যারা যুক্তিতর্ক ও জটিলতা বুঝেন কম এবং সরল বিশ্বাসী মুসলমান তাদের জন্য এই পোষ্ট পড়া সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ। যারা দ্বিধা-দ্বন্দে রয়েছেন তারা পড়ুন।
بسم الله الرحمن الرحيم
আল্লাহ্ই সকল প্রশংসার প্রকৃত হকদার, অসংখ্য দরূদ ও সালাম বর্ষিত হোক তাঁর নবীর উপর বারবার।
আগে ১ম পর্ব... পড়ে আসতে হবে।
১ম পর্বের ২য় পর্যায়ের আলোচনায় আস্তিক-নাস্তিকের পারষ্পরিক যুক্তিতর্কের মধ্যে যেসব ঘাটতি ছিলো তা এখানে আল্লাহ্ তওফিক দিলে বিশ্লেষন করার চেষ্টা করব। তার আগে আসুন দেখি আস্তিক ঐ যুক্তিতর্কের শেষ পর্যায়ে তার যুক্তির ২য় ধাপের কি প্রমাণ দেয়।
আস্তিক বললোঃ না,আপনি এই মহাবিশ্বকে অনাদি ধরতে পারবেন না।কেননা এই মহাবিশ্বের যে একটা শুরু আছে এটা বিজ্ঞান ও দর্শন উভয় দিক দিয়েই প্রমাণিত। অনেক আস্তিক বিজ্ঞানী বলেন, এর অন্যতম বড় প্রমাণ হলো বিগ ব্যাং থিউরি। বিগ ব্যাং সম্পর্কে আমারা সবাই কমবেশি জানি। তাই এ সম্পর্কে এখানে আমি আলোচনা করছি না। বিগ ব্যাং থিউরি মেনে নেয়ার দ্বারা স্টিফেন হকিং এবং আরও অনেক নাস্তিক বিজ্ঞানী পর্যন্ত এই মহাবিশ্বের একটি শুরু থাকার কথা মেনে নিয়েছেন। সুতরাং মহাবিশ্বের একটি শুরু যেহেতু আছে, অতি অবশ্যই এর একজন শুরু করনেওয়ালা আছেন। আর তিনিই সৃষ্টিকর্তা।নীচের উদ্ধৃতিটি পড়ুনঃ
The Big Bang Model also indicates that the universe had a beginning. In 1929, astronomer Edwin Hubble discovered that the universe is expanding at the same rate in all directions. As time moves forward the universe is growing apart. But this means that if we go back in time the physical universe would get smaller and smaller. Eventually, if we go back far enough in the past, the entire universe would be what scientists call “a point of infinite density” or “a point of dimensionless space.” However, if something physical is infinitely dense, it is non-existent, for physical, existent things can only be finitely small. The same can be said for points of dimensionless space. If a physical point has no dimensions, it is non-existent for it takes up no space. Therefore, if the Big Bang Model is correct, it shows that the universe began out of nothing a finite time ago.
প্রশ্ন আসে যে, তাহলে স্টিফেন হকিংরা কেন নাস্তিক রয়ে গেলেন? এর উত্তর আল্লাহ্ চাহেতো সামনে আসছে।আলহামদুলিল্লাহ্।
আস্তিক বিজ্ঞানীরা বলেন,এই মহাবিশ্বের যে একটি শুরু আছে তার আর একটি বড় প্রমাণ হলো,তাপগতি বিদ্যার প্রথম দুই সূত্র । এই দুই সূত্রের মাধ্যমে আমরা বুঝতে পারি যে, মহাবিশ্বের বস্তু ও শক্তির মোট পরিমাণ সীমিত ও ধ্রুব এবং মহাবিশ্বের ব্যবহারোপযোগী শক্তি নিত্য অকার্যকর শক্তিতে রুপান্তরিত হচ্ছে । এমন এক সময় সামনে আসছে যখন আর কোন ব্যবহারোপযোগী শক্তি থাকবে না। এতেই বুঝা গেলো যে, এই মহাবিশ্বের একটি শুরু অবশ্যই আছে। কারণ, যদি এর শুরুই না থাকতো তাহলেতো কবেই সব শক্তি অকার্যকর শক্তিতে রুপান্তরিত হয়ে এই মহাবিশ্ব ধ্বংস হয়ে যেতো। অতএব এটা অকাট্যভাবে প্রমানিত হলো যে, এই মহাবিশ্ব এক সময় শুরু হয়েছে এবং তা ধ্বংসের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে। এ সম্পর্কে আরো বিস্তারিত জানতে হলে , আগে এই লেখার সামনের অংশ পড়ে শেষ করুন অতঃপর এই লিংকে ও এই লিংকে যান।আলহামদুলিল্লাহ্। এখন নীচের এই উদ্ধৃতিটি পড়ুনঃ
Scientific evidence for the beginning of the universe includes the second law of thermodynamics (energy deterioration) and the Big Bang Model. The second law of thermodynamics is one of the most firmly established laws of modern science. It states that the amount of usable energy in a closed system is running down. This means that someday in the finite future all the energy in the universe will be useless (unless there is intervention from “outside” the universe). In other words, if left to itself, the universe will have an end. But if the universe is going to have an end, it had to have a beginning. At one time, in the finite past, all the energy in the universe was usable. Since the universe is winding down, it must have been wound up. The universe is not eternal; it had a beginning. Since it had a beginning, it needs a cause, for from nothing, nothing comes.
It should also be noted that, due to energy deterioration, if the universe is eternal it would have reached a state of equilibrium in which no change is possible an infinite amount of time ago. All of the universe's energy would already have been used up. Obviously, this is not the case. Therefore, the universe had a beginning.
শুনুন,এগুলো হলো বৈজ্ঞানিকদের বৈজ্ঞানিক কথা।নাস্তিকরা যেহেতু বিজ্ঞানের কথাগুলো অন্ধভাবে বিশ্বাস করে , তাই তাদের বিশ্বাস দিয়ে তাদেরকে যুক্তি দিলাম আর কি।এগুলো উল্লেখ করেছি মানে এই নয় যে আমিও এগুলো বিশ্বাস করি। আবার অস্বীকার করি এমনও নয়। এসব নিয়ে যারা গবেষণা করেছে তারা কি আসলেই গবেষণা করেছে নাকি নিজস্ব বিশ্বাস প্রতিষ্ঠা করার জন্য বানানো কথাকে বিজ্ঞান নামে চালিয়ে দিয়েছে তা আমি জানিনা, তারপর যদি ধরি গবেষণা করেছে,তাহলে ঠিকমত, নির্ভুলভাবে গবেষণা করেছে কিনা এটা আমার যাচাই করার কোন উপায় নাই,সুযোগও নেই; তারপর পরীক্ষা নিরিক্ষা করে সে যা বুঝেছে তা কি ঠিকমত বুঝেছে কিনা তাই বা আমি কিভাবে যাচাই করবো। আমি যা করতে পারি তা হলো এই যে, তাদেরই সাঙ্গ পাঙ্গ আর দল বলের প্রচারিত বইপত্র আর জার্নাল পড়ে অন্ধভাবে বিশ্বাস করতে পারি।তাহলে আমার বিশ্বাসের ভিত্তিতো সেই শোনা কথাই হলো।অথচ এইসব বিজ্ঞানীরা গতকাল এক কথা বলেছে তো আজকে আরেক কথা, আজকে এক কথা বলেছে তো কালকে আরেক কথা, আবার পরশু আরেক কথা। হাজার হাজার বছর ধরে এটাই দেখা যাচ্ছে যে নিত্য নতুন গবেষণায় সর্বদাই পূর্বের বিজ্ঞানীদের মতবাদ পরিবর্তিত বা সংশোধিত হচ্ছে।তো এরকম নিত্য পরিবর্তনশীল বিজ্ঞানের কথার উপর একমাত্র বোকারাই আস্থা রাখতে পারে। এইজন্য বলছি উপরের যুক্তি শুধু তাদের জন্য দেয়া হলো যারা এগুলো নিয়ে নিজে গবেষণা করেছেন এবং তাদের দৃঢ় প্রতীতি আছে যে এগুলো সত্য ।
যারা নিজেরা এসব যাচাই করতে পারবেননা তাদের জন্য আমি সহজ খাস বাংলায় বলি,আমরা সবাই খালি চোখে সূর্য এবং অসংখ্য নক্ষত্ররাজি দেখতে পাই।এগুলো সব একেকটা আগুনের গোল্লা।এইযে আগুন জ্বলতেছে তা কি এমনি এমনি জ্বলছে? এর জন্য জ্বালানী লাগবে না? কিন্তু যতটুকু জ্বালানী এইসব নক্ষত্রের মধ্যে আছে এগুলো আস্তে আস্তে জ্বলে জ্বলে শেষ হয়ে যাচ্ছে না? অনেক নক্ষত্র এরই মধ্যে জ্বলানী শেষ হয়ে মরেও গেছে।তো,সহজ কথাটা বুঝেন না কেন যে,যদি এইসব নক্ষত্র অনাদি কাল থেকেই থাকত,তাহলে কবেই সব মরে ভূত হয়ে যেত।রাতের আকাশের এই মিটি মিটি তারা দেখা আপনার আমার কপালে জুটত না। না বুঝলে বুঝার টাইম আসতেছে।চোখ দুইডা বন্ধ হলেই বুঝবেন।এখানে এসে আমি আস্তিকদের কাছে আবেদন করছি যে,আপনাদের জানামতে মহাবিশ্বের অনিত্যতার আর কোন বৈজ্ঞানিক প্রমাণ থাকলে দয়া করে আমাকে জানালে আমি তা এখানে যুক্ত করে দিতাম। যাইহোক,এই দু'টি হলো আধুনিক বৈজ্ঞানিক যুক্তি।আলহামদুলিল্লাহ্।
এবার শুনুন একটি পুরানো সহজ দার্শনিক যুক্তি। এটাই আমার প্রধান যুক্তি; যেহেতু এটা আপনি নিজের জ্ঞানের মাধ্যমে বুঝতে পারবেন। কোন বিজ্ঞানীর কথার উপর আপনার অন্ধ বিশ্বাস করতে হবে না।এই যুক্তিটি বুঝার আগে কিছু উপমা দেখুন।মনোযোগ দিতে হবে, তাড়াহুড়া করলে কিন্তু হবেনা।
ঘটনা-ক................................................ঘটনা-খ
দেখুন, কেউ যদি আপনাকে বলে যে,"ক" এর অসীম কাল পর "খ"ঘটবে। তাহলে এই কথার অর্থ আমরা সবাই সহজেই বুঝব যে "খ" কখনোই ঘটবে না। কেননা এই অসীম কালও কখনো শেষ হবে না, আর "খ"ও কখনো ঘটবে না। ঠিক উল্টোভাবে দেখুন, যদি কেউ বলে যে,"খ" এর অসীম কাল পূর্বে "ক"ঘটেছিলো।তাহলে এই কথার অর্থও আমরা সহজেই বুঝে নিব যে,'ক'আসলে কখনো ঘটেই নি।অর্থাৎ একটি ঘটনা ঘটবে না অথবা কখনো ঘটেনি এই সহজ কথাটাকে একটু গাণিতিক ভাষায় বললে এভাবে বলবো যে,ঘটনাটি অসীম কাল পরে ঘটবে বা ঘটনাটি অসীম কাল পূর্বে ঘটেছে।
(১)-"ক" কখনো ঘটবে না = "ক" অসীম কাল পরে ঘটবে।
(২)-"ক"কখনো ঘটেনি = "ক" অসীম কাল পূর্বে ঘটেছিলো।
((অনেকেই অভিযোগ করেছেন যে তারা ১নং সমীকরণটি বুঝলেও ২নং সমীকরণটি বুঝতে পারছেন না।তাই এই ২নং সমীকরণটি আর একটু ব্যাখ্যা করছিঃ
"ক".............অসীম কাল..............."খ"...........অসীম কাল..........."গ"
এখন দেখুন যদি বলি "খ"এর অসীম কাল পর "গ" ঘটবে তার মানে হলো "গ"কখনো ঘটবে না এতটুকু আমরা সবাই বুঝেছি। ঠিক তেমনি "খ"এর অসীম কাল পূর্বে "ক" ঘটতে পারেনা। কেননা তাহলে এই কথার অর্থ দাঁড়াবে "ক" এর অসীম কাল পর "খ" ঘটেছে, আর এটা যে অসম্ভব তাতো আমরা ১ম সমীকরণ থেকেই বুঝেছি। মোটকথা, দুইটি ঘটনা যদি বাস্তবে ঘটেই থাকে, তাহলে কখনো এই দুটি ঘটনার মাঝে অসীম কালের ব্যবধান থাকতে পারবে না, অবশ্যই একটি ঘটনা, অপর ঘটনার একটি নির্দিষ্ট ও সসীম সময় পর ঘটেছে।কেননা অসীম সময়ও কখনো শেষ হবে না আর পরের ঘটনাটিও কখনো ঘটবে না।)) এখনও যদি না বুঝে থাকেন তাহলেও সমস্য নাই সামনে অগ্রসর হোন। আর একটা কথা হলো, সময় দিতে হবে,চিন্তা করতে হবে একবার পড়ে না বুঝলে ২৩ বার পড়তে হবে, অস্থির হলে কি হয়।
ধরুন, আপনার কোন বন্ধু আপনার বাসায় আসলে পর আপনি তাকে জিজ্ঞাসা করলেন যে কখন রওয়ানা দিয়েছো।যদি বন্ধু বলে,অসীম কাল পূর্বে, তাহলে এটা অবশ্যই মিথ্যা কথা হবে।কেননা,তাহলে এই অসীম কালও কখনো শেষ হতো না ,আর আপনার বন্ধুরও আপনার বাসায় কখনোই আসা হতোনা।কিন্তু যেহেতু বন্ধু আপনার বাসায় এসেই গেছে সেহেতু অবশ্যই সে একটি নির্দিষ্ট সময়ে রওয়ানা দিয়ে একটি সসীম সময় পরে আপনার বাসায় এসেছে।
আবার ধরুন, একটি ঘটনা "ক" । কেউ যদি বলে "ক" অসীম সংখ্যক ঘটনার পরে ঘটবে তার মানে হলো "ক" কোন দিন ঘটবে না।কেননা অসীম সংখ্যক ঘটনাও কোন দিন ঘটে শেষ হবে না, আর "ক" নামক ঘটনা ঘটার সুযোগও কখনো আসবেনা। অনুরুপভাবে, কেউ যদি বলে "ক" অসীম সংখ্যক ঘটনার পর ঘটেছে; তাহলে সেটা ভুল হবে। কেননা, "ক" এর আগে যদি অসীম সংখ্যক ঘটনাই থাকতো, তাহলে সেই অসীম সংখ্যক ঘটনাও কোনদিন ঘটে শেষ হতো না আর "ক" ও কোনদিন ঘটত না। কিন্তু যেহেতু "ক" ঘটেছে সেহেতু অতি অবশ্যই তা একটি সসীম সংখ্যক ঘটনার পরেই ঘটেছে।(এই উপমা তিনটি ভালো করে চিন্তা করে কয়েকবার পড়ুন।নিজের থেকে আরো ভালো উপমা বানিয়ে নিতে পারেন)
সুতরাং আমি আশা করি আপনারা আল্লাহ্র দয়ায় নিশ্চয়ই বুঝে গেছেন যে, আমাদের এই মহাবিশ্বেরও একটা শুরু আছে। কেননা তা নাহলে তো আমাদেরকে ধরতে হবে যে, এই যে আমরা ব্লগিং করছি বা যে কোন ঘটনা এখন মহাবিশ্বে ঘটছে তা অসীম সংখ্যক ঘটনার পরে ঘটেছে বা অসীম সময় পরে ঘটেছে। অথচ তা একদম অসম্ভব। অতএব একথা অকাট্যভাবে প্রমাণিত হলো যে, এই মহাবিশ্ব এবং যাকে আমরা "সময়" বলি অবশ্যই সেটারও একটা শুরু আছে। অতএব অতি অবশ্যই সেটার একজন শুরুকরনেওয়ালা আছে। আর তিনিই হলেন সৃষ্টিকর্তা। আর সৃষ্টিকর্তা যেহেতু সময়কে সৃষ্টি করেছেন, তাই তিনি কিন্তু সময়ের অধীন হবেন না।তাঁর কাছে কিন্তু অতীত, বর্তমান ও ভবিষ্যত বলে কিছু নেই। তাই একথা বলা যাবেনা যে, সৃষ্টিকর্তা কিভাবে একটি অসীম সময় পারি দিয়ে বর্তমানে এসে পৌঁছলেন। এটা কমন সেন্স দিয়ে বুঝার বিষয়। কেউ যদি এটা নিয়ে গোঁড়ামি করে তাহলে তাকে বুঝানো সম্ভব নয়। যাই হোক এটা গেলো দর্শনের যুক্তি।যদিও বলছি দর্শনের যুক্তি; আসলে কিন্তু সামান্য কমন সেন্স দিয়েই এটা বুঝা যায়। এর মাধ্যমে মহাবিশ্বের শুরু যেমন প্রমাণিত হলো তেমনি এটাও প্রমাণিত হলো যে সৃষ্টিকর্তার ক্ষেত্রে এই প্রশ্ন করা যায় না। এই দার্শনিক যুক্তিটি আরো সহজ করে বুঝানো হয়েছে এই পোষ্টে। মহাবিশ্বের শুরু এবং স্রষ্টার অস্তিত্বের অকাট্য প্রমাণ।
যাইহোক, এখন আমরা ১ম পর্বের ২য় পর্যায়ে উল্লেখিত আস্তিক নাস্তিকের যুক্তিতর্কের ত্রুটিগুলো বের করার চেষ্টা করবো। তবে বুঝার সুবিধার জন্য আমি একটি দৃষ্টান্ত পেশ করছি । খুব মনোযোগের সাথে এটি কয়েকবার পড়ুন। ধরুন,একটা মাঠের মধ্যে আপনার ঘর।আশেপাশে অন্য কোন ঘর নেই।হঠাৎ করে কারেন্ট চলে গেলো। আপনি বাতাস খাওয়ার জন্য বাহিরে গেলেন। কোন বন্ধুর সাথে দেখা হলো, তার সাথে হাঁটতে হাঁটতে গল্প করছেন। একসময় দেখলেন আপনার ঘরে বাতি জ্বলছে। তখন আপনি বললেন যে, কারেন্ট এসেছে। আপনার বন্ধু বললো যে, কিভাবে বুঝলে? তুমি কি কারেন্ট দেখতে পাচ্ছো? আপনি যুক্তি দেখালেন,
১- কারেন্ট না আসলে এমনি এমনি বাতি জ্বলতে পারেনা ।
২- আর এখন বাতি জ্বলছে।
৩- অতএব কারেন্ট এসেছে।
দেখুন, আপনার এই যুক্তির প্রথম দু'টি ধাপ হচ্ছে আপনার ভিত্তি। এই দুই ভিত্তির উপর দাঁড়িয়ে আপনি ৩ নম্বরের সিদ্ধান্ত নিচ্ছেন।এই দুই ভিত্তি প্রমাণিত হতে হবে এবং কোন একটি ভিত্তিও অনুপস্থিত থাকতে পারবে না। এখন আপনার বন্ধু যদি আপনার এই যুক্তি খন্ডন করতে চায় তাহলে তাকে প্রথম দুই ভিত্তির যেকোন একটি খন্ডন করতে হবে। কিন্তু যদি সে প্রথম দুই ভিত্তির কোন একটিও খন্ডন না করে একথা বলে যে, আচ্ছা কারেন্ট আসলো কোথা থেকে? এর দ্বারা কিন্তু কারেন্ট যে এসেছে একথা অপ্রমাণিত হবে না। এমনকি আপনি যদি কারেন্ট কোথা থেকে আসলো তা নাও বলতে পারেন তাতেও কিছু যায় আসে না। আপনার যুক্তি ঠিকই গ্রহণযোগ্য থাকবে। হ্যাঁ, এটা একটা বাড়তি বিষয়। জানলে ভালো না জানলেও মূল যুক্তির কোন ক্ষতি নেই। এটা হলো একটা বিষয়।
আরেকটি লক্ষ্যনীয় ব্যাপার হলো এই যে, আমাদের চারপাশে যেসব ঘটনা ঘটছে, এগুলোর পিছনে কারণ হিসাবে যে কয়টি ঘটনা ঘটেছে সেগুলোর সংখ্যা অবশ্যই সীমিত হবে। অবশ্যই কোথাও গিয়ে থামতে হবে। কেননা অসীম সংখ্যক কারণের পরে কোন ঘটনা ঘটতে পারে না তা আমরা একটু আগেই দেখে এসেছি। ((এখানে একটি গুপ্ত প্রশ্নের উত্তর দিয়ে যাই-কোন একটা কিছু অস্তিত্বে আসা এক জিনিস আর অস্তিত্বে আসার পর সেটার মধ্যে বিভিন্ন পরিবর্তন আসা এটা আরেক জিনিস।সৃষ্টিকর্তা কিন্তু উভয়টিই করছেন। ))
আসুন এবার আমরা দেখি আস্তিক-নাস্তিকের যুক্তিতর্কের মধ্যে কি কি ভুল আছে। এর আগে ১ম পর্ব থেকে ঐ আলোচনাটা মনযোগের সাথে আরেকবার পড়ে আসলে ভালো হয়। দেখুন শূন্য থেকে কোন কিছু নিজে নিজেই অস্তিত্বে আসতে পারে না এবং কোন ঘটনা বা পরিবর্তন বিনা কারণে ঘটতে পারে না। এটা ছিলো যুক্তির প্রথম ও সর্বসম্মত ধাপ বা ভিত্তি।
এরপর আস্তিক তার যুক্তির ২য় ধাপ বাদ দিয়ে সরাসরি সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেলেছে। অর্থাৎ এই মহাবিশ্বেরও একটি শুরু আছে, এটা অনস্তিত্ব থেকে অস্তিত্বে এসেছে এই ধাপটি বলেওনি, প্রমাণও করেনি।
এরপর নাস্তিক আস্তিকের যুক্তির এই ভুলটি না ধরে কারেন্ট কোথা থেকে আসলো টাইপের যে প্রশ্নটি করলো সেটাতো আসলে আস্তিক ঠিকভাবে যুক্তি দিলে পরে করার কথা ছিলো। উপরন্তু,নাস্তিকের এই প্রশ্নটিও ভুল ভিত্তির উপর দাঁড়িয়ে করা হয়েছে। এ ব্যাপারে একটু পরেই ইনশা-আল্লহ বলছি।এছাড়া এই প্রশ্নের উত্তর দিতে না পারলেও আস্তিকের মূল যুক্তি কিন্তু খন্ডিত হবে না। উপরের কারেন্ট আসার উপমা থেকেই আমরা তা বুঝতে পেরেছি।
এরপর আস্তিক কি বললো যে ," জনাব!যেটা আগে ছিলো না,পরে হয়েছে সেটার ক্ষেত্রেই শুধু বলা হয়েছে যে ......." অর্থাৎ আস্তিক মহাশয় এতক্ষণে উনার যুক্তির ২য় ধাপ(( অর্থাৎ মহাবিশ্বের একটি শুরু আছে)) বলছেন, তাও আবার প্রমাণ ছাড়া।উপরন্তু আরেকটা দাবী বাড়তি করেছেন।
এরপর নাস্তিক সাহেব করলো আরো আশ্চর্যের ব্যাপার। উনি আবারো আস্তিকের যুক্তির ভুল না ধরে এবং আস্তিকের কাছে তার যুক্তির ২য় ধাপের প্রমাণ না চেয়ে বলেন কি যে, আপনে যখন ধইরা লইছেন তয় আমিও ধইরা লই। যাইহোক এরপর আস্তিক তার যুক্তির ২য় ধাপের প্রমাণ পেশ করে যা আমরা এই পর্বের শুরুতেই পড়েছি।
এখন আসেন একটু আগে যে বলে আসলাম নাস্তিকের প্রশ্নটি ভুল ভিত্তির উপর দাঁড়িয়ে আছে সেটা নিয়ে বলি। দেখুন, নাস্তিক প্রশ্ন করেছিলো যে, যেহেতু সব কিছুর একটি কারণ লাগে, তাহলে যিনি সৃষ্টিকর্তা তাঁর জন্যও একটা কারণ লাগবে? নাস্তিকের এই কথাটা নিয়ে একটু চিন্তা করুন ,ভাবুন।" সব কিছুর জন্যই একটি কারণ লাগে" এই কথাটি ঠিক হলেও এখানে একটি কথা রয়ে গেছে। সেটি হলো যিনি আদি ও মূল কারণ তাঁর পূর্বে কোন কারণ নেই । কেননা কোন বস্তুর অস্তিত্বের বা কোন ঘটনা ঘটার পিছনে কারণ হিসাবে যে ঘটনাগুলো ঘটেছে; যদি আমরা এই কারণের ধারার কোন এক পর্যায়ে গিয়ে না থামি এই যুক্তি দেখিয়ে যে"সব কিছুর জন্যই একটি কারণ লাগে" তাহলে এই কথার তো এই অর্থই হয় যে কোন একটি ঘটনা অসীম সংখ্যক ঘটনার পরে ঘটেছে। যেমন ধরুন একটি ঘটনা "ক" এটার কারণ হলো ১; ১ এর কারণ হলো ২; আবার ২ এর কারণ হলো ৩ এভাবে চলতেই থাকবে অসীম ধারা। অথচ একটু আগেই আমরা দেখে এসেছি যে অসীম সংখ্যক ঘটনার বা কারণের পরে কোন ঘটনা ঘটতে পারে না। অথচ বর্তমানে ঘটনা ঘটছে। সুতরাং অবশ্যই তা একটি সসীম সংখ্যক কারণের পর ঘটছে। তো যিনি আদি ও মূল কারন তাকেই আমরা বলছি সৃষ্টিকর্তা। আর মহাবিশ্বের ও সময়ের যে অবশ্যই একটি শুরু আছে সেটাতো আমরা আগেই প্রমাণ করেছি। কোন ভাই যদি আমি যেটা বুঝাতে চাচ্ছি সেটা আরো সহজ ভাবে বুঝাতে পারেন তাহলে আমি তার কাছে অনুরোধ করছি যে, আপনি সেটা কমেন্টের মাধ্যমে আমাদেরকে জানান। এখানে আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ ব্যাপার হলো এই যে ............(৩য় পর্বে) আলহামদুলিল্লাহ্।
সবাইকে শুকরিয়া জানাই এই পোষ্টটি পড়ার জন্য।
মহান আল্লাহ্ আমাদেরকে সঠিক বিষয় বুঝার ও আমল করার তওফিক দিন ।আমিন।সল্লাল্লহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম।
আল্লাহ্র অস্তিত্বঃ আস্তিক ও নাস্তিকের যুক্তিতর্কঃ আমার উপলব্ধি-৩
প্যাঁচালো কোন কমেন্ট যেটার আগা মাথা বুঝতে সময় লাগে,বা
জটিল বৈজ্ঞানিক টার্ম সম্বলিত কোন কমেন্ট মুছে দেয়া হতে পারে। এর জন্য আমাকে ক্ষমা করবেন।
সর্বশেষ এডিট : ১৮ ই মার্চ, ২০১৩ দুপুর ১:০৩