সময়ঃ রাত ১২:.৫০ মিনিট
তারিখঃ ১৬/১২/১২
নিচতলায় থাকি । তাই রাতের আকাশ আর ভোরের আকাশ চোখে পড়ে না । মাঝে মাঝে আকাশ থাকার প্রয়োজনীয়তাও উপলব্ধি করতে পারি না । তাতে কি? একসময় তো চতুর্থ তলাতেই থাকতাম । তখন মন-প্রাণ ভরে আকাশ দেখেছি । বাদলা দিনের আকাশ, শ্রাবণ সন্ধ্যার আকাশ, কড়া রোদে রৌদ্রদীপ্ত আকাশ, অসংখ্য তারায় ঝিকিমিকি করা আকাশ আরো কত প্রকারের আকাশ! মাঝে মাঝে এই আকাশের অবয়বগুলো হৃদয়ের কিছু অনুভূতিকে জাগ্রত করত । আকাশ দেখেই কবিতা লেখার জন্য মন আকুপাকু করত । অবশ্য তখনকার মত এখন আর আকাশও দেখা হয় না, কবিতাও লেখা হয় না । তবু তখনকার চেয়ে এখন বেশ আছি । আকাশ দেখতে না পেলে কি হবে? ঘড়ির সময় অনুসারে মনে হচ্ছে যে, ঐ নীলচে কাল আকাশটা এখন পুরোপুরি কাল হয়ে গেছে । অবশ্য পূর্ণিমা থাকলে অন্যরকম হওয়ার কথা ।
মানুষের জীবনের স্মৃতিগুলোকে ধরে রাখার প্রচেষ্টা চিরন্তন । জীবনটা চিরন্তন না হলেও স্মৃতিগুলো বেঁচে থাকুক আজীবন, স্মৃতিগুলো থাকুক উষ্ণ - এ প্রত্যাশা সবার মাঝেই থাকে । আমিও এর ব্যতিক্রম না । আর সেজন্যই তো এ ডায়রীটা কেনা । ইচ্ছা ছিল প্রতিদিন রাতে বসে দিনান্তের সকল ঘটনার সারকথাগুলো একটু রং মিশিয়ে লিখে রাখবো । যাতে করে আবেগের কথাগুলো পরবর্তীতে পড়ে হৃদয়েটা একটু পুলকিত হয় । কিন্তু কে লিখবে সেসব ? কার এত উৎসাহ ?
এই ডায়রীটা নিথর হয়ে বই-পুস্তকের পাশে এককোণে শুধু পড়েই থাকে । যদি এর মধ্যে ন্যুনতম প্রাণশক্তি, চেতনাবোধও থাকতো, তবে অবহেলার গ্লানি সহ্য করতে না পেরে আরো আগেই আমাকে ত্যাগ করতো ।
এজন্যই মাঝে মাঝে জড়বস্তুগুলো ভালবাসতে বেশি ইচ্ছে করে । এদের প্রাণ না থাকায়, কারো ভালবাসা কম বা বেশি হোক, প্রত্যেকটিকেই এরা গ্রহণ করে । কিন্তু মানুষের মত কখনো ছেড়ে চলে যায় না । সমগ্র জীবন ভরেই এরা কর্তার উপকারে নিযুক্ত থাকে ।
একি!!! এ কোন প্রসঙ্গে চলে আসলাম! আমার লেখার মূল উদ্দেশ্য কিন্তু এটা ছিল না । অবশ্য মূল উদ্দেশ্য কি ছিল বা আদৌ ছিল কি না, তা আপাতত মনে পড়ছে না । তবে যা-ই থাকুক না কেন, অন্তত এটা ছিল না ।
কাল, মানে আজ মহান বিজয় দিবস । বিজয় দিবসের বিজয়ী চেতনার কোন প্রতিফলনই আজকাল আমাদের রাজনীতিবিদদের মাঝে দেখতে পারছি না । তারা এখন হানাহানি, সংঘাত, নৈরাজ্য নামক অপরাজনীতিতে ব্যস্ত । গনতন্ত্র এখনো সুদৃঢ়ভাবে প্রতিষ্ঠিত নয় । নেই মত প্রকাশের স্বাধীনতা, নেই কোন সংবাদপত্রের স্বাধীনতা ।
স্বাধীনতা এখন শুধু মানুষের মুখে প্রচলিত একাধিক অর্থবোধক শব্দে পরিণত হয়েছে ।
আসলে কি লিখতে চেয়েছিলাম, তা এখনো মনে করতে পারছি না । তবে যা-ই লিখতে চাই না কেন, তা এখন আর লিখব না । রাত এখন ১টা বেজে ১৮ মিনিট । ঘুমিয়ে পড়তে হবে । তাছাড়া অনেক্ষণ ধরে মশারাও অনেক তাড়া দিচ্ছে...।
সর্বশেষ এডিট : ১৬ ই ডিসেম্বর, ২০১২ বিকাল ৪:৩৪