ইসলামী কলিযুগবিদ্যা বলতে সেই জ্ঞানকে বোঝায় যা পবিত্র কুরআন ও হাদিসের তথ্যের আলোকে ইতিহাস ও পৃথিবীর সমাপ্তি কীভাবে হবে তা নিয়ে আলোচনা করে। প্রখ্যাত সুফি ও ইসলামী চিন্তাবিদ শেইখ ইমরান হোসেনের মতে, ইসলামী কলিযুগবিদ্যার দুটি শাখা। একটি হলো, পৃথিবীর সমাপ্তি এবং অপরটি হলো, ইতিহাসের সমাপ্তি। পৃথিবীর সমাপ্তি হলো সেই সময় যখন পৃথিবীর পাহাড়গুলো তুলোর মতো উড়তে থাকবে, মৃত্তিকা তার সুগভীর উদরে থাকা সম্পদগুলো উগড়ে দেবে আর যখন নাইন এলিভেনের মতো বৃহৎ বৃহৎ মিথ্যেগুলোও প্রকাশিত হয়ে যাবে। পৃথিবীর সমাপ্তি কখন হবে তার জ্ঞান একমাত্র আল্লাহ রাখেন।
ইসলামী কলিযুগবিদ্যার দ্বিতীয় শাখাটি হলো ইতিহাসের সমাপ্তি। ইসলামে ইতিহাসের যেমন একটি সূচনা রয়েছে, তেমনি এর সমাপ্তিও রয়েছে। এই সূচনা ও সমাপ্তির মধ্যে সম্পর্কও বিদ্যমান।ইতিহাসের শুরু হয়েছিল, যখন আল্লাহ সুবহানওয়াতা'লা ফেরেশতাদের কাছে মানুষ সৃষ্টির আকাঙ্খা ব্যক্ত করেন তার মাধ্যমে। ইতিহাসের সমাপ্তি হবে, যখন সত্য মসীহ ঈসা (আ) এর দোয়ায় আল্লাহপাক ইয়াজুজ মাজুজদের ধ্বংস করে দেবেন তার মাধ্যমে।
ইসলামী কলিযুগবিদ্যার গুরুত্বপূর্ণ বিষয়গুলো হলোঃ
১। মিথ্যে মসীহ দাজ্জাল,
২। ইয়াজুজ মাজুজ,
৩। মালহামা যুদ্ধ,
৪। কন্সট্যান্টিনোপল বিজয়,
৫। গাজওয়ায়ে হিন্দ,
৬। ইমাম মাহদী,
৭। পূর্বদিকে ভূমিধ্বস,
৮। পশ্চিমদিকে ভূমিধ্বস,
৯। আরবে ভূমিধ্বস,
১০। দাব্বাতুল আরদ
১১। হযরত ঈসা (আ) এর আরোহণ
১২। পশ্চিম দিক থেকে সূর্যোদয়,
১৩। ইয়েমেন থেকে অগ্নি বের হয়ে আসা ইত্যাদি।
ইসলামী কলিযুগবিদ্যার হৃদয় হলো নিম্নোক্ত হাদিসটিঃ
রাসুলুল্লাহ (সা) বলেন, "দাজ্জাল পৃথিবীতে চল্লিশদিন অবস্থান করবে। তার একদিন হবে এক বছরের সমান, একদিন হবে এক মাসের সমান, এক দিন হবে এক সপ্তাহের সমান, বাকি দিনগুলো তোমাদের দিনের মতো।"
(সহীহ মুসলিম, খন্ড ৪, পৃষ্ঠা ২২৫০)
ইসলামী চিন্তাবিদ শেইখ ইমরান হোসেনের মতে,
দাজ্জালের এক দিন এক বছরের সমান = প্যাক্স ব্রিটানিকা = ব্রিটেন বিশ্ব শাসন করবে,
দাজ্জালের এক দিন এক মাসের সমান = প্যাক্স আমেরিকানা = আমেরিকা বিশ্ব শাসন করবে,
দাজ্জালের এক দিন এক সপ্তাহের মতো = প্যাক্স জুদাইকা = ইজরায়েল বিশ্ব শাসন করবে,
অন্য দিনগুলো তোমাদের দিনের মতো = মানুষ হিসেবে দাজ্জাল আবির্ভাব করবে।
ইসলামী কলিযুগবিদ্যার আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ হাদিস হলো,
" ইমাম মুসলিম হুযাইফা বিন আসিদ (রাঃ) হতে বর্ণনা করেন যে, একবার রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম আমাদেরকে কথাবার্তা বলতে দেখে বললেন: তোমরা কি নিয়ে আলাপ-আলোচনা করছ? সাহাবীগণ বলল: আমরা কেয়ামত নিয়ে আলোচনা করছি। তখন তিনি বললেন: নিশ্চয় দশটি আলামত সংঘটিত হওয়ার আগে কেয়ামত হবে না। তখন তিনি ধোঁয়া, দাজ্জাল, দাব্বাতুল আরদ, সূর্যাস্তের স্থান হতে সূর্যোদয়, ঈসা বিন মরিয়মের অবতরণ, ইয়াজুজ-মাজুজ, পূর্ব-পশ্চিম ও আরব উপদ্বীপে তিনটি ভূমি ধ্বস এবং সর্বশেষ ইয়েমেনে আগুন যা মানুষকে হাশরের দিকে তাড়িয়ে নিয়ে যাবে উল্লেখ করেন।" (সহীহ মুসলিম)
সর্বশেষ এডিট : ০৪ ঠা জানুয়ারি, ২০১৬ রাত ১২:৪৫