আজকাল নীলের সাথে তিথির তেমন কথা হয় না। দু'জন একি বিছানায় পাশাপাশি শুয়ে থাকে কিন্তু তাদের মধ্যে আগের মতো সম্পর্ক নেই। তিথি বুঝে উঠতে পারে না কবে থেকে তাদের সম্পর্কের মধ্যে এরকম দুরত্ব সৃষ্টি হলো। অনেক ভেবেছে তিথি নাহ মনে পড়ছে না কিছুতেই। এই তো কদিন আগেও শত ব্যস্ততার মধ্যেও তাকে ফোন দিতে ভুলতো না, আর এখন দিনে একবারও ফোন দেয় না। আচ্ছা ওর কি কারো সাথে সম্পর্ক আছে? যে নীল তিথির জন্য পাগল ছিল, এক সিদ্ধান্তে তারা বিয়ে করলো নাহ আর ভাবতে পারছে না তিথি। ছেলেটা বড় হচ্ছে সেদিকেও আজকাল নীলের কোন খেয়াল নেই। সব দায়িত্ব কি তিথির একার? ১২ টা বাজে এখনো নীল বাসায় এলো না। আগে ৯ টার মধ্যে বাসায় এসে পড়তো আর এখন ১১/১২ টা বাজায়।
কলিং বেল বেজে ওঠে, বুয়া দরজা খুলে দিল। নীল ঘরে প্রবেশ করে তিথির দিকে না তাকিয়ে,
এখনো জেগে আছো য়ে ঘুমাও নি? বলেই ডাইনিং রূমে চলে গেল তিথির উত্তরের জন্য অপেক্ষা না করেই। তিথিও কিছু বললো না। চোখ বন্ধ করে ঘুমানোর চেষ্টা করলো।
হঠাৎ ঘুম ভেঙ্গে গেল তিথির, খুব পানির পিপাসা পেয়েছে। বিছানা ছেড়ে উঠলো বাতি জ্বালালো না জানালা দিয়ে চাঁদের আলো আসছে তাতেই সব কিছু দেখা যাচ্ছে। ডাইনিং এ এসে ফ্রীজের দরজা খুললো, পানির বোতল এ হাত দিতে যাবে হঠাৎ চোখ পড়লো রান্না ঘরের দিকে ফ্রীজের আলোয় স্পষ্ট দেখতে পাচ্ছে তার ১৫ বছর বয়সী ছেলেটা বুয়ার উপর শুয়ে আছে। তিথি সাথে সাথে ফ্রীজের দরজা বন্ধ করে ঘরে চলে আসে।
সারারাত তিথি ঘুমাতে পারে নি। ঘুমাবে কি করে যা দেখলো সেটা দেখার পর কি কারো ঘুম আসে! সকালে নীলকে বললো তোমার সাথে খুব জরুরী কথা আছে। নীল রেডি হতে হতে বললো, বলো শুনছি। তারপর রাতের কথা বলতেই নীল বললো, এটা কোন ব্যাপার না এই বয়সের ছেলেরা এমন একটু আকটু করেই থাকে। তিথি বুঝতে পারছে না এরপর ওর কি বলা উচিত? নীল তার স্বামী তার ছেলের বাবা, যার সাথে আজ ১৬বছর ঘর করছে সে কি না এই কথা বলছে! প্রচন্ড ঘৃনায় মুখ ফিরিয়ে নেয় তিথি। তিথি ভাবতেই পারছে না এই ছেলেকে সে পেটে ধরেছিল। খুব কষ্ট হচ্ছে তিথির, চেনা জগৎটা হঠাৎ খুব অচেনা মনে হচ্ছে তার।
** সত্য ঘটনা অবলম্বনে লিখা (নামগুলি কাল্পনিক), অনেক বছর আগে পড়েছিলাম। তখন পড়ে অবাক হয়নি আমি কারন এরকম ঘটনা কয়েকটা পড়েছিলাম । আজকে মনে হচ্ছে এরকম ঘটনা এখন আর কোন ব্যাপার না অহরহই ঘটছে আমাদের সমাজে।**