somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

দ্য অরিজিনস অফ পলিটিক্যাল জোকস

২৮ শে মার্চ, ২০২৪ রাত ১১:১৯
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :


রাজনৈতিক আলোচনা - এমন কিছু যা অনেকেই আন্তরিকভাবে ঘৃণা করেন বা এবং কিছু মানুষ এই ব্যাপারে একেবারেই উদাসীন। ধর্ম, যৌন, পড়াশুনা, যুদ্ধ, রোগ বালাই, বাজার দর থেকে শুরু করে রাস্তার কুকুরের হাল হকিকত নিয়েও অনেকে বেশ সিরিয়াস দেখা যায় কিন্তু রাজনৈতিক আলোচনা শুরু করতে চাইলেই বলেন ‘ভাই প্লিজ নো পলিটিক্স’ যে কোন পার্টিতে এইটা সবচেয়ে বড় নো-নো বিষয়। তবুও, নৈমিত্তিক আলোচনার সময় এমন একটি গুরুত্বহীন বিষয় হওয়া সত্ত্বেও, এটি কিন্তু তামাশার জন্য এক নম্বর খোরাক। রাজনৈতিক বিদ্রুপ এই শ্লেষাত্মক কৌতুকগুলো আড্ডায় বা আলোচনায় অন্যরকম এক মশলা দেয়।কৌতুকের ব্যঙ্গাত্মক অংশটুকু কাউকে (এই ক্ষেত্রে একজন রাজনীতিবিদ) বা কিছু (রাজনৈতিক ঘটনা) শ্রোতাদের চরম হাসির খোরাক জোগায়- এবং অনেকেই তাঁর সমর্থনকারী নেতা ও পার্টি নিয়ে বিব্রতবোধ করেন যা অপরিপক্কের জন্য বেশ আনন্দদায়ক হয়।
আপনি এটা সত্য বলে মেনে নিতে পারেন কিংবা নাও পারেন, কিন্তু প্রথম রাজনৈতিক শ্লেষাত্মক কৌতুক নিয়ে যতদুর জানা যায় জারদের শাসনামলের পরে ফের স্তালিনের নৃশ্বংস একনায়কত্বের অধীনে সোভিয়েত ইউনিয়নে ‘ইতিহাসের রাজনৈতিক রসিকতা’ হিসাবে ফিরে আসে। যতদুর জানা যায় ‘বরিস ওরম্যান’ নামে একজন ব্যক্তি যিনি একটি বেকারিতে কাজ করতেন। ১৯৩৭ সালের মাঝামাঝি সময়ে তিনি তাঁর বেকারির ক্যাফেটেরিয়াতে একজন সহকর্মীর সাথে রাজনৈতিক কৌতুক শেয়ার করেছিলেন।কৌতুকটি তিনি নাকি বেশ উচ্চস্বরে বলেছিলেন এবং এই নিয়ে দুজনে বেশ হাসাহাসি করেছিলেন। এই কারনেই তাকে ইতিহাসে প্রথমবারের মত রাজনৈতিক কৌতুক বলার অপরাধে ১০ বছরের কারাদন্ড দেয়া হয়েছিল। যাইহোক, পরবর্তীতে সোভিয়েত জীবনে নাগরিকদের বাকস্বাধীনতা খর্ব করা হলেও নানা উপায়ে রাজনৈতিক শ্লেষাত্মক জোকস কোন না কোন উপায়ে সারা দেশময় ছড়িয়ে পড়তে থাকে। পারিবারিক গল্পের টেবিলের চারপাশে নিচুস্বরে সেই কৌতুক মানুষকে দিয়েছিল বদ্ধঘরে মুক্তির স্বাদ নেবার অপার শান্তি!
১৯৮০-এর দশকে, এমনকি মার্কিন প্রেসিডেন্ট রোনাল্ড রিগানও পুরনো সোভিয়েত রাজনৈতিক রসিকতাকে হোয়াইট হাউস থেকে দূরে রাখতে পারেন নি। তিনি এসব এত পছন্দ করতেন যে, জানা যায় ওভাল অফিসে একটি কক্ষে গোপন দেরাজে লুকিয়ে রাখা বিশেষ কোডে লেখা সোভিয়েত রাজনৈতিক কৌতুকের সংগ্রহ ছিল।
*************
ক জজ এজলাস থেকে বেরিয়ে খাস কামরায় এসে হাসির দমকে ফেটে পড়লেন। পাশের কামরা থেকে তাঁর এক সহকর্মী তাকে এভাবে হাসতে দেখে অবাক হয়ে জিজ্ঞেস করল, কি ব্যাপার তুমি এমন করে হাসছ কেন?
জজের হাসতে চোখের পানি বের হয়ে গেছে। পেট চেপে ধরে তিনি কোন রকমে বললেন, এইমাত্র আদালত থেকে আমি দুর্দান্ত একটা জোকস শুনে আসলাম। কোন মতেই হাসি ঠেকিয়ে রাখতে পারছি না।
সহকর্মী জজ উদগ্রীব হয়ে বললেন, কি এমন জোকস শুনলে ভায়া আমাকে বল না?
- তোমার কি মাথা খারাপ। কিছুক্ষন আগেই এই জোকস বলার দায়ে আসামীকে ১৫ বছরের সশ্রম কারাদন্ড দিয়ে আসলাম।
***

যারা আপনার সাথে তাদের ধর্মীয় বা রাজনৈতিক আলোচনা করতে চায় তারা প্রায় কখনই চায় না যে আপনি তাদের সাথে আপনার নিজস্ব মতামত শেয়ার করেন।
***
গরম বাতাসের বেলুনে থাকা একজন মহিলা দিক্ হারিয়ে ফেলেছেন, তাই সে নীচের রাস্তায় দাঁড়িয়ে থাকা একজন পুরুষকে চিৎকার করে বললেন, "মাফ করবেন। আমি একজন বন্ধুকে প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলাম যে আমি তার সাথে দেখা করব, কিন্তু আমি জানি না আমি কোথায় আছি।
"আপনি ৩১ ডিগ্রি, ১৪.৫৭ মিনিট উত্তর অক্ষাংশে এবং ১০০ ডিগ্রি, ৪৯.৯ মিনিট পশ্চিম দ্রাঘিমাংশে আছেন," ভদ্রলোক উত্তর দিলেন।
"আপনি অবশ্যই ডেমোক্র্যাট?"
"জ্বী। তা আপনি কিভাবে জানলেন?"
“কারণ আপনি আমাকে যা বলেছেন তা প্রযুক্তিগতভাবে সঠিক, কিন্তু তথ্যটি অকেজো আমি এখনও আমার সঠিক অবস্থান বুঝতে পারছি না। সত্যি বলতে, আপনি আমাকে খুব বেশি সাহায্য করেননি।
"আপনাকে অবশ্যই রিপাবলিকান?"
"হ্যাঁ আপনি জানলেন কি করে?"
বেশি গরম বাতাসের জন্য আপনি অনেক উপরে উঠে গেছেন।আপনি এমন একটা প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন যা এ অবস্থাতে রাখতে পারবেন না তারপরেও আপনি আশা করেন আমি এ অবস্থাতে আপনাকে সাহায্য করব। আপনি এখনো ঠিক সেই এই অবস্থানেই আছেন যেটা আমার সাথে আলোচনার আগেও ছিলেন। তারপরেও দোষটা আমার ঘাড়েই চাপাচ্ছেন।
আমেরিকা এমন একটি দেশ যা এমন নাগরিক তৈরি করে যারা গণতন্ত্রের জন্য লড়াই করতে সাগর পাড়ি দেবে কিন্তু ভোট দেওয়ার জন্য রাস্তা পার হবে না।
***
রাজনৈতিক কৌতুক করার কি কারণ হতে পারে?
আমরা ব্যক্তিগতভাবে পরিচিত না এমন কারো বিরুদ্ধে বিভিন্ন কারণে জমে থাকা তিক্ততা প্রকাশ করা। রাজনীতিবিদদের রসিকতা তাদের সিদ্ধান্ত এবং বক্তৃতার সাথে আমাদের মতানৈক্য দেখানোর একটি মজার উপায়।আমরা চাই রাজনৈতিক ব্যক্তিরা আমাদের কাতারে থাকুক, তারা আমাদের মত অনাড়ম্বরপূর্ণ জীবনযাপন করুক। কিন্তু বাস্তবে বেশিরভাগই ঘটে উল্টোটা! আমাদের ক্ষোভটা তখন উগড়ে যায় শ্লেষাত্মক কৌতুক হিসেবে – এটাই এক ধরনের অক্ষম নাগরিকদের অস্ত্র হয় তখন।

***
ছেলেঃ বাবা, আমি বড় হয়ে রাজনীতিবীদ হতে চাই।
বাবাঃ তুমি কি পাগল? তুমি কি বোকা? তুমি কি অপদার্থ??
ছেলেঃ থাক বাদ দাও। রাজনীতিবিদ হবার জন্য অনেক কিছুর প্রয়োজন মনে হচ্ছে!!
***
রাজনীতি হল; সমস্যাগুলি সন্ধান করা, তাদের খুঁজে বের করা, তাদের ভুল নির্ণয় করা এবং তারপরে ভুল প্রতিকার (চিকিৎসা) প্রয়োগ করা।

যে রাজনীতিবিদ সুদীর্ঘ সময় ধরে এমনটা চলমান রাখতে পারবেন তিনিই হবেন ইতিহাসের মহান নেতা।

***
"ওসামা এখনও বেঁচে আছে কিনা আমরা জানি না" এমন অসংখ্য আলোচনার পরে ওসামা বিন লাদেন নিজেই টেড কেনেডিকে তার নিজের হাতে লেখা একটি চিঠি পাঠানোর সিদ্ধান্ত নেন যাতে তিনি জানান যে, তিনি এখনও খেলায় আছেন।
কেনেডি চিঠিটি খুললেন যেটিতে কোডেড বার্তার একটি মাত্র লাইন, 370HSSV-0773H মাত্র লেখা আছে। কেনেডি চরম বিস্মিত হয়েছিলেন।
কোডের মাথামুণ্ডু কিছু বুঝতে না পেরে তিনি হাতে ধরে ছবি তুলে এটি জন কেরিকে ই-মেইল করেছিলেন।
কেরি এবং তার সহযোগীরাও কোনো ক্লু খুঁজে পাচ্ছিল না, তাই তারা এটি এফবিআই-এর কাছে পাঠিয়ে দিল। এফবিআই-তে কেউ এটি সমাধান করতে পারেনি, তাই এটি সিআইএ, তারপর এনএসএ-তে গেল। এর অর্থ সম্পর্কে কোন ধারণা না থাকায়, এফবিআই অবশেষে মেরিন কর্পস ইন্টেলিজেন্সকে সাহায্যের জন্য জিজ্ঞাসা করল।
কয়েক সেকেন্ডের মধ্যে 'মেরিন কর্পস' এই উত্তর দিয়ে ফেরত পাঠাল, "কেনেডিকে বলুন তিনি বার্তাটি উল্টো ধরে রেখেছেন।"

রাজনীতিবিদরা এমন লোক যারা সুড়ঙ্গের শেষে আলো দেখতে পেলেই আরো কিছু সুরঙ্গ খোড়ার পরিকল্পনা শুরু করে দেয়!

***
রাজনৈতিক বিষয়ক আলোচনাটা কি বিরক্তিকর আর একঘেয়ে ছিল? তাহলে শেষমেশ আসেন একটা রাশিয়ান কৌতুক শুনি;

একজন লোক পরপর চারটে বিয়ে করেন- কিন্তু রহস্যজনকভাবে সবার মৃত্য হয় । অফিসের এক সহকর্মী তাকে জিজ্ঞেস করলেন, “আপনার প্রথম স্ত্রী মারা গেলেন কিভাবে?
"মাশরুমের বিষক্রিয়ায়।"
"আর দ্বিতীয় স্ত্রী?"
"মাশরুমের বিষক্রিয়ায়।"
"আর তৃতীয়টি?"
"মাশরুমের বিষক্রিয়ায়।"
"আর চতুর্থ?"
"মাথায় আঘাত পেয়ে।"
"???"
"মাশরুম খেতে চায়নি।"

***শুভরাত্রি***
সর্বশেষ এডিট : ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ রাত ১১:১৯
১৯টি মন্তব্য ১৮টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

সবুজের মাঝে বড় হলেন, বাচ্চার জন্যে সবুজ রাখবেন না?

লিখেছেন অপলক , ২৬ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ৯:১৮

যাদের বয়স ৩০এর বেশি, তারা যতনা সবুজ গাছপালা দেখেছে শৈশবে, তার ৫ বছরের কম বয়সী শিশুও ১০% সবুজ দেখেনা। এটা বাংলাদেশের বর্তমান অবস্থা।



নব্বয়ের দশকে দেশের বনভূমি ছিল ১৬... ...বাকিটুকু পড়ুন

আইডেন্টিটি ক্রাইসিসে লীগ আইডেন্টিটি ক্রাইসিসে জামাত

লিখেছেন আরেফিন৩৩৬, ২৬ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ৯:৪৬


বাংলাদেশে রাজনৈতিক ছদ্মবেশের প্রথম কারিগর জামাত-শিবির। নিরাপত্তার অজুহাতে উনারা এটি করে থাকেন। আইনী কোন বাঁধা নেই এতে,তবে নৈতিক ব্যাপারটা তো অবশ্যই থাকে, রাজনৈতিক সংহিতার কারণেই এটি বেশি হয়ে থাকে। বাংলাদেশে... ...বাকিটুকু পড়ুন

বাঙ্গালির আরব হওয়ার প্রাণান্ত চেষ্টা!

লিখেছেন কাল্পনিক সত্ত্বা, ২৬ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১১:১০



কিছুদিন আগে এক হুজুরকে বলতে শুনলাম ২০৪০ সালের মধ্যে বাংলাদেশকে নাকি তারা আমূল বদলে ফেলবেন। প্রধানমন্ত্রী হতে হলে সূরা ফাতেহার তরজমা করতে জানতে হবে,থানার ওসি হতে হলে জানতে হবে... ...বাকিটুকু পড়ুন

সেকালের পাঠকপ্রিয় রম্য গল্প "অদ্ভূত চা খোর" প্রসঙ্গে

লিখেছেন নতুন নকিব, ২৬ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১১:৪৩

সেকালের পাঠকপ্রিয় রম্য গল্প "অদ্ভূত চা খোর" প্রসঙ্গে

চা বাগানের ছবি কৃতজ্ঞতা: http://www.peakpx.com এর প্রতি।

আমাদের সময় একাডেমিক পড়াশোনার একটা আলাদা বৈশিষ্ট্য ছিল। চয়নিকা বইয়ের গল্পগুলো বেশ আনন্দদায়ক ছিল। যেমন, চাষীর... ...বাকিটুকু পড়ুন

অবিশ্বাসের কি প্রমাণ আছে?

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ২৬ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:৩১



এক অবিশ্বাসী বলল, বিশ্বাসের প্রমাণ নাই, বিজ্ঞানের প্রমাণ আছে।কিন্তু অবিশ্বাসের প্রমাণ আছে কি? যদি অবিশ্বাসের প্রমাণ না থাকে তাহলে বিজ্ঞানের প্রমাণ থেকে অবিশ্বাসীর লাভ কি? এক স্যার... ...বাকিটুকু পড়ুন

×