"একদিন আমার মোবাইলে একটি মেসেজ এলো। তাতে লেখা শায়খ আত্মহত্যা করা কি? ম্যাসেজটি পেয়ে আমি প্রেরককে ফোন করলাম। অপরপ্রান্ত থেকে একজন যুবকের কন্ঠস্বর ভেসে এলো। তাকে আমি আমার পরিচয় দিয়ে বললাম, তোমার ম্যাসেজটি পেয়েছি কিন্তু তোমার প্রশ্নটি বুঝতে পারিনি। তুমি তোমার প্রশ্নটি বুঝিয়ে বলে আমাকে। ছেলেটি বিরক্তি ও উষ্মা প্রকাশ করে বলল, আমার প্রশ্ন তো পরিষ্কার। আমি জানাকে চাইছি, আত্মহত্যা করা কি? অনাকাঙ্খিত উত্তর দিয়ে আমি তাকে অপ্রস্তুত করে দিতে চাইলাম। "আমি কাকে বললাম মুস্তাহাব!"আমার এ উত্তর শুনে সে একেবারে অপ্রস্তুত হয়ে গেল। উত্তর শুনে সে উচ্চস্বরে বলল, কি বললেন! আমি প্রসঙ্গ পাল্টে বললাম, আচ্ছা তুমি কিভাবে আত্মহত্যা করবে, আমি যদি তোমার সাথে সে বিষয়ে আলোচনা করি তাহলে কেমন হয়?
যুবকটি চুপ করে রইলো। আমি তাকে বললাম আচ্ছা তুমি কেন আত্মহত্যা করবে? যুবকটি চুপ করে রইল। তখন আমি বললাম তুমি কেন আত্মহত্যা করতে চাচ্ছ?
তখন সে বলল, আমি বেকার(এটা একটা কমন সমস্যা, আমাদের দেশে তো প্রকট আকার ধারণ করেছে )। আমার কোনো চাকরি নাই। আমি পরিবারের বোঝা। বাবা-মা, আত্মীয়-স্বজন কেউ আমাকে ভালোবাসে না।বাস্তব জীবনে আমি ব্যর্থ। কোথাও আমি৷ সফলতার মুখ দেখছি না।............এভাবেই ছেলেটি দীর্ঘ নিশ্বাসে বিরতিহীনভাবে একনাগারে তার ব্যর্থতা ও হতাশার কথাগুলো বলে গেল।"
উপরের লেখাগুলো এক উন্নতদেশের হীনমন্যতায় ভোগা আত্মহত্যাযাত্রী এক বেকার যুবকের কাহিনী। আসলে আত্মহত্যা কোনো সমাধান না। নিজের সুপ্ত প্রতিভাটাকে কাজে লাগান।কারণ, দুনিয়ার প্রত্যেকটা মানুষই কিছু সহজাত গুণ নিয়ে দুনিয়াতে জন্মান।
বর্তমানে আমাদের সমাজে অধিকাংশ মানুষ এই সমস্যায় ভুগছে। কেন আমরা এই হীনমন্যতায় ভোগী? কেন আমরা নিজেকে তুচ্ছ মনে করি। মান-মর্যাদার্যাদায়, শান-শওকতে উচ্চে উপনীত ব্যক্তিদের দিকে তাকিয়ে আমরা অনেকেই ভাবি তাদের জন্য এই জায়গায় পৌছানো সম্ভব হলেও আমার দ্বারা সম্ভব না! কেন এই হীনমন্যতা? কেন এই দুশ্চিন্তা? এইসব দুশ্চিন্তা পরিত্যাগ করা অতীব জরুরি।কারণ, বড় হওয়ার অদম্য ইচ্ছা ও আকাঙ্ক্ষাই একজন মানুষকে বড় করে তোলে। আপনি আপনার চারপাশে তাকান। খোঁজ-খবর নেন। দেখবেন অনেক সফল মানুষের সংবাদ আপনি পাবেন KFC founder Harland David Sanders, Alibaba Chairman Jack Ma, Scottish-American industrialist, business magnate, and philanthropist Andrew Carnegie, Sheikh Sulaiman bin Abdulaziz Al Rajhi, Founder of Al Rajhi BANK, Saudi Arabia etc. তারা কেউ সোনার চামচ মুখে নিয়ে জন্মায় নি। অদম্য ইচ্ছাশক্তি, সততা, জীবনে বড় হওয়ার আকাঙ্ক্ষাই তাদেরকে বড় করে তুলেছে।বারবার ব্যর্থতার পরও তারা কেউ মুষড়ে পড়েনি। অনেক সফলদের গল্প বলা যেত,যারা শূন্য থেকে শুরু করে শিখরে পৌছেছেন। বলিনি লেখার কলেবর বড় হয়ে যাবে। সুতরাং এখনি সংকল্প করুন, "আমিও বড় হবো।" হতাশাকে ঝেড়ে ফেলুন। নিজের ইচ্ছাশক্তিকে কাজে লাগান। আপনিও বড় হবেন ইনশাআল্লাহ।
সর্বশেষ এডিট : ২৭ শে অক্টোবর, ২০১৯ সন্ধ্যা ৬:৫০