somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

পোস্টটি যিনি লিখেছেন

কাগজের ফেরিওয়ালা
যদি ভালো ইনসানই না হতে পারি, তবে এই রক্ত-মাংস-রূহ-মস্তিষ্কের মূল্য কী? আমি উড়ার স্বপ্ন দেখি না, উড়তে তো মাছিও পারে! আমি মাটির আদম, মাটিতেই মরতে চাই, আমার বুকে লাগিয়ে দিও কদম ফুলের গাছ।

মোস্তাকিমের পথে (পর্ব ৯)

১৯ শে আগস্ট, ২০১৫ রাত ১:০৯
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

নুসরাত তানিয়াকে কল করল।
নুসরাতঃ হ্যালো
তানিয়াঃ হ্যাঁ, নুসরাত বল।
নুসরাতঃ কেমন আছিস?
তানিয়াঃ ভালো। তুই?
নুসরাতঃ আমিও। আচ্ছা, তুই ফরহাদের কোন খবর জানিস?
তানিয়াঃ কেন?
নুসরাতঃ না মানে, ওকে কয়েকদিন যাবৎ ফোনে পাচ্ছি না তো, তাই টেনশন হচ্ছে।
তানিয়াঃ দাঁড়া, আমি ভাইয়াকে জিজ্ঞাসা করে আসি। সে ফরহাদের খবর নিশ্চয়ই দিতে পারবে।
নুসরাত অপেক্ষায় রইলো। কিছুক্ষণ পর তানিয়ার কল এলো।
নুসরাতঃ হুম, বল।
তানিয়াঃ ফরহাদ তো নাম্বার চেঞ্জ করেছে। তোকে জানায়নি?
নুসরাতঃ নাম্বার চেঞ্জ করেছে?
তানিয়াঃ হ্যাঁ।
নুসরাতঃ জানাতে ভুলে গেছে মনে হয়। তুই তার নতুন নাম্বারটা দে।
তানিয়া নুসরাতকে নাম্বার দিল।
*****
নুসরাত রাতে ফরহাদকে কল দিল।
ফরহাদঃ হ্যালো
নুসরাতঃ হ্যালো, ফরহাদ।
ফরহাদঃ তুমি তানিয়াদের বাসায় ফোন দিয়ে আমার নাম্বার কালেক্ট করেছ?
নুসরাতঃ হ্যাঁ।
ফরহাদ রেগে গিয়ে বলল, কেন? এত কী প্রয়োজন আমাকে যে এভাবে তাদের কল দিয়ে আমার নাম্বার নিতে হবে?
নুসরাতঃ আমি তো শুধু তোমার খোঁজ খবর নেয়ার জন্য তাদের কাছ থেকে নাম্বার নিয়েছি। তুমি নাম্বার চেঞ্জ করেছ, আমাকে জানাওনি তো।
ফরহাদঃ তুমি আমার এমন কে লাগো যে তোমাকে আমার সবকিছু জানিয়ে করতে হবে? কেন আমার পিছনে লেগে আছ তুমি?
নুসরাতঃ আমি তোমার পিছনে লেগে আছি?
ফরহাদঃ তো? তোমার জন্যেই তো আমি নাম্বার...
নুসরাতঃ থামলে কেন? বলো।
ফরহাদঃ আমি রাখছি।
ফরহাদ ফোন কেটে দিল। নুসরাত কেঁদে দিল। বিছানায় বসে বসে অনেকক্ষণ কাঁদল সে। তারপর দাদির রুমে গেল। দাদির কোলে মাথা রেখে কাঁদতে লাগল।
ফাতেমা বেগম বললেন, কী হয়েছে, বোন?
নুসরাতঃ মানুষের হৃদয় এত অদ্ভুত কেন? সে এমন কিছু চায়, যা তার চাওয়া উচিৎ নয়। তারপরও সে চায়, জেনেশুনে বিষ পান করে।
ফাতেমা বেগমঃ ফরহাদ কিছু বলেছে?
নুসরাতঃ কেউ কিছু বলেনি। কারো কিছু বলার প্রয়োজন নেই। হয়তো আমার মধ্যেই কোন কমতি আছে। আচ্ছা দিদা, আমার মধ্যে কী নেই? সে কেন আমাকে অবহেলা করে!
ফাতেমা বেগমঃ তাহলেই দ্যাখ! ফরহাদ তোকে অবহেলা করেছে বলে তোর এত কষ্ট লাগছে! আর যিনি এই মহাবিশ্বের সৃষ্টিকর্তা, তাঁকে যখন তাঁরই সৃষ্ট বান্দা অবহেলা করে, তখন তাঁর কেমন লাগে! অথচ তিনি আমাদের সুযোগ দিচ্ছেন তওবা করার, একবার নয়, দুইবার নয়, বারবার।
নুসরাতঃ তুমি শুধু কথাকে ঘুরিয়ে অন্য দিকে নিয়ে যাও। আমি যাই।
ফাতেমা বেগমঃ মাটির মানুষকে ভালবাসিস রে বান্দা, কিন্তু পূজা করিস না, পূজা করিস না।
*****
নুসরাত তার রুমে আসতেই দেখল ফরহাদের কল এসেছে।
নুসরাতঃ ধমকানো আরো বাকি রয়ে গেছে বুঝি?
ফরহাদঃ তুমি কাঁদছ?
নুসরাতঃ না, হাসছি।
ফরহাদঃ আই এম সরি। একচুয়ালি আমার মাথা গরম হয়ে গেলে আমি কাকে কী বলে ফেলি কোন হুশ থাকে না।
নুসরাতঃ ইটস ওকে। বাট এরপর থেকে আর কখনও আমার সাথে এভাবে কথা বলবে না। আমার খুব কষ্ট লাগে।
ফরহাদঃ ওকে, বলব না।
নুসরাত ও ফরহাদের কথা চলতে লাগল।
*****
নুসরাত আবিদের বাসায় এলো। আবিদ পেইন্টিং করছিল।
নুসরাতঃ হাই
আবিদঃ হাই
নুসরাতঃ কী করছ?
আবিদঃ চুল কাটছি।
নুসরাতঃ পেইন্টার থেকে নাপিত হয়ে গেলে কবে থেকে?
আবিদঃ আমার এত ঠ্যাকা পড়ে নাই যে তোমার ছ্যাকা খেয়ে পেইন্টার থেকে নাপিত হয়ে যাবো।
নুসরাত চেয়ার টেনে বসল।
আবিদ বলল, ফরহাদের কী খবর?
নুসরাত বলল, ভালো। আসলে ওর বাসায় একটা পেইন্টিং লাগাবে। তাই তোমার এখানে আসা। আমাকে একটা ভালো দেখে পোরট্রেট দেবে?আমি ওকে গিফট করব।
আবিদ রঙ তুলি রাখল। তারপর রুমের ভেতরে ঢুকে গেল। একটা পোরট্রেট নিয়ে এসে নুসরাতকে দিল।
নুসরাত বলল, থ্যাঙ্ক ইউ। নুসরাত দেখল, পোরট্রেটের নিচে নুসরাতের সাইন দেয়া। নুসরাত বলল, আরে এখানে আমার সাইন কেন? ছবিটা তো তুমি এঁকেছ!
আবিদ বলল, আমি হই আর তুমি হই, একই ব্যপার! নিয়ে যাও।
নুসরাত বলল, কিন্তু...
আবিদ বলল, লাগবে না?
নুসরাত বলল, না, লাগবে। থ্যাঙ্ক ইউ। আমি আসি।
*****
নুসরাত পোরট্রেট নিয়ে ফরহাদের বাসায় গেল। ফরহাদের মা দিলারা বললেন, তুমি?
নুসরাতঃ জ্বী, আমার নাম নুসরাত। ফরহাদের ফ্রেন্ড। ফরহাদ বাসায় আছে?
দিলারাঃ না, সে তো বাসায় নেই। তুমি ভেতরে এসো।
নুসরাতঃ না, আন্টি। আজ না, আরেকদিন। আমি আসলে এই পোরট্রেটটা দিতে এসেছিলাম।
দিলারা পোরট্রেট নিয়ে বলল, বাহ, অনেক সুন্দর তো। তুমি এঁকেছ?
নুসরাত বলল, জ্বী, আন্টি। আমি একেছি। আমি চারুকলায় পড়ি। আচ্ছা আন্টি, আসি।
দিলারা বলল, এসো আবার।
নুসরাত বলল, জ্বী, আসব।
সর্বশেষ এডিট : ১৯ শে আগস্ট, ২০১৫ রাত ১:০৯
০টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

চীনের জে-১০ যুদ্ধবিমান কোনো চকচকে ল্যাব বা বিলাসবহুল ফ্যাক্টরিতে জন্মায়নি

লিখেছেন নাঈম আহমেদ, ১২ ই মে, ২০২৫ বিকাল ৪:২৬

চীনের জে-১০ এর পেছনেও রয়েছে সেই ত্যাগ আর সংকল্পের গল্প—
১: গবেষণা ও উন্নয়ন (R&D) দলের অক্লান্ত পরিশ্রম।
২: বাইসাইকেলে চেপে কাজে যাচ্ছেন প্রধান প্রকৌশলী সু চিশৌ।
৩: প্রথম উড্ডয়নের পর কেঁদে... ...বাকিটুকু পড়ুন

Bangladesh bans ousted PM's Awami League under terrorism law

লিখেছেন মেঠোপথ২৩, ১২ ই মে, ২০২৫ সন্ধ্যা ৬:৫৬





হায়রে এরেই বলে কর্মফল। ১৭ টা বছর গুম , খুনের মাধ্যমে এক ভয়ের রাজ্য তৈরী করে কেড়ে নেয়া হয়েছিল মানুষের বাকশক্তি। চোখ, কান, মুখ থাকতেও... ...বাকিটুকু পড়ুন

দিন গেলে আর দিন আসে না ভাটা যদি লয় যৌবন

লিখেছেন রূপক বিধৌত সাধু, ১২ ই মে, ২০২৫ রাত ১০:২৬


এমন কোনো বিষয় আছে, যা নিয়ে জাতি পুরোপুরি একমত? ৫০% একমত হতে পারে এমন কোনো বিষয়ও চোখে পড়ে না। একপক্ষ রবীন্দ্রনাথের গান জাতীয় সঙ্গীত হিসেবে মনেপ্রাণে ধারণ করে, আরেক পক্ষ... ...বাকিটুকু পড়ুন

অনু গল্পঃ শেষ বিকেলে

লিখেছেন সামিয়া, ১২ ই মে, ২০২৫ রাত ১০:৫১


ছবিঃনেট

শীত যাই যাই করছে, বিকেলের রোদের আলো আকাশ জুড়ে ছড়িয়ে, পুকুর পাড় ঘেঁষে যে পুরোনো আমগাছটা দাঁড়িয়ে আছে, তার নিচে ছায়া পড়ে আছে নিঃশব্দে।

সেই ছায়ায় বসে আছেন মিজান... ...বাকিটুকু পড়ুন

Dragon: ডিগ্রী লাভের জন্য আপনি কি পরিশ্রম করেছিলেন ?

লিখেছেন সৈয়দ কুতুব, ১৩ ই মে, ২০২৫ রাত ১২:৩৮


সাধারণত ভারতীয় মুভি তেমন দেখা হয় না। অনেকদিন পর গত শনিবার একটা ভারতীয় মুভি দেখলাম। আসলে ভারত-পাকিস্তান যুদ্ধের আবহে যুদ্ধের মুভির খুজতেসিলাম যে মুভিতে ভারত পাকিস্তানকে হারিয়ে দেয় সামরিক... ...বাকিটুকু পড়ুন

×