somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

প্রধানমন্ত্রী সমীপে ‘কোথায় ছিল ওর মাতৃত্ব?’

১৬ ই নভেম্বর, ২০১২ সকাল ১১:৩০
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :


প্রধানমন্ত্রী সমীপে
‘কোথায় ছিল ওর মাতৃত্ব?’
মাসুদ সেজান, নাটক নির্মাতা
বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম

ছেলের সঙ্গে ফ্লোরা

মাননীয় প্রধানমন্ত্রী
আন্তরিক সালাম নেবেন। এভাবে আপনাকে কখনও চিঠি লিখতে হবে, ভাবিনি। তবে জীবন আমাকে অনেক অভিজ্ঞতারই মুখোমুখি দাড় করিয়েছে, যা আমার ভাবনারও অতীত ছিল।

আমার সাবেক স্ত্রী ফ্লোরা ফেরদৌসী বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কমের মাধ্যমে আপনার সমীপে এক আবেদনে আমার বিরুদ্ধে বিভিন্ন অভিযোগ দায়ের করেছে, যা সত্যের সম্পূর্ণ বিপরীত এবং আমার ব্যক্তিগত ও সামাজিক মান মর্যাদার পক্ষে অত্যন্ত ক্ষতিকর। তাই নেহায়েৎ নিরুপায় হয়ে আমি আমাদের অতি পারিবারিক কিছু বিষয় আপনাকে জানাতে বাধ্য হচ্ছি।


প্রধানমন্ত্রী সমীপে: আমার ছেলেকে চাই

ফ্লোরার ভাষ্য, সে তার ছেলে পার্বণের জন্য আজ কান্নাকাটি করছে, কিন্তু মাননীয় প্রধানমন্ত্রী, আপনি জানবেন- এর তিনগুণ বেশি কান্না আমি পাঁচ বছর আগে কেঁদেছি। পার্বণের বয়স তখনও দুই বছর হয়নি, যখন তার শুধুমাত্র মায়ের দুধ খেয়ে বেঁচে থাকবার কথা, সেই রকম এক সকালে ঘুম থেকে উঠে দেখি, পার্বণকে ফেলে, আমাকে না জানিয়ে পার্বনের মা দিনাজপুর চলে গেছে। পরে তার বাবা মার কাছে জানতে পারি, ওখানে একটা চাকরি হয়েছে ফ্লোরার, চাকরি করতে চলে গেছে। ঢাকায় রানিং চাকরি ফেলে, ওতটুকু বাচ্চা ফেলে, আমাকে না জানিয়ে তার এই চলে যাওয়াটা কি খুব স্বাভাবিক? তিনদিন তিনরাত শতশত বার ফোন করলেও ফ্লোরা রিসিভ করেনি।


ছেলে আমার বুকে মায়ের দুধ খোঁজে আর চিৎকার করে কাঁদে, আর ছেলের কান্নার সাথে কাঁদি আমি। ক্রমাগত ফোনে চেষ্টা করবার পর অবশেষে আমার মোবাইলে একটি মেসেজ আসে, ‘তুমি যদি তোমার সবকিছু নিয়ে বাসা থেকে বের হয়ে যাও, তাহলে আমি ঢাকায় ফিরে আসবো।’ ছেলের অসহনীয় কষ্টের কথা চিন্তা করে, আগে পরে আর কিছুই ভাবতে পারিনি। এক কাপড়ে বাসা থেকে বের হয়ে গিয়েছিলাম, তবু ছেলেটা তো রক্ষা পাক...

তার রহস্যময় এই আচরণের জট খুলতে সময় লাগে আরো একমাস। তখন আমার পেশা সাংবাদিকতা। কাজ করি দৈনিক যুগান্তরে। এক সহকর্মী ফকিরাপুলের একটি হোটেলে থাকতো, আমি তার সঙ্গে গিয়ে উঠি।

প্রতিদিন ছেলেকে দেখার জন্য যাই, গিয়ে দেখি বাসায় তালা ঝুলছে। পার্বণ ওর নানীর বাসায়। শুনতে পাই, ফ্লোরা বাইরে গেছে, কখন ফিরবে কেউ বলতে পারে না। আমি পার্বণের নানীর বাসা থেকে পার্বণকে দেখে চলে আসি। একদিন পুরো ব্যাপারটি নিয়ে আমার আরও কয়েকজন ঘনিষ্ঠ সহকর্মীর সঙ্গে পরামর্শ করি। তারা পার্বণের মাকে বোঝাতে তার বাসায় যায় এবং ব্যর্থ হয়ে ফিরে আসে। ফ্লোরা তাদেরকে এড়িয়ে উঠে যায়। এই সহকর্মীদের তালিকায় এখন বাংলাদেশের প্রতিষ্ঠিত বেশ কয়েকজন সংবাদকর্মীই আছেন। আমি আর সহ্য করতে পারছিলাম না। পুরো ব্যাপারটি বোঝার জন্য, আমার অপরাধটা কোথায় জানার জন্য বারবার চেষ্টাও করি ফ্লোরার মুখোমুখি হতে, কিন্তু সে কিছুতেই আমার সামনে আসে না। যেদিন সামনে এল সেদিন বেরিয়ে এল কঠিন এক সত্য। আমার সাথে সে কেন এরকম করছে; প্রশ্ন করতেই বলল, ‘‘আমি সাতদিনের মধ্যে ইউকে চলে যাচ্ছি, তোমাকে ডিভোর্স দিয়েই যাচ্ছি, দু’এক দিনের মধ্যেই ডিভোর্স লেটার পেয়ে যাবে।’’

মনে আছে, পার্বণ তখন আমার কোলের মধ্যে, পার্বণকে কোলে নিয়েই আমি ওর পা জড়িয়ে ধরে হাউমাউ করে কেঁদেছিলাম, কাঁদতে কাঁদতে বলেছিলাম, ‘‘আমার কি অপরাধ আমি জানি না, আমার জ্ঞাত, অজ্ঞাত যাবতীয় অপরাধের জন্য তুমি আমাকে ক্ষমা করে দাও, তুমি আমাদের সংসারটা ভেঙ্গে চলে যেও না।’’

তখন ও আমাকে কি বলেছিল, ভাবতে পারেন, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী? বলেছিল, ‘‘আমি তৌফিককে কথা দিয়েছি, আমাকে যেতেই হবে।’’ তৌফিককে আমিও চিনতাম; আমার সাথে বিয়ের আগে ফ্লোরা যে ছেলেটির সাথে প্রেম করতো, তার নাম সুজা, তৌফিক সুজারই ছোট ভাই। তৌফিক ফ্লোরাকে ডাকত ‘নেলী আপা’ বলে। মহল্লার ছোট ভাই হিসেবে প্রায়-ই সে আমাদের বাসাতে আসতো। ‘ছোট ভাই’ হিসেবে ফ্লোরা আমার সাথে তার পরিচয়ও করিয়ে দিয়েছিল। আমি আমার উদারনৈতিক সাংস্কৃতিক দৃষ্টিভঙ্গি থেকে ব্যাপারটিকে খুবই সহজভাবে নিয়েছিলাম।

সেদিন আমার কান্নার মধ্যে তার মুখে নতুন পরিচয়ের তৌফিকের কথা শুনে থমকে গিয়েছিলাম। আমি বলেছিলাম অন্তত পার্বণের মুখের দিকে তাকিয়ে হলেও তোমার সিদ্ধান্ত থেকে ফিরে আসো। এই ছেলেটা সারাজীবন যন্ত্রনায় ভুগবে। তখন ফ্লোরা তিরস্কারের হাসি হেসে বলেছিল, ‘‘সমাজে আর দশজন ব্রোকেন ফ্যামেলীর শিশু আছে না? ও ওদের মতো করেই বড় হবে। ওর যা ভাগ্যে আছে তাই হবে। তৌফিক আমার পেছনে এরই মধ্যে ১৪ লাখ টাকা ইনভেস্ট করেছে। ওখানে ভালো একটা কলেজে আমি এমবিএতে ভর্তি হচ্ছি। আমরা একসাথে থাকবো। এ জন্য তৌফিক অলরেডি সুন্দর একটা বাসা ভাড়া করেছে, তুমিতো জানো, ওখানে বাসা ভাড়া অনেক এক্সপেনসিভ...’’

আমি তাকে শেষ বারের মতো একটি অনুরোধ করেছিলাম, ‘‘তুমি যখন যাবেই, যাওয়ার দিনটি অবশ্যই আমাকে জানিও। আমি পার্বণের প্রতি আলাদা যতœ নিতে পারবো।’’ সে বলেছিল জানাবে, কিন্তু শর্ত দিয়েছিল আমি যাওয়ার আগে তুমি আর বাসায় আসবে না। তার সাথে কথা বলার তিন দিনের মধ্যেই যুগান্তরের ঠিকানায় আমার ডিভোর্স লেটার পেয়ে যাই।

তারও কয়েকদিন পরে আমি একটি ফোন পাই, ফোন করেছে পার্বণের নানী। তিনি বলেন, ‘‘তোমার ছেলে অসুস্থ, তুমি এসে ওকে ডাক্তারের কাছে নিয়ে যাও।’’

আমি পার্বণকে ডাক্তার দেখিয়ে (ডাঃ মনির হোসেন) ওষুধসহ আবার ওর নানীর বাসায় রেখে আসি। পার্বণের মায়ের খোঁজ করলে বলে একটু বাইরে গেছে। সাত দিন পরে আবারও তার নানীর ফোন, আবারও পার্বণ অসুস্থ, আবারও তাকে ডাক্তারের কাছে নিতে বলে। আবারও আমি গিয়ে ডাক্তারের কাছে নিই, ওষুধসহ বাসায় দিয়ে আসি। এরও তিনদিন পর শাহবাগ মোড়ে তারই এক পরিচিতজনের মাধ্যমে জানতে পারি, পার্বণের মা ১৫দিন আগেই লন্ডন চলে গেছে। আমি একটু অবাক হই, সে বলেছিল আমাকে জানাবে, সে তার শেষ কথাটিও রাখলো না।

আমি পার্বণের পরপর অসুস্থ হয়ে পড়ার ঘটনাটি উপলদ্ধি করি। বাবাকে কিছুদিন একান্তে না পাবার ঘটনাতো ঘটছিলই, মাকেও হারিয়েছে। এতটুকু শিশু অতোবড় ধকল সহ্য করবে কিভাবে? পার্বণের নানীও পার্বণের বারবার অসুস্থ হয়ে পড়ার ঘটনায় কিছুটা বিরক্ত, আর এর জন্য যেন আমিই দায়ী। একটু পরপর ফোন দিয়ে পার্বণের এই সমস্যা, সেই সমস্যা বলে আমাকে অস্থির করে ফেলছিল। আমার মূহুর্তেই মনে হয়েছে, মা চলে গেছে যাক, বাবা হিসেবে আমিতো মরে যাইনি। মায়ের আদর থেকে বঞ্চিত হলেও আমি তাকে বাবার আদর থেকে বঞ্চিত করতে পারি না। পরদিন পার্বণকে আবারও ডাক্তার দেখিয়ে আমি আর ওই বাসায় ফিরে যাওয়ার কোনও যুক্তি খুঁজে পাইনি। আমি আবারও এক সহকর্মীর সাথে পরামর্শ করি, সেই সহকর্মী আর আমি মিলে কয়েকঘণ্টার মধ্যে নিউমার্কেট থেকে পার্বণের জন্য যাবতীয় কেনাকাটা করি, মগবাজার এলাকায় একটি বাসা ভাড়া নিই। একদিনের নোটিশে গ্রাম থেকে পার্বণের দাদীকে নিয়ে আসি। মায়ের অনুপস্থিতিতে পার্বণকে তার নিজের বাসায় এনে তুলি।

প্রিয় প্রধানমন্ত্রী, এবার আসি- একজন মা তার সন্তানকে দেখতে চায়, আর আমি বাবা হয়ে কেন তাকে দেখতে দিচ্ছি না। গত তিন বছর ফ্লোরা যখন প্রতি বছর ১ বার করে ঢাকায় এসেছিল, আমি উদারচিত্তে পার্বণকে ওখানে পাঠিয়েছিলাম, এমনকি ও লন্ডনে ফিরে গিয়ে মাঝে মধ্যে ফোন করলে পার্বণের সাথে কথাও বলিয়ে দিয়েছি। আমার সেই উদারচিত্তের সুযোগ নিয়ে একটি শিশু মনের সবচাইতে সর্বনাশা যেই পাঠÑ সেটাই ফ্লোরা পার্বণকে দিয়েছে, তার নাম ‘ডাবলস্কুলিং’।

ফ্লোরার কাছ থেকে ফিরে পার্বন আমাকে প্রশ্ন করে, ‘‘বাবা, তুমি নাকি খারাপ? তুমি নাকি ফকির?’’ সে কেন এসব জিজ্ঞেস করছে জানতে চাইলে পার্বন বলে, ‘‘আম্মু বলেছে।’’ পার্বনের মনোবিজ্ঞানীরা আমাকে জানিয়েছেন, ডাবলস্কুলিংয়ের প্রভাবে শিশু পার্বন অস্বাভাবিক হয়ে উঠতে পারে। আরও লক্ষ্য করেছি, ফ্লোরার সঙ্গে দেখা হওয়ার পর বেশ কিছুদিন সে স্বাভাবিক আচরণ করতো না।

মাননীয় প্রধানমন্ত্রী, ‘মা’ নামক যে মহান শব্দটির সাথে আপনি আমি পরিচিত, ফ্লোরা কি পার্বণের মা হিসেবে সেটা ধারণ করে? যদি সেটা সে ধারণ করতোই তবে দুই বছরের দুধের একটা শিশুকে ফেলে সে পরকীয়া করে ছোটভাই তুল্য এক প্রবাসীর হাত ধরে কিভাবে লন্ডন চলে যেতে পারলো? কেন সে তখন তার সন্তানকে সঙ্গে নিল না? সে ভেবেছিল, আমি ব্যর্থ হবো-অতটুকু ছেলেকে দেখাশোনায়; হয়তো হাল ছেড়ে দিয়ে ফ্লোরার বাবা-মায়ের দ্বারস্থ হবো; না, তা হইনি আমি। বরং আমার সর্বস্ব পণ করে, সাংবাদিকতার উজ্জ্বল ক্যারিয়ার ছেড়ে নাটক নির্মাণকেই বেছে নিয়েছি একমাত্র কাজ হিসেবে, যাতে পার্বনকে বেশি সময় দেয়া যায়।

আমি আমার ছেলের বর্তমান ও ভবিষ্যৎ চিন্তা করে এখন পর্যন্ত বিয়ে করিনি। আর সে কি করছে? দুধের শিশু পার্বণকে ফেলে কেবলমাত্র পরকিয়া প্রেমের টানে বিদেশে গিয়ে, সেই ছেলের সাথে সংসার করে, চাকরি করে তার ক্যারিয়ার গড়ে তুলছে আর বছরে একবার একমাসের জন্য আনন্দভ্রমণে এসে ‘ছেলেকে দেখব’ বলে হুকুম করা মাত্র আশা করছে, আমি তার আদেশ অনুযায়ী ছেলেকে নিয়ে তার সামনে হাজির হতে বাধ্য থাকব। বিশেষ করে যখন পার্বনের ফাইনাল পরীক্ষা চলছিলÑ না, এতটা উদার আমি হতে পারিনি, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী।
যদি তার মাতৃত্ব (!) নতুন করে উঁকি দিয়েই থাকে, বাংলাদেশে আইন আছে, আমি অবশ্যই আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। আইনানুগ যে কোন সিদ্ধান্ত মেনে নিতে আমার কোন আপত্তি থাকার কথা নয়। আমার যতো কষ্টই হোক আমি তা মেনে নিব।

মাননীয় প্রধানমন্ত্রী, ফ্লোরার পরিবার এতটাই রুচিহীন যে, তারা আমাকে ২০ লাখ টাকার বিনিময়ে পার্বণকে নিয়ে নেওয়ার প্রস্তাব পর্যন্ত দিয়েছে, একজন বাবা হিসেবে আমার কাছে তা অত্যন্ত লজ্জাজনক ও বিস্ময়কর, ঘৃণাভরে আমি তা প্রত্যাখ্যান করেছি।

ফ্লোরা চিঠিতে বলেছে, ২০০৮ এ আমি সর্বপ্রথম লন্ডন যাই। তখন আমার ছেলের বয়স ২ বছর ৩ মাস। ২০১০ এ আমি বাংলাদেশে আসলে আমার সাথে আমার ছেলের দেখা হয়। ২ বছর ৩ মাস বয়সী একটি ছেলেকে ফেলে ২ বছর পর দেশে ফিরে কয়েকদিনের জন্য মাতৃত্ব বোধ করার পরবর্তী ধাপে মা বিদেশে চলে যাওয়ার পর ছোট্ট শিশুটিকে আমি কি করে সামলিয়েছি, সে তো আমি বুঝি-মাননীয় প্রধানমন্ত্রী। সে বলছে-তার ছেলেকে মায়ের আদর থেকে বঞ্চিত করছি। আহা, একেই বলে ভুতের মুখে রাম নাম! কোথায় ছিল এই মাতৃত্ব? যখন দুই বছরের শিশুটিকে ফেলে প্রবাসে সুখের খোঁজে গিয়েছিলে? আগামী ২২ নভেম্বর আবারো সে চলে যাবে লন্ডনে, তার আগে সে আবারো আমার শিশুটিকে দেখে হাজারখানেক চকলেট দিয়ে মায়ের দায়িত্বটি পালনের পাশাপাশি শিশুটির মনোজগতে অন্তহীন এক কষ্টের সূচনা ঘটিয়ে যাবে; যা আমাকে বহন করতে হবে পরবর্তী ১ বছর। আবার সে আসবে, চকলেট নিয়ে, বুকে জড়িয়ে ধরবে পার্বনকে এবং নিমেষে আবার চলে যাবে সুখপ্রবাসে; না-এই বিত্তের খেলায় আমি ক্রীড়ণক হতে চাই না আর। যা মীমাংসা আইনের পথেই হবে।

আমিও এক মায়ের সন্তান, কোন মাকে কষ্ট দিচ্ছি না। আমি এক মায়ের ফেলে যাওয়া অবোধ এক শিশুকে মায়ের স্নেহ দিয়ে লালন-পালন করছি মাত্র।

মাননীয় প্রধানমন্ত্রী, চিঠিতে একটা লক্ষ্য করার মতো বিষয়, সে বলছে, আমার সঙ্গে ডিভোর্সের পর সে উচ্চশিক্ষার্থে লন্ডন চলে যায়। কাগজপত্র স্বাক্ষ্য দেবে, আমার সঙ্গে ডিভোর্সের ১২ দিনের মাথায় সে লন্ডন গেছে। ১২ দিনে লন্ডন যাওয়ার ব্যবস্থাপনা সম্ভব? তার মানে সে আমার সঙ্গে সংসাররত অবস্তায় লন্ডনপ্রবাসীর হাত ধরে বিদেশপাড়ি জমানোর সব ব্যবস্থা চুড়ান্তÍ করে পরে আমাকে ডিভোর্স দিয়েছে। যার আচরণ এতোটা অনৈতিক, একটি দুধের বাচ্চাকে ফেলে আপন সুখে যে বিদেশে একা ঘর বাধতে পারে, তার মুখে আমি আমার নৈতিক স্ফলনের অভিযোগ শুনে খানিকটা বিষ্মিতই হলাম।

মাননীয় প্রধানমন্ত্রী, নাটক নির্মাতা হিসেবে দেশেবিদেশে আমার পরিচিতিই সম্ভবত ফ্লোরাকে ঈর্ষান্তিত করে তুলেছে, নইলে এতদিন পর সে আমার চরিত্র নিয়ে কথা বলতে ব্যস্ত হচ্ছে কেন? আমি তো আমার ছেলের বর্তমান ও ভবিষ্যৎ চিন্তার প্রেক্ষিতে ডিভোর্সের পর বিয়েই করিনি; আর সে ছেলের স্বার্থে কি ত্যাগ করেছে এ পর্যন্ত?

মাননীয় প্রধানমন্ত্রী, আপনি একজন মা। আমারও এক মা আছেন । আমি জানি, আপনি মায়ের অবহলোয় ছুড়ে ফেলে দেয়া শিশু পার্বনের কষ্ট বুঝবেন, শিশুটির মানসিক বিকাশে যাতে কোন প্রতিবন্ধকতা না দাড়াতে পারে; আপনি তার ব্যবস্থা করবেন। মায়ের নিষ্ঠুর আচরণ যেন পার্বনকে আর রক্তাক্ত করতে না পারে, আমি সেই ব্যাপারে আপনার সহায়তা চাই।

ইতি
মাসুদ সেজান
১০টি মন্তব্য ৩টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

বেফাঁস মন্তব্য করায় সমালোচনার মুখে সমন্বয়ক হাসিবুল ইসলাম !

লিখেছেন সৈয়দ কুতুব, ০৩ রা নভেম্বর, ২০২৪ রাত ১১:৩২



"মেট্রোরেলে আগুন না দিলে, পুলিশ না মারলে বিপ্লব সফল হতো না "- সাম্প্রতিক সময়ে ডিবিসি নিউজে দেয়া সাক্ষাৎকারে এমন মন্তব্য করে সমালোচনার শিকার বৈষম্য বিরোধী আন্দোলনের সমন্বয়ক হাসিবুল... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমিত্ব বিসর্জন

লিখেছেন আজব লিংকন, ০৪ ঠা নভেম্বর, ২০২৪ রাত ১:৪৮



আমি- আমি- আমি
আমিত্ব বিসর্জন দিতে চাই।
আমি বলতে তুমি; তুমি বলতে আমি।
তবুও, "আমরা" অথবা "আমাদের"
সমঅধিকার- ভালোবাসার জন্ম দেয়।

"সারভাইভাল অব দ্য ফিটেস্ট"
যেখানে লাখ লাখ শুক্রাণুকে পরাজিত করে
আমরা জীবনের দৌড়ে জন্ম... ...বাকিটুকু পড়ুন

স্বৈরাচারী আওয়ামীলীগ হঠাৎ মেহজাবীনের পিছে লাগছে কেন ?

লিখেছেন শিশির খান ১৪, ০৪ ঠা নভেম্বর, ২০২৪ সকাল ৭:৪১


স্বৈরচারী আওয়ামীলীগ এইবার অভিনেত্রী মেহজাবীনের পিছনে লাগছে। ৫ ই আগস্ট মেহজাবীন তার ফেসবুক স্ট্যাটাসে লিখেছিলেন ‘স্বাধীন’। সেই স্ট্যাটাসের স্ক্রিনশট যুক্ত করে অভিনেত্রীকে উদ্দেশ্য করে আওয়ামী লীগ তার অফিসিয়াল ফেইসবুকে... ...বাকিটুকু পড়ুন

বিড়াল নিয়ে হাদিস কি বলে?

লিখেছেন রাজীব নুর, ০৪ ঠা নভেম্বর, ২০২৪ সকাল ৯:২৪



সব কিছু নিয়ে হাদিস আছে।
অবশ্যই হাদিস গুলো বানোয়াট। হ্যা বানোয়াট। এক মুখ থেকে আরেক মুখে কথা গেলেই কিছুটা বদলে যায়। নবীজি মৃত্যুর ২/৩ শ বছর পর হাদিস লিখা শুরু... ...বাকিটুকু পড়ুন

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। বকেয়া না মেটালে ৭ নভেম্বরের পর বাংলাদেশকে আর বিদ্যুৎ দেবে না আদানি গোষ্ঠী

লিখেছেন শাহ আজিজ, ০৪ ঠা নভেম্বর, ২০২৪ সকাল ৯:৪১





বকেয়া বৃদ্ধি পেয়ে হয়েছে কোটি কোটি টাকা। ৭ নভেম্বরের মধ্যে তা না মেটালে বাংলাদেশকে আর বিদ্যুৎ দেবে না গৌতম আদানির গোষ্ঠী। ‘দ্য টাইম্স অফ ইন্ডিয়া’-র একটি প্রতিবেদনে এমনটাই... ...বাকিটুকু পড়ুন

×