somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

ঈদ, বাংলার ঐতিহ্য ও একটি গান

২৫ শে আগস্ট, ২০১২ সকাল ১১:১৪
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

রাশেদুল হাসান

‘ওমন রমজানের ওই রোজার শেষে এলো খুশির ঈদ’ এ গানটি ঈদ ঐতিহ্যকে ধারণ করে রেখেছে বহুকাল ধরে। বিদ্রোহী কবি কাজী নজরুল ইসলামের এ গানটি যে, ঈদের একটি অন্যতম অনুষঙ্গ হয়ে উঠেছে এ কথাটার সঙ্গে নিশ্চই কারো দ্বিমত থাকার কথা নয়। মুসলমানদের প্রধান ধর্মীয় উৎসব এ ঈদ। ছোটকালে ঈদের চাঁদ দেখতে গিয়ে সে কি লাফালাফি। ঢিল ছুড়ার তীব্র প্রতিযোগিতার মধ্যে ছেলে মেয়ে প্রায় সবার মুখে একই সুর ‘ওম...
ন রমজানের ওই রোজার শেষে এলো খুশির ঈদ’। এ গানটি মিনিটে মিনিটে বাজিয়ে রেডিও টেলিভিশন ঈদের আগমনী বার্তা প্রচার করে। সন্ধ্যার দুসর আকাশে যারা চাঁদ দেখলো কিংবা যারা দেখলোনা এ গানটি বাজার সাথে সাথে বুঝে ফেলে চাঁদ দেখা গেছে, আগামী কাল ঈদ। সারা রাত গানটি রেডিও বিভিতে বাজত শোনা যেত।

এ মুহুর্তে আমার এ চিন্তার হেতু কি এমন প্রশ্নচিন্তা অমূলক নয়। কেউ হয়তো ভাবছেন গানটিতো এখনো বাজে বা বাজতে শুনেছি তাহলে এ ব্যাটার মাথা ব্যথার কারণ কি?

প্রফেশনাল কারণে গোটা রমজান মাসটা দারুন ব্যস্তার মধ্যে কাটা হয়। তবে রমজানের শেষ মূহুর্তে কাজ নেই বললেই চলে। ঘুরে ফিরে অলস সময় কাটানো। সময় যেন যেতে চায় না। ঈদের আরো দু’একদিন বাকী হাতে কোন কাজ নেই। সময়টা লেখা-পড়ায় কাটাতে চাই। লেখালেখির সামান্য নেশা থাকায় চিন্তায় ডুবি।

এবারও সাতাশ রমজান থেকে হাতে কোন কাজ নেই। এর আগেই সম্পাদনার পাঠটা ছুকিয়ে শাহাদাতের সঙ্গে বকবক করছি। আড্ডা মারছি এখানে ও খানে। দেখতে দেখতে চাঁন রাত (ঈদের আগের দিন) এসে গেল। সিএনজি করে শহর থেকে বাড়ী ফিরছি। পথে ঈদ প্রস্তুতির অনেক আয়োজন চোখ এডালো না। রাস্তায় ছিকা মেরে ঈদ মোবারক লেখা হালো, কোথাও কোথাও লাইটের বন্দোবস্ত করা হলো। রাজনৈকতক নেতাদের তোরণ, পোস্টারের কথা না হয় নাই বললাম। দু’চারটা আতশ বাজির আওয়াজও কানে বিদ্ধ হলো। পথে কোথাও কোথাও মাইক কিংবা সাইন্ড বক্স’এর শব্দে কান ঝালাপালা হওয়ার উপক্রম।
ওয়েস্টার্ন, রক কিংবা হিন্দি গানের মহোৎসবে প্রশ্ন জাগে আজ ঈদ না ‘থার্টি ফাস্ট নাইট’! সিএনজিটা বাজারে এসে থামলো। পরিচিতদের সাথে দেখা হলো, কেউ ফোন করলো এখানে এসো ওখানে এসো। পুরো বাজার টা ঘুরে দেখলাম। দফায় দফায় আড্ডা চললো। চা-আইসক্রীমের সাথে সাথে কত স্বপ্ন খাওয়া হলো তার ইয়ত্তা নেই। বাজারের গোলিতে গোলিতে সেই সাউন্ড বক্স, সেই হিন্দি, ওয়েস্টার্ন ও রক গানের লম্ফঝম্প। একটি বারও সে ঐতিহ্যের গান, ঈদের গান ‘ওমন রমজানের ওই রোজার শেষে এলো খুশির ঈদ’ একবারও শুনলাম না।

আজ ঈদের দ্বিতীয় দিন। দুপুর ছুইছুই। এ পযর্ন্ত একটি বারের জন্যও এ গানটি শোনা হলো না আমার। এ না শোনাটা আমার সীমাবদ্ধতা না অযোগ্যতা আমার জানা নেই। না বর্তমান হাল হাকিকত (সভ্যতা) সম্পর্কে আমার মূখ্যতা! এ কোন সভ্যতারে বাবা ঈদের দিনের মত অনুষ্ঠানে রক! হিন্দি! নাম গন্ধ নেই ঈদের গানের!

এ কোন সভ্য সমাজে বাস করছি আমরা। যে সভ্যতা আমাদের ইতিহাস ঐতিহ্যকে ভুলে পাশ্চাত্য সংস্কৃতি লালন করতে উদ্বুদ্ধ করছে। যে সভ্যতা দেশীয় সংস্কৃতির পরিবর্তে ডিজুস সংস্কৃতি চালু করছে। আমরা কোথায় যাচ্ছি, কোথায় গিয়ে ঠেকবে আমাদের জাতীসত্ত্বা। আমরাকি ক্রমশ অতল তলে তলিয়ে যাচ্ছি?

২টি মন্তব্য ০টি উত্তর

১. ২৫ শে আগস্ট, ২০১২ সকাল ১১:২০

ময়নামতি বলেছেন: এ গানটি এখন উপেক্ষিত , বিভিন্ন পদ্ধতিতে কাজী নজরুলকে অবজ্ঞা করার জন্যই মনে হয় এমনটি করা হচেছ।



তাছাড়া এই গানটির মূল কনসেট পরিবর্তন করা হয়েছে। বিক্রিত করে উপস্থাপন করার জন্য । এই গানের আগে এখন মমতাজের গান বাজানো হয়।

২. ২৫ শে আগস্ট, ২০১২ সকাল ১১:৪৫

রাশেদুল হাসান বলেছেন: তাহলে কি আমরা মূল থেকে দূরে সরে যাচ্ছি? আমাদের নিজস্বতা, মূল্যবোধ বিকিয়ে কতটা বাঙগালি জাতীয়তাবাদ কিংবা বাঙগালি ঐতিহ্য টিকিয়ে রাখতে পারবো?

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

পুলিশ হত্যার বিচার চাই।

লিখেছেন রাবব১৯৭১, ১৩ ই মে, ২০২৫ বিকাল ৫:৫১

সব হত্যার বিচার চাওয়ার অধিকার সবার আছে, কিন্তু পুলিশের হত্যার বিচার চাওয়ার অধিকার নেই! পুলিশ কি মানুষ নয়? তারা কি কোনো মায়ের সন্তান নয়? তারা কি কোনো সন্তানের বাবা নয়?... ...বাকিটুকু পড়ুন

শিল্পী মমতাজ কিভাবে দশমাস আত্নগোপনে ছিলেন ?

লিখেছেন সৈয়দ কুতুব, ১৩ ই মে, ২০২৫ রাত ৮:৩৩


'ফাইট্যা যায় বুকটা ফাইট্যা যায়' খ্যাত সংগীত শিল্পী গতকাল রাতে পুলিশের হাতে আটক হয়েছেন। শিল্পী মমতাজ ফোক সংগীতের জন্য গ্রামে গঞ্জে বেশ নাম করেছিলেন। শিল্পী মমতাজ কে সবাই চিনে মূলত... ...বাকিটুকু পড়ুন

নৌকা ডুবার পর আওয়ামী সমর্থকরা গামছা পরে শরম ঢাকবে কি?

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ১৩ ই মে, ২০২৫ রাত ৯:৩৯



ছাত্র-জনতার তাড়া খেয়ে আওয়ামী লীগ পালিয়ে গেলে ছাত্র-জনতা তাদের সখের নৌকাখানা ডুবিয়ে দেয়। জলে ভিজে উঠে শরম ঢাকতে এখন তাদের গামছা প্রয়োজন।বঙ্গবন্ধুর আদর্শের সন্তান বঙ্গবীর কাদের সিদ্দিকী... ...বাকিটুকু পড়ুন

জাতির নাতির আমেরিকার নাগরিকত্ব গ্রহন

লিখেছেন ধূসর সন্ধ্যা, ১৩ ই মে, ২০২৫ রাত ১০:৫১



কয়েকদিন আগে বাংলাদেশী পাসপোর্ট নিয়ে গর্ব করা সজিব জয় এখন মার্কিন নাগরিক। সারাদিন আমেরিকাকে গালি দিয়ে এখন সে হয়েছে আমেরিকার নাগরিক। ভন্ডামির সীমা কোথায়!

খবর থেকে - শনিবার যুক্তরাষ্ট্রের... ...বাকিটুকু পড়ুন

ভারতের নেতৃত্ব কী কাঁঠালপাতা খাচ্ছে?

লিখেছেন সৈয়দ মশিউর রহমান, ১৪ ই মে, ২০২৫ দুপুর ১:০৩



ভারতের এই কাঁঠালপাতা খেকো নেতৃত্ব তাদের দেশের ভিতর মুসলিম নির্যাতন, ওয়াকফ বিল অথবা অন্যকোন অপকর্মের কথা বললেই বলে এটা তাদের অভ্যন্তরীন বিষয় অথচ এরা প্রতিনিয়তই বাংলাদেশের অভ্যান্তরীন বিষয় নিয়ে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×