بسم الله الرحمن الرحيم
সকল প্রশংসা আল্লাহর। অসংখ্য দরুদ নাযিল হোক তাঁর নবীর উপর বারবার।
অনেক দিন আগে দস্যু বনহুর নিকের এক নাস্তিক স্রস্টার অনস্তিত্তের পক্ষে সাদামাটা কিছু যুক্তি.. এই নামে একটি পোষ্ট দিয়েছিলো। সাদামাটা বলেই হয়তো আস্তিকদের পক্ষ থেকে সেটার তেমন জবাব দেয়ার চেষ্টা করা হয়নি। তবে নতুন ব্লগার যারা , তারা অনেকেই বিভ্রান্ত হতে পারে ভেবে, তার দেয়া যুক্তিসমূহ আমি আল্লাহ্র দয়ায় খণ্ডন করার চেষ্টা করছি।
নাস্তিকের ১ম যুক্তিঃ
তাহলে দেখা যাচ্ছে সৃস্টিকর্তা মহাবিশ্ব সৃস্টি করেছেন কোন এক সময়ে এবং তার আগে সৃস্টি করেছেন "সময়"। কিন্তু কথা হচ্ছে সেই "সময়"কে সৃস্টি করলেন কোন সময়ে? আর যে সময়ে "সময়" সৃস্টি করলেন সেই সময়কে সৃস্টি করলেন কোন সময়ে? এভাবে প্রশ্ন চলতে থাকলে দেখা যাবে প্রকৃতপক্ষে "সময়" সৃস্টি করা সম্ভব নয়। অর্থ্যাৎ জগৎসংসারের সবকিছূর স্রস্টা সৃস্টিকর্তা এই বক্তব্য মিথ্যা ।
পাঠক! প্রথমে একবার পরে আপনি হয়তো একটু চমকে যাবেন। জবাব খুঁজতে যাবেন। কিন্তু তাড়াতাড়ি জবাব দিতে গিয়ে ঠিকমত জবাব দিতে না পেরে দ্বিধার মধ্যে পরে যাবেন। এটাই আমাদের ভুল আমরা সব ক্ষেত্রে তাড়াতাড়ি করি। সুখশান্তি মরণের পর বেহেশতে গিয়ে করার চেয়ে তাড়াতাড়ি দুনিয়াতেই করে ফেলতে চাই। না তাড়াহুড়া করা যাবেনা। নাস্তিকদের কোন লেখার জবাব দিতে গেলে সময় নিয়ে পোষ্টটি ৩/৪ বার পড়ুন। তার দাবী কি আর সেই দাবী সে কোন দুই ভিত্তির উপর দাঁড়িয়ে করছে এগুলো আলাদা করে চিহ্নিত করুন। এরপর তার ভিত্তিকে খণ্ডন করুন। কিন্তু নাস্তিকরা তাদের কথা এমন পেঁচিয়ে গুচিয়ে বলে যে কোনটা দাবী আর কোনটা ভিত্তি এগুলো সবাই তাড়াতাড়ি ধরতে পারেনা। তাই তাড়াহুড়া না করে ঠন্ডা মাথায় ধীরে সুস্থে চিন্তা করতে হবে। নাস্তিকদের যুক্তি সব ফেরাউনের যাদুকরদের রশির সাপের মত, যেগুলো দেখতেই শুধু সাপ ছিলো, কিন্তু আসলে ছিলো রশি। তেমনি নাস্তিকদের যুক্তি প্রথম দর্শনে বেশ মজবুত মনে হয়, কিন্তু চিন্তা করলেই দেখবেন তার দাবীর পক্ষে কোন মজবুত ভিত্তি নাই। এই ভিত্তি না থাকাকে সে বাকচাতুর্য তথা কথার মারপেঁচ দিয়ে আড়াল করে।
এখন আসুন আমরা আল্লাহ্র তওফিকে এই নাস্তিকের যুক্তি খণ্ডন করার চেষ্টা করি। খেয়াল করুন নাস্তিক প্রথমে ধরে নিয়েছেন যে, সময় এককালে ছিলোনা , পরে আল্লাহ্ তাকে সৃষ্টি করেছেন। কি বুঝলেন? আবার পড়ুনঃ একদা সময়ের অস্তিত্ব ছিলোনা, পরে আল্লাহ্ তাকে অস্তিত্ব দান করেছেন। আবার পড়ুনঃ একদা সময় বলে কিছু ছিলোনা, পরে আল্লাহ্ তাকে অস্তিত্ব দান করেছেন। এটা ধরে নিয়ে নাস্তিক এবার প্রশ্ন করছে যে, আল্লাহ্ সময়কে কোন সময়ে সৃষ্টি করেছেন? কি বুঝলেন? এই প্রশ্নটা কি কিছু হয়েছে? আরে বাবা, আপনিতো ধরেই নিয়েছেন যে, সময় তখন ছিলোনা।তখন যেহেতু সময়ের অস্তিত্বই ছিলোনা, তাই "কোন সময়" এই প্রশ্নটাই করা যাবেনা। সময়কে সৃষ্টি করার পর যা কিছু ঘটেছে, সেক্ষেত্রে প্রশ্ন করা যেতে পারে যে, এটা কোন সময় হয়েছে। কিন্তু খোদ সময়ের ক্ষেত্রে এই প্রশ্ন করা যায়না। সময়কে সৃষ্টি করার জন্য কোন সময়ের প্রয়োজন নেই। আমরা সময়ের অধীন, আমরা সময়ের মাত্রায় আবদ্ধ। কিন্তু যিনি সময়কে সৃষ্টি করেছেন তিনি সময়ের আগেও ছিলেন, এবং সময়কে তৈরী করতে তার অন্য কোন সময়ের দরকার হয়না। তার কাছে অতীত, বর্তমান, ভবিষ্যৎ বলে কিছু নেই , তাঁর কাছে আগে পরে বলে কিছু নেই। কিন্তু এই যে আবস্থাটা যে, অতীত, বর্তমান, ভবিষ্যৎ বলে তার কাছে কিছু নেই, এই অবস্থাটা যে কেমন, এটা কিন্তু আপনি আমি সারা জীবন চিন্তা করে পাগল হয়ে গেলেও বুঝতে পারবোনা। কারণ সময়ের এই গণ্ডীর ঊর্ধ্বে উঠে আমরা কখনো চিন্তাও করতে পারবোনা এবং সময়কে বাদ দিয়ে আমরা কোন ভাব, প্রকাশও করতে পারবোনা। এখানে নাস্তিক যে ভুলটা করেছে, সেটা হলো, স্রষ্টাকে সে নিজের সাথে তুলনা করে সময়ের গণ্ডীতে আবদ্ধ করে ফেলছে। অথচ এটাতো একেবারে সাধারণ কমনসেন্স দিয়ে বুঝা যায় যে, যিনি সময়কে সৃষ্টি করেছেন তিনি সময়ের মুখাপেক্ষী নন, তিনি সময়ের গণ্ডীতে আবদ্ধ নন। আল্লাহ্ যে ছয় দিনে আসমান জমীন সৃষ্টি করেছেন বলে বলা হয়েছে, সেটা আমাদের হিসাবে বলা হয়েছে, আল্লাহ্র হিসাবে নয়; ছয়দিন সময়টা পাড় হয়েছে আসমান জমীনের উপর দিয়ে, আল্লাহ্র উপর দিয়ে নয়। আল্লাহ্র উপর দিয়ে কোন কাল বয়ে যায়না, তিনি কালের ঊর্ধ্বে। আমাদেরকে সম্বোধন করে কোন কথা বললে, সেটা আমরা যেভাবে বুঝবো সেভাবেই তো বলতে হবে।
তাহলে আমরা কি দেখলাম যে, নাস্তিক তার যুক্তির শুরুতে সময় ছিলোনা বলে ধরে নিলেও, যখন প্রশ্ন করছে , তখন সময় ছিলো বলে ধরে নিয়ে প্রশ্ন করছে। তো, এটা কিছু হলো? সময়ের কোন শুরু নেই এটা সে প্রমাণ করতে চায়। কিন্তু প্রমাণ করার আগেই সে , এটাকেই ভিত্তি বানিয়ে প্রশ্ন করছে। বুঝলেনতো নাস্তিকের চালাকি? নিজের দাবীকেই চালাকি করে তার যুক্তির ভিত্তি বানিয়ে রেখেছে। এই ধোঁকাবাজীকে ঠিক কিভাবে কোন উপমা দিয়ে প্রকাশ করা যায়, এই ব্যাপারে কোন পাঠক আমাকে একটু হেল্প করতে পারেন কি ? আমি আসলে কোন উপযুক্ত উপমা খুঁজে পাচ্ছিনা।
((মোটকথা হলো নাস্তিকের যুক্তির ভিত্তিটা হলো যে, সময়কে সৃষ্টি করতে হলে আরেকটি সময় লাগবে। এই ভিত্তিটাই ভুল। সময়কে সৃষ্টি করার জন্য কোন সময়ের প্রয়োজন নেই। যিনি সময়ের সৃষ্টিকর্তা তিনি সময়ের ঊর্ধ্বে। স্রষ্টাকে নিজের মত ভাবা বোকামী। স্রষ্টার সময়কে তৈরী করার জন্য কোন সময়ের দরকার হয়নি। স্রষ্টা যেহেতু আমাদেরকে সময়ের অধীন করে সৃষ্টি করেছেন তাই আমরা শুধু কোন সময়? কখন? ইত্যাদি প্রশ্ন করি । এই প্রশ্নগুলো তৈরী হয়েছে সময়কে সৃষ্টি করার পরে। সময়কে সৃষ্টি করার আগে এরকম কোন প্রশ্নই ছিলোনা। আর )) এই ব্র্যাকেটের অংশটুকু আজ ২৬/৭/২০১৩ তারিখে এডিট করা হয়েছে ।
এবার দেখেন মজার কান্ড, ঐ পোষ্টে নাস্তিকের সময় ও বস্তু নিয়ে দেয়া ১ম ও ৪র্থ যুক্তি দুটি পাশাপাশি রেখে আসুন তুলনা করে দেখি।
১-সময়কে সৃষ্টি করা হলো কোন সময়? আবার সেই সময়কে সৃষ্টি করা হলো কোন সময়? আবার সেই সময়কে সৃষ্টি করা হলো কোন সময়? এভাবে প্রশ্ন চলতে থাকবে অসীম ধারায়। তাই সিদ্ধান্ত হলোঃ সময়কে সৃষ্টি করা হয়নি।
২-সৃষ্টিকর্তাকে সৃষ্টি করলো কোন স্রষ্টা ? আবার সেই স্রষ্টাকে সৃষ্টি করলো কোন স্রষ্টা? আবার সেই স্রষ্টাকে সৃষ্টি করলো কোন সত্তা? এভাবে প্রশ্ন চলতে থাকবে অসীম ধারায়। তাই সিদ্ধান্ত হলোঃ স্রষ্টা বলে কিছু নেই।
দেখেন কারবার! অথচ এখানে প্রথম যুক্তি অনুসারে, স্রষ্টাকে সৃষ্টি করা হয়নি তথা স্রষ্টার কোন স্রষ্টা নেই, এই সিদ্ধান্ত নেয়ার কথা ছিলোনা কি?
এই রকম যুক্তির উপযুক্ত মর্যাদা দেয়ার জন্য আপনি কি হাসবেন না কাঁদবেন বলেন দেখি।
এরপর নাস্তিক স্থান নিয়ে একটি যুক্তি দেখিয়েছে। আসুন দেখি।
"...........স্রস্টা যদি স্থান সৃস্টি করে থাকেন - তাহলে সেই স্থানকে সৃস্টি করলেন কোন স্থানে থেকে? যে স্থানে থেকে "স্থান" সৃস্টি করলেন সেটাইবা কোন স্থানে থেকে? এভাবে অগ্রসর হলে দেখা যায় স্থান সৃস্টি সম্ভব নয়। অর্থ্যাৎ জগৎসংসারের সবকিছূর স্রস্টা সৃস্টিকর্তা এই বক্তব্য মিথ্যা ।"
এটার জবাব আশা করি আপনারা নিজেরাই বুঝে গেছেন। স্রষ্টা স্থানের গণ্ডীতে আবদ্ধ নন। তিনি স্থানের ঊর্ধ্বে। তার কাছে , নিকট-দূর, অগ্রপশ্চাৎ বলে কিছু নেই। স্থান সৃষ্টি করার জন্য কোন স্থানের দরকার নেই। "কোন স্থানে" এই প্রশ্ন স্থান সৃষ্টি হওয়ার পরে করা যায়, আগে করা যায়না। কিন্তু আমরা যেহেতু স্থানের গণ্ডীতে আবদ্ধ, তাই আমরা শুধু কোন স্থানে? কোন স্থানে? এই প্রশ্ন করি। কিন্তু স্থানের স্রষ্টাকে নিজেদের সাথে তুলনা করা বোকামী। কোন স্থানে? কোথায় ? এই জাতীয় প্রশ্নগুলো স্থান সৃষ্টি হওয়ার পরে তৈরী হয়েছে, স্থান সৃষ্টি হওয়ার আগে নয়।
সময়ের যে একটা শুরু আছে, সময়কে যে সৃষ্টি করা হয়েছে তা জানতে এখানে ক্লিক করুন।
আর স্রষ্টাকে কে সৃষ্টি করলো, এই প্রশ্নের জবাবের জন্য এখানে ক্লিক করে ৪নং কমেন্ট দেখুন।
ভাইয়েরা! কথা কি কঠিন হয়ে গেছে? কেউ কোথাও না বুঝলে বা কোন আপত্তি থাকলে অবশ্যই আমাকে কমেন্টে জানান। যুক্তিপূর্ণ যেকোন কথা আমি অবশ্যই মেনে নিব।
আরো তিনটি পোষ্ট
মায়ের গর্ভে কি আছে, এটা কি শুধু আল্লাহই জানেন নাকি ডাক্তাররাও জানে?
হুজুর (সল্লাল্লহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এর বহু বিবাহ ও বাল্যবিবাহের ব্যাপারে উত্থাপিত আপত্তির পরোক্ষ জবাব।
যারা কোরানে শুধু বিজ্ঞান খোঁজেন বা যারা বিজ্ঞান দিয়ে কোরআনের ভুল ধরেন তারা সবাই একটু দেখুন। সাইন্টিফিক মেথড সম্পর্কে আগে জানুন।
সর্বশেষ এডিট : ২৯ শে জুলাই, ২০১৩ রাত ৮:১০