আজকের ম্যাচ এই বিশ্বকাপ এমন একটা সময়ে এলো যখন আমাদের জন্য সব্দিক থেকে নিজেদের আরও ভাল করে প্রমাণের চাবিকাঠি।
১। ভারত কখনও আমাদের আমন্ত্রন জানায়নি।
২। একদিনের ক্রিকেটের সাফল্যের ধারাবাহিকতা বজায় রাখতে এশিয়া কাপের পর ট২০ বিশ্বকাপেও নিজেদের সামর্থ্য বিশ্বের সামনে তুলে ধরার এর চেয়ে বর সুযোগ আর নাই।
৩। এখন আমাদের পেইস বলিং অ্যাটাক যথেষ্ট ভাল হলেও স্পিনারদের কাধে চড়েই আমরা এই জায়গায় এসেছি এবং এক সময় স্পিনিং উইকেট পেলে আমাদের জয়ের সম্ভাবনা কয়েকগুন বেড়ে যেত। ভারতে স্পিনাররাই যুগে যুগে শেষ হাসি হেসেছে। আমাদের পার্ট টাইম স্পিনাররাও অনেক দলের ফুল টাইম স্পিনার থেকে এসব উইকেটে ভাল করে।
৪। আমাদের সবচেয়ে শক্ত গ্রুপে ফেলা হয়েছে, যেখানে একি সাথে স্বাগতিক দল ( ১ নম্বর টি২০ দল), অস্ট্রেলিয়ার মত পরাশক্তি ( যাদের সাম্প্রতিক ফর্ম বিশেষ করে টি২০ ফর্ম সেরকম না এবং যাদের কোন জাতের স্পিনার নেই) , নিউজিল্যান্ডের মত দল যাদের আমরা একি ধরনের কন্ডিশনে ওয়াইট ওয়াশ করেছি আমাদের স্পিন দিয়ে এবং সবশেষে পাকিস্তান (শক্তিমত্তার দিক থেকে যারা আসলেই সীমিত অভার ক্রিকেটে আমাদের চেয়ে দুর্বল, যাদের আমরা এখন বলে কয়ে হারানোর সাহস করতেই পারি, যাদের অভারল ফর্মও খুব খারাপ যদিও তাদের মোহাম্মাদ আমির আছেন)। এদের যে কারো বিপক্ষে জয় আমাদের অন্য উচ্চতায় নিয়ে যাবে ক্রিকেট বিশ্বে যেটা হয়ত ইংল্যান্ড, শ্রীলঙ্কা বা ওয়েস্ট ইন্ডিজের সাথে জয়ে আমরা পেতাম না। when the going gets tough, tough gets going. এত শক্ত গ্রুপে যদি আমরা সেমিতে উঠতে পারি আমাদের জয়কে আর কোন পাগলও আপসেট বোলার সাহস করবেনা।
৫। বাছাই পর্ব পার হতে হলেও এক দিক দিয়ে আমি মনে করি এটা ভালো, আমাদের বিগ ম্যাচ প্র্যাকটিস হয়ে গেল। আমাদের ব্যাটসম্যানরা সেরকম ফর্মে।
৬। মুস্তাফিজ ফিরে আসলে আমাদের বোলিং শক্তি দ্বিগুণ বেড়ে যাবে। বাঁহাতি বোলার সবসময়ই ডেঞ্জারাস। আমাদের দলে রনিও আছেন। যার ভালো স্লো বল আছে।
৭। অনেকে বলেছেন আমাদের পেসাররা এত ভালো, আর ব্যাক আপ স্পিনারও এত বেশি আমাদের এক্সট্রা স্পিনার নেয়ার দরকার নাই। কথা সত্য।
আমাদের একমাত্র concern আজকের পাকিস্তানের বিপক্ষে ম্যাচেঃ
১। মোহাম্মাদ আমিরঃ এই ছেলে একটু ভিন্ন জিনিস। এর মাথা বাকি পাকিস্তানী গরুগুলার মত না। একটু পরিণত। ওকে বরাবরই ভয় পাই। তাই শেষ ম্যাচে তামিমের ছক্কাটা সেরকম মাহাত্ত বহন করে আমিরকে প্রথম অভারে ছক্কা মেরে শুরু করেছিল তামিম।
২। শোয়েব মালিক এবং সারফারাজঃ এই দুই ব্যাটসম্যান ভারতে আগেও ভালো খেলেছে, বিশেষ করে মালিক কন্ডিশন্টা খুব এঞ্জয় করে। গত ম্যাচেও এদের জুটি অনেক দূর নিয়ে গিয়েছিল পাকিস্তানকে আমাদের বিপক্ষে।
৩। আফ্রিদিঃ পিচ সহায়ক হলে ওর স্পিন ভয়ঙ্কর হয়ে উঠতে পারে। তবে সেখানেই আমাদের ফিট মুভমেন্ট, আনঅর্থোডক্স শটস যেমন রিভার সুইপ, স্কুপ, ব্যাক ফুটে কাট পুল খেলতে পারতে হবে। ভারতের পিচে বল স্লো আসে। তাই ব্যাক ফুটে খেলতে পারলেই বেটার।
৪। টপ অর্ডারে তামিম বা সৌম্য বাই চান্স ভালো না করলে চাপ পড়বে সাকিব মুশফিকের উপর যারা রানে নেই। সাকিব হালকা ঝলক দেখালেও সেটা খুবই হালকা এখনও।
৫। আমাদের উইকেট ভাঙার রেট বাড়াতে হবে।
৬। ডেথ অভার বোলিং।
পিচ প্রেডিকশনঃ ইডেন গার্ডেনে গত ম্যাচগুলা ঘাটলে দেখা যাবে শুরু কয়েক অভারে পেসাররা সাহায্য পেলেও শেষে মার খায়। মোটামুটি হাই স্কোরিং এই গ্রাউন্ডে ইকনমির দিক থেকে শেষমেশ স্পিনাররাই সবচেয়ে মিতব্যায়ি হয় এবং উইকেট বেশি নেয়। তাই আমার পছন্দের একাদশ আজকের ম্যাচেঃ
১। তামিম
২। সৌম্য
৩। সাব্বির
৪। রিয়াদ / সাকিব
৫। মুশফিক
৬। সাকিব/ রিয়াদ
৭। নাসির
৮। মাশরাফি
৯। আরাফাত সানি
১০। তাসকিন
১১। মুস্তাফিজ/ আলামিন
আলামিনের চেয়ে তাস্কিনকে বেশি কার্যকর এবং মিতব্যয়ী মনে করি আমি। যেমনটা আগেই বলেছি ইডেনের পিচে পেসাররা শেষ পর্যন্ত বেশি মার খায় সেক্ষেত্রে তাস্কিনের ডেথ অভার বোলিং আলামিনের চেয়ে ভালো এবং আলামিনের ফিল্ডিং এ দুর্বলতাও তাকে বসায় রাখার কারন আমার যদিও জানি এশিয়া কাপে তার উইকেটসংখ্যার কারনে তাকে দলে শেষ পর্যন্ত নেয়া হবে। আমি ম্যাশসহ ভারতীয় পিচে ৩ জনের বেশি পেসার নেয়াকে সাপোর্ট করিনা।
সর্বশেষ এডিট : ১৬ ই মার্চ, ২০১৬ সকাল ১১:৫৬