হে উপমহাদেশীয় দেবতা-
ভারত মহাসাগর চীন সাগর আর
পদ্মা মেঘনা যমুনার কোলজুড়ে
প্রসারিত বিস্তৃত সম্প্রসারিত
হে আঞ্চলিক ভূ-রাজনৈতিক ইশ্বর-
ইংরেজদের প্রেতাত্মাবাহী
দিল্লীর মসনদে সমাসীন
হে উপমহাদেশীয় মুনি-ঋষী-
আমি সিকিম থেকে বলছি
আমি কাশ্মীর থেকে বলছি
আমি হায়দ্রাবাদ থেকে বলছি
বলছি নেপাল আর বাংলাদেশ থেকে-
সিকিম আর হায়দ্রাবাদ ভক্ষণ করে
আপনার ক্ষুধা নিবৃত হয়নি, জানি
ইশ্বররুপী বণিকের ক্ষুধা
নিবারণযোগ্য নয় - তা ও মানি
তাই আপনার পূঁজোর বেদিতে
থরে থরে সাজিয়ে রেখেছি সব;
এই দ্যাখুন -
এখানে সুন্দরবন আছে
জীব বৈচিত্র্যের বাতিঘর এই ম্যানগ্রোভ বন
আপাতত আপনার সাম্রাজ্যভুক্ত নয়;
তাই, আপনি চাইলেই আপনার সম্প্রসারণমান
পুঁজিবাদী আধিপত্য স্থাপন করতে
গিলে নিতে পারেন এই বনটিকে;
আপনার পুঁজোর জন্য প্রাণ চাই
রক্ত চাই
মানবের বলিদান ছাড়া জগতে
আধিপত্যবাদী কোন ইশ্বরের পুঁজো হয়?
পশ্চিমা ইশ্বরের পূঁজোর জন্য যেমন
প্রতিনিয়ত বলি হচ্ছে আফগান ফিলিস্তিন
আর সিরিয় আবাল বৃদ্ধ বনিতা;
আপনার পূঁজোর জন্যও
সীমান্তে আমরা বুক পেতে বসে থাকি
হে কর্পোরেট ইশ্বর;
আপনি আমাদের রক্ত চুষে নিন
তারপর প্রাণহীন দেহ কাঁটাতারে ঝুলিয়ে দিন
যেমন করে ঝুলিয়ে দিয়েছেন ফেলানিকে;
সীমান্তে আপনাকে চোখ রাঙানোর
আর কেউ নেই
বিডিআর? সে তো ইতোমধ্যেই মরে কুটে হয়েছে নপুংশক;
আমাদের নদীপথে বাঁধ দিয়ে
ওগুলোকে শীর্ণ করে দিন
নিন ট্রানজিট, গিলে খান
পদ্মা-মেঘনা-যমুনা
পাঠ্যবইয়ের পাতায় পাতায়
ঢুকিয়ে দিন আপনার
শ্রেষ্ঠত্বের কল্পকাহিনী
তব পুঁজোর মন্ত্র
আমাদের মাথাগুলো কিনে নিন
মগজে বুনে দিন
দালালি আর দাসত্বের বীজ-
মেরুদণ্ডহীন বুদ্ধিজীবীদের আপাতত
আপনার 'পদ্মভূষণ' দিয়ে শান্ত করুন;
তবু, পুঁজিবাদের হে রঙীন ইশ্বর-
আপনি তৃপ্ত হোন
আপনার ক্ষুধা নিবৃত হোক
নির্বিঘ্নে সম্পন্ন হোক আপনার আধিপত্যের পুঁজো;
ললুব্ধ ক্ষুধায় কাতর হে নৈর্ব্যক্তিক ইশ্বর-
আপনার উদরপূর্তির তরে
গিলে খাচ্ছেন আমাদের মাঠ
আমাদের ব্যাংক
আমাদের রাজনীতি অর্থনীতি
সমাজনীতি আর মূল্যবোধ যেটুকু ছিল;
ক্রমশঃ গলাধঃকরণ করছেন
আমাদের সংস্কৃতি
আমাদের ধর্ম;
এরপর এক কোটি দু কোটি তিন কোটি করে
ষোলকোটি সবাইকে হজম করে ফেলুন
আমরা আপনার পুঁজোর জন্য উৎসর্গিত
এ আমাদের কৃতজ্ঞতার নিদর্শন।
পৃথিবীর বুকে আমরা
বড়োই কৃতজ্ঞ জাতি যে;
আপনি আমাদের ধন্য করুন
হে ভারতমাতা;