somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

মাননীয মন্ত্রী বড় লোকদের ভিতর গ্রামের ক্ষুদ্র ঋণ গ্রহীতা কৃষক ও বস্তির মেয়েটির অবস্থান কোথায়?

২০ শে নভেম্বর, ২০২১ রাত ৩:০৩
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :



শনৈঃ শনৈঃ বৃদ্ধি পাচ্ছে, রাত পোহালেই আয় বাড়ছে বাংলাদেশের, আমরা টেরই পাচ্ছি না। আমরা অজান্তেই বড়লোক হয়ে যাচ্ছি।”
এই মিষ্টি মিষ্টি কথাগুলো আমার নয়। আমাদের মাননীয় পরিকল্পনা মন্ত্রীর। আমিও মাননীয় মন্ত্রীর সাথে একমত। আমার আয় বাড়ছে তবে সেটা কল্পনায়ই বাড়ছে। আর তাই তো আমি টের পাচ্ছি না। তবে যেটা টের পাচ্ছি সেটা হচ্ছে মাস শেষ হওয়ার আগেই আমার আয়ের টাকা শেষ হয়ে যাচ্ছে। সন্তানের পড়ালেখার খরচ, বিদ্যুৎ বিল, বাড়তি নানাবিধ খরচ, ব্যাংকের দেনা শোধ করার পর পরিবারের সুষম খাদ্যের চাহিদা মেটাতে গিয়ে আমি টের পাচ্ছি যে দিন দিন আমার চাহিদাকে সামলাতে হচ্ছে। দিন চালাতে যেখানে আমাকে হিমশিম খেতে হয় সেখানে শখ দেখানোটা আমাকে মানায় না।আমি টের পাচ্ছি যে নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্রের দাম বাড়ছে শনৈঃ শনৈঃ।

তেলের মূল্যবৃদ্ধির অজুহাতে গণপরিবহনের ভাড়া বাড়ছে শনৈঃ শনৈঃ। গণমাধ্যমে সুখবরটা পেয়েছি যে বাংলাদেশের মাথাপিছু আয় বেড়েছে। আমরা ভারতকে পিছনে ফেলে এগিয়ে যাচ্ছি প্রতিনিয়ত। বাহ! বেশ! একটা আরামের ঢেঁকুর এলো। কিন্তু হায়! এ সংবাদ পড়ার পর যখন আমার বেতনের হিসাবটা সামনে নিলাম তখন দেখি আমার বেতন আগে যা ছিল তাই আছে। আমার অন্য কোনো আয়ের উৎস নেই। বাংলাদেশের প্রতিটা পরিবারে গড়ে যদি পাঁচজন করেও সদস্য থাকে আর সেই পরিবারের যদি একজনই কেবল রোজগারী মানুষ থাকে তাহলে একবার ভেবে দেখবেন যে সেই পরিবারটি কী কী টের পাচ্ছে?

আমাদের আয় বাড়ছে। কিন্তু এই যে উন্নয়ন সেগুলো যাচ্ছে কোথায়? কাদের কাছে জমা হচ্ছে সেটা কী টের পাচ্ছেন মাননীয় মন্ত্রী?এই বাড়তি আয়ের কিছুই আমার হাতে আসছে না। কিছু নির্দিষ্ট সংখ্যক লোকের হাতে জিম্মি হয়ে পড়ছে বাংলাদেশের উন্নয়নের ফসল। কারা তারা? কোটি কোটি টাকা ব্যাংক থেকে নিয়ে পাচার করে দিচ্ছে কারা? গ্রামের গরিব কষৃক সামান্য লোনের টাকা এক মাস পরিশোধ না করলেই এনজিও/ব্যাংকের লোক জেলের ভয় দেখায়। তাহলে কোটি কোটি টাকা লোন নিয়ে পরিশোধ না করাদের কেন কিছু হচ্ছেনা।সংবাদ বলে করোনাকালে দেশে নতুন করে তিন কোটি লোক দারিদ্র্য সীমায় প্রবেশ করেছে। আপনি কি জানেন, দেশে এখন কত মানুষ বেকারত্বের জালে জড়িয়ে পড়েছে? আমি কিন্ত অতি সাধারণ মানুষ।

আপনাদের অর্থনীতির জটিল জ্যামিতি আমার ছোট মাথায় ঢোকে না। আমার মাথায় কেবল একটাই হিসাব ঢুকে সেটা হচ্ছে আমার দিন চলছে না। আমি অর্থনীতি বলতে বুঝি আমার সাধ্যের মধ্যে প্রয়োজনীয় ও চাহিদা মাফিক জিনিসপত্র কিনতে পারছি কি না। কেবল বুঝি রাস্তায় চলতে গিয়ে বাড়তি গাড়ি ভাড়া দিতে হচ্ছে কিনা। আমি বড়লোকি হওয়া বলতে বুঝি আমার সন্তানের চাহিদা ঠিকঠাক মেটাতে পারছি কি না। সপ্তাহে অন্তত একদিন বাসায় মাংসের জোগান দিতে পারছি কি না। আমার পরিবারের শখগুলো মেটাতে পারছি কি না। বস্তির মেয়েটা কান্নাজড়িত কণ্ঠে বলে, আমরা তো না খাইয়া মইরা যামু। স্বামী যে করোনায় কাজ হারিয়েছে।

বাসা বাড়িতে কাজ করে যা আয় করে সেটা দিয়েই চলছে তাদের তিনজনের সংসার। এতে কুলাতে পারছে না সে। দুই বছরের কন্যাটি দোকানের সামনে দিয়ে গেলেই এটা সেটা চায়, সে দিতে পারেনা। বলে, ‘পেটে তো ভাতই জোটে না ঠিকঠাক আর মাইয়ার শখ মিটামু কী দিয়া?’মাননীয় মন্ত্রী আপনি হয়তো এখনও ঘুমিয়েই আছেন। ঘুম থেকে উঠলেই হয়তো আপনি সঠিক চিত্রটা পেয়ে যাবেন। আপনি এমন এক মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বে আছেন যেখানে নির্ভর করে বাংলাদেশের সব উন্নয়ন ছক। একটু কী খুঁজে দেখবেন, এতো এতো উন্নয়নের টাকা কোথায় যাচ্ছে? কারা তারা যারা ঘুম থেকে উঠেই বড়লোক হয়ে যাচ্ছে? খুব জরুরি মাননীয় মন্ত্রী। খুব জরুরি এই কাজটি করা। আপনার ধারণার সাথে বাস্তবের ফারাকটা খুঁজে বের করতে পারলেই কেবল সঠিক বাংলাদেশকে চেনা যাবে।


#কৃতজ্ঞতায়#
নীলা পারভীন।
জাগোনিউজ২৪.কম।
লিংকডইন।
সর্বশেষ এডিট : ২০ শে নভেম্বর, ২০২১ রাত ৩:০৩
৩৭৫ বার পঠিত
৬টি মন্তব্য ৫টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

ভারতীয় পতাকার অবমাননা

লিখেছেন সরলপাঠ, ০২ রা ডিসেম্বর, ২০২৪ ভোর ৪:৪৩

বাংলাদেশের ২/১টি বিশ্ববিদ্যালয়ে ভারতীয় পতাকার অবমাননা আমার কাছে ছেলেমী মনে হয়েছে। ২০১৪ সাল থেকে ভারত বাংলাদেশের রাজনীতিতে সরাসরি হস্তক্ষেপ করার কারণে বাংলাদেশের মানুষের মনে প্রচন্ড রকমের ভারত বিদ্বেষ তৈরি হয়েছে।

কিন্ত... ...বাকিটুকু পড়ুন

ভিসা বন্ধ করায় ভারতকে ধন্যবাদ।

লিখেছেন সৈয়দ মশিউর রহমান, ০২ রা ডিসেম্বর, ২০২৪ দুপুর ১২:৫৩



ভারত ইদানীং ভিসা দিচ্ছেনা; তারা ভিসা না দিয়ে আমাদেরকে শিক্ষা দিতে চায়! তাদের করদ রাজ্য হাতছাড় হওয়া খুবই নাখোশ, এতোই নাখোশ যে মোদী মিডিয়া দিনরাত বয়ান দিচ্ছে এই দেশে... ...বাকিটুকু পড়ুন

ভারতের চিকিৎসা বয়কট এবং

লিখেছেন পবন সরকার, ০২ রা ডিসেম্বর, ২০২৪ দুপুর ১:৫৬


ভারতের এক হাসপাতাল ঘোষণা দিয়েছে বাংলাদেশের কোন রুগিকে তারা চিকিৎসা দিবে না। কিন্তু মজার ব্যাপার হলো যে হাসপাতাল থেকে এই ঘোষণা দেয়া হয়েছে সেই হাসপাতালে চিকিৎসা নেয়ার জন্য বাংলাদেশের... ...বাকিটুকু পড়ুন

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। চামচা পুঁজিবাদ থেকে চোরতন্ত্রে পরিণত হয়েছিল দেশ

লিখেছেন শাহ আজিজ, ০২ রা ডিসেম্বর, ২০২৪ বিকাল ৩:১৩






চামচা পুঁজিবাদ থেকে দেশ চোরতন্ত্রে পরিণত হয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন অর্থনৈতিক শ্বেতপত্র প্রণয়ন কমিটির প্রধান ড. দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য। তিনি বলেন, আমলা, রাজনীতিবিদ ও ব্যবসায়ীরা মিলে চোরতন্ত্র করেছে।

সোমবার... ...বাকিটুকু পড়ুন

শেখ হাসিনাকে ভারত ফেরত পাঠাবে তবে............

লিখেছেন সৈয়দ কুতুব, ০২ রা ডিসেম্বর, ২০২৪ বিকাল ৩:৪২


শেখ হাসিনাকে বাংলাদেশে বিচারের জন্য ভারতের কাছে ফেরত চাইতে হলে অবশ্যই বাংলাদেশকে প্রতিহিংসামূলক বিচারপদ্ধতি বাদ দিতে হবে। বিচারে শেখ হাসিনা যাতে ন্যায় বিচার পান বাংলাদেশকে আগে তা নিশ্চয়তা... ...বাকিটুকু পড়ুন

×