somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

পোস্টটি যিনি লিখেছেন

কাগজের ফেরিওয়ালা
যদি ভালো ইনসানই না হতে পারি, তবে এই রক্ত-মাংস-রূহ-মস্তিষ্কের মূল্য কী? আমি উড়ার স্বপ্ন দেখি না, উড়তে তো মাছিও পারে! আমি মাটির আদম, মাটিতেই মরতে চাই, আমার বুকে লাগিয়ে দিও কদম ফুলের গাছ।

কাগজের ফেরিওয়ালা (পর্ব ১০)

১৯ শে আগস্ট, ২০১৫ রাত ১:২২
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

ফরহাদ, ফরহাদের বাবা আমজাদ আর ফরহাদের মা দিলারা একসাথে রাতের খাবার খাচ্ছে।
দিলারাঃ আজ ফরহাদের এক মেয়েবন্ধু এসেছিল বাসায়।
আমজাদঃ মেয়েবন্ধু? ফরহাদের? হাহাহা।
দিলারাঃ সত্যি। কী যেন নাম বলছিল! ও হ্যাঁ, নুসরাত।
আমজাদঃ বাহ, সুন্দর নাম তো। কী রে ফরহাদ, কখনও বলিস নি তো নুসরাতের কথা।
ফরহাদঃ আমার খাওয়া শেষ। আমি রুমে যাচ্ছি।
ফরহাদ চলে গেল। দিলারা হেসে বলল, মেয়েদের মতো লজ্জা পায় আমার ছেলে।
*****
ফরহাদ রুমে এসে নুসরাতকে কল দিল।
ফরহাদঃ হ্যালো
নুসরাতঃ ওয়াও! আজ মশাইয়ের সময় হলো নিজের ইচ্ছায় কল দেবার।
ফরহাদঃ তুমি আমাকে না জানিয়ে কেন আমার বাসায় এসেছিলে?
নুসরাতঃ কেন? তাতে কি হয়েছে? আমি ভেবেছিলাম, তুমি বাসাতেই আছ।
ফরহাদঃ তুমি আমাকে একটা কল তো করতে পারতে? কী ভাববে আমার বাসার লোক আমার সম্পর্কে!
নুসরাতঃ ওকে, আই এম সরি। আমি তো তোমাকে পোরট্রেট গিফট দিতে গিয়েছিলাম।
ফরহাদঃ জাহান্নামে যাক তুমি আর তোমার পোরট্রেট। কী ভাবো তুমি নিজেকে?
ফরহাদ ফোন কেটে দিল।
নুসরাত কেঁদে দিল। সে বুঝতে পারলনা তার দোষটা কোথায়! সে তো শুধু গিফট দিতে গিয়েছিল। তবে ফরহাদ তার সাথে কেন এমন খারাপ ব্যবহার করল! বিনু এসে বলল, আপা, খাবেন না?
নুসরাত বলল, না, তুমি যাও।
বিনু বলল, আপনি খাননি শুনলে খালাম্মা রাগ করবে।
নুসরাত বলল, মা কে গিয়ে বলো আমাকে বিষ এনে দিতে, আমি বিষ খেয়ে উদরপূর্তি করব।
বিনু চলে গেল।
কিছুক্ষণ পর সুরাইয়া এলো রুমে। নুসরাতের মাথায় হাত বুলাতে বুলাতে বলল, কী হয়েছে মা? খাচ্ছিস না কেন?
নুসরাত বলল, কিছুনা। ভাল লাগছে না।
*****
পরদিন সুরাইয়া রুমে এসে দেখল নুসরাত এখনও ঘুম থেকে উঠেনি।
সুরাইয়া বলল, নুসরাত, আজ ভার্সিটি যাবি না?
নুসরাত বলল, না আম্মা, যাবো না। ভালো লাগছে না।
সুরাইয়া নুসরাতের কপালে হাত দিয়ে দেখল। তারপর বলল, জ্বরে তো তোর গা পুড়ে যাচ্ছে। শুয়ে থাক। আমি গরম দুধ নিয়ে আসছি।
*****
ক্যাম্পাসে সুমাইয়া ও আবিদ কথা বলছে।
সুমাইয়াঃ তুমি নুসরাতকে দেখেছ?
আবিদঃ না তো। কেন?
সুমাইয়াঃ আজ এক্সাম ছিল। অথচ নুসরাত আজ এলোই না। ফোনও সুইচ অফ করে রেখেছে। ও তো কখনও কোন এক্সাম মিস দেয় না!
আবিদঃ দাঁড়াও, আন্টিকে কল করে দেখি।
আবিদ সুরাইয়াকে কল দিল।
আবিদঃ হ্যালো আন্টি, নুসরাত যে আজ ভার্সিটি এলো না! আজ তো এক্সাম ছিল।
সুরাইয়াঃ আর বলো না বাবা। কাল রাত থেকে ওর শরীর খারাপ। আজ তো জ্বরই এসে গেছে। তুমি একটু আসো না! তুমি আসলে হয়তো ও একটু বেটার ফিল করবে।
আবিদঃ জ্বী, আন্টি। আমি আসছি।
*****
নুসরাত কাঁদছে। আবিদ তার দিকে তাকিয়ে আছে।
আবিদঃ কার জন্য কাঁদছ! তার জন্য যে তোমাকে ন্যুনতম রেসপেক্ট দিতে জানে না। আমি তো তোমাকে আগেই বলেছি, সে তোমার যোগ্য নয়। হি ইজ নট পারফেক্ট ফর ইউ। তুমি চাইলে ওর থেকে আরো বেটার লাইফ পার্টনার পাবে। কেন এভাবে দিনকে দিন নিজেই নিজের কাছে ছোট হচ্ছো?
এমন সময় ফরহাদের ফোন এলো।
নুসরাত বলল, ফরহাদ ফোন করেছে।
আবিদ বলল, কেটে দাও। খবরদার, তুমি ফোন ধরবে না।
নুসরাত বলল, দেখি না, কী বলে!
আবিদ বলল, একদম না। ফোন সুইচ অফ করে দাও।
নুসরাত ফোন রিসিভ করল।
আবিদ চিৎকার করে বলল, নিজেকে আর কত ছোট করবে তুমি? যার কাছে তোমার কোন ভ্যালু নেই, তাকে তুমি এত ভ্যালু কেন দিচ্ছ?
নুসরাত অন্য রুমে এসে দরজা বন্ধ করে দিল। তারপর বলল, হ্যালো
ফরহাদ বলল, হ্যালো নুসরাত
নুসরাত বলল, আর কে হবে? সরি বলবে তো।
ফরহাদ বলল, আমার আসলে তখন ওভাবে কথা বলাটা ঠিক হয়নি। আই এম সরি।
নুসরাত বলল, তুমি আমাকে এত কষ্ট কেন দাও?
ফরহাদ বলল, জানিনা! আমার যে মাঝে মাঝে কী হয়! আমি নিজের রাগ কন্ট্রোল করতে পারি না। সারারাত তোমার নাম্বারে ট্রাই করেছি সরি বলার জন্য। কিন্তু তোমার মোবাইল বন্ধ ছিল।
নুসরাত বলল, আহারে! খুব কষ্ট হয়েছে না? আর মোবাইল সুইচ অফ করে রাখব না। প্রমিজ।
ফরহাদ বলল, আচ্ছা, এখন রাখি?
নুসরাত বলল, ওকে, বাই।
নুসরাত রুমের দরজা খুলতেই দেখল আবিদ দাঁড়িয়ে আছে। আবিদ বলল, তোমাকে কী বলব? কিচ্ছু বলার নেই। জাস্ট আনবিলিভেবল।
নুসরাত বলল, কিছু বলতেও হবে না। আমি তো জানি, ফরহাদকে ছেড়ে দিলে কার বেশী ফায়দা হয়!
আবিদ বলল, তোমার মা ডেকেছিল বলে আমি এখানে এসেছিলাম। নয়তো মরে গেলেও এখানে পা রাখতাম না।
আবিদ চলে গেল।
সর্বশেষ এডিট : ১৯ শে আগস্ট, ২০১৫ রাত ১:২২
০টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

বিশ্রী ও কুশ্রী পদাবলির ব্লগারদের টার্গেট আমি

লিখেছেন সোনাগাজী, ০৭ ই নভেম্বর, ২০২৪ সন্ধ্যা ৬:০৫



আমাকে জেনারেল করা হয়েছে ১টি কমেন্টের জন্য; আমার ষ্টেটাস অনুযায়ী, আমি কমেন্ট করতে পারার কথা; সেটাও বন্ধ করে রাখা হয়েছে; এখন বসে বসে ব্লগের গার্বেজ পড়ছি।

সম্প্রতি... ...বাকিটুকু পড়ুন

ছবি কখনো কখনো কিছু ইঙ্গিত দেয়!

লিখেছেন ডার্ক ম্যান, ০৭ ই নভেম্বর, ২০২৪ সন্ধ্যা ৬:৩৭



গতকাল ভারতীয় সেনাপ্রধানের সাথে বাংলাদেশ সেনাপ্রধান এর ভার্চুয়ালি কথা হয়েছে। ভারতীয় সেনাবাহিনী তাদের অফিসায়াল এক্স পোস্টে এই ছবি পোস্ট করে জানিয়েছে।

ভারতীয় সেনাপ্রধানের পিছনে একটা ছবি ছিল ১৯৭১ সালের... ...বাকিটুকু পড়ুন

প্রথম আলু

লিখেছেন স্নিগ্দ্ধ মুগ্দ্ধতা, ০৭ ই নভেম্বর, ২০২৪ সন্ধ্যা ৬:৫৯



লতিফপুরের মতি পাগল
সকালবেলা উঠে
পৌঁছে গেল বাঁশবাগানে
বদনা নিয়ে ছুটে



ঘাঁড় গুঁজে সে আড় চোখেতে
নিচ্ছিল কাজ সেরে
পাশের বাড়ির লালু বলদ
হঠাৎ এলো তেড়ে




লাল বদনা দেখে লালুর
মেজাজ গেল চড়ে।
আসলো ছুটে যেমন পুলিশ
জঙ্গী দমন করে!





মতির... ...বাকিটুকু পড়ুন

দেশে ইসলামি আইন প্রতিষ্ঠা করা জরুরী?

লিখেছেন রাজীব নুর, ০৭ ই নভেম্বর, ২০২৪ রাত ৯:০২



বিশ্ব ইসলামের নিয়মে চলছে না।
এমনকি আমাদের দেশও ইসলামের নিয়মে চলছে না। দেশ চলিছে সংবিধান অনুযায়ী। ধর্মের নিয়ম কানুন মেনে চললে পুরো দেশ পিছিয়ে যাবে। ধর্ম যেই সময় (সামন্ত... ...বাকিটুকু পড়ুন

একটি ছবি হাজার কথা বলে

লিখেছেন ইফতেখার ভূইয়া, ০৮ ই নভেম্বর, ২০২৪ রাত ৩:৫৩

আগস্টের ৩ তারিখ আমি বাসা থেকে বের হয়ে প্রগতি স্মরণী গিয়ে আন্দোলনে শরিক হই। সন্ধ্যের নাগাদ পরিবারকে নিয়ে আমার শ্বশুর বাড়ি রেখে এসে পরদিনই দুপুরের মধ্যেই রওনা হয়ে যাই। আগস্টের... ...বাকিটুকু পড়ুন

×