somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

আপনি কি পথখাবার খান? তাহলে এই লেখাটি আপনার জন্য

২২ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ১০:৩৪
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

আগে যখন মাঝে মাঝে বিকেল-সন্ধ্যায় বন্ধুদের সঙ্গে আড্ডা দিতাম, তখন খাবার নিয়ে আমার জন্য ওরা বেশ বিড়ম্বনায় পড়ত। আমি পথখাবার খাই না। ফলে সোরওয়ার্দী উদ্যানে আড্ডা দিতে দিতে ক্ষিধে পেলে যেতে হতো মধুর ক্যান্টিন কিংবা শাহবাগের কোনো রেস্তোরায়। এটা নিয়ে বন্ধুরা আমাকে খোঁচাত, বলত আমার নাকি বেশি শুচিবাই। ওরা মাঝে-মধ্যে খেত রাস্তার খাবার আর আমাকে নিয়ে হাসি-ঠাট্টা করত। এরপর ২০১৫ সালে আইসিডিডিআরবির এক গবেষণায় জানা গেল যে ঢাকার ৫৫ শতাংশ পথখাবারে নানা ধরনের জীবাণু রয়েছে। ৮৮ শতাংশ বিক্রেতাদের হাতে জীবাণু পাওয়া গেছে।

যারা রাস্তায় খাবার বিক্রি করেন, তাদের হাতে জীবাণু থাকা খুবই স্বাভাবিক। এদের কেউ কেউ সকাল থেকে রাত পর্যন্ত রাস্তাতেই থাকেন। অনেকে দুপুরের পর থেকে খাবার বিক্রি করেন। এই যে এরা দিনের একটা দীর্ঘ সময় রাস্তায় থাকেন, এই সময়ে এদেরকে বেশ কয়েকবার প্রসাব করতে হয়, কারো কারো পায়খানাও করতে হয়। এই কাজগুলো এরা কোথায় সারেন? পায়খানা করেন আশপাশের কোনো শপিং মলের টয়লেটে। কেউ কেউ এইসব টয়লেটে প্রসাব করলেও অনেকেই আশপাশের অপেক্ষাকৃত নির্জন রাস্তাতেও করেন। ফলে এইসব খাদ্য বিক্রেতাদের সাবান দিয়ে হাত ধোয়ার কোনো উপায় থাকে না। সঙ্গত কারণেই তাদের হাতে জীবাণু থাকে, আর সেই হাতেই তারা তৈরি করেন সুস্বাদু সব খাবার, যা শহরের অনেক শিক্ষিত মানুষও চেটেপুটে খায়! কী খায়? পশ্চাৎদেশের জীবাণু! শীত-গ্রীষ্ম বারোমাসই এই ধরনের জীবাণু পথখাবারকে সমৃদ্ধ করে!

আমি একটু আগে বাইরে গিয়েছিলাম, দেখলাম চিয়া সিড দেওয়া কমলা রঙের শরবতের দোকানে লোকের ভিড়। গরমে অতিষ্ট হয়ে গোগ্রাসে গিলছে অনেকে। এই গরমে আপনি উপরোক্ত ওই জীবাণু ছাড়াও বাড়তি কিছু জীবাণুও পাবেন এই শরবত কিংবা আখ পিষে বানানো শরবতে। অন্যান্য সব ধরনের পথখাবারেই পাবেন এই উষ্ণকালের বাড়তি জীবাণু। যে মানুষগুলো শরবত বানায় বা অন্যান্য খাবার বানায়, তাদের শরীর প্রচুর ঘামে। এরা একটু পর পর গামছা দিয়ে ঘাম মোছে, বার বার মুছতে মুছতে গামছা ভিজে যায়, হাত না ধুয়ে সেই হাতেই শরবত বা অন্যান্য খাবার বানায়। তাছাড়া বগল ঘেমে হাত বেয়ে শরবতে বাড়তি লবণ যুক্ত হওয়াও খুব স্বাভাবিক, নিঃসন্দেহে স্বাদ বাড়িয়ে দেয়!

এছাড়া গরমে কাজ করার সময় এরা শরীরের নানা জায়গায় চুলকায়, নিন্মাঙ্গও চুলকায়। সেই হাতেই তারা ফুচকা, চটপটি, ধোসা, শরবত ইত্যাদি বানায়! ঘাম গায়ে বসে অনেকের ঠান্ডা লাগে, নাক দিয়ে জল পড়ে, সর্দি পড়ে। পরনের লুঙ্গি কিংবা কাপড় দিয়েই তারা এগুলো মোছে। তারপর সেই হাত দিয়েই টিপে টিপে বানায় সুস্বাদু মোমো!

এর বাইরে পথখাবারে জীবাণু যুক্ত হয় রাস্তার ধুলো ও বাতাস থেকে। নভেম্বর থেকে মে মাসের মধ্যে ঢাকার বায়ুপ্রবাহের মধ্যে ব্যাকটেরিয়া ও ছত্রাকের স্ট্রেন পাওয়া গেছে, যা মিশে যায় উন্মুক্ত পথখাবারে। এছাড়া মানুষের হাঁচি-কাশির জীবাণুও থাকে পথখাবারে। মানুষের হাঁচি-কাশির মাধ্যমে বাইরে বের হওয়া জীবাণু বাতাসে ভেসে ১০ থেকে ১০০ মিটার পর্যন্ত দূরে যেতে পারে।

তো যারা বাইরের খাবার খাওয়া পছন্দ করেন, তাদের পক্ষে পশ্চাৎদেশের জীবাণু, নাকের জীবাণু কিংবা বগলের নোনা ঘামের স্বাদ থেকে বঞ্চিত হওয়া প্রায় অসম্ভব। তবে এই গরমে রেস্টুরেন্টের খাবারও খাওয়াও বাদ দেওয়া উচিত।

কমরেডরা হয়ত বলবে, আমি গরিবের পেটে লাথি মারছি। তা বলুক, যে দেশের গরিব সুশিক্ষিত মানুষের কথা না শুনে, পরিবার-পরিকল্পনার কর্মীদের কথা না শুনে ( অতীতে গরিবের হাতে পরিবার-পরিকল্পার কর্মীদের নিপীড়িত হবার ঘটনা অনেক ঘটেছে), অশিক্ষিত মাওলানাদের ওয়াজ শুনে আল্লায় খাওয়াবে বলে বিশ্বাস করে চার-পাঁচটা বাচ্চার জন্ম দেয়, জনবিস্ফোরণ ঘটিয়ে প্রকৃতির ভারসাম্য নষ্ট করে, বেকারত্বের সৃষ্টি করে, নিজেরা অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে থাকে ও অস্বাস্থ্যকর খাবার খায়, আর অস্বাস্থ্যকরভাবে তৈরি করা খাবার বিক্রি করে মানুষের স্বাস্থের ক্ষতি করে, আমি সেই দেশের গরিবের পেটে এভাবে লাথি মারতে চাই।




ঢাকা।
মে, ২০২৪

সর্বশেষ এডিট : ২৩ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১১:৫৮
৭টি মন্তব্য ৭টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

যুক্তরাষ্ট্রে ইসরাইল বিরোধী প্রতিবাদ বিক্ষোভ

লিখেছেন হাসান কালবৈশাখী, ০৩ রা মে, ২০২৪ সকাল ৮:০২

গাজায় হামাস উচ্ছেদ অতি সন্নিকটে হওয়ায় মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে নিউইয়র্ক ও লসএঞ্জেলসে কয়েকটি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে বিক্ষোভ ছড়িয়ে পরেছিল। আস্তে আস্তে নিউ ইয়র্ক ও অন্যান্ন ইউনিভার্সিটিতে বিক্ষোভকারীরা রীতিমত তাঁবু টানিয়ে সেখানে অবস্থান নিয়েছিল।


... ...বাকিটুকু পড়ুন

৫০১–এর মুক্তিতে অনেকেই আলহামদুলিল্লাহ বলছে…

লিখেছেন বিচার মানি তালগাছ আমার, ০৩ রা মে, ২০২৪ বিকাল ৩:০০



১. মামুনুল হক কোন সময় ৫০১-এ ধরা পড়েছিলেন? যে সময় অনেক মাদ্রাসা ছাত্র রাজনৈতিক হত্যাকান্ডের শিকার হয়েছিল। দেশ তখন উত্তাল। ঐ সময় তার মত পরিচিত একজন লোকের কীভাবে মাথায় আসলো... ...বাকিটুকু পড়ুন

মেহেদীর পরিবার সংক্রান্ত আপডেট

লিখেছেন ইফতেখার ভূইয়া, ০৩ রা মে, ২০২৪ রাত ৮:৪৯


মার্চ মাস থেকেই বিষয়টি নিয়ে ভাবছিলাম। ক'দিন আগেও খুলনায় যাওয়ার ইচ্ছের কথা জানিয়েও আমার বিগত লিখায় কিছু তথ্য চেয়েছিলাম। অনেক ইচ্ছে থাকা সত্ত্বেও মেহেদীর পরিবারকে দেখতে আমার খুলনা যাওয়া হয়ে... ...বাকিটুকু পড়ুন

'চুরি তো চুরি, আবার সিনাজুরি'

লিখেছেন এমজেডএফ, ০৩ রা মে, ২০২৪ রাত ১০:৪৮


নীলসাধুকে চকলেট বিতরণের দায়িত্ব দিয়ে প্রবাসী ব্লগার সোহানীর যে তিক্ত অভিজ্ঞতা হয়েছিল তা বিলম্বে হলেও আমরা জেনেছি। যাদেরকে চকলেট দেওয়ার কথা ছিল তাদের একজনকেও তিনি চকলেট দেননি। এমতাবস্থায় প্রায়... ...বাকিটুকু পড়ুন

বরাবর ব্লগ কর্তৃপক্ষ

লিখেছেন নীলসাধু, ০৩ রা মে, ২০২৪ রাত ১১:২২

আমি ব্লগে নিয়মিত নই।
মাঝে মাঝে আসি। নিজের লেখা পোষ্ট করি আবার চলে যাই।
মাঝেমাঝে সহ ব্লগারদের পোষ্টে মন্তব্য করি
তাদের লেখা পড়ি।
এই ব্লগের কয়েকজন ব্লগার নিজ নিক ও ফেইক... ...বাকিটুকু পড়ুন

×