somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

মেঘ-বৃষ্টির আলাপন - ১৫

২৫ শে ডিসেম্বর, ২০১০ রাত ১০:২১
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

: বৃষ্টি, আজ ইচ্ছে করছে গলা ছেড়ে গাই গান, গেয়ে বলি "তুমি সন্ধ্যার মেঘমালা, তুমি আমারি, তুমি আমারি"

ওকি! কি হল
: (আদ্র হাসি হেসে) নাহ কিছু না
: কিছু না বললেই হল, তোমার চোখ মুখই তো বলে দিচ্ছে। বলো আমাকে কি হয়েছে
: কিছু হয় নি, বললাম তো
: দেখো আকাশে কি চমৎকার একটা চাঁদ উঠেছে। কি সুন্দর জ্যোৎস্না বিলাচ্ছে রাতের পৃথিবীকে। দেখে মনে হয় না অভিসারিকা চাঁদ তার রূপের লণ্ঠন জ্বালিয়ে প্রেম করছে পৃথিবীর সাথে?
: হুম
: নাহ, নিশ্চই তোমার কিছু হয়েছে। খুলে দাও তোমার মনের দুয়ার। অবারিত হোক আজ হৃদয়-বারি। কি হয়েছে আমাকে বলো বৃষ্টি?
: আমার না খুব মন খারাপ
: মন খারাপ? বলো কে বকেছে

কে বকেছে, কে মেরেছে, কে দিয়েছে গাল
তাইতো বৃষ্টি রাগ করেছে, ভাত খায়নি কাল

: (হেসে) না কেও বকেনি
: তবে, কেও মেরেছে? বলো আমাকে এখুনি তাকে একটা শিক্ষা দিয়ে আসি
: থাক দিতে হবে না তোমাকে কাওকে শিক্ষা।
: তবে?
: তবে কি? পার তো দাও আমার মন ভালো করে
: কেন নয়। বলুন দেবী, কি করতে হবে
: এই! এইসব কি হচ্ছে, দেবী টেবী না। পারো তো কোথাও থেকে ঘুরিয়ে নিয়ে আসো
: এত রাত্রে!
: তো কি হয়েছে, নিয়ে যাবে কিনা বল?
: দেবী হুকুম করেছে আর মেঘ তা পালন করবো না! কক্ষণো না
: এই আবার!
: (হাঁটুতে গেড়ে বসে হাত বাড়িয়ে দিয়ে) উঠে পড়ো মেঘের ভেলায়
: মেঘের ভেলায়!
: হুম, মেঘে চড়িয়ে তোমাকে ঘুরিয়ে আনবো মেঘের রাজ্য থেকে
: (হেসে) বেশ তবে তাই হোক
: দাঁড়াও, তোমার মন খারাপের কারণটাকেও ভেলার পেছনে বেঁধে রাখি।

আচ্ছা এইবার শক্ত করে বসো। এইবার উড়াল দিবে মেঘের ভেলা

- (ভেলা উঠছে ধীরে ধীরে। স্বর্গ থেকে মৃদু কিন্তু মন আবেশ করে দেওয়া সুর ভেসে আসছে)

: ও কিসের শব্দ
: স্বর্গের কিণ্ণরীরা স্বর্গ থেকে সুর ঢালছে। বৃষ্টির মন ভালো করে দেওয়ার জন্য :)
: আরে বাহ্‌!
: জ্বি হ্যাঁ

- (আরেকটু সামনে গেলে গুড়ুম গুড়ুম শব্দ শুনে)

: কি হচ্ছে ওখানে
: গিয়েই দেখা যাক না

- (গিয়ে দেখা গেল বজ্রদেবতা দিগাঙ্গনাদের নিয়ে উত্তাল পাতাল নাচ শুরু করেছে)

: (হেসে) আর্‌রে এ যে আমারই নাচের মুদ্রা।
: :=) । (হাসিটা যেন বলে দিচ্ছে, বৃষ্টি এই সব তোমার মন ভালো করার জন্যই)
: (প্রতি-হাসি)

- (সেই নাচ দেখতে একসময় পূব-আকাশে সূর্য্যি দেবও উঁকি-ঝুঁকি মারা শুরু করলো)

- (মেঘের ভেলা আবার চলতে শুরু করলো। )

একসময় বহমান একটা নদীর পাড়ে এসে থামলো মেঘের ভেলা। গাছ গাছালিতে ভরা নদীর দু-পাড়।

: (মেঘ নেমে হাত বাড়িয়ে দিয়ে) ধীরে ধীরে নামো
: (হাত ধরে নামতে নামতে) এইখানে কেন
: তোমার মন খারাপের কারণকে বিসর্জন দিতে। (একটু থেমে) দেখো কি স্নিগ্ধ বাতাস। মনটা জুড়িয়ে যাচ্ছে না?
: হুম
: তুমি একটু নিভৃতে তোমার মনের সাথে বোঝাপড়া করো। আমি এই এলাম বলে

- (যেতে যেতে মেঘ দূর থেকে দেখতে পেলে, বৃষ্টি ঠাঁই দাঁড়িয়ে। বাতাসে উড়ছে তার চুলগুলো। এইভাবে কিছুক্ষণ যাওয়ার পর)

: (চুপিচুপি বৃষ্টির পেছনে এসে) কেমন লাগছে?
: (চমকে উঠে) ওহ্‌! তুমি! ভয় পাইয়ে দিয়েছ। দারুণ লাগছে!
: মন ভালো হয়েছে
: :=) (এই হাসিতে মনে হচ্ছে উজ্জ্বলতা বেড়েছে) কই ছিলে তুমি এতক্ষণ?
: এই তো ছিলাম আশেপাশেই। তোমার মন খারাপের কারণকে নদীতে বিসর্জন দিয়ে এলাম
: :=) (বৃষ্টি এল মেঘের গা ঘেষে)
: (বৃষ্টির হাত ধরে) দেখো ঐ উপরে
: কি ওখানে?
: দেখোয় না

(বৃষ্টি আকাশে তাকিয়ে দেখে আকাশে মেঘের দল সব রঙের ফোয়ারা ছিটোচ্ছে। রংধনু বানাবে বলে)

: (মেঘ আরেকটু কাছে ঘেষে বৃষ্টির ঠোঁটে ছোট্ট একটা চুম্বন দিয়ে)

বৃষ্টি, চুমিয়ে দিলাম আজ তোমার ঐ রাঙা অধর :=)

সর্বশেষ এডিট : ২৩ শে আগস্ট, ২০১১ রাত ১১:৩৩
৩১টি মন্তব্য ৩১টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

AI-এর লগে গ্যাঁজাইলাম =p~

লিখেছেন জটিল ভাই, ০১ লা এপ্রিল, ২০২৫ বিকাল ৪:১২

♦أَعُوْذُ بِاللهِ مِنَ الشِّيْطَانِ الرَّجِيْمِ (বিতাড়িত শয়তান থেকে আল্লাহ্'র নিকট আশ্রয় প্রার্থনা করছি)
♦بِسْمِ ٱللَّٰهِ ٱلرَّحْمَٰنِ ٱلرَّحِيمِ (পরম করুণাময় অসীম দয়ালু আল্লাহ্'র নামে)
♦ٱلسَّلَامُ عَلَيْكُمْ (আপনার উপর শান্তি বর্ষিত হোক)


(স্ক্রিনসট)

সামহোয়্যার ইন ব্লগ... ...বাকিটুকু পড়ুন

লালন সাঁইজির আধ্যাতিকতা,পরিচয় ও মানবতাবাদ

লিখেছেন রাবব১৯৭১, ০১ লা এপ্রিল, ২০২৫ বিকাল ৪:৪০

লালন সাঁই ছিলেন একজন বাউল সাধক, দার্শনিক ও মানবতাবাদী। তাঁর আধ্যাত্মিকতা মূলত গুরু-শিষ্য পরম্পরা, সাধনা ও অন্তর্জ্ঞানভিত্তিক। তিনি ধর্ম, জাতি, বর্ণভেদ মানতেন না এবং বিশ্বাস করতেন, "মানুষের ওপরে কিছু নাই।"... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমার ছোট কালের ঈদ।

লিখেছেন নাহল তরকারি, ০১ লা এপ্রিল, ২০২৫ রাত ৯:০৫



ঈদ মানেই ছিল নতুন জামা, নতুন টাকা আর আনন্দের ঝলক। ছোটবেলার সেই ঈদগুলো এখনো স্মৃতির মণিকোঠায় জ্বলজ্বল করে।



আমার নানা সোনালী ব্যাংকে চাকরি করতেন। আমি তখন... ...বাকিটুকু পড়ুন

পিটার প্যান সিনড্রোম !

লিখেছেন সৈয়দ কুতুব, ০১ লা এপ্রিল, ২০২৫ রাত ৯:৪২


প্রাপ্তবয়স্ক হয়েও দায়িত্ব নিতে না চাওয়া, বাস্তবতা এড়িয়ে চলা এবং জীবনের গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত থেকে পালিয়ে যাওয়ার প্রবণতা অনেকের মাঝেই দেখা যায়। তারা শৈশবের মতো স্বাধীন, নিরুদ্বেগ জীবন... ...বাকিটুকু পড়ুন

বিএনপি কি ক্ষমতা কুক্ষিগত করবে না?

লিখেছেন ধূসর সন্ধ্যা, ০১ লা এপ্রিল, ২০২৫ রাত ১১:২২

ক্ষমতায় আসার পরে বিএনপির আচরণ কেমন হবে?
এই প্রশ্নের উত্তর নিশ্চিত ভাবে দেওয়া সম্ভব না। তবে আমরা কারো আচরণ কেমন হতে পারে সেটা তার অতীত থেকে খানিকটা আন্দান করতে পারি।... ...বাকিটুকু পড়ুন

×