নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

জ্ঞান যেখানে সীমাবদ্ধ, বুদ্ধি সেখানে আড়ষ্ট, মুক্তি সেখানে অসম্ভব।

এম টি উল্লাহ

উপন্যাস ‘‘অসমাপ্ত জবানবন্দী’’ ও ‘‘নিরু”, মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক উপন্যাস ‘‘মায়ের মুখে মুক্তিযুদ্ধ’’ ও ‘‘একাত্তরের অবুঝ বালক’’ এর লেখক। পেশায়-আইনজীবী। কর্মস্থল- হাইকোর্ট।www.facebook.com/mohammad.toriqueullah

এম টি উল্লাহ › বিস্তারিত পোস্টঃ

দমে যান নি বলেই তিনি দ্রৌপদী মুর্মু!

২৩ শে জুলাই, ২০২২ রাত ১২:৫৪


মহাভারত মহাকাব্যের কেন্দ্রীয় নারী চরিত্র হলো দ্রৌপদী । পঞ্চপাণ্ডবের সহধর্মিনী । মহাভারতের বীরাঙ্গনাদ্রৌপদী পাঞ্চালরাজ দ্রুপদের কন্যা । দ্রুপদের কন্যা বলে তার নাম দ্রৌপদী। এতটুকুই আমরা জানতাম। কিন্তু আজকে দ্রৌপদী হিসেবে যার কথা বলছি তিনি ১৪০ কোটি মানুষের দেশের রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মু!

তিনি কেরানি থেকে, স্কুল শিক্ষক থেকে, কাউন্সিলর থেকে রাষ্ট্রপতি হয়েছেন বলে একের পর এক রিপোর্ট হচ্ছে। সবই সত্য কিন্তু তিনি কোন আলাদীনের প্রদীপের বদৌলতে এই জায়গায় পৌঁছাননি। এর পিছনে রয়েছে অকল্পনীয় সংগ্রামের ইতিহাস।

দ্রৌপদী মুর্মু তার গ্রামের কলেজের ভর্তি হওয়া প্রথম ছাত্রী। বাড়ি থেকে বিশ মাইল দূরের কলেজে যাতায়াতের জন্য পরিবার থেকে তার মাসিক বরাদ্দ ছিল ১০ রুপি! অজপাড়াগাঁ থেকে কেমন পরিস্থিতির মধ্য দিয়ে এই আদিবাসী নারী শিক্ষা সংগ্রাম চালিয়ে গিয়েছেন তা সহজেই অনুমেয়। শিক্ষার জন্য সংগ্রাম করতে করতেই তিনি স্বপ্ন ভুনা শুরু করেন। ভুবনেশ্বরের রমাদেবী উইমেন্স কলেজ থেকে কলা বিভাগে স্নাতকের পড়াশোনা শেষ করে ওড়িশা সরকারের সেচ বিভাগে জুনিয়র সহকারী হিসেবে যোগদান করলেও তিনি স্বপ্নকে সেখানে থামিয়ে না রেখে ক্যারিয়ার শুরু করেন শিক্ষাতায়।  শ্রী অরবিন্দ ইন্টিগ্রাল এডুকেশন অ্যান্ড রিসার্চ নামক স্কুলের শিক্ষকতা চালিয়ে যেতে লাগলেও নিজ জনগোষ্ঠীর ভাগ্য পরিবর্তনের সংকল্প থেকে সিদ্ধান্ত নেন রাজনীতি করার। ১৯৯৭ সালে আনুষ্ঠানিক রাজনীতিতে যোগদান করেন। আনুষ্ঠানিক রাজনীতি এজন্যই বলছি কারণ নেতৃত্ব দেওয়ার গুণ তার রক্তেই ছিল। পিতা ছিলেন গ্রামের পঞ্চায়েত প্রধান।

রাজনীতিতে আসার পর ওই বছরেই রায়রঙ্গপুর নগর পঞ্চায়েতের কাউন্সিলর নির্বাচিত হন। এরপর জনবান্ধন রাজনীতি করতে গিয়ে আর পিছনে তাকাতে হয় নি। তবে সবচেয়ে কঠিন পরীক্ষার সম্মুখীন হন ২০০৯ সালে এসে।  রায়রঙ্গপুর বিধানসভা  নির্বাচনে তিনি পরাজয়ের শোক কাটাতে না কাটাতে ওই বছরই হারান নিজ মা ও ভাইকে। এমনি শোকাবহ পরিস্থিতিতে এক সকালে নিজের ২৫ বছর বয়সী বড় ছেলে ঘুমন্ত অবস্থায় অজ্ঞাত কারনে মৃত্যুবরণ করেন। ২০১২ তে অপর ছেলে প্রাণ হারান সড়ক দুর্ঘটনায়। তারই দু'বছর পর ২০১৪ মৃত্যু বরণ করেন স্বামী। এমন সব পরিস্থিতিতেও তিনি বিগড়ে যান নি। কারণ, শ্রী অরবিন্দ ইন্টিগ্রাল এডুকেশন অ্যান্ড রিসার্চ নামক স্কুলের শিক্ষকতাকালীন তিনিই শিক্ষার্থীদের মেডিটেশন/ ধ্যান, ধৈর্য, আত্মশুদ্ধি আর আত্মশক্তি অর্জনের শিক্ষা দিয়েছিলেন। একমাত্র মেয়েকে নিয়ে সন্তানদ্বয় আর স্বামীর স্মরণে প্রতিষ্ঠা করেন স্কুল (SLS Memorial school)।  নিজেকে আরো জোরালোভাবে সম্পৃক্ত করেন গণমুখী কার্যক্রমে। 
বিজেপি সরকার গঠন করলে ২০১৫ সালে তিনি ঝাড়খণ্ডের প্রথম মহিলা রাজ্যপাল হিসেবে নিযুক্ত হন। অদম্য এই নারী আজকে হলেন পৃথিবীর বৃহৎ গণতান্ত্রিক দেশের রাষ্ট্রপতি।
শত প্রতিকূলতার মাঝেও যে সফলতাকে ধরাশায়ী করা যায় এই আদিবাসী নারী সেটাই প্রমাণ করে ছাড়লেন। তাঁর জন্য শুভকামনা। 

মন্তব্য ২ টি রেটিং +২/-০

মন্তব্য (২) মন্তব্য লিখুন

১| ২৩ শে জুলাই, ২০২২ ভোর ৪:১০

কামাল৮০ বলেছেন: তিনি রাজ্যপাল হিসাবে দায়িত্ব পালন করেছেন।যেটা ভারত সরকারের একটা গুরুত্ব পূর্ণ পদ।

২| ২৩ শে জুলাই, ২০২২ দুপুর ১:৩২

অর্ক বলেছেন: ভালো লাগলো। সত্যি তিনি দারুণ, তিনি অনন্য। অগুনতি প্রতিকূল পরিস্থিতি ফেস করে আজকের এ অর্জন। আপনার লেখা থেকে অনেক কিছু জানা হলো। আসলে এরকম একজন মানুষের কাছে গুটিসুটি মেরে কিছুক্ষণ পড়ে থাকলেও জীবন ধন্য হয়। আর এটা সম্ভব হয়েছে কেবলমাত্র নরেন্দ্র মোদির জন্য। তিনি নিজেও যে এ পৃথিবী এ মানবসভ্যতার শ্রেষ্ঠতম মহাকাব্যের নায়ক। এরকম শূন্য থেকে শুরু করে নরেন্দ্র মোদি আজ নরেন্দ্র মোদি হয়েছেন। উভয়ের জন্য অনেক অনেক শুভকামনা। দীর্ঘজীবী হোন। সত্যি মাঝেমাঝে সত্যিই সন্দিহান হই, এঁরা কি আদৌ আমাদের এ পৃথিবী নামক গ্রহের মানুষ!


ধন্যবাদ। শুভেচ্ছা থাকলো।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.