سم الله الرحمن الرحيم
সকল প্রশংসা আল্লাহর। অসংখ্য দরুদ নাযিল হোক তাঁর নবীর উপর বারবার।
নেটে ঘুরতে ঘুরতে হঠাত করে পেয়ে গেলাম হৃদয়ে শিহরণ জাগানিয়া একটি চমৎকার লেখা। লেখাটা থেকে অনেক কিছুই শেখার আছে। তবে আমার কাছে সবচেয়ে ভালো লেগেছে, লেখকের মুক্তমনের হওয়াটা, এবং সত্যকে জানার পিপাসা ও প্রচেষ্টা। এরকম মানুষ কোটিতে মনে হয় একজন পাওয়া যায়। এর আগে এমন মানুষ আমার পড়ালেখার মধ্যে পেয়েছিলাম সাহাবী হযরত সালমান ফারসী(রাঃ)কে, মাওলানা মানযুর নোমানী (রহঃ) কে। আজকে পেলাম আরেকজনকে। আলহামদুলিল্লাহ্। লেখাটি নেয়া হয়েছে এই লিংক থেকে।
আমার হানাফি থেকে সালাফি হয়ে ওঠা, অতঃপর …
আমার জন্ম একটি সাধারণ মধ্যবিত্ত পরিবারে, যেখানে আমি কখনই সম্পদের প্রাচুর্য বা দারিদ্র দেখিনি, দেখিনি ‘আধুনিকতা’ বা ‘ধার্মিকতা’ নিয়ে কোন বিশেষ ‘আগ্রহ’ বা ‘বাড়াবাড়ি’। আর দশটা মধ্যবিত্ত পরিবার তখন যেমন হত তেমন, একেবারেই সাদামাটা। স্কুলে যাওয়া, বাসায় পড়াশোনা করা, বিকেল বেলায় বন্ধুদের সাথে বাইরে খেলা, সুযোগ পেলে টিভি দেখা, আরেকটু বড় হলে পত্রিকা বা গল্পের বই পড়া – এগুলোই ছিল আমার নৈমিত্তিক রুটিন। আমার ধারণা, আমার সমবয়সী বেশিরভাগ ছেলেদের শৈশব আর কৈশোরটা এভাবেই কেটেছে।
ও, হুজুরের কথা বলতে তো ভুলেই গিয়েছিলাম! প্রতিদিন আমাদের বাসায় হুজুর আসতেন আমাকে আরবি পড়া শেখাতে। প্রথমে ‘কায়দা’, এরপরে ‘আমপারা’, সবশেষে কুর’আন – এই তো। প্রতিদিন আধা ঘন্টার মতো কাটাতাম হুজুরের সাথে। তখনকার সময়ে এটাই ছিল চল, এখনকার ছেলে-মেয়েরা এই সুযোগটুকুও পায় কি না জানি না। আরবি শেখার বাইরে আমাদের পরিবারে ধর্মচর্চার স্থান ছিল গৌন – করলে ভাল, না করলেও কোন ক্ষতি নেই – অনেকটা এরকম। পরিবারের একজন সদস্য হিসেবে আমিও বিশেষ ব্যতিক্রম কিছু ছিলাম না।
তবে ব্যতিক্রম ছিল রমযান মাস, শুক্রবার, কুরবানি, মিলাদ এগুলো। রমযান মাসে প্রতি ওয়াক্তের নামায সময়মত পড়া হোক আর না হোক প্রায় সবগুলো রোযাই রাখা হত, তারাবীর নামাযও নিয়মিত পড়া হত। অবশ্য কেউ রোযা রাখতে না চাইলে কোন রকম জবরদস্তি ছিল না। রমযান শেষে ঈদের চাঁদ উঠলে অবস্থা আবার তথৈবচ – মসজিদ থেকে আযান ভেসে আসে, এদিকে যে যার কাজে ব্যস্ত থাকে। জুম’আর নামায বাদ দিলে পরিবারে নামাযের চর্চা ছিল না বললেই চলে।
এখান থেকেই আমার পতনের শুরু। আস্তে আস্তে জুম’আর নামায মিস হতে শুরু করল, একটা পর্যায়ে গিয়ে এমন হলো যে মাসের পর মাস ধরে জুম’আর নামাযও পড়া হত না। এটা নিয়ে কারো তেমন মাথাব্যথা ছিল বলেও মনে হয় না। আস্তে আস্তে আমি ইসলামের চর্চা থেকে দূরে সরে যাচ্ছিলাম। চর্চা না থাকার ফলে ছোটবেলায় মুখস্ত করা সূরা আর দু’আগুলো ধীরে ধীরে ভুলে যেতে লাগলাম। সেই সময়টাতে আমি যে নাস্তিক বা সংশয়বাদী হয়ে গিয়েছিলাম তা নয়, তবে ধর্ম জিনিসটা তখন আমার কাছে তেমন বিশেষ কোন গুরুত্ব রাখত না। একটি মুসলিম পরিবারে জন্মেও মানুষ ইসলাম থেকে কতটা দূরে সরে যেতে পারে এটি তার একটি বাস্তব উদাহরণ।
অন্ধকার সুড়ঙ্গের শেষে …
রাত যখন সবচেয়ে গভীর হয়, যখন চারদিক নিরব-নিস্তব্ধ হয়ে আসে, যখন কুকুর আর শিয়ালের ডাক ছাড়া আর কোন আওয়াজ শোনা যায় না, তার ঠিক পরেই আসে ভোর। রমযান মাসগুলোর বদৌলতে এই অন্ধকার বছরগুলোতেও আমার মধ্যে ইমানের আলো নিভু নিভু করে হলেও জ্বলছিল। তা না হলে হয়ত তাও নিভে যেত।
আমার জীবনে নতুন ভোরের বারতা হয়ে আসে ২০০২ সালের রমযান মাসটি। তখন আমি ঢাকার মগবাজারে থাকতাম। মগবাজার চৌরাস্তা জামে মসজিদের খতিব সাহেব প্রতিদিন তারাবীর নামাযের শেষে প্রায় এক ঘন্টা ধরে ওই দিন তারাবীতে যা তিলাওয়াত করা হয়েছে তার একটি ধারণা দিতেন। তখন থেকেই প্রথম কুর’আনের প্রতি আমার আগ্রহ জন্মাতে শুরু করে। একইসাথে ইসলামের দিকে আমার টানটা আবার একটু একটু করে ফিরে আসতে থাকে। পুরোদস্তুর ‘প্র্যাক্টিসিং মুসলিম’ হয়ে না উঠলেও ওই সময়ে এটুকুও ছিল অনেক। খতিব সাহেব হয়ত জানেনও না যে তাঁর মাধ্যমে আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তা’আলা ইসলাম থেকে প্রায় বিচ্যুত একজন মানুষকে আবার ইসলামের দিকে ফিরিয়ে আনতে যাচ্ছেন।
নতুন ভোর, নতুন আশা …
অনেকেই আমাকে প্রশ্ন করেন যে কী ছিল সেই ঘটনা যার ফলে আমি আস্তে আস্তে পাল্টে যেতে শুরু করলাম, বিশেষ করে যারা আমাকে আগে থেকে চেনেন তাদের অনেকের মধ্যে এই কৌতুহলটুকু এখনো আছে। আসলে এই প্রশ্নের কোন উত্তর আমার কাছে নেই। ওই সময়টাতে আমার জীবনে কোন ‘সেনসেশনাল’ ঘটনা ঘটেনি যে যার প্রতিক্রিয়ায় আমাকে পাল্টে যেতে হবে। শুধু এটুকুই বলতে পারি যে এটি ছিল আল্লাহর পক্ষ থেকে আমার প্রতি বর্ষিত এক বিশেষ অনুগ্রহ।
সম্ভবত ২০০৩ সালের রমযান মাসের পরের কথা। ঈদের কয়েকদিন বা কয়েক সপ্তাহ পরে আমার মনে হলো যে নিয়মিতভাবে পাঁচ ওয়াক্তের নামাযটুকু অন্তত পড়া দরকার। তখন থেকেই আমার নিয়মিতভাবে নামায পড়ার চেষ্টার শুরু। সামগ্রিক লাইফস্টাইলে তেমন একটা পরিবর্তন না আসলেও এটুকুও বা কম কিসে! অন্তত শুরুটা তো করা গেল।
এদিকে মিডিয়াতে তখন কিছু ছোট কিন্তু সুদূরপ্রসারী পরিবর্তন ঘটতে শুরু করেছে। দেশ-বিদেশের বেশ কয়েকটা টিভি চ্যানেল প্রতিদিন আধাঘন্টার মতো ইসলামি অনুষ্ঠানের জন্য বরাদ্দ রাখা শুরু করেছে। এখান থেকেই ডাঃ জাকির নায়েক-এর লেকচারের সঙ্গে আমার প্রথম পরিচয়। একেবারে শুরুর ওই দিনগুলোতে এবং পরবর্তী বছরগুলোতেও জাকির নায়েক আমাকে ব্যাপকভাবে অনুপ্রাণিত করেছেন। ইসলামই যে একমাত্র সঠিক জীবনদর্শন এই ব্যাপারটি আমার মধ্যে বদ্ধমূল করতে তাঁর লেকচারের অবদান অনস্বীকার্য। পাশাপাশি এনটিভিতে প্রচারিত ‘আপনার জিজ্ঞাসা’ অনুষ্ঠানে প্রদত্ত উত্তরগুলোও দৈনন্দিন জীবনে আমাকে অনেক সাহায্য করেছে।
যাত্রার শুরুতে …
আমি তখন জীবনের একটি ক্রান্তিকাল অতিক্রম করছি। একদিকে ইসলাম সম্পর্কে জানার ব্যাপক আগ্রহ, অন্যদিকে পথ দেখানোর লোকের বড়ই অভাব। আমার মতো যারা কোন বিশেষ ব্যক্তির সরাসরি দাওয়াহ ছাড়াই নিজে থেকেই ইসলামের পথে চলতে শুরু করেছেন তাদের জন্য এটি একটি বড় চ্যালেঞ্জ। ফলে চলতে গিয়ে বারবার হোচট খেয়েছি, আবার উঠে পথ চলতে শুরু করেছি।
শৈশব, কৈশোর বা যৌবনের শুরুতে ইসলামের চর্চার সাথে তেমন একটা সম্পর্ক না থাকলেও বিভিন্ন মাযহাব এবং তাদের মধ্যকার মতপার্থক্য সম্পর্কে আমার কিছুটা ধারণা ছিল। ইসলাম সম্পর্কে নতুন করে পড়াশোনা করতে গিয়ে ধারণাটি আরো পাকাপোক্ত হলো। কার কথা রাখি, আর কার কথাই বা ফেলি! তখন আমি কঠিন একটা সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেললাম – কুর’আর আর হাদিস নিজে ঠিকমত বুঝে ওঠার আগে পর্যন্ত অন্য কোন ইসলামি বই পড়ব না। শুরু হলো আমার নতুন পথ চলা। মুফতি মুহাম্মদ শাফি উসমানি রচিত ‘তাফসির মা’আরিফুল কুর’আন’-এর বাংলা অনুবাদ এবং মুহসিন খান অনূদিত ‘সাহিহ আল-বুখারি’-এর ইংরেজি অনুবাদ পড়া শুরু করলাম। দু’টি বইই শুরু থেকে শেষ পর্যন্তু পড়তে আমার সময় লেগেছিল দুই বছরের কিছু বেশি। এখানে বলে রাখা ভাল যে ‘সাহিহ আল-বুখারি’-এর নয়টি খন্ডের মধ্যে অষ্টম খন্ডের দিকে এসে আমি হাদিসগুলো কিছু কিছু বুঝতে শুরু করি। পাশাপাশি কিউটিভিতে প্রতিদিন রাতে প্রচারিত ডাঃ ইসরার আহমেদ-এর করা তাফসিরের প্রায় প্রতিটি পর্বই আমি দেখার চেষ্টা করেছি।
কুর’আন বা হাদিস বোঝার চেষ্টা তো চলতে থাকল, কিন্তু দৈনন্দিন জীবনে চলতে হলে আরো অনেক কিছুই তো জানা চাই। কারণ কুর’আন বা হাদিস থেকে সরাসরি সব সমস্যার সমাধান বের করার জ্ঞান আমার তো তখনো হয়নি। অগত্যা ভরসা ইন্টারনেট।
মাযহাবেই আস্থা …
কুর’আন যদি একই হয়, মুহাম্মাদ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কেই যদি সবাই রাসুল মানেন তবে কেন এত মতপার্থক্য? অনুসন্ধিৎসু মন নিয়ে আমি এই রহস্যের সমাধান খুজতে লাগলাম।
মূলত আমি দু’টি বিপরীতধর্মী কিন্তু শক্তিশালী যুক্তি খুজে পেলাম। একটি যুক্তি হলো কুর’আন এবং ‘সাহিহ হাদিস’-এ যা আছে তাই হুবহু মানতে হবে, এর বাইরে যাওয়া মানেই হলো পথভ্রষ্টতা। দ্বিতীয় যুক্তিটি হলো, কুর’আন বা হাদিস সরাসরি বুঝে তা থেকে আদেশ-নিষেধ বের করার মতো পর্যাপ্ত জ্ঞান আমাদের মতো সাধারণ মানুষের নেই, ফলে হিজরি প্রথম তিন শতাব্দীর প্রাজ্ঞ পন্ডিতেরা কুর’আন এবং হাদিসের চুলচেরা বিশ্লেষণ করে যে সিদ্ধান্তে পৌঁছেছেন তা মানাই আমাদের জন্য যথেষ্ট। আর আমাদের জীবনটাকে সহজ করার জন্য যে কোন একজন ইমামের মাযহাব বা মত মানাটাই যথেষ্ট।
দ্বিতীয় মতটিই আমার কাছে বেশি যুক্তিসঙ্গত মনে হলো কয়েকটি কারণে। প্রথমত, ওই সমস্ত ইমামরা, যাদেরকে অনুসরণ করা হচ্ছে তাঁরা তাবেয়ী এবং তাঁদের পরবর্তী কয়েকটি প্রজন্মের মানুষ ছিলেন, ফলে তাঁদের জ্ঞানের ভিত্তি ছিল অনেক শক্ত। দ্বিতীয়ত, মেডিকেল কলেজে ভর্তি না হয়ে এবং পরীক্ষায় উত্তীর্ণ না হয়ে শুধুমাত্র ভলিউমের পর ভলিউম ডাক্তারি বই পড়ে যেমন কেউ ডাক্তার হতে পারে না তেমনি কোন উস্তাদের কাছ থেকে সরাসরি না শিখে শুধুমাত্র বই পড়ে কেউ ইসলামি জ্ঞান সঠিকভাবে আয়ত্ত করতে পারে না। তৃতীয়ত, কোন মতটি সঠিক সেটি নিয়ে অপ্রয়োজনে সময় নষ্ট না করে সহজেই আমাদের সমস্যার সমাধানটি জেনে ফেলা যায়।
আমাদের দেশে যেহেতু হানাফি মাযহাব বহুলভাবে প্রচলিত তাই আমি হানাফি মাযহাবের আদেশ-নিষেধ অনুযায়ী চলার সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেললাম। মুফতি ইবরাহিম দেসাই-এর ফতোয়া ওয়েবসাইট এবং মুফতি তাকি উসমানি-এর অনুসারীদের দ্বারা পরিচালিত আরেকটি ওয়েবসাইট হয়ে উঠল আমার রেফারেন্স পয়েন্ট।
আস্থায় চিড় …
যদিও আমি হানাফি মাযহাব অনুসরণ করে যাচ্ছিলাম, তবে অন্য মাযহাবের অনুসারীদের ওয়েবসাইটগুলোতেও মাঝে মধ্যে ঢু মারতাম। কৌতুহলের বশে সেখানে ঘাটাঘাটি করলেও এক পর্যায়ে কিছু বিষয় আমাকে ভাবাতে শুরু করল। মাযহাবগুলোর মধ্যে মতপার্থক্য থাকতেই পারে, কিন্তু কোন একটি বিশেষ মাযহাবের সবগুলো মতই কি বৈধ?
একটা উদাহরণ দিয়ে বলি। শাফি’ঈ মাযহাব অনুযায়ী কেউ যদি তার স্ত্রীকে স্পর্শ করে তবে তার উযু নষ্ট হয়ে যাবে, হানাফি মাযহাব অনুযায়ী তার উযু নষ্ট হবে না। একেবারেই বিপরীতধর্মী দু’টি মত। ইংরেজিতে যাকে বলে মিউচুয়ালি এক্সক্লুসিভ। একইসঙ্গে দু’টি মিউচুয়ালি এক্সক্লুসিভ জিনিস সঠিক হওয়া সম্ভব নয়। সুতরাং এক্ষেত্রে যুক্তির দাবী হলো এই দু’টি মতের একটি সঠিক হলে অপরটি অবশ্যই ভুল।
আমি আবারও লেগে পড়লাম একটি যুক্তিসঙ্গত সমাধান খুজে বের করতে।
নতুন মত, নতুন পথ …
আগের দফায় আমি কুর’আন বা ‘সাহিহ হাদিস’ থেকে সরাসরি আদেশ-নিষেধ বের করার মতটার চাইতে কোন একটি বিশেষ মাযহাব মানার মতটাকেই বেছে নিয়েছিলাম। কিন্তু এতদিনে আস্থায় যে চিড় ধরতে শুরু করেছে! এমনই এক সময়ে আমি শায়খ মুহাম্মাদ নাসেরুদ্দিন আল-আলবানি রচিত ‘রাসুলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর নামায’ বইটির বাংলা অনুবাদ পড়তে শুরু করলাম। এই বইয়ের শুরুতে তিনি রাসুলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর আদর্শ হুবহু অনুসরণের এবং সকল মতের উর্ধে ‘সাহিহ হাদিস’-কে প্রাধান্য দেয়ার পক্ষে যে যুক্তিসমূহ তুলে ধরেন তা আমাকে ব্যাপকভাবে আলোড়িত করে। এতদিন ধরে এই কথাগুলোই তো খুজছিলাম! কথাগুলো পড়ার পরে ভিতর থেকেই আমার মন সায় দিলো। ইন্টারনেটে আরো ঘাটাঘাটি করে জানতে পারলাম যে আল-আলবানি যে যুক্তিগুলো তুলে ধরেছেন তা সালাফি দা’ওয়াহ নামে পরিচিত।
এখন আমি যে কোন প্রশ্নের উত্তরের সাথে কুর’আন বা হাদিসের রেফারেন্স খুজতে থাকলাম। শায়খ মুহাম্মাদ বিন সালিহ আল-মুনাজ্জিদ-এর ফতোয়া ওয়েবসাইটে আগে মাঝে-মধ্যে ভিসিট করলেও এখন ভিসিটের হার বাড়তে থাকল। আস্তে আস্তে যে কোন প্রশ্নের উত্তর খুজে পেতে এই ওয়েবসাইটটিই হয়ে উঠল আমার মূল রেফারেন্স পয়েন্ট। মুখে কখনো দাবী না করলেও বাস্তবে আমি হয়ে উঠলাম সালাফি মতাদর্শের একজন একনিষ্ঠ অনুসারী।
অন্তরের অন্দরে প্রাণের আনাগোনা …
সম্ভবত ২০০৯ সালের দিকে আমি ইমাম সুহাইব ওয়েব-এর ওয়েবসাইটের সাথে প্রথম পরিচিত হই। সেখানকার বেশ কয়েকটা লেখা পড়ে আমি আস্তে আস্তে, মনের অজান্তেই, ওয়েবসাইটটির সাথে ভালবাসার সম্পর্কে জড়িয়ে পড়ি। এতদিন ধরে ইসলাম নিয়ে কত কিছু পড়েছি, কিন্তু এত প্রাণবন্ত লেখা তো কোথাও পড়িনি! আমাদের চারপাশের, নৈমিত্তিক জীবনের অভিজ্ঞতা থেকে নেয়া বাস্তব উদাহরণ দিয়ে যে ইসলামকে বোঝা যায় তা তো আগে জানতাম না! আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তা’আলা-কে যে এভাবে অন্তর দিয়ে ভালবাসা যায়, দুনিয়ার ক্ষণস্থায়ী জীবনের নশ্বরতা আর আখিরাতের জীবনের অবিনশ্বরতাকে যে এভাবে উপলব্ধি করা যায় তা তো আগে কখনো ভাবিনি।
আসলে এতদিন ধরে আমি যা পড়েছি তাতে কেন জানি একরকম স্পিরিচুয়াল ভয়েড বা আধ্যাত্মিক শূন্যতা ছিল। সুহাইব ওয়েব ওয়েবসাইটের বেশিরভাগ লেখা, বিশেষ করে ইয়াসমিন মোগাহেদ বা জিনান বাস্তাকি-এর লেখাগুলো আমার মধ্যেকার সেই স্পিরিচুয়াল ভয়েড কিছুটা হলেও পূরণ করতে অনেক সাহায্য করেছে।
নতুন সম্ভাবনার হাতছানি …
২০১১ সালে এল সেই মাহেন্দ্রক্ষণটি। এতদিন ধরে যেসব স্কলারের ইসলামিক লেকচার দেখতাম পিস টিভি আর ইউটিউবে, এখন ঢাকায় বসেই সেই মানের শিক্ষকদের কাছ থেকে সরাসরি ইসলাম শেখা যাবে! শায়খ তৌফিক চৌধুরী প্রতিষ্ঠিত আল-কাউসার ইন্সটিটিউট তখন সবে বাংলাদেশে এসেছে। আমাদের মতো দেশে আন্তর্জাতিক মানের এরকম একটি প্রতিষ্ঠানের আসাটা আমার মতো মানুষের জন্য এক দুর্লভ সৌভাগ্যই বটে।
আল-কাউসার ইন্সটিটিউটে আমার প্রথম কোর্সটি ছিল ‘লর্ড অফ দ্য ওয়ার্ল্ডস’, যেখানে দুই দিন ধরে তৌফিক চৌধুরী আমাদেরকে তাওহিদ আল-রুবুবিয়্যাহ এবং তাওহিদ আল-উলুহিয়্যাহ সম্পর্কে একটি ভাল ধারণা দিয়েছেন। এই কোর্সটি থেকে আমি যা শিখেছি তার একটি সারসংক্ষেপ আমার ব্যক্তিগত ব্লগে এরইমধ্যে একটি সিরিজ আকারে প্রকাশ করেছি। তবে শুধুমাত্র তাওহিদ নয়, এই কোর্স থেকে আমি আরো অনেক কিছুই শিখেছি। কোর্সের প্রথম দিনেই তৌফিক চৌধুরী সরাসরি শিক্ষকের কাছ থেকে ইসলাম শেখার গুরুত্ব এবং শুধুমাত্র ইন্টারনেট থেকে, বিশেষ করে ফতোয়া ওয়েবসাইট থেকে, ইসলাম শেখার বিপদ সম্পর্কে আমাদেরকে উপদেশ দিলেন। তার মানে, এতদিন ধরে আমি যেভাবে ইসলাম শিখে এসেছি তা পদ্ধতিগতভাবে সঠিক ছিল না!
মনের মধ্যে বয়ে যাওয়া কালবৈশাখী ঝড় …
২০১১ সালের শেষের দিক থেকে শুরু করে ২০১২ সালের প্রথমার্ধ পর্যন্ত সময়ের মধ্যে বেশ কিছু বিষয় আমার সামনে আস্তে আস্তে পরিস্কার হতে শুরু করে। এর মধ্যে আমার ভাবনার জগতে সবচাইতে বেশি নাড়া দিয়েছে উস্তায বিলাল ইসমাইল-এর নেয়া আলকাউসার কোর্স, বন্ধুপ্রতিম এক উদীয়মান উস্তাযের সাপ্তাহিক হালাকা এবং এক প্রিয় সহকর্মীর সাথে দিনের পর দিন ধরে এই বিষয়গুলো নিয়ে পর্যালোচনামূলক আলোচনা।
প্রথমেই আসি বিলাল ইসমাইলের কথায়, যিনি ২০১২ সালের প্রথম দিকটায় ঢাকাতে এসেছিলেন ‘দ্য ফাইনাল রাইটস’ কোর্সটি আমাদেরকে পড়াতে। জানাযা, দাফন, উত্তরাধিকার ইত্যাদি নিয়ে পড়ানোর কথা থাকলেও তিনি আমাদেরকে দিয়ে গেছেন আরো অনেক অনেক বেশি। কোর্স সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন বিষয় পড়াতে গিয়ে তিনি আমাদেরকে বিভিন্ন মাযহাবের ভিন্ন ভিন্ন মতসমূহের প্রতিটি মতের পক্ষে যুক্তি তুলে ধরে দেখিয়েছেন যে প্রতিটি মতই যথেষ্ট যুক্তিসঙ্গত এবং উসুলের খুটিনাটি পার্থক্য স্বত্বেও প্রতিটি মতের উৎসেই আছে কুর’আন এবং রাসুলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর সুন্নাহ।
এখানে মাত্র একটি উদাহরণ দিয়ে ব্যাপারটি বুঝিয়ে বলছি। প্রশ্ন হলো, দূরবর্তী কোন ভূখন্ডে যদি কেউ মারা যায় তবে তার মৃতদেহের অনুপস্থিতিতে তার জন্য জানাযার নামায আদায় করা আমাদের জন্য বৈধ হবে কি? এই বিষয়ে ইসলামিক স্কলারদের মধ্যে চারটি ভিন্ন ভিন্ন মত আছে। প্রথম মত অনুযায়ী, মৃতদেহের অনুপস্থিতিতেও দূরবর্তী স্থানে তার জন্য জানাযার নামায আদায় করা বৈধ, যেহেতু রাসুলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আবিসিনিয়ার ন্যায়পরায়ণ বাদশাহ নাজ্জাশির মৃত্যুর পর আবিসিনিয়া থেকে অনেক দূরবর্তী স্থান মদিনাতে তাঁর জানাযার নামায আদায় করেছিলেন। দ্বিতীয় মত অনুযায়ী, মৃতদেহের অনুপস্থিতিতে দূরবর্তী স্থানে তার জন্য জানাযার নামায আদায় করা বৈধ নয়, কারণ রাসুলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এমনটি জীবনে মাত্র একবারই করেছিলেন। রাসুলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর সময়ে তাঁর অনুপস্থিতিতে সাহাবীরা প্রায় ষাটটির মতো জিহাদে অংশ নিয়েছিলেন, যেখানে অনেক সাহাবী শহীদও হয়েছিলেন, কিন্তু রাসুলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) কখনোই তাদের জন্য মদিনাতে জানাযার নামায আদায় করেননি। এই মতের অনুসারীদের মতে মৃতদেহের অনুপস্থিতিতেও জানাযার নামায আদায় করা রাসুলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর জন্য বিশেষভাবে বৈধ ছিল, কিন্তু তাঁর উম্মতের জন্য নয়। তৃতীয় মত অনুযায়ী, মৃত ব্যক্তি যেখানে মারা গিয়েছেন সেখানে তার জানাযার নামায না হয়ে থাকলে তবেই কেবলমাত্র তার অনুপস্থিতিতে দূরবর্তী স্থানে তার জন্য জানাযার নামায আদায় করা বৈধ। এই মতের অনুসারীদের মতে নাজ্জাশির মৃত্যুর পর আবিসিনিয়াতে তার জানাযার নামায আদায় করা হয়নি যেহেতু তিনি তাঁর ইমান গোপন রেখেছিলেন এবং তাঁর সভাসদেরা ছিলেন খ্রিস্টান, ফলে রাসুলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) মদিনাতে তাঁর জানাযার নামায আদায় করেছেন। চতুর্থ মত অনুযায়ী, মৃত ব্যক্তি যদি গোটা মুসলিম উম্মাহ-এর জন্য বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ কোন ব্যক্তি হয়ে থাকেন এবং তাঁর মৃত্যুর ফলে উম্মাহ-এর মধ্যে এক অপূরণীয় ক্ষতি অনুভূত হয় তবেই কেবল যে কোন দূরবর্তী স্থানে তাঁর জন্য জানাযার নামায আদায় করা বৈধ। এই মতের অনুসারীদের মতে নাজ্জাশি মুসলিম উম্মাহ-এর জন্য এমন গুরুত্বপূর্ণ একজন ব্যক্তি ছিলেন বলেই তাঁর মৃতদেহের অনুপস্থিতিতেও রাসুলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) মদিনাতে তাঁর জানাযার নামায আদায় করেছেন, কিন্তু বিভিন্ন জিহাদে শহীদ হওয়া সাহাবাদের জন্য মদিনাতে জানাযার নামায আদায় করেননি।
একের পর এক এরকম অনেকগুলো উদাহরণ দিয়ে বিলাল ইসমাইল আমাদেরকে বুঝিয়ে দিয়েছেন যে প্রতিটি মাযহাবই শক্ত ভিত্তির উপরে প্রতিষ্ঠিত। প্রতিটি মাযহাবের মূল উৎস হলো কুর’আন এবং রাসুলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর সুন্নাহ। ফলে কোন বিষয়ে যে কোন একটি মতকে ‘সাহিহ হাদিস’-এর উপর প্রতিষ্ঠিত একমাত্র মত বলে দাবী করে অন্য বৈধ মতগুলোকে অস্বীকার করা বা তাচ্ছিল্য প্রদর্শন করা নিঃসন্দেহে মাযহাবগুলোর প্রতি আরোপিত একটি বড় অপবাদ এবং শতাব্দীর পর শতাব্দী ধরে ধারণ করা পান্ডিত্যপূর্ণ জ্ঞানের প্রতি বৃদ্ধাঙ্গুলি প্রদর্শনের শামিল।
উস্তায বিলাল ইসমাইলের এই কথাগুলোর প্রতিধ্বনি আমি আবারও পাচ্ছিলাম প্রায় প্রতি সপ্তাহান্তে, ইমাম আন-নাওয়ায়ি-এর বিখ্যাত চল্লিশটি হাদিসের সংকলনের উপর অনুষ্ঠিত হালাকাতে। এই হালাকার উস্তায আরবি ভাষাতে দক্ষ হওয়ায় একেকটি হাদিসের ব্যাখ্যা যে কতটা গভীর হতে পারে তা আমাদের খানিকটা জানার সুযোগ হয়েছে। আমাদের উস্তায মূল আরবিতে লিখিত হাদিসগুলোর বিস্তারিত পান্ডিত্যপূর্ণ ব্যাখ্যা পড়ে এসে সেটাই আমাদের সামনে বাংলাতে উপস্থাপন করতেন। ইসলামিক স্কলাররা কতভাবে যে একটি হাদিস নিয়ে গবেষণা করেন এবং কিভাবে ছোট্ট কয়েকটি বাক্য থেকে পাতার পর পাতা শিক্ষণীয় বিষয় বের করে আনেন তা দেখলে এমনিতেই তাঁদের প্রতি শ্রদ্ধায় মাথা নত হয়ে আসে। অন্তরকে নরম করার জন্য, আল্লাহর আনুগত্যে লেগে থাকার জন্য, এমনকি সাধারণভাবে জানার জন্যও কুর’আন বা হাদিস পড়লে তো ঠিকই আছে, বরং পড়তে তো হবেই, তবে সেখান থেকে সরাসরি আদেশ বা নিষেধ বের করার মতো জ্ঞান আমার বা আপনার কারোরই নেই। আর একাধিক ব্যাখ্যার মধ্যে কোনটি অপেক্ষাকৃত সঠিক তা বের করার যোগ্যতা তো নেইই।
বুঝতেই পারছেন যে আমি এত বছর ধরে যাকে একমাত্র ধ্রুব সত্য বলে যেনে এবং মেনে এসেছি তা একের পর এক ভেঙ্গে খান খান হয়ে যাচ্ছে। তবে আমি অন্ধভাবে কারো মত মেনে নেয়ার মতো মানুষ নই। এর আগেও আমি বেশ কয়েকবার এরকম উথাল পাথাল পরিস্থিতির মধ্য দিয়ে গিয়েছি, তবে আগেরগুলোর সাথে এবারেররটার পার্থক্য হলো এখন আমি সরাসরি রক্ত-মাংসের মানুষের কাছ থেকে শিখছি, ইন্টারনেট নামক ভার্চুয়াল কোন জগৎ থেকে নয়। এই দফায় আরেকটি বড় পার্থক্য ছিল – আগে এই বিষয়গুলো নিয়ে আলোচনা করার মতো কেউ ছিল না, কিন্তু এবারে ছিল। আমার এক সহকর্মীও এই টপিকের উপর বেশ আগ্রহী ছিলেন। প্রথমদিকে বেশ কিছু বিষয়ে তাঁর সাথে আমার মতের অমিল থাকায় বেশ সুবিধাই হয়েছে। আমি আমার দিক থেকে যুক্তি দিতাম, তিনি দিতেন তাঁর দিক থেকে – এভাবেই দিনের পর দিন, মাসের পর মাস ধরে যুক্তি আর পাল্টা যুক্তি এবং গঠণমূলক আলোচনার মাধ্যমে আমরা উভয়েই একটি উপসংহারে পৌঁছার চেষ্টা করে গেলাম। অন্তত আমি আমার উপসংহারটুকু খুজতে থাকলাম।
ঝড়ের শেষে …
গ্রীষ্মের প্রচন্ড দাবদাহের মধ্যে শেষ বিকেলে চারদিকের সব ধুলিকণা উড়িয়ে সবেগে বয়ে যায় কালবৈশাখী ঝড়। ঝড়ের ফলে সারাদিনের ধুলিধুসরিত রাস্তাঘাট হয়ে যায় পরিচ্ছন্ন, গরমের মধ্যে নেমে আসে স্বস্তির পরশ। এদিকে আমার মনের মধ্য দিয়েও তো বয়ে গেল এক বিশাল কালবৈশাখী ঝড়। এই ঝড়ে আমি কী পেলাম আর কী হারালাম? ঝড়ের শেষে আমি কি আবারও হানাফি মাযহাবে ফেরত গেলাম? নাকি সুফি ভাবধারার দিকে ঝুকে পড়লাম? নাকি সালাফি মতাদর্শেই রয়ে গেলাম?
আসলে এই প্রশ্নের উত্তর জানাটা খুব একটা জরুরী নয়, কারণ আমার মৃত্যুর পরে না আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তা’আলা, না কোন ফেরেশতা আমাকে এই প্রশ্নগুলো করবেন। বরং যতদিন বেঁচে আছি ততদিন ইসলামের উপর বহাল থাকা এবং ইমান সহকারে মৃত্যুবরণ করতে পারাটাই হলো আমার এবং আপনার সকলের জন্য সাফল্যের মূল চাবিকাঠি।
এতে কোন সন্দেহ নেই যে চিন্তার জগতে বয়ে যাওয়া এই ঝড়ের পর আমার দৃষ্টিভঙ্গি অনেকটাই পাল্টেছে। এখন আমি আর বাইনারি নাম্বারের মতো কোন একটি বিশেষ মতকে একমাত্র ‘সঠিক ইসলাম’ বা ‘বিশুদ্ধ ইসলাম’ এবং বাকী মতগুলোকে ‘ভেজাল ইসলাম’ বা ‘বেঠিক ইসলাম’ বলে মনে করি না। কেউ চাইলে অবশ্যই সালাফি হতে পারে, অথবা হানাফি বা মালিকি বা শাফি’ঈ বা হাম্বালি হতে পারে – তবে মনে রাখা জরুরী যে আমি বা আপনি যে ‘ব্র্যান্ড’-এর ইসলামই অনুসরণ করি না কেন, দিনের শেষে আমাদের পরিচয় কিন্তু একটাই – আর তা হলো আমরা মুসলিম।
উস্তায ইয়াহিয়া ইবরাহিম-এর একটি উদ্ধৃতি দিয়ে শেষ করছিঃ
A scholar, as senior and respected as he or she may be, past or present, is not Islam. They represent a view point in Islam but Islam is not confined to their understanding.
ভাল থাকুন, সুস্থ থাকুন, চিন্তাটাকে চাঙ্গা রাখুন।
কিছু অতীব জরুরী পোষ্টঃ
ইসলামের নবী (সল্লাল্লহু আলাইহিওয়আ সাল্লাম) এর বিরুদ্ধে নাস্তিকদের উত্থাপিত প্রায় সকল প্রশ্নের দাঁতভাঙ্গা জবাব । হুমায়ূন আহমেদের ২য় বিবাহ - পর্ব ৩
আর বিজ্ঞান দিয়ে যারা ইসলামকে মোকাবেলা করতে চায় তাদের জবাব দিতে নীচের পোষ্টগুলো পড়ুন।
যারা বিজ্ঞান দিয়ে কোরআনের ভুল ধরেন তারা সবাই একটু দেখুন। সাইন্টিফিক মেথড সম্পর্কে আগে জানুন।
দু'টি চুরির মামলা এবং সেই আলোকে বিবর্তনবাদ, পৃথিবীর স্থিরতা, আস্তিকতা- নাস্তিকতা এবং নাসার চাঁদে যাওয়ার প্রমাণ।
সর্বশেষ এডিট : ০৪ ঠা এপ্রিল, ২০১৩ সকাল ৭:১০