গতকাল বাংলাদেশ ছাত্র ইউনিয়নের ঢাকা মহানগর পুলিশের কার্যালয় ঘেরাও কর্মসুচি ছিল, যেখানে আন্দোলন কারীরাই পুলিশি হামলার স্বীকার হয়েছেন। হামলার পর থেকেই ঘটনাটি নিয়ে চলছে নানা আলোচনা, অনেকেই আবার পুলিশকেই সমর্থন দিয়ে কথা বলেছেন।
যাই হোক আসুন ঘটনার মুল নিয়ে আলোচনা করি, পরে ঠিক ভূল আপনারাই জানাবেন।
১
গতকালের ঘটনা মুলত বর্ষবরণে টিএসসির নারী কেলেঙ্কারী ঘটনা থেকেই শুরু। আপনারা সবাই জানেন বর্ষবরণ উৎসবে সেদিন টিএসসিতে অনেক নারীই যৌন নির্যাতনের স্বীকার হয়েছেন। ঘটনাটির পর থেকেই বিভিন্ন মাধ্যম ও ফেসবুকে র শীর্ষ টপিক ছিল এটি।
এক নারীকে বাচাতে গিয়ে ছাত্র ইউনিয়নের লিটন নন্দী সেদিন তার হাত ভেঙ্গেছেন। তাদের দাবী অনুযায়ী তারা দুইজন যৌন নির্যাতককে আটক করে পুলিশের হাতে সোপর্দ করেছিল, যাদের পুলিশ বহাল তবিয়তে ছেড়ে দিয়েছে। লিটন নন্দী সেদিন ঢাবি প্রক্টোরের কাছে গিয়ে সাহায্য পাননি।
বিস্তারিত পাবেন লিটন নন্দীর এই ভিডিওটিতে।
২
ঘটনার পর দেশব্যাপী নর শুদের ধীক্কার জানানো হচ্ছে, তখনই ঢাবি প্রশাসন ও আমাদের সরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী ঘটনাটিকে অস্বীকার করেছেন। বিভিন্ন মিডিয়াতে যখন সেই মানুষরূপী জানোয়ারগুলো পারিচয় প্রকাশ পেল তখনও আমাদের প্রশাসন চুপ ছিল। আমাদের পুলিশ বাহিনী কাউকে গ্রেফতারের কোন পদক্ষেপ নেননি।
আগামী ১৩ তারিখে ঘটনার ৩০দিন তথা এক মাস পুরণ হবে। কিন্তু কোন ফলই আসেনি এখনও। আমাদের দেশে নারীর স্বাধীনতা নিয়ে কথা বলার জন্য সংগঠন আছে অনেক। আজই কেউ ঘোষনা দিক, নারীদের বাইরে যাওয়া উচিত নয়। দেখবেন কতোজন কতো কথা বলবে, কিন্তু টিএসসির ঘটনায় কাউকে কথা বলতে দেখলাম না।
যাই হোক ঘটনার পর এতোদিনে আন্দোলনে শুধু বাংলাদেশ ছাত্র ইুনিয়নকেই দেখেছি, আর বাকীদের শুনেছি মতামত দিতে।
৩
গতকালে ঘটনায় এক পুলিশকে মিডিয়ায় বক্তব্য দিতে দেখলাম।
তার মতে গতকাল আন্দোলনকারীদের বক্তব্য দিয়ে রাস্ত থেকে চলে যাবার অনুরোধ করা হয়েছিল, তারা শুনেনি। আন্দোলনকারীদের দাবি ছিল তারা পুলিশ কমিশনারের সাথে কথা বলবে, সে হিসাবে পুলিশ আন্দোলনকারীদের ফিরে গিয়ে মুখ্যপাত্র পাঠানো অনুরোধ করেছিল।
কিন্তু আন্দোলনকারীরা কোন অনুরোধ না শুনে রাস্তা অবরোধ করে বসে থাকে, তাই জন দুর্ভোগ কমাতে রাস্তা থেকে আন্দোলনকারীদের সারিয়ে দেওয়া তাদের দায়িত্ব ছিল। তাই তারা দায়িত্ব পালন করেছে।
Must see it
কিছু কথা জানতে চাই,
* টিএসসির ঘটনার পর যখন আন্দোলন শুরু হলো, তখন কেনপুলিশ আন্দোলন কারীদের কথা শুনল না?
* দোষীদের ছবি, পরিচয় দেওয়া হয় তখন কেন কাউকে ফ্রেফতার করা হলো না?
* আন্দোলন কারীরা যখন ডিএনপি ঘেরাওয়ের ঘোষনা দিল, তখন কেন মুখ্যপাত্র চাইল না পুলিশ?
* মাত্র ৩০ মিনিট রাস্তা অবরোধের কারনেই এতো এ্যাকশন, অথচ শাহবাগ দখল করে যখন আন্দোলন চললো তখন জন দুর্ভোগ লাঘবের দায়িত্ব কার ছিল?
৪
গতকালের ঘটনার মাঝে আলোচিত চিত্র
এই ছবিটি দেখিয়ে অনেকই গতকালের ঘটনায় আন্দোলনকারীদের বাড়াবাড়িকে দায়ী করেছেন। কিন্ত কোন কারণে এরিয়ে গেছেন মূল ঘটনাটিকে। ভিডিওটি দেখুন
কি বুঝলেন?
পুলিশ যখন আন্দোলনকারীদের লাঠিচার্চ করে ছত্রভঙ্গ করে দিয়েছে তার পরই রাস্তা খালি করতে এই রায়টারটি আনা হয়। যেখানে ছবির নারী আন্দোলনকারীকে একটি মাটির টব ছুড়তে দেখা যায়। সেটি ভালোভাবে লক্ষনীয় না হলেও তারপর এক পুলিশ যে তাকে চড় মেরে ফেলে দিল তা কিন্তু লক্ষনীয়।
সুতরাং এই ঘটনাটির আগেই ঘটে গেছে অনেক কিছু, ভিডিওটিতে যেভাবে আন্দোলনকারীদের ঘিরে মারা হচ্ছে তাতে পুলিশের ক্ষোভ লক্ষনীয়।
৫
দোষীদের শাস্তির দাবিতে গিয়ে এভাবে পুলিশি হামলা আসলেই নিন্দনীয়। তবে পুলিশ যে কোনভাবেই অপরাধীদের গ্রেফতার করতে চাইছে না একান্তই সত্য। এখন দরকার পুলিশের "উপরের নির্দেশ" কথাটি বাতিল করা, তবেই যদি তারা লাইনে আসে।
পুলিশকে নিয়ে লেখা গত পোস্টটি এখানে, পোস্টটি থেকে কিছু কথা আবারও তুলে দিলাম।
আপনারা কবে নিজের দায়িত্ব পালন করবেন?
যেদিন আপনার মেয়েকে এই কুত্তাগুলো রাস্তার মাঝে ফেলে খাবলে খাবে সেদিন?
যেদিন আপনার স্ত্রীকে আপনার সন্তানের সামনেই বিবস্ত্র করে তার বুকে কামড় বসাবে কেউ?
সেদিনই বুঝবেন একজন পিতার কষ্ট, একজন স্বামীর কষ্ট। যেদিন আপনার চাকরি থাকবে না বা আপনি কোন কারণে আপনার পরিবারকে নিয়ে কোথাও বেড়াতে যাবেন। আর একদল কুত্তা আপনাকে বেধে বা ধরে রেখে আপনার সামনেই আপনার মেয়ের বুকে হাত দিবে, আপনার স্ত্রীকে বিবস্ত্র করবে। আপনার সামনেই আপনার মেয়েকে খুবলে খাবে, মনে রাখবেন সেদিন আপনিই বিচার পাবেন না। কারণ আজ যাদের বাচানোর জন্য এতো নাটক, সেদিন তারা আরো বেশী থাকবে, আর আপনার পাশে কেউ না।
সর্বশেষ এডিট : ১১ ই মে, ২০১৫ দুপুর ২:১৩