নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

জ্ঞান যেখানে সীমাবদ্ধ, বুদ্ধি সেখানে আড়ষ্ট, মুক্তি সেখানে অসম্ভব।

এম টি উল্লাহ

উপন্যাস ‘‘অসমাপ্ত জবানবন্দী’’ ও ‘‘নিরু”, মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক উপন্যাস ‘‘মায়ের মুখে মুক্তিযুদ্ধ’’ ও ‘‘একাত্তরের অবুঝ বালক’’ এর লেখক। পেশায়-আইনজীবী। কর্মস্থল- হাইকোর্ট।www.facebook.com/mohammad.toriqueullah

এম টি উল্লাহ › বিস্তারিত পোস্টঃ

দালালদের বা তথাকথিত রিক্রুটিং এজেন্ট/এজেন্সি দ্বারা প্রলুব্ধ বা প্রতারিত হয়ে বিদেশে গিয়ে শোষণ বা নিপীড়নমূলক পরিস্থিতির শিকার হলে আইনী পদক্ষেপ

১১ ই মে, ২০২৩ রাত ১২:৩০


দালালদের খপ্পরে পড়ে বিদেশে যাওয়ার প্রতিটি স্তরেই প্রতারণার শিকার হচ্ছেন অভিবাসন প্রত্যাশীরা। বৈধ বা অবৈধ যে প্রক্রিয়াই হোক, হয়রানি হওয়ার কথা মোনাই যায় এবং এমন হয়রানির ক্ষেত্রে বরাবরই রিক্রুটিং এজেন্ট/এজেন্সির নাম সামনে চলে আসে। এখন প্রশ্ন হলো রিক্রুটিং এজেন্ট/এজেন্সির খপ্পরে পড়ে প্রতারিত হয়ে বিদেশে গিয়ে শোষণ বা নিপীড়নমূলক পরিস্থিতির শিকার হলে করণীয় কি?

কেউ যদি দালালদের বা তথাকথিত রিক্রুটিং এজেন্ট/এজেন্সি দ্বারা প্রলুব্ধ বা প্রতারিত হয়ে বিদেশে গিয়ে শোষণ বা নিপীড়নমূলক পরিস্থিতির শিকার হন তা মানব পাচার আইনে অপরাধ হিসাবে গণ্য হবে এবং ভিকটিম নিজে বা তার পরিবার কিংবা পরিচিত জন সংশ্লিষ্ট দালালদের বিরুদ্ধে মানব পাচার প্রতিরোধ আইন,২০১২ এর বিধান মোতাবেক মামলা করতে পারবেন।

কেমন কর্মকান্ড হলে মামলা করতে পারবেন?

ধরুন, কাউকে ইউরোপ নেওয়ার কথা বলে অজ্ঞাত স্থানে নিয়ে যাওয়া বা সাগরে ছেড়ে দিয়ে লাপাত্তা হয়ে যাওয়া বা যে দেশে কাজ করার কথা বলে নিয়ে যাওয়া হলো সেখানে সেই কাজ না করিয়ে শোষণ বা নিপীড়নমূলক পরিস্থিতির সম্মুখীন করা। বা ভয়ভীতি প্রদর্শন বা বলপ্রয়োগ করিয়া প্রতারণা করিয়া বা উক্ত ব্যক্তির আর্থ-সামাজিক বা পরিবেশগত বা অন্য কোন অসহায়ত্বকে (vulnerability) কাজে লাগাইয়া বাংলাদেশের অভ্যন্তরে বা বাহিরে যৌন শোষণ বা নিপীড়ন বা শ্রম শোষণ বা অন্য কোনো শোষণ বা নিপীড়নের (exploitation) উদ্দেশ্যে বিক্রয় বা ক্রয়, সংগ্রহ বা গ্রহণ, নির্বাসন বা স্থানান্তর, চালান বা আটক করা বা লুকাইয়া রাখা বা আশ্রয় দেওয়া (harbour) হলে তা মানব পাচার প্রতিরোধ আইন,২০১২ এর বিধান মোতাবেক অপরাধ হিসাবে িগণ্য হবে।

এমন অপরাধ হলে মামলা কোথায় করবেন?

কোন অপরাধ সংঘটিত হইলে কোন ব্যক্তি থানায় বা মানব পাচার প্রতিরোধ ট্রাইব্যুনালের নিকট উক্ত অপরাধ সংঘটনের অভিযোগ দায়ের করিতে পারিবে এবং পুলিশ এই ধরণের অভিযোগ আনয়নকারী ব্যক্তিকে প্রয়োজনীয় নিরাপত্তা প্রদান করিবে।


মামলা করলে শাস্তি কি?

মানব পাচার অপরাধ সংঘটনকারী কোন ব্যক্তি অনধিক যাবজ্জীবন কারাদণ্ডে এবং অন্যূন ৫(পাঁচ) বৎসর সশ্রম কারাদণ্ডে এবং অন্যূন ৫০(পঞ্চাশ) হাজার টাকা অর্থদণ্ডে দণ্ডিত হইবেন। আবার সংঘবদ্ধ মানব পাচার অপরাধের দণ্ড হিসাবে মৃত্যুদণ্ডে বা যাবজ্জীবন কারাদণ্ডে দন্ডিত করারও বিধান রয়েছে। শুধু সাজা নয়, সংঘটিত কোন অপরাধের জন্য কোন অভিযুক্ত ব্যক্তি দোষী সাব্যস্ত হইলে ট্রাইব্যুনাল তদকর্তৃক আদেশকৃত অর্থদণ্ডের অতিরিক্ত হিসাবে মানব পাচারের শিকার ব্যক্তিকে যৌক্তিক পরিমাণে ক্ষতিপূরণ প্রদানের জন্য তাহাকে আদেশ প্রদান করিতে পারিবে ।
উল্লেখ্য, মানব পাচার আইনের অধীন কোন অপরাধের অভিযোগ গঠনের ১৮০ (একশত আশি) কার্যদিবসের মধ্যে ট্রাইব্যুনাল বিচারকার্য সম্পন্ন করিবে

মনে রাখা ভালো এই আইনের আওতায় দায়েরকৃত মামলা অ-জামিনযোগ্য(non-bailable) ।


ফৌজদারি মামলার পাশাপাশি ক্ষতিপূরণের মামলা করা যাবে?

হ্যাঁ, ফৌজদারী মামলা রুজু করিবার অধিকার অক্ষুণ্ন রাখিয়া এবং দায়েরকৃত কোন ফৌজদারী মামলার পাশাপাশি, ভিকটিম বা পাচারের শিকার ব্যক্তি এই আইনের অধীন সংঘটিত অপরাধের ফলে সৃষ্ট তাহার প্রকৃত ক্লেশ (sufferance) বা আইনগত ক্ষতির (legal injury) জন্য বা উক্ত অপরাধের সহিত সম্পৃক্ত কোন চুক্তি লংঘনের জন্য দেওয়ানী আদালতে ক্ষতিপূরণের মামলা দায়ের করিতে পারিবে।

মিথ্যা মামলা করার সাজা

কোন ব্যক্তি অন্য কোন ব্যক্তির ক্ষতিসাধন করিবার উদ্দেশ্যে এই মানব পাচারের মিথ্যা বা হয়রানিমূলক মামলা বা মিথ্যা অভিযোগ দায়ের করিলে বা আইনি প্রক্রিয়ার অপব্যবহার করিলে বা অন্য কোন ব্যক্তিকে তাহা করিতে বাধ্য করিলে তিনি অপরাধ করিয়াছেন বলিয়া গণ্য হইবেন এবং উক্তরূপ অপরাধের জন্য তিনি অনধিক ৫ (পাঁচ) বৎসর এবং অন্যূন ২ (দুই) বৎসর সশ্রম কারাদণ্ডে এবং অন্যূন ২০ (বিশ) হাজার টাকা অর্থদণ্ডে দণ্ডিত হইবেন।

বিশেষ তথ্য-
বিদেশ যাওয়ার ক্ষেত্রে রিক্রুটিং এজেন্ট/এজেন্সি দ্বারা প্রতারণা এড়াতে প্রথমেই খোঁজ নিতে হবে ওই প্রতিষ্ঠানের লাইসেন্সের বিষয়টা। দেশে বর্তমানে লাইসেন্স প্রাপ্ত ১৪৩৪ টি রিক্রুটিং এজেন্ট/এজেন্সি রয়েছে। যেগুলোর তালিকা প্রবাসী কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের ওয়েব সাইডে রয়েছে।

-- মোহাম্মদ তরিক উল্যাহ
অ্যাডভোকেট
বাংলাদেশ সুপ্রীম কোর্ট
০১৭৩৩৫৯৪২৭০ ( কল করার পূর্বে হোয়াটস্অ্যাপে ম্যাসেজ দিন)

লেখক- আইন বিষয়ক উপন্যাস 'নিরু" এবং 'অসমাপ্ত জবানবন্দী', মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক উপন্যাস 'মায়ের মুখে মুক্তিযুদ্ধ' এবং 'একাত্তরের অবুঝ বালক' ।

মন্তব্য ৬ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (৬) মন্তব্য লিখুন

১| ১১ ই মে, ২০২৩ রাত ১:৫২

কামাল১৮ বলেছেন: আইন ঠিক মতো কাজ করে না।

১২ ই মে, ২০২৩ রাত ৮:০৬

এম টি উল্লাহ বলেছেন: তা ঠিক, তবে আইনের দারস্থ হওয়াটাও জরুরি।

২| ১১ ই মে, ২০২৩ দুপুর ২:০৩

রাজীব নুর বলেছেন: যার টাকা আছে, তার আইন লাগে না।

১২ ই মে, ২০২৩ রাত ৮:০৬

এম টি উল্লাহ বলেছেন: অনেকক্ষেত্রে বাস্তবতা এমনই!

৩| ১১ ই মে, ২০২৩ বিকাল ৩:৪৮

শাওন আহমাদ বলেছেন: গুরুত্বপূর্ণ তথ্য দিয়ে পোস্ট দিয়েছেন; কিন্তু পরিতাপের বিষয় আইন কাজে আসে না।

১২ ই মে, ২০২৩ রাত ৮:০৭

এম টি উল্লাহ বলেছেন: ধন্যবাদ

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.