আজ তিন দিন ধরে মুষলধারে বৃষ্টি পড়ছে। প্রচন্ড জ্বরের মধ্যে হিসাব ঠিকি আছে। হ্যাঁ তিন দিনই হবে, গত বুধবার বাইরে থেকে আসার পর প্রচন্ড ক্লান্ত থাকার কারনে দরজা-জানালা না লাগিয়েই ঘুমিয়ে পড়লাম, সেদিন রাতেই তো বৃষ্টি শুরু হলো। জানালা দিয়ে বৃষ্টির ছিটে ফোটা আসছে ভালই লাগছে শাহেদের।
বৃষ্টি হলেই শাহেদ খিচুড়ি রান্না করে, এখন জ্বর বলে রান্নার শক্তি নেই একেবারে। একবার রাতে এরকম বৃষ্টি শুরু হলো শাহেদ খিচুড়ি রান্না করলো। খিচুড়ি বেড়ে খেতে বসবে ঠিক তখনি শাহেদের বাড়িওয়ালা রহমত সাহেব এসে হাজির।
- কি হে শাহেদ সাহেব খিচুড়ি রান্না করেছেন বুঝি?
- হ্যাঁ বৃষ্টি হচ্ছে তো তাই ইচ্ছে করলো খেতে। আসেন বসেন।
শাহেদ একটা প্লেট নিয়ে তার প্লেট থেকে অর্ধেক খিচুড়ি নিয়ে রহমত সাহেবের দিকে এগিয়ে দিল। - একি করলেন আপনার প্লেট থেকে দিলেন।
- হাঁড়িতে আর নেই বলে হাসলো শাহেদ।
- আমাকে একটু দিলেই হবে, বলে প্লেট থেকে কিছু অংশ শাহেদকে দিয়ে খেতে শুরু করলেন।
এই হলো রহমত সাহেব। বাড়িওয়ালা হিসেবে তিনি খুব অমায়িক। শাহেদ এই চিলেকোঠায় আজ দু বছর হলো ভাড়া আছে। এখনকার সময়ে এরকম বাড়িওয়ালা দেখাই যায় না। কেন জানি তিনি শাহেদকে খুব স্নেহ করেন। ঐ রাতের পর থেকে বৃষ্টি হলেই প্লেট ভর্তি খিচুড়ি নিয়ে হাজির হতেন সাথে থাকতো ডিম ভাজি। রহমত সাহেব জরুরী কাজে গ্রামের বাড়িতে গিয়েছেন এখনো হয়তো আসেন নি আসলে তো অবশ্যই একবার ঢু দিতেন।
খুব পানির তেষ্টা পেয়েছে। ঐ তো টেবিলের উপরে পানির জগ আর গ্লাস উফ গায়ে এতটুকুও বল নেই যে সে পযর্ন্ত যাবো। আর একটু ঘুমিয়ে নি।
আরে ঐ তো রহমত সাহেবকে দেখা যাচ্ছে আমার রুমের দিকেই আসছে।
- কবে আসলেন গ্রামের বাড়ি থেকে? রহমত সাহেব কোন উত্তর দিল না। একি উনি কোন কথা না বলে আমার দিকে এমন করে তাকিয়ে আছে কেন? মহে হয় রহমত সাহেব শুনতে পায়নি।
শাহেদ গলার জোর একটু বাড়িয়ে বললো, রহমত সাহেব কবে আসলেন গ্রামের বাড়ি থেকে? এবারও রহমত সাহেব কোন উত্তর দিল না। কাছে এতে শাহেদের উপর ঝুকে কিছুক্ষন দেখলো গায়ে কপালে হাত দিল।
- জ্বর মনে হয় এখন নেই তাই না রহমত সাহেব? এখন বেশ ফুরফুরা লাগছে।
রহমত সাহেব শাহেদের গায়ের চাদরটা টেনে ঢেকে দিয়ে বললেন ইন্না লিল্লাহি ওয়া......।