নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
উপন্যাস ‘‘অসমাপ্ত জবানবন্দী’’ ও ‘‘নিরু”, মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক উপন্যাস ‘‘মায়ের মুখে মুক্তিযুদ্ধ’’ ও ‘‘একাত্তরের অবুঝ বালক’’ এর লেখক। পেশায়-আইনজীবী। কর্মস্থল- হাইকোর্ট।www.facebook.com/mohammad.toriqueullah
'অমুকের পক্ষেও আইনজীবী আছেন', 'তমুকের পক্ষে দাঁড়াবেন না' কিংবা 'জেনে শুনেও অপরাধীর পক্ষে উকিল কেন?' এমন সব কথা আইনজীবীদের নিয়ে সবসময় হয়। এবং বলার পেছনে যথেষ্ট যুক্তিসঙ্গত কারণও রয়েছে। প্রথমত, আমাদের চারপাশে ন্যাক্কারজনক অসংখ্য ঘটনা পুনঃপুন ঘটা এবং এসব জঘন্য প্রকৃতির অপরাধের শাস্তি হিসেবে ন্যায়বিচার পাওয়ার তীব্র আকাঙ্খা থেকেই বিবেকবান মানুষের এমন আবেদন। স্বভাবতই, সম্মানজনক এই রয়েল পেশায় নিয়োজিত বিজ্ঞ আইনজীবীদের নিকট সবার ভালো কিছু প্রত্যাশা থাকে। দ্বিতীয়ত, ফৌজদারি বিচার-প্রক্রিয়া তথা ন্যায়বিচার নিশ্চিতকরণের প্রক্রিয়া বা মানদন্ডের বিষয়ে সঠিক ধারণা না থাকা। কারণ- আমরা সকলেই জানি ফৌজদারি বিচার-প্রক্রিয়ার তিনটি আবশ্যকীয় পক্ষ হলো বিচারক বা জুরি, প্রসিকিউশন (রাষ্ট্র পক্ষ) এবং ডিফেন্স ল'ইয়ার (আসামি পক্ষের আইনজীবী) এর যেকোনো একটি পক্ষের অনুপস্থিতি ন্যায়বিচার নিশ্চিত করতে পারবে না। বিশেষ করে আত্মপক্ষ সমর্থনের সুযোগ একজন অভিযুক্তকে দিতেই হবে। কারণ- A fundamental principle of natural justice is that no man should be condemned unheard'।
তাহলে বিষয়টি হলো- আসামিকে আইনজীবীর মাধ্যমে আত্মপক্ষ সমর্থনে বাধা দেওয়া বিচার অস্বীকার করার শামিল। ১৯৪৮ খ্রিস্টাব্দে গৃহীত জাতিসংঘের মানবাধিকার বিষয়ক সার্বজনীন ঘোষণাপত্রের ১১(১) অনুচ্ছেদে বলা হয়েছে যে, ফৌজদারি অপরাধে অভিযুক্ত প্রত্যেক ব্যক্তির আত্মপক্ষ সমর্থনের প্রয়োজনীয় নিশ্চয়তা দিয়ে গণআদালতের বিচারে আইন অনুসারে দোষী প্রমাণিত হওয়ার পূর্ব পর্যন্ত অভিযুক্তকে নির্দোষ হিসেবে গণ্য করতে হবে। একই বিধান বিবৃত হয়েছে ১৯৬৬ খ্রিস্টাব্দে জাতিসংঘ কর্তৃক গৃহীত দেওয়ানি ও রাজনৈতিক অধিকার সংক্রান্ত চুক্তিতে। বিষয়টা আমাদের সংবিধান দ্বারাও সুরক্ষিত হয়েছে এভাবে, "গ্রেফতারকৃত কোন ব্যক্তিকে যথাসম্ভব শীঘ্রই গ্রেপ্তারের কারণ জ্ঞাপন না করিয়া প্রায় আটক রাখা যাইবে না এবং উক্ত ব্যক্তিকে তাঁহার মনোনীত আইনজীবীর সহিত পরামর্শের ও তাঁহার দ্বারা আত্মপক্ষ সমর্থনের অধিকার হইতে বঞ্চিত করা যাইবে না -অনুচ্ছেদ ৩৩(১)।
শুধু তাই নয়, ১৮৯৮ খ্রিস্টাব্দের ফৌজদারি কার্যবিধির ৩৪০ ধারামতে একজন আসামি তার পক্ষে আইনজীবী নিয়োগের অধিকার রাখেন। যার আসামির পক্ষে কোন আইনজীবী ওকালতি করার ইচ্ছা প্রকাশ না করলেও আসামির স্বপক্ষে কথা বলার জন্য সরকারী খরচে সরকার নিজেই একজন আইনজীবী দেন। এই আইনজীবীকে বলা হয় স্টেইট ডিফেন্স ল ইয়ার। এমনকি গুরুতর অপরাধে পলাতক আসামিদের পক্ষেও সরকারি খরচে স্টেইট ডিফেন্স লইয়ার নিয়োগ দেওয়া হয় এবং তাকে রাষ্ট্রপক্ষ কর্তৃক প্রয়োজনীয় নথিপত্র সরবরাহ করা হয়। যেমন- মরহুম শেখ মুজিবুর রহমান সাহেবের হত্যা মামলায়ও পলাতক আসামিদের পক্ষে সরকারী খরচে আইনজীবী নিয়োগ দেওয়া হয়েছিলো। এসব করা হয় ন্যায়বিচারের স্বার্থেই। কারণ, দশজন আসামি ছাড়া পেলেও একজন নিরাপরাধ ব্যক্তিও যেন সাজা না পায়, সেটা নিশ্চিত করা বিচারকের পবিত্র দায়িত্ব।
তার মানে আসামি পক্ষে ওকালতি করা অপরাধ নয়, তবে চাঞ্চল্যকর ও স্পর্শকাতর অপরাধের ক্ষেত্রে সচেতন আইনজীবীদের একটু সতর্কতা অবলম্বন করা উচিৎ। একটি উদাহরণ দিলে বিষয়টি আরো স্পষ্ট হবে। ধরুন- বিচারে একজন আসামির ফাঁসির আদেশ হলো। ফাঁসি কার্যকর সময়ের অপেক্ষামাত্র। এরই মধ্যে আসামির ক্যান্সার ধরা পড়লো। যেহেতু ফাঁসির আসামির ক্যান্সার হয়েছে সেহেতু বিষয়টি নিয়ে উদ্গ্রীব না হয়ে বরং ক্যান্সারে সে মারা গেলেই কাহিনী সহজেই শেষ হওয়ার কথা। কিন্তু না, এতে আগে আসামির চিকিৎসা করবে জেল কর্তৃপক্ষ। শারীরিক ফিটনেস ফিরে আসলেই ফাঁসির কাষ্ঠে ঝুলানো হবে। কারণ- অপরাধীর সাজা কার্যকরের সাথে রাগ-অভিমানের বিষয় জড়িত নয় বরং আইনি প্রক্রিয়াই মুখ্য। কিংবা ধরুন- আসামি জেলে থাকাবস্থায় তার বাড়িতে আগুন ধরেছে। এক্ষেত্রে ফায়ার সার্ভিসের লোকজন কি আগুন নেভানোর চেষ্টা করবে না। এখানে চিকিৎসা প্রদানকারী ডাক্তার কিংবা ফায়ার সার্ভিসের লোকদের অপরাধ বা দোষ হবে? ন্যায়বিচারের স্বার্থে আসামি পক্ষের নিয়োজিত আইনজীবীর ভূমিকাও ঠিক তেমনি।
- - মোহাম্মদ তরিক উল্যাহ
অ্যাডভোকেট
বাংলাদেশ সুপ্রীম কোর্ট
০১৭৩৩৫৯৪২৭০ ( কল করার পূর্বে হোয়াটস্অ্যাপে ম্যাসেজ দিন)
লেখক- আইন বিষয়ক উপন্যাস 'নিরু" এবং 'অসমাপ্ত জবানবন্দী', মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক উপন্যাস 'মায়ের মুখে মুক্তিযুদ্ধ' এবং 'একাত্তরের অবুঝ বালক' ।
১১ ই ফেব্রুয়ারি, ২০২৩ দুপুর ২:৫৭
এম টি উল্লাহ বলেছেন: ধন্যবাদ
২| ১১ ই ফেব্রুয়ারি, ২০২৩ রাত ১২:০৩
সাড়ে চুয়াত্তর বলেছেন: অনেক সময় খুনও যৌক্তিক।
১১ ই ফেব্রুয়ারি, ২০২৩ দুপুর ২:৫৮
এম টি উল্লাহ বলেছেন: হতে পারে। আইনে সে ব্যতিক্রমও আছে
৩| ১১ ই ফেব্রুয়ারি, ২০২৩ রাত ১২:১৭
কামাল১৮ বলেছেন: আত্ম রক্ষার জন্য খুনকরা যায়,আর কোন যৌক্তিক কারনে কাউকে হত্যা করা যায় না।
১১ ই ফেব্রুয়ারি, ২০২৩ বিকাল ৩:০০
এম টি উল্লাহ বলেছেন: ঠিক বলেছেন
৪| ১১ ই ফেব্রুয়ারি, ২০২৩ রাত ১২:২২
অনল চৌধুরী বলেছেন: অপরাধ প্রমাণ না হওয়া পর্যন্ত সব অভিযুক্ত নির্দোষ, এটা সভ্য সমাজের রীতি।
তাই তার পক্ষে আইনী লড়া্ই করা যৌক্তিক। কিন্ত জেনে-শুনে টাকার লোভে যেকোনো ধরনের অপরাধীর পক্ষে দাড়ানোটা বড় ধরনের নৈতিক অপরাধ. যেটা প্রায় সব উকিল করে।
তবে আদালতে যেকারো পক্ষে মিথ্যা বলা দন্ডনীয় হওয়া উচিত মনে করি।
১১ ই ফেব্রুয়ারি, ২০২৩ বিকাল ৩:০১
এম টি উল্লাহ বলেছেন: যথাযথ বলেছেন
৫| ১১ ই ফেব্রুয়ারি, ২০২৩ রাত ১২:২২
জ্যাক স্মিথ বলেছেন: অপরাধীর পক্ষে আইনজীবি থাকে কারণ সে যে অপরাধী তা প্রমাণ করা, বা অপরাধীর পক্ষে যদি কোন আইনজীবি না থাকে তাহলে সে যে অপরাধী তা প্রমাণ করা যাবে না। পুরা বিষয়টা আইনি প্রক্রিয়ারই একটা অংশ।
আপনার বিশ্লেষণ ভালো হয়েছে।
১১ ই ফেব্রুয়ারি, ২০২৩ বিকাল ৩:০৪
এম টি উল্লাহ বলেছেন: অসংখ্য ধন্যবাদ আপনাকে
৬| ১১ ই ফেব্রুয়ারি, ২০২৩ রাত ৩:১৫
ঋণাত্মক শূণ্য বলেছেন: আচ্ছা, একজন খুনি, সে তার আইনজীবির কাছে স্বীকার করলো যে সে প্লান প্রোগ্রাম করেই খুন করেছে। তারপরও তার আইনজীবি তাকে নির্দোষ প্রমান করে নিয়ে আসলো। এই আইনজীবিকে আপনি কি বলবেন?
১১ ই ফেব্রুয়ারি, ২০২৩ বিকাল ৩:০৩
এম টি উল্লাহ বলেছেন: এমনটি করা উক্ত আইনজীবীর নৈতিকতা বিবর্জিত কাজ।
৭| ১১ ই ফেব্রুয়ারি, ২০২৩ সকাল ১০:৫৭
নতুন বলেছেন: অবশ্যই নিরপরাধ মানুষ যেন সাজা না পায় তা নিশ্চিত করতে হবে।
কিন্তু দেশে আইনজীবিরা টাকার জন্য জেনে শুনেই তার মক্কেলকে নিরপরাধী প্রমান করতে ভিক্টিমকে ভুল প্রমান করে তাকে বিচার পেতে দেয় না।
সেটা কি কোন নীতির মাঝে পড়ে?
১১ ই ফেব্রুয়ারি, ২০২৩ বিকাল ৩:০৫
এম টি উল্লাহ বলেছেন: না। সেটা অবশ্যই নিন্দনীয়।
৮| ১১ ই ফেব্রুয়ারি, ২০২৩ সকাল ১১:২৫
নেওয়াজ আলি বলেছেন: উকিল হলো মিথ্যা তৈরির কারখানা । রাতকে দিন আর দিন কাত করার টাকা পায়।
১১ ই ফেব্রুয়ারি, ২০২৩ দুপুর ২:৫৭
এম টি উল্লাহ বলেছেন: আপনার বক্তব্য পুরোপুরি সত্যতা বহন করে না
৯| ১১ ই ফেব্রুয়ারি, ২০২৩ দুপুর ১২:৩২
গেঁয়ো ভূত বলেছেন: সেই স্কুল কলেজে পড়ার সময়ই কেন জানি আমার মাথায় একটা বিষয় ঢুকে গিয়েছে যে অনেক সময় আইনজীবীরা জেনেশুনেই আদালতে দাঁড়িয়ে বলেন আমার মোয়াক্কেল নির্দোষ অথচ লোকটি (মোয়াক্কেল) মোটেও নির্দোষ নয়। বিষয়টিকে কিভাবে দেখেন আপনি?
১১ ই ফেব্রুয়ারি, ২০২৩ বিকাল ৩:০৬
এম টি উল্লাহ বলেছেন: আপনার অবজারভেশন একেবারেই মিথ্যে নয়। এমনটিও অনেকে করেন কিন্তু এটা নৈতিকতা বিবর্জিত কাজ।
১০| ১১ ই ফেব্রুয়ারি, ২০২৩ দুপুর ১:১০
রানার ব্লগ বলেছেন: একটা ঘটনা ঘটে যাবার পরে মুখে মুখে অনেক ডাল পালা গজায়। উকিলের কাজ হচ্ছে সেই সব ডাল পালা কেটে সাফ করে আসল ঘটনা প্রকাশ করা।
১১ ই ফেব্রুয়ারি, ২০২৩ বিকাল ৩:০৬
এম টি উল্লাহ বলেছেন: সেটাই। ধন্যবাদ আপনাকে
১১| ১১ ই ফেব্রুয়ারি, ২০২৩ দুপুর ২:২৫
রাজীব নুর বলেছেন: ধরুন আমি একটা খুন করলাম।
আমার সীমাহীন টাকা আছে। এখন কি আমি টাকার জোরে আইনের হাত থেকে বেঁচে যেতে পারবো?
১১ ই ফেব্রুয়ারি, ২০২৩ বিকাল ৩:০২
এম টি উল্লাহ বলেছেন: ন্যায়বিচার নিশ্চিত হলে পারবেন না।
১২| ১১ ই ফেব্রুয়ারি, ২০২৩ বিকাল ৩:১৫
গেঁয়ো ভূত বলেছেন: আপনার অবজারভেশন একেবারেই মিথ্যে নয়। এমনটিও অনেকে করেন কিন্তু এটা নৈতিকতা বিবর্জিত কাজ।
সেক্ষেত্রে আইনজীবীদের ভূমিকা কি হওয়া উচিত?
অথবা এধরণের অবস্থা থেকে সার্বিকভাবে পরিত্রানের জন্য আপনি কি পরামর্শ দেবেন?
১২ ই ফেব্রুয়ারি, ২০২৩ রাত ১২:৪৯
এম টি উল্লাহ বলেছেন: চেষ্টা করবো
১৩| ১১ ই ফেব্রুয়ারি, ২০২৩ রাত ৯:৪৯
রাজীব নুর বলেছেন: লেখক বলেছেন: ন্যায়বিচার নিশ্চিত হলে পারবেন না।
ন্যায় বিচার কি বাংলাদেশে হয়?
অপরাধ করে ধনীরা। ধনীদের কি কারাগারে থাকতে হয়?
১২ ই ফেব্রুয়ারি, ২০২৩ রাত ১২:৪৯
এম টি উল্লাহ বলেছেন: প্রশ্ন তো সেখানেই
১৪| ১১ ই ফেব্রুয়ারি, ২০২৩ রাত ১০:৪৮
সোনাবীজ; অথবা ধুলোবালিছাই বলেছেন: সুন্দর একটা বিষয় নিয়ে লিখেছেন। বেশ কনভিন্সিং। আমার পয়েন্টটা গেঁয়ো ভূত উল্লেখ করেছেন। আপনি যেহেতু বাংলাদেশে র প্র্যাক্টিসিং আইনজীবী, অল্প কথায় বাংলাদেশের বিচার ব্যবস্থার মান নিয়ে কিছু বলুন। দিনকে রাত, আর রাতকে দিন করার নজির এখানে কতখানি বিদ্যমান? আইনজীবীদের নৈতিকতা নিয়েও একটুখানি আলোকপাত করতে পারেন। অগ্রিম ধন্যবাদ দিয়ে গেলাম।
১২ ই ফেব্রুয়ারি, ২০২৩ রাত ১২:৪৭
এম টি উল্লাহ বলেছেন: আপনাকেও ধন্যবাদ
©somewhere in net ltd.
১| ১০ ই ফেব্রুয়ারি, ২০২৩ রাত ১১:৪৮
সোহানী বলেছেন: যুক্তি ঠিক আছে।