: বৃষ্টি, আজ ইচ্ছে করছে গলা ছেড়ে গাই গান, গেয়ে বলি "তুমি সন্ধ্যার মেঘমালা, তুমি আমারি, তুমি আমারি"
ওকি! কি হল
: (আদ্র হাসি হেসে) নাহ কিছু না
: কিছু না বললেই হল, তোমার চোখ মুখই তো বলে দিচ্ছে। বলো আমাকে কি হয়েছে
: কিছু হয় নি, বললাম তো
: দেখো আকাশে কি চমৎকার একটা চাঁদ উঠেছে। কি সুন্দর জ্যোৎস্না বিলাচ্ছে রাতের পৃথিবীকে। দেখে মনে হয় না অভিসারিকা চাঁদ তার রূপের লণ্ঠন জ্বালিয়ে প্রেম করছে পৃথিবীর সাথে?
: হুম
: নাহ, নিশ্চই তোমার কিছু হয়েছে। খুলে দাও তোমার মনের দুয়ার। অবারিত হোক আজ হৃদয়-বারি। কি হয়েছে আমাকে বলো বৃষ্টি?
: আমার না খুব মন খারাপ
: মন খারাপ? বলো কে বকেছে
কে বকেছে, কে মেরেছে, কে দিয়েছে গাল
তাইতো বৃষ্টি রাগ করেছে, ভাত খায়নি কাল
: (হেসে) না কেও বকেনি
: তবে, কেও মেরেছে? বলো আমাকে এখুনি তাকে একটা শিক্ষা দিয়ে আসি
: থাক দিতে হবে না তোমাকে কাওকে শিক্ষা।
: তবে?
: তবে কি? পার তো দাও আমার মন ভালো করে
: কেন নয়। বলুন দেবী, কি করতে হবে
: এই! এইসব কি হচ্ছে, দেবী টেবী না। পারো তো কোথাও থেকে ঘুরিয়ে নিয়ে আসো
: এত রাত্রে!
: তো কি হয়েছে, নিয়ে যাবে কিনা বল?
: দেবী হুকুম করেছে আর মেঘ তা পালন করবো না! কক্ষণো না
: এই আবার!
: (হাঁটুতে গেড়ে বসে হাত বাড়িয়ে দিয়ে) উঠে পড়ো মেঘের ভেলায়
: মেঘের ভেলায়!
: হুম, মেঘে চড়িয়ে তোমাকে ঘুরিয়ে আনবো মেঘের রাজ্য থেকে
: (হেসে) বেশ তবে তাই হোক
: দাঁড়াও, তোমার মন খারাপের কারণটাকেও ভেলার পেছনে বেঁধে রাখি।
আচ্ছা এইবার শক্ত করে বসো। এইবার উড়াল দিবে মেঘের ভেলা
- (ভেলা উঠছে ধীরে ধীরে। স্বর্গ থেকে মৃদু কিন্তু মন আবেশ করে দেওয়া সুর ভেসে আসছে)
: ও কিসের শব্দ
: স্বর্গের কিণ্ণরীরা স্বর্গ থেকে সুর ঢালছে। বৃষ্টির মন ভালো করে দেওয়ার জন্য
: আরে বাহ্!
: জ্বি হ্যাঁ
- (আরেকটু সামনে গেলে গুড়ুম গুড়ুম শব্দ শুনে)
: কি হচ্ছে ওখানে
: গিয়েই দেখা যাক না
- (গিয়ে দেখা গেল বজ্রদেবতা দিগাঙ্গনাদের নিয়ে উত্তাল পাতাল নাচ শুরু করেছে)
: (হেসে) আর্রে এ যে আমারই নাচের মুদ্রা।
: :=) । (হাসিটা যেন বলে দিচ্ছে, বৃষ্টি এই সব তোমার মন ভালো করার জন্যই)
: (প্রতি-হাসি)
- (সেই নাচ দেখতে একসময় পূব-আকাশে সূর্য্যি দেবও উঁকি-ঝুঁকি মারা শুরু করলো)
- (মেঘের ভেলা আবার চলতে শুরু করলো। )
একসময় বহমান একটা নদীর পাড়ে এসে থামলো মেঘের ভেলা। গাছ গাছালিতে ভরা নদীর দু-পাড়।
: (মেঘ নেমে হাত বাড়িয়ে দিয়ে) ধীরে ধীরে নামো
: (হাত ধরে নামতে নামতে) এইখানে কেন
: তোমার মন খারাপের কারণকে বিসর্জন দিতে। (একটু থেমে) দেখো কি স্নিগ্ধ বাতাস। মনটা জুড়িয়ে যাচ্ছে না?
: হুম
: তুমি একটু নিভৃতে তোমার মনের সাথে বোঝাপড়া করো। আমি এই এলাম বলে
- (যেতে যেতে মেঘ দূর থেকে দেখতে পেলে, বৃষ্টি ঠাঁই দাঁড়িয়ে। বাতাসে উড়ছে তার চুলগুলো। এইভাবে কিছুক্ষণ যাওয়ার পর)
: (চুপিচুপি বৃষ্টির পেছনে এসে) কেমন লাগছে?
: (চমকে উঠে) ওহ্! তুমি! ভয় পাইয়ে দিয়েছ। দারুণ লাগছে!
: মন ভালো হয়েছে
: :=) (এই হাসিতে মনে হচ্ছে উজ্জ্বলতা বেড়েছে) কই ছিলে তুমি এতক্ষণ?
: এই তো ছিলাম আশেপাশেই। তোমার মন খারাপের কারণকে নদীতে বিসর্জন দিয়ে এলাম
: :=) (বৃষ্টি এল মেঘের গা ঘেষে)
: (বৃষ্টির হাত ধরে) দেখো ঐ উপরে
: কি ওখানে?
: দেখোয় না
(বৃষ্টি আকাশে তাকিয়ে দেখে আকাশে মেঘের দল সব রঙের ফোয়ারা ছিটোচ্ছে। রংধনু বানাবে বলে)
: (মেঘ আরেকটু কাছে ঘেষে বৃষ্টির ঠোঁটে ছোট্ট একটা চুম্বন দিয়ে)
বৃষ্টি, চুমিয়ে দিলাম আজ তোমার ঐ রাঙা অধর :=)
সর্বশেষ এডিট : ২৩ শে আগস্ট, ২০১১ রাত ১১:৩৩