য়াফসানার শরীর প্রায়ই গরম হয়ে যায়। এটা বাৎসরিক ঋতুর সাথে রিলেটেড না। তার শরীরের ভেতরে কোন ঝামেলা হয়েছে মনে হয়। এটা ঠিক করার পরে য়াফসানা গেল ডাক্তারের কাছে। ডাক্তার এমবিবিয়েস করে আরো অনেকগুলো ডিগ্রি নিয়েছে। লণ্ডন ফেরত। চোখে সুরমা পরেন। তিনি শরীরের নানান জায়গা টিপেটুপে বললেন, "তোমার শরীর হরমোনাল কারণে গরম হয়ে যায়। এটা তেমন গুরুতর অসুখ না। ওষুধও লাগবে না। বিয়ে করো, তাহলেই হবে।"
য়াফসানা পড়লো মহা ফ্যাসাদে! এমনিতে সে মেয়ে ভালো, বিয়ের চিন্তাও করছিলো। কিন্তু কেউ তার হয়ে উদ্যোগ নিতেছিলো না। এখন কি তাহলে নিজেই এগিয়ে যাবে? এই ভাবতে ভাবতে সে ফুটপাত থেকে একটা রিকশা নিলো।
২
য়াফসানার রিকশাটা খুব ঝাঁকি খাচ্ছে। রিকশাওয়ালা চ্যাংড়া একটা ছেলে। রাস্তাটাও খানাখন্দে ভরা। প্রতিবার ঝাঁকুনির পরে চ্যাংড়া ছেলেটা শক্ত করে হ্যান্ডেল চেপে ধরতে পারে না। আরো একটু নড়বড়ে হয়ে যায় য়াফসানার বসা। এক হাতে ব্যাগ আর আরেক হাতে রিকশার হুড আঁকড়ে ধরে সে বসে আছে। আর দোয়া দরুদ পড়ছে, কতো তাড়াতাড়ি বাসায় যেতে পারবে। রাস্তাঘাটে এমনিতেও বেরুতে ভয় লাগে আজকাল। একদিন দেখেছে একটা মেয়ে খুব আঁটোসাঁটো জামা পরে ওড়নাটা কাঁধে ঝুলিয়ে দাঁড়িয়ে আছে একটা মোটর সাইকেলে হেলান দিয়ে।
ইয়া আল্লাহ মাবুদ! কী দৃশ্য! দেখার পর থেকে য়াফসানার শরীর কেমন কেমন করছিলো। সেদিন বাড়িতে ফিরে দুইবার গোসল করেছে। তারপরেও কেমন জ্বর জ্বর লাগছিলো! রাতে অনেকক্ষণ ঘুম হয় নি।
======
এপিলগঃ
গুরু বলেছেন, পরনামে নিন্দা কদাচ করিও না। গল্প বাড়িতে দিলে সেটাই ঘটিবে, গুরু কুপিত হইতে পারেন। আমি শিষ্য হইয়াই থাকতে চাই। য়াফসানার কারণে আমি গুরুর চরণচ্যুত হইতে চাহি না।
সেতুটা তাই বাঁধা থাকিলো। পরে একদিন... সময় সুযোগ মতো... ইহাকে ছাড়িয়ে দিবো। না ছাড়িলেই বিশদ ক্ষতি কী?
সর্বশেষ এডিট : ৩১ শে জুলাই, ২০১০ রাত ১১:৪৮