দেশে শীতের তীব্রতা আরো বেড়েছে। তীব্র শীতে সারাদেশে জনজীবন বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে। আজ সৈয়দপুরে সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস রেকর্ড করা হয়েছে। বুধবার দিনাজপুরে সর্বনিম্ন ৩ দশমিক ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়। তবে রাজধানীতে তাপমাত্রা কিছুটা বেড়েছে। শীতজনিত রোগে গত ২৪ ঘণ্টায় সারাদেশে ৪৬ জনের মৃত্যু হয়েছে।
রাজধানীতে বুধাবর তাপমাত্রা ছিল পাঁচ দশকের ইতিহাসে সর্বনিম্ন ৭ দশমিক ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস। বৃহস্পতিবার সকালে ঢাকায় সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয় ৯ দশমিক ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস। আবহাওয়ার চরম এই বৈরী অবস্থার জন্য বৈশ্বিক উষ্ণতার প্রভাবকেই দায়ী করছেন বিশেষজ্ঞরা। সারাদেশেই এখন বইছে তীব্র শৈত্যপ্রবাহ। আবহাওয়া অফিসের এক কর্মকর্তা জানান, তাপমাত্রা নেমে যাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে হিমালয় ছুঁয়ে আসা ঘণ্টায় প্রায় ৫ কিলোমিটার গতির পশ্চিমা হিমবায়ু দেশের উত্তরাঞ্চলের ওপর দিয়ে বয়ে যাচ্ছে।
বুধবার বিবিসির খবরে বলা হয়, সর্বনিম্ন তাপমাত্রা যদি বিবেচনায় নেওয়া হয়, তাহলে বাংলাদেশের কোনো কোনো অঞ্চলে এখন লন্ডনের চেয়েও বেশি শীত পড়ছে। আবহাওয়া অফিস সূত্র জানায়, কেবল জানুয়ারি মাস বিবেচনায় গতকালের দিনাজপুরের তাপমাত্রা গত ৫৭ বছরের ইতিহাসে সর্বনিম্ন। এর আগে এই জেলায় ১৯৫৫ সালে রেকর্ড করা হয়েছিল ৩ দশমিক ৯ ডিগ্রি সেলসিয়াস। তবে ১৯৬৮ সালে শ্রীমঙ্গলে ২ দশমিক ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছিল, যা এ যাবত্কালে বাংলাদেশের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা।
৮ থেকে ১৪ জানুয়ারি পর্যন্ত দেওয়া আবহাওয়ার পূর্বাভাসে বলা হয়, এ সময়ে রাতের তাপমাত্রা সাড়ে ৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস পর্যন্ত হ্রাস পেতে পারে।
আবহাওয়াবিদরা জানিয়েছেন, কমপক্ষে আরো পাঁচদিন থাকতে পারে শীতের এ দাপট। তাপমাত্রার আরো পতন আর বিভাগীয় শহরের মধ্যে বৃহস্পতিবার চট্টগ্রামে সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড হয়েছে ১১ দশমিক ৪, রাজশাহীতে ৮ দশমিক ৬, খুলনায় ৯ দশমিক ৭, বরিশালে ১১, সিলেটে ৬ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস।
মাত্র দু’সপ্তাহের ব্যবধানে সারাদেশে আবারো শৈতপ্রবাহ বইছে। তবে ডিসেম্বরের শেষদিকে বয়ে যাওয়া শৈতপ্রবাহের চেয়ে এবার শীতের তীব্রতা অনেক বেশি। হাড়কাঁপানো শীতের তীব্রতায় জনজীবন বিপর্যস্ত। দেশের উত্তর ও উত্তর-পূর্বাঞ্চলের মানুষেরা পড়েছেন চরম দুর্ভোগে। রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে ছিন্নমূল মানুষেরা অতি কষ্টে দিন কাটাচ্ছেন। কোথাও সারাদিনে সূর্যের মুখ দেখা যাচ্ছে না। অনেকেই খড়কুটোতে আগুন ধরিয়ে একটু উঞ্চতা লাভের চেষ্টা করছেন।
শীত বাড়ায় বেড়েছে শীতজনিত রোগের প্রাদুর্ভাব। ফলে হাসপাতালগুলোতে বেড়েছে রোগীর সংখ্যা। গত ২৪ ঘণ্টায় শীতজনিত রোগে কমপক্ষে ৪৬ জনের মৃত্যু হয়েছে বলে খবর পাওয়া গেছে। এছাড়া তীব্র শীতে কুড়িগ্রাম, দিনাজপুর, পঞ্চগড়, শেরপুর, গোপালগঞ্জসহ দেশের বিভিন্ন এলাকায় জনজীবনে স্থবিরতা নেমে এসেছে। কষ্টে আছেন নিম্ন আয়ের মানুষ।
এমাসে আরো এক থেকে দুটি শৈত্যপ্রবাহ বয়ে যেতে পারে বলে পূর্বাভাস দিয়েছে আবহাওয়া অধিদফতর। এসব শৈত্যপ্রবাহ দেশের উত্তর, উত্তর-পশ্চিমাঞ্চল, উত্তর-পূর্বাঞ্চল ও মধ্যাঞ্চলে বয়ে যেতে পারে। তাপমাত্রা থাকতে পারে ৮ থেকে ১০ ডিগ্রি সেলসিয়াসে। [সূত্র : natunbarta.com]
সর্বশেষ এডিট : ১০ ই জানুয়ারি, ২০১৩ বিকাল ৪:৫২