এই মহীয়সী নারীটির নাম সারাহ ক্যাথরিন গিলবার্ট। সারাহ গিলবার্ট নামেই পরিচিত। জন্ম ১৯৬২ সালের ১৯ এপ্রিল। তিনি ব্রিটিশ ভ্যাক্সিনোলজিস্ট। অক্সফোর্ড ইউনিভার্সিটির ভ্যাক্সিনোলজির অধ্যাপক হিসেবে কর্মরত। ইনফ্লুয়েঞ্জা ও উদীয়মান ভাইরাল প্যাথোজেনগুলোর বিরুদ্ধে ভ্যাক্সিনগুলোর বিকাশে তিনি একজন বিশেষজ্ঞ। তিনি ফ্লু ভ্যাক্সিনের বিকাশ ও পরীক্ষার নেতৃত্ব দিয়েছিলেন এবং ২০১১ সালে এটির ক্লিনিকাল ট্রায়াল হয়েছিল। চলতি মাসেই গিলবার্ট দাবী করেছিলেন, উপযুক্ত অর্থায়ন হলে তিনি ২০২০ সালের সেপ্টেম্বরের মধ্যে কোভিড-১৯ ভ্যাকসিন সরবরাহ করতে পারবেন।
ইস্কুল জীবনেই গিলবার্টের মেডিসিন নিয়ে কাজ করার আগ্রহ জন্মে। তিনি ইস্ট এংলিয়া বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বায়োলজিক্যাল সায়েন্সে স্নাতক ডিগ্রি অর্জনের পর হাল বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হন। সেখান থেকে ডক্টরাল ডিগ্রি লাভের পর তিনি ব্রিউইং ইন্ডাস্ট্রি রিসার্চ ফাউন্ডেশনে শিল্পে পোস্টডক্টোরাল গবেষক হিসেবে কাজ করেছিলেন। পরবর্তীতে তিনি ওষধ প্রস্তুতকারী সংস্থা ডেল্টা বায়োটেকনোলজিতে যোগ দেন। ২০০৪ সালে গিলবার্ট অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ে ভ্যাকসিনোলজিতে রিডারের দায়িত্ব পান। ২০১০ সালে জেনার ইনস্টিটিউটে অধ্যাপক হন তিনি।
করোনা ভাইরাসের বৈশ্বিক মহামারীর পর থেকে গিলবার্টকে করোনা ভাইরাস রোগের নতুন টিকা উদ্ভাবনের কাজে নিয়োজিত করা হয়েছে। তিনি এই কাজে অ্যান্ডু পোলার্ড, তেরেসা ল্যাম্বে, স্যান্ডি ডগলাস, ক্যাথরিন গ্রিন ও অ্যাড্রিয়ান হিলের পাশাপাশি নেতৃত্ব দিয়ে আসছেন। তার পূর্বের কাজগুলোর মতো কোভিড-১৯ টিকা একটি অ্যাডোনোভাইরাল ভেক্টর ব্যবহার করে, যা করোনা ভাইরাস স্পাইক প্রোটিনের বিরুদ্ধে প্রতিরোধের প্রতিক্রিয়া জাগিয়ে তোলে। গিলবার্টের কাজের ধারাবাহিকতা হিসেবে জেনের ইনস্টিটিউট ঘোষণা দিয়েছে আজ প্রাথমিক ভাবে ৫১০ জনের উপর কোভিড-১৯ ভ্যাকসিনের ক্লিনিক্যাল পরীক্ষা করা হবে। যাদের বয়স ১৮-৫৫ বছর, কেবল তাদের উপর এই পরীক্ষা চালানো হবে। বেশি বয়স্কদের উপর এই ভ্যাকসিনের কার্যকারিতা কম হতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে। সেক্ষেত্রে সত্তরোর্ধ্ব ব্যক্তিদের ডাবল ডোজ দেওয়া হতে পারে। সারাহ গিলবার্ট দাবী করেন তার ভ্যাকসিনের সফলতার হার ৮০ শতাংশ। মানবজাতির কল্যাণে গিলবার্টের এই অবদান চিরস্মরণীয় হয়ে থাকবে।