অফিসে বসে কিউইদের প্রথমে ব্যাটিং দেখছিলাম আর ভাবছিলাম ওরা কত জোস একটা দল যারা প্লেয়ার না পিচ এবং কন্ডীশন দেখে দল গঠন করে। তা না হলে কেউ তাদের ফ্রন্ট লাইনের বেস্ট ৩ বলারকে বাদ দিয়ে এত বড় ম্যাচে নামে? এরকম বুকের পাটা ম্যাকালামের নিউজিল্যান্ড দলেরই আজীবন ছিল বলে আজীবন তারা ক্রিকেট বিশ্বকে সারপ্রাইজ করে গেছে। এবং এখনও করছে। T20 is for the street smarts! New Zealand সেটা ভালোই পারে দেখেই এখনও ভারত ওদের হারাতে পারে নাই। আজকেও পারলনা। যখন কোরি আন্ডারসন, স্যান্টনার আর রঞ্চির দ্রিরতায় তারা ১০০ পার হল রান রেট ৬ এর ঘরে রেখে আমি আল্লাহ্ আল্লাহ্ করছিলাম শেষ ওভারে অন্তত নেহ্রাকে পাবো। কারণ নেহ্রাকে মারা সহজ হবে ওর ডেথ ওভার স্পেশালিস্ট না হওয়ার কারণে। তাই হল।। রঞ্চি ব্যাটে পেইস আনার জন্য সামনে এগিয়ে ফুল টস বানিয়ে খেলা শুরু করলো নেহ্রাকে। এবং স্কোর নিয়ে গেল ১২৬ এ। রায়নার মত বোলার যেই পিচে এত ভালো বল করে সেখানে কিছু না কিছু ঘাপলা আছেই। আজকালকার ট-২০ ক্রিকেটে খুব ঠান্ডা মাথা না হলে ১২০ এর উপরে যেকোনো স্কোর চেইজ করা কঠিন আমি মনে করি। its like 200 in 50 overs. ইউ হ্যাভ রান্স অন দা বোর্ড।
সম্ভবত ওরা স্পিন দিয়ে শুরু করবে। তাই হল... প্রথম ৩ অভারেই ৩ উইকেট। সবচেয়ে প্রাইজ উইকেট ভিরাত থাকলে তখনও ভারতের চান্স থেকেই যায়। আসলে দুইটা প্লেয়ার - ভিরাত আর ধোনী - এই পিচের জন্য বেস্ট দুই ব্যাটসম্যান যারা রান আ বল খেলতে পারবে এখানেও। ঠিক তাই হল, দুই প্রান্ত থেকে বাকিরা একেরপর এক সফট ডিসমিসাল হতে থাকল, হাফ চান্স কে ফুল চান্স বানাতে পারদর্শী কিউইরা কোন জায়গায়ই দিলনা। lethal as hell। এতদিন পেস আর সুইং দিয়ে কাবু করেছিল যাদের তাদের নিজেদের মাটিতে নিজেদের গড়তে পুতে ফেলল কিউইরা। 6 in 6। ভারতের মাটিতে ভারতের সর্বনিম্ন স্কোর, প্রথম ১০ অয়াভ্রে সর্বনিম্ন রান। কিউইদের মাত্র দ্বিতীয় সর্বনিম্ন স্কোর ট-২০তে।
অথচ কমেন্টেটরদের ভারতীয় ব্যাটিং এ ভরসা দেখে অবাক হচ্ছিলাম, তারা বলছিল ১২৬ হাসতে হাসতে জিতা উচিত ভারতীয় এই ব্যাটিং লাইনাপের। সরি টু সে, আমার মনে হয়নি এখনও ভারতের এই ব্যাটিং লাইনাপ বেস্ট। এখানে এখনও কোহলি আর ধোনী ছাড়া বস্তুত জাতের ব্যাটসম্যান নাই। বাকিরা সবাই তরুণ এবং টেকনিক্যালি দোষী। তাদের রান তাদের ধরণের কন্ডিশনেই হয় এজন্যই ভারত যুগের যুগের পর এত সব রেকর্ড বানায়। কারণ নিজেদের কন্ডিশন পেলে তারা সেটাকে বেস্ট ইউজ করে।
কিউইদের এ জয় আবারও আমার আমাদের দল নিয়ে এতদিঙ্কার চিল্লাচিল্লিকে আরও আগুন দিল। এই আসরে স্পিনাররাই হবে খেলার নিয়ন্ত্রক। যে যে দলের ভালো স্পিনার থাকবে তারাই যাবে দূরে। আমাদের দল সেটা করেনি। আমাদের দল এশিয়া কাপের সাফল্য ধরে পেস বান্ধব দল নিয়েছে, যেটা কতটা সার্থক হবে ওসি কিউইদের কাছে আমার সংশয় আছে। আমাদের সবচেয়ে বড় সুযোগ এবার পাকিস্তানকে আর অস্ট্রেলিয়াকে হারানোর। কিউইদেরও বলতাম। কিন্তু কিউইরা স্ট্রিট স্মার্ট বলে কথা। তবে এই দুটা গেম আমরা অবশ্যই জিততে পারি যদি আমরা আমাদের স্পিনারদের কাজে লাগাতে পারি।
সর্বশেষ এডিট : ১৬ ই মার্চ, ২০১৬ রাত ১২:৫৫