নজরুলের লেখা আমার খুব প্রিয় একটা কবিতা দিলাম।
চৈতী হাওয়া
১৩৩২ বৈশাখ: কল্লোল
হারিয়ে গেছ অন্ধকারে -পাইনি খুঁজে' আর,
আজকে তোমার আমার মাঝে সপ্ত পারাবার!
আজকে তোমার জন্মদিন-
স্মরণ -বেলায় নিদ্রাহীন
হাতরে ফিরি হারিয়ে-যাওয়ার অকুল অন্ধকার!
এই-সে হেথাই হারিয়ে গেছ কুড়িয়ে পাওয়া হার!
শূণ্য ছিলো নিতল দীঘির শীতল কালো জল,
কেন তুমি ফুটলে সেথা ব্যাথার নীলোৎপল?
আধাঁর দীঘির রাঙলে মুখ,
নিটোল ঢেউয়ের ভাঙলে বুক,-
কোন পুজারী নিল ছিড়েঁ'? ছিন্ন তোমার দল
ঢেকেছে আজ কোন দেবতার কোন সে পাষাণ -তল?
বইছে আবার চৈতী হাওয়া, গুমরে ওঠে মন,
পেয়েছিলাম এমনি হাওয়ায় তোমার পরশন।
তেমনি আবার মহুয়া-মউ
মৌমাছিদের কৃষ্ঞা বউ
পান ক'রে ওই ঢুলছে নেশায় দুলছে মহুল-বন!
ফুল-সৌখিন দখিন-হাওয়ায় কানন উচাটন!
...
কোথায় তুমি কোথায় আমি চৈতে দখো সেই,
কেঁদে ফিরে যায় যে চৈত -তোমার দেখা নেই!
কন্ঠে কাদেঁ একটি স্বর-
কোথায় তুমি বাধলে ঘর?
তেমনি ক'রে জাগছ কি রাত আমার আশাতেই?
কুড়িয়ে-পাওয়া বেলায় খুজিঁ হারিয়ে -যাওয়া খেই।
২. শ্রদ্ধাঞ্জলি
তবে, আমি চিরতরে দূরে চলে যাব, তবুও আমারে দেব না ভুলিতে...-এই গানের কথাগুলো সবসময়ই আমাকে অবশ করে দেয়
এছাড়া একবার বৃটিশ কাউন্সিল অডিটোরিয়ামে খায়রুল আনাম শাকিলের কন্ঠে শাওন আসিল ফিরে, সে ফিরে এলো না
বরষা ফুরায়ে গেল, আশা তবু্ও গেল না-এই গানটা শুনে তখন থেকে আমি শাকিলের ভক্ত হয়ে গেছি। ইউটিউবে অবশ্য উনার কন্ঠে গানটা খুঁজে পেলাম না, ইয়াসমীন মুশতারীর কন্ঠে একটা পেলাম। নজরুলের গান নিয়ে শবনম মুশতারীর কন্ঠে জাতীয় যাদুঘরে পরিবেশিত গানের অনুষ্ঠান আমার দেখা সেরা গানের আসর। কাঁদতে কাঁদতে অস্থির লাগছিল। সেই থেকে শবনম মুশতারীর প্রতি শ্রদ্ধা বেড়ে গেছে অনেক অনেক।
অনেক দিন আগে টিভিতে দেখা নজরুলকে নিয়ে একটা নাটকে
এতো জল ও কাজল চোখে পাষাণি আনলে বল কে?-এই গানটা এতো অদ্ভুত করে কে যেনো গেয়েছিল...এখনও হৃদয় ছুঁয়ে আছে। সেই থেকে এই গানটা আমার কাছে বিশেষ হয়ে গেছে।
এমন আরো অনেক অসাধারণ গান যা আমরা সত্যিই কতোটুকু শুনি প্রশ্ন থেকে যায়।
৩. কবির সমাধীস্থল
এবার নজরুলকে নিয়ে কিছু পোস্টের কথা বলি
আজকে আমি কোবিদের কাছ থেকে একটা পোস্ট পাবো ভেবেছিলাম। কিন্তু উনি হয়তোবা কোন কারণে ব্যস্ত তাই জাতীয় কবিকে নিয়ে পোস্ট দিতে পারেননি। রি হোসাইন-এর একটা পোস্ট কাজী নজরুল ইসলাম যাও পেলাম, সেটা উইকিপিডিয়া থেকে কপি করা,তবে উনি সততার পরিচয় দিয়ে সোর্স উল্লেখ করেছেন। তানিমের একটা অসাধারণ পোস্ট চেতনায় নজরুল : প্রেম, দ্রোহ এবং নজরুল সাহিত্য, কিন্তু সেটা অনেক আগের বলে অনেকেরই চোখে পড়ছে না।
এই পোস্টটা থেকে কিছু সাহায্য নেয়া হয়েছে । । এছাড়া ব্লগার বিবর্তনবাদী-র প্রেমিক নজরুলের সাতকাহন (অখন্ড) দারুণ বেশ কয়েকটা পোস্টের সঙকলন।
৪. কবির রচনা
এছাড়া নজরুলের গান নিয়ে
♥ ব্লগার সিরাজ সাঁইয়ের অসাধারণ কিছু পোস্ট ১.অখিল বন্ধু ঘোষ - নজরুল গীতি,
২. রূপান্তরী - কাজী নজরুল ইসলামের লোকাশ্রয়ী ভাঙা গান,
৩. নজরুল সঙ্গীত সঙ্কলন - ৩য় পর্ব -এই পোস্টেই প্রথম এবঙ দ্বিতীয় পোস্টের লিঙক দেয়া আছে।,
৪. নজরুল সঙ্গীত সঙ্কলন - ৪র্থ পর্ব,
৫. মনোময় ভট্টাচার্য ও পণ্ডিত দেবজ্যোতি বোস - ফিরে দেখা নজরুল ।
♥ ব্লগার গানচিল-এর পোস্ট নজরুল গীতিঃ মানবেন্দ্র মুখার্জী
৫. দূর থেকে দেখা
নজরুল আর রবীন্দ্রনাথকে নিয়ে কেউ কেউ তুলনামূলক যাচাই করতে তর্কে লেগে যান...তাদের জন্যে সায়ানের এই গানটা জবাব হতে পারে।
♥ দু'চোখ দিয়েই দেখোঃ ইউটিউব লিংক
আজ শিক্ষিত লোকে গবেষণা করে
কার চেয়ে কে বড়
কাজী নজরুল, নাকি রবীন্দ্রনাথ
বলো কে বেশী বড়
এলো নজরুল, এলো রবীন্দ্রনাথ
বাঙালী তোমার জন্য
তবু গেলো না গেলো না, এখনো গেলো না
বাঙালী মনের দৈন্য
কোথায় সঞ্চয়িতা আর সঞ্চিতাই বা কোথায়
সঞ্চিতা আর সঞ্চয়িতা আজ দাঁড়িপাল্লায়
না, না, কারো অন্তরে নয়
দ্যাখো সঞ্চিতা আর সঞ্চয়িতা
আজ দাঁড়িপাল্লায়
আজ নিচ্ছে ওজন, দেখছে বাঙালী
কোনটা বেশী ভারী
কোনটা পরিত্যাজ্য আর
কোনটা দরকারী
দ্যাখো সঞ্চিতা আর সঞ্চয়িতার কোনটা বেশী ভারী
কোনটা পরিত্যাজ্য আর কোনটা দরকারী
তর্কে নেমেছে, নেমেছে বাঙালী
আজকে কোমর বেঁধে
মাঝখানে পড়ে মরছে শিল্প
পাথর চোখে কেঁদে
এক চোখে চুরুলিয়া আর
এক চোখে জোড়াসাঁকো
এক চোখ বুজে থেকো না বাঙালী
দু'চোখ দিয়েই দ্যাখো
কে ছিল ব্রাহ্ম কবি আর
কে ছিল মুসলমান
কার কবিতার সংখ্যা বেশী
কার বেশী ছিল গান
কে ছিল দোকানদার আর
কার বাবা জমিদার
কে জিতলো পুরস্কার আর
কে পেলো কারাগার
কার গান হলো শুধু গীতি আর
কার গান সংগীত
কার স্বরলিপি আছে, কার নেই
বলো কে বেশী পণ্ডিত
রবীন্দ্রনাথ শান্ত সমুদ্র
নজরুল তাতে টালমাটাল জোয়ার
রবীন্দ্রনাথ মুক্ত মহাকাশ
নজরুল সেই মহাকাশ জুড়ে
তুফান ডাকা বজ্র অহংকার
কথা ও সুরঃ সায়ান
৬. নজরুল কর্ণারের ভেতরের অংশ
♥ নজরুল সংগীত: এমপিথ্রিতে
সায়ানের গানটি আর অডিও লিংকটি সংগ্রহে ব্লগার দলছুট শুভকে বিশেষ ধন্যবাদ।
৭. নজরুল কর্ণার -প্রকাশণা ও প্রদর্শণী, বিক্রয়
চলচ্চিত্রে নজরুল
১৯৩১ সালে ধুপছায়া নামে একটি চলচিত্র পরিচালনা করেন কবি নজরুল। সেটাতে তিনি বিষ্ণু নামে একটি চরিত্রে অভিনয়ও করেন।
তারপর ১৯৩৪ সালে সত্যেন্দ্রনাথ দে পরিচালিত ধ্রুব চলচিত্রে গীতিকার, সুরকার ও সংগীত পরিচালক ছিলেন তিনি। অই চলচিত্রে নারদের চরিত্রে অভিনয়ও করেন।
১৯৩৫ সালে মুক্তিপ্রাপ্ত প্রিয়নাথ গঙ্গোপধ্যায় এর পাতালপুরী চলচিত্রে সংগীত রচনা ও পরিচালনা করেন।
তার দুই বছর পর মুক্তি পায় গ্রহের ফের।
১৯৩৮ সালে মুক্তি পায় গোরা ও বিদ্যাপতি। গোরা চলচিত্রের কাহিনীকার, গীতিকার ও সুরকার তো ছিলেন স্বয়ং রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর। নজরুল ছিলেন সংগীত পরিচালক।
বিদ্যাপতির কাহিনীকার, গীতিকার, সঙ্গীত পরিচালক ছিলেন নজরুল। বিদ্যাপতি ছবিটি পরে বলিউডে রিমেক করা হয়।
১৯৩৯ সালে মুক্তিপ্রাপ্ত সাপুড়ে ছবির কাহিনীকার ও গীতিকার ছিলেন নজরুল।
১৯৪১ সালে মুক্তি পায় নন্দিনী, যেটার জন্য একটা গান লিখে তাতে সুর করে দেন।
পরের বছর মুক্তি পায় চৌরঙ্গী। এটারও হিন্দী রিমেক করা হয়। বাংলা ও হিন্দী উভয়টাতে নজরুল গীতিকার হিসেবে ছিলেন।
এরপর ১৯৪৩ সালে তিনি ‘শহর থেকে দূরে’, ‘দিকশূল’ ছবিগুলোতে কাজ করেন। ‘শহর থেকে দূরে’ ছবিটিতে তিনি গীতিকার হিসেবে কাজ করেন। এছাড়াও ‘দিলরুবা’, ‘চট্টগ্রাম অস্ত্রাগার লুণ্ঠন’ ছবিগুলোর সঙ্গেও নাকি যুক্ত ছিলেন আমাদের বিদ্রোহী কবি।
চলচ্চিত্রের অংশটির জন্যে ব্লগার জিয়া চৌধুরীকে বিশেষ ধন্যবাদ জানাই।
৮. নজরুল কর্ণার বাইরের অংশ
সর্বশেষ এডিট : ২৬ শে মে, ২০১৩ বিকাল ৪:০৩