somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

তোর "ক" অথবা "খ" অথবা "অন্যকিছু" ২

২৫ শে অক্টোবর, ২০১১ রাত ১২:২৯
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

প্রিয় ক অথবা খ অথবা অন্যকিছু,

তোকে যেবার শেষ চিঠি লিখেছি ভেবেছি আর লিখবো না। কিন্তু এই মাঝ রাত্রীতে আবার লিখতে ইচ্ছা হল, লিখবো না লিখবো না করে লেখা শুরু করলাম।তুই আমার শেষ চিঠি পড়িসনি, তাই আমার অনেক কিছুই তোর অজানা। তুই সেদিন ফোন দিয়েছিলি কেন জানি দেখা করতে চেয়েছিলি। আমি তোকে না করেছি। না করেছি না বলে বলা উচিত না করতে পেরেছি। তিন বছরে এতটুকু অর্জন একেবারেই কম না।অসুস্হ ছিলাম না কিন্তু বাহানা দিয়ে দেখা করিনি। হয়ত রাগ করেছিস। তোর রাগ এখন আমি মাথায় নিইনা। রাগ ভাঙ্গানো আমার জীবনের কোন কিছু বদলাবে না। তাই রাগ ভাঙ্গার কোন তাড়া নেই। কি অদ্ভুত না? তুই যখন রাগ করতি আমি পাগল হয়ে যেতাম। কত কিই না করার চেষ্টা করতাম।

আয় আজকে আমরা মনে করা করা খেলি। মনে আছে তোর ২৮শে অক্টোবরের ২০০৬ এর কথা। পুরো দেশ অচল করে দিয়েছিল আওয়ামিলীগ। খুব রাগ হয়েছিল তৎকালীন বিরোধী দলীয় নেত্রী হাসিনার উপর। অবরোধ ছিল। আমি তার আগের দিন গ্রাম থেকে চলে আসছিলাম তোর সাথে দেখা করবার জন্য।কিন্তু অবরোধের কারনে দেখা হবে না। কিন্তু হঠাৎ তুই সারপ্রাইজ দিলি অবরোধের উপর অবরোধ দিয়ে তুই বের হয়ে আসলি। তারপর চট্টগ্রাম শহরটা আমাদের।রাজপথ ভীষন উত্তপ্ত ছিল তাই অলিতে গলিতে ঘুরেছি। এ গলি থেকে ও গলি গলাগলি। জানিস সেসব গলিতে এখন ভুলক্রমে গেলে তারা কেমন করে যেন মুচকি হাসে,গলির সাইনবোর্ড,তোর দেখানো কাজী অফিসের সাইনবোর্ড আমাকে দেখে হাসে। যে কাজীটার কাছে আমরা বিয়ে করবো ভেবেছিলাম সে বোধহয় আর বেঁচে নেই।

মনে আছে একটেলের জয় সিমের কথা? সারারাত কথা বলতাম কিন্তু টাকা ফুরোত না,কথাও ফুরোত না, কেবল বেরসিক রাতটা ফুরিয়ে যেত। সেই যে তোর বুকে ঘুম হারালাম আজও আমি জেগে। একটেলও আর নেই রবি হয়ে গেছে, তুইও নেই,আমি কি আছি? শুনেছি তুই ভাল নাই, খুব খারাপ লাগাতেও কেমন যেন আনন্দ পাই। হিংসের আনন্দ।

তোর মনে আছে তোর সাথে ঝগড়া হলেই আমি কবিতা লিখতাম? তুই বলতি "তোর এই টাইপের কবিতাগুলো ভাল হয়,তাই তোর সাথে নিয়মিত ঝগড়া সিরিজ খেলবো" অনেকদিন এ টাইপের কবিতা লিখি না। ঝগড়া নাই কবিতা কবিতা কিভাবে হবে। কবিতার মা নেই, সে আরেকজনের কবিতা।একবার তোর সাথে ঝগড়া করে তোর দেয়া সেদিনের চিঠিটা ছিড়ে ফেলেছিলাম। কিন্তু তোকে বলিনি। তুই বারবার জিজ্ঞেস করছিলি চিঠির উত্তর দিই না কেন? আমি দিব দিচ্ছি বলে তোকে ভুলিয়ে দিয়েছিলাম।আজ বলি সে চিঠি আমি পড়িনি,তাই উত্তরটা দেয়া হয়নি।সে চিঠি আজও এক রহস্য। কি লিখেছিল সে চিঠিতে আমার কোনদিন জানা হবে না।চিঠির নিচে চুমু দিয়েছিলিতো নাকি চুমু চুরি করেছিস?

মনে আছে তোর সাথে আমার শেষ দুদিনের কথা? পুরো ঢাকা শহর চষে বেড়িয়েছিলাম। তুই জানতি এটা আমাদের শেষ দেখা, আমিও হয়ত কিছুটা জানতাম। খুব ভোরে কিছু বাতাস ছিল তোর সাথে দেখা হয়,একেবারেই সন্ধ্যায় যখন তোকে হারিয়ে ফেলতে যাচ্ছি পুরো ঢাকা শহর জ্যামের চাদরে আবদ্ধ। ভীষন বিরক্তিকর ছিল। মহাখালীর রেললাইন থেকে তোকে সিএনজিতে তুলে দিচ্ছিলাম যখন আমার মনে কিছুই ছিল না। তুই যাওয়ার পর একটা সিগারেটের ধোঁয়ার সাথে মনে হচ্ছিল সিএনজিতে করে বোধহয় আমার নিস্তেজ আগামীটা পাঠিয়ে আমি তোর ছায়া নিয়ে দাড়িয়ে আছি। তুই সেদিন তোর শেষ চিঠি দিয়েছিলি। কি লিখেছিস মনে নেই। তোর চিঠিগুলো অনেকদিন পড়ি না। তিনটি প্যাকেটের ভিতর রেখ উপরে স্কচট্যাপ লাগিয়ে দিয়েছি, যেন পড়তে না পারি। যেমনটা করেছি আমার ভিতরে তোর জন্য স্পন্দনগুলোকে। তবে প্রায় স্পন্দনগুলো কাল স্কচট্যাপ ভেদ করে বেরিয়ে যায়, তারপর একটা নিস্তজ চিঠি হয়ে আমার ল্যাপটপের তোর জন্য খোলা একটা নিউ ফোল্ডারের কোন কোনায় পড়ে থাকে। কখনো ফেসবুকে নোট হয়,ব্লগে পোষ্ট হয়।আর তুই কেবল আত্নার কোনায় নয় ঠিক মধ্যখানে পড়ে থাকিস শেয়ার করার কোন জায়গা নেই। বোকা ফেসবুক, ব্লগকি তোকে পড়তে জানে? আমিতো আজ অবধি তোকে মুখস্ত করতে পারলাম না। আমি মুখস্তবিদ্যায় খুব দুর্বল। তোর জন্য একটি কম্পন, ভুমিকম্পের প্রভাবের চেয়ে অনেক বেশী শক্তিশালী।

তোর না থাকার মাঝে যত অনুভুতি রয়েছে আমার বেঁচে থাকার মধ্যে তা নাই।
ভাল থাকিস বলতে ইচ্ছা হচ্ছে না। হিংসুটে প্রেমিকরা কখনও ছেড়ে যাওয়া প্রেমিকার ভাল চায় না। আমি প্রায় চাই তুই জ্বলতে থাক । আবার তোর খারাপ লাগা আমাকে কষ্ট দেয়।তবুও তুই ভাল থাকিস, অনেক খারাপ থাকার ভীড়ে। মাঝে মাঝে মনে করিস না। তুই মনে করলে আমি বুঝে যাই। চিঠি লিখি। অবাঞ্চিত শেষ চিঠি।

ইতি
তোর গ অথবা ম অথবা কেউ না।
২৩ অক্টোবর ২০১১

আগের চিঠিটা এখানে।
তোর "ক" অথবা "খ" অথবা "অন্যকিছু"
সর্বশেষ এডিট : ২৫ শে অক্টোবর, ২০১১ রাত ১০:৩৫
৪০টি মন্তব্য ৩৯টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

জীবনের গল্প- ৯৪

লিখেছেন রাজীব নুর, ০৮ ই মে, ২০২৫ দুপুর ১২:০১



নাম তার তারা বিবি।
বয়স ৭৭ বছর। বয়সের ভাড়ে কিছুটা কুঁজো হয়ে গেছেন। সামনের পাটির দাঁত গুলো নেই। খেতে তার বেগ পেতে হয়। আমি তাকে খালা বলে ডাকি।... ...বাকিটুকু পড়ুন

পাহাড়ি বুনো ফল-রক্তগোটা ভক্ষন

লিখেছেন মোঃ মাইদুল সরকার, ০৮ ই মে, ২০২৫ দুপুর ১২:০৫

পাহাড়ি বুনো ফল রক্তগোটা এর রয়েছে বিভিন্ন নাম-রক্তগোটা, রক্ত ফল, রক্তআঙ্গুরী, রক্তফোটা, রক্তজবা পাহাড়িরা আবার বিভিন্ন নামে ডাকে। এর ইংরেজী নাম ব্লাড ফ্রুট।











প্রতি বছর... ...বাকিটুকু পড়ুন

শেষমেষ লুইচ্চা হামিদও পালিয়ে গেলো!

লিখেছেন সৈয়দ মশিউর রহমান, ০৮ ই মে, ২০২৫ বিকাল ৩:০৩



৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার আন্দোলনের মুখে পতন হয় ফেসিস্ট হাসিনা ও তার দল আম্লিগের। এরপর থেকেই আত্মগোপনে রয়েছে দলটির চোরচোট্টা নেতাকর্মীরা। অনেক চোরচোট্টা দেশ ছাড়লেও এতদিন দেশেই ছিলো আম্লিগ সরকারের... ...বাকিটুকু পড়ুন

অপারেশন সিঁদুরে নিহত আইসি ৮১৪ বিমান অপহরণের সঙ্গে, জইশ জঙ্গি মাসুদের ভাই রউফ আজ়হার:

লিখেছেন ঊণকৌটী, ০৮ ই মে, ২০২৫ বিকাল ৩:৩১

অপারেশন সিঁদুরে নিহত আইসি ৮১৪ বিমান অপহরণের সঙ্গে যুক্ত, জইশ জঙ্গি মাসুদের ভাই রউফ আজ়হার: ১৯৯৯ সালের ২৪ ডিসেম্বর আব্দুল-সহ পাঁচ জঙ্গি আইসি-৮১৪ বিমান অপহরণ করেছিল। মাসুদ আজ়হার আলভি-সহ তিন... ...বাকিটুকু পড়ুন

কওমী শিক্ষা ইসলামের বিকলাঙ্গ শিক্ষা

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ০৮ ই মে, ২০২৫ রাত ৯:৫৬



সূরাঃ ৫ মায়িদাহ, ৩ নং আয়াতের অনুবাদ-
৩। তোমাদের জন্য হারাম করা হয়েছে মৃত, রক্ত, শূকরমাংস, আল্লাহ ব্যতীত অপরের নামে যবেহকৃত পশু, আর শ্বাসরোধে মৃত জন্তু, প্রহারে মৃত জন্তু,... ...বাকিটুকু পড়ুন

×