামা এবং ইসলামপন্থীরা যখন পাশ্চাত্যঘেঁষা নারীনীতির সুপারিশকে দ্ব্যর্থহীনভাবে প্রত্যাখ্যান করলেন, তখনই মূলত এই আলোচনার বিস্তার... ...বাকিটুকু পড়ুন

ব্লগারদের হতে হবে দেশের চিন্তাশীল সমাজের অগ্রনায়ক

লিখেছেন সত্যপথিক শাইয়্যান, ০৪ ঠা মে, ২০২৫ দুপুর ১২:৪৬

আমার ৭ বছর ১১ মাসের ব্লগিং ক্যারিয়ারে ১০,০৭৩টি কমেন্ট করেছি। প্রতি পোস্টে গড়ে যদি ২টা করে কমেন্ট করে থাকি, তাহলে, আমি কম করেও ৫০০০টি পোস্ট পড়েছি। এর অর্থ, বছরে প্রায়... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমাদের শাহেদ জামাল- ৭৮

লিখেছেন রাজীব নুর, ০৪ ঠা মে, ২০২৫ দুপুর ২:৩৭



আমার বন্ধু শাহেদ। শাহেদ জামাল।
খুবই ভালো একটা ছেলে। সামাজিক এবং মানবিক। হৃদয়বান তো অবশ্যই। দুঃখের বিষয় শাহেদের সাথে আমার দেখা হয় মাসে একবার। অথচ আমরা একই শহরে... ...বাকিটুকু পড়ুন

ঢাকার অটোরিকশা

লিখেছেন শামীম মোহাম্মাদ মাসুদ, ০৪ ঠা মে, ২০২৫ বিকাল ৩:৩৪

সেদিন একটা রিপোর্টে দেখলাম ঢাকা শহরে প্রায় ২০ লাখ রিক্সা রয়েছে। এর মধ্যে ব্যাটারিচালিত রিক্সার সংখ্যা প্রায় ৬ লাখ! ২০১৯ সালের একটা জরিপে রিক্সার সংখ্যা ছিলো ১৩ লাখ। তার মানে... ...বাকিটুকু পড়ুন

সৃষ্টির ঋণ....

লিখেছেন জুল ভার্ন, ০৪ ঠা মে, ২০২৫ রাত ৮:২৭

সৃষ্টির ঋণ....

মধ্য দুপুরে ডেল্টা হাসপাতাল থেকে বেরিয়ে সিএনজি, বাইক, উবার কিছুই পাচ্ছিনা। অনেকটা পথ হেটে বাংলা কলেজের সামনে বেশকিছুক্ষণ দাঁড়িয়ে থেকে একটা রিকশা পেয়েছি....ঘর্মাক্ত ষাটোর্ধ কংকালসার রিকশাওয়ালাকে দেখে এড়িয়ে যাওয়ার... ...বাকিটুকু পড়ুন

×